বৈকুণ্ঠ
বড়মামা ছাতে তাঁর প্রিয় ইজি চেয়ারে উদাস হয়ে বসেছিলেন। রবিবার চেম্বার বন্ধ। রুগিদের উৎপাত নেই। বাড়ি থাকলেই বারে বারে চা। অনেক আগে সবাই বলতেন, চা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। ইদানিং নতুন মত বেরিয়েছে, চা হল ওষুধ। আর বড়মামাকে পায় কে। আগে দশ বার কাপ হত। এখন যে কত কাপ, হিসেব নেই। মাসিমা হাল ছেড়ে দিয়েছেন। সেদিন খুব দুঃখ করে বলেছিলেন, বড়দার মতো বেয়াড়া ছেলেকে মানুষ করা আমার কম্ম নয়। আমার সবচেয়ে বড় ফেলিওর। মাঝে মাঝে ভাবি সময় যখন ছিল, তখন ঘাড় ধরে ডাকাবুকো একটা মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিলে বেশ হত। আমাকে বললেন, তোমার ভবিষ্যতও অন্ধকার। বড়মামাকে গুরু করেছ, বুঝবে ঠেলা।
বড়মামাকে যখন বললুম, মাসিমা খুব দুঃখ করছিলেন। বড়মামা মুচকি হেসে বলেছিলেন, শোন, আদর্শের পথ কঠিন পথ। কে কী বললে, একদম কান দিবি না! আমরা আমাদের সাধনা চালিয়ে যাব।
ভয়ে ভয়ে জিগ্যেস করেছিলুম, আমরা কিসের সাধনা করছি?
বড়মামা অবাক হয়ে বলেছিলেন, সে কি, সেইটাই জানিস না। স্বাধীন হওয়ার সাধনা।
—আমরা তো অনেক দিন স্বাধীন হয়েছি।
—আরে, সে তো দেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশের মানুষ কী স্বাধীন হয়েছে! আমরা যা খুশি তাই করব, কারো কথা শুনব না। রাস্তায় বলতে বলতে যায়, শুনিস নি—মানছি না, মানব না। নিজের অন্তরে যিনি আছেন, একমাত্র তাঁর কথা শুনব, তাঁর আদেশ পালন করব। আমরা কারো দাস নই। এই আমাদের নীতি, এই আমাদের সংবিধান। মনে থাকবে?
বড়মামা ইজিচেয়ারে বসে আছেন। পাশে একটা টি-টেবিল। বেশ বড় একটা ফ্লাস্কে চায়ের লিকার। একটা মাঝারি মাপের কাঁচের গেলাস। এক কৌটো চানাচুর। বড়মামার মুখটা আজ বিষণ্ণ। সন্ধে হয়ে আসছে। মাথার ওপর দিয়ে পাখিরা সব বাসায় ফিরছে। এক একটা এত নীচে দিয়ে যাচ্ছে, যে ডানার শব্দ শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে তিন গেলাস লিকার শেষ। একটাও কথা বলছে না। পশ্চিমের সূর্য ডোবা লাল আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন।
হঠাৎ বললেন, ‘বৈকুণ্ঠে যাবি?
—সে কোথায়? ইউরোপে না আমেরিকায়?
—আমিও ঠিক জানি না। বৈকুণ্ঠ ভগবানের বাস।
—কী করে যেতে হয়? বৈকুণ্ঠ কি এভারেস্টের মাথায়?
—না রে। তাহলে তো যাঁরা এভারেস্টের মাথায় চড়েছিলেন, তাঁরা তো ফিরে এসে বই লিখতেন। বৈকুণ্ঠ থেকে কেউ ফিরে আসতে পারে না। আমার যতদূর মনে হয়, বৈকুণ্ঠের রুট হল শ্মশান। নিকটবর্তী শ্মশানে গিয়ে চিতায় উঠে পড়। আগুনে প্রথমে, তারপর ধোঁয়া। যেমন দড়ি বেয়ে চোর বারান্দায় ওঠে, সেইরকম ধোঁয়া বেয়ে উঠে যাও বৈকুণ্ঠের ছাতে। তোমাকে কোনওরকম কষ্ট করতে হবে না, স্রেফ শুয়ে পড়।
—চিতায় জ্যান্ত কি করে শোবো? বৈকুণ্ঠে না গিয়ে তো হাজতে যেতে হবে! সে তো নরক! মেরে পুঁটলি করে দেবে।
—তুই কি সতী? জ্যান্ত তুই চিতায় উঠবি কেন? প্রথমে তোকে মরতে হবে।
—আত্মহত্যা?
—ধুর, আত্মহত্যা করলে কোনওদিনই তুই বৈকুণ্ঠে যেতে পারবি না। নরকে যেতে হবে।
—অনেকে বলছে, নরক এখন নাকি স্বর্গের চেয়ে বিউটিফুল।
—কে বলেছে তোকে! খবরের কাগজের কথা একদম বিশ্বাস করবি না। নিজের চোখে দেখবি তবে বিশ্বাস করবি।
—তার মানে আপনি আমাকে এমন কাজ করতে বলছেন, যাতে আমার নরকবাস হয়!
—একবারও বলিনি। তোমার যদি ইচ্ছে হয়ে গিয়ে দেখো। তা না হলে দেখে কাজ নেই, ও যেমন আছে থাক। তুমি আমার সঙ্গে সোজা বৈকুণ্ঠে চলো।
—আপনার ধারণায় নরক কেমন?
—আমার ধারণা নয় ঋষিদের দর্শন। তাঁরা সব দেখতে পান। তাহলে শোন—বড়মামা সাঁই সাঁই করে আধগেলাস লিকার খেয়ে গলা ভিজিয়ে নিয়ে শুরু করলেন,
—ধর তুই মরে গেছিস। তখনও তুই কিন্তু মৃতদেহের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে আছিস। সব দেখছিস। কান্নাকাটি হচ্ছে। খাট আসছে। চ্যাংদোলা করে তোলা হচ্ছে। শ্মশানের ধকল সামলাবার জন্যে কেউ কেউ চা খেয়ে নিচ্ছে। সিগারেট টানছে। তারপর চ্যাংদোলা করে তোকে নড়বড়ে একটা আম কাঠের খাটে শোয়ান হল। এইবার চললে তুমি নেচে—বল হরি, হরি বোল। তুমি কিন্তু সব বুঝতে পারছ। যখন চুল্লিতে ঢোকাচ্ছে, তখন দেখতে পাচ্ছ গনগনে আগুন। এইবার তোমার বুদ্ধি হবে, আর ঘাপটি মেরে ভেতরে বসে থেকে লাভ নেই। টাটা, বাই বাই। চিমনি দিয়ে বেরিয়ে আসবে। আমের ভেতরে যেমন আঁটি থাকে, সেই রকম প্রতিটি মানুষের দেহে একটা ‘আঁটি দেহ’ থাকে।
—বেশ হালকা লাগছে। রোগ, যন্ত্রণা, বেঁচে থাকার দুর্ভাবনা নেই। ভেরি ফাইন। হাঁটতে হচ্ছে না। ভাবলেই সব হয়ে যাচ্ছে। কেয়া বাত! হঠাৎ, ওটা কেরে! বিশাল মূর্তি, বিকট চেহারা। যেন আমেরিকান ফ্রিস্টাইল রেস্টলার। তার চেয়েও বিরাট। আমাদের পাড়ার ‘ভোলা’-ষাঁড়টাকে খাড়া করে দাঁড় করিয়ে দিলে খানিকটা আন্দাজ করতে পারবি। কে? খপ করে তোর হাতটা ধরবে। পালাবার উপায় নেই। ট্রিমেন্ডাস স্পিড। এরপর নিমেষে তোকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলবে। তারপর টানতে, টানতে ভয়ঙ্কর একটা পথ দিয়ে নিয়ে যাবে। আমাদের পাড়ার রাস্তাটা কল্পনা কর। বর্ষাকালে ঘোর অন্ধকার, বাড়ি ফেরার সময় তোর যেমন লাগে, সেই রকম। এই গর্তে পড়ছিস, এই হোঁচট খাচ্ছিস, হড়কে যাচ্ছিস। টানতে, টানতে সোজা যমপুরীতে।
—যমরাজের প্যালেসে যাওয়ার রাস্তাটা এত খারাপ কেন? কেন্দ্র টাকা দেয় না বুঝি?
—না রে এটা পাপীদের জন্যে। ইচ্ছে করে, প্ল্যান করে করা। পাপী অ্যাভিনিউ। যখন খারাপ হয়ে যায় তখন খারাপ করার জন্যে প্রচুর টাকা ঢালা হয়।
—খারাপ করার জন্যে, মানেটা কী হল?
—বুঝতে পারলি না, খারাপের খারাপ থাকবে না? ভালো যেমন খারাপ হয়, খারাপও সেই রকম খারাপ হয়। যমরাজের রাজত্বে একটা বিভাগ আছে যে বিভাগের কাজই হল, খারাপকে আরও খারাপ করা, ভয়ঙ্করকে আরও ভংয়কর করে তোলা। তোকে সেই ভয়ঙ্কর পথ দিয়ে টানতে, টানতে, হেঁচড়াতে, হেঁচড়াতে নিয়ে যাচ্ছে। যমালয়ে পৌঁছতে তোর পাকা এক বচ্ছর লাগবে।
—ওই কষ্ট আর অত্যাচারে তো আমি মরে যাব।
বড়মামা রেগে গেলেন, তোর সাধারণ বুদ্ধি বড় কম। একজন একবার মরে গেলে আবার মরতে পারে! একজন মানুষ কবার মরবে?
—বহুবার মরতে পারে।
—কে বলেছে?
—সেক্সপিয়র।
—তিনি আবার কে?
—শেকসপিয়ার।
—আগে কি বললি?
—ওটা শুদ্ধ উচ্চারণ। সেকালের পণ্ডিতরা বলতেন।
—কি বলেছেন তিনি?
—কাওয়ার্ডস ডাই মেনি টাইমস বিফোর দেয়ার ডেথ।
—আরে ধর ওটা লিটারেচার। আমরা যেমন বলি, ভয়ে মরছে। আমরা সেই মৃত্যুর কথা বলছি, যে মৃত্যুতে ডেথ সার্টিফিকেট লাগে। দাঁড়া গলাটা ভিজিয়ে নি। —আবার আধ গেলাস লিকার নেমে গেল। আকাশের আলো কমছে। পাখিরা দল বেঁধে বাড়ি ফিরছে। বড়মামা চারপাশে তাকিয়ে দেখে নিলেন। বললেন, একটু ভয় ভয় করছে।
—কেন, ভয় ভয় করছে কেন?
—নরকে যাচ্ছি যে!
—সে কি এই তো বললেন বৈকুণ্ঠে যাবেন!
—বুঝিস না কেন? বর্ণনা দেওয়া মানে একরকমের যাওয়া। যাক, তোর জন্যে যদি যেতে হয় যাব।
—আমার একটা প্রশ্ন আছে, যমদূতদেরও তো কষ্ট হবে, আমাকে ওইভাবে ওই পথ দিয়ে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে?
না, হবে না। মাথার যে অংশটায় কষ্টের বোধ থাকে যমদূতদের মাথায় সেই অংশটা নেই। অনেকটা রোবটের মতো। যমরাজের আদেশ আর আদেশপালন ছাড়া তারা আর কিছু জানে না। বাজে প্রশ্ন না করে মন দিয়ে শোন। একবছরের পথ। ধর, তুই আজ মরলি, ১ সেপ্টেম্বর, ২০০৪, তুই যমালয়ে পৌঁছবি ১ সেপ্টেম্বর ২০০৫। সারাটা পথ তোকে পেটাতে, পেটাতে নিয়ে যাবে। নো রেস্ট। তোকে একটা নতুন দেহ দেওয়া হবে, সেই দেহের নাম ‘যাতনা দেহ’। যত যন্ত্রণাই দিক, সে-দেহ মরবে না। সব সহ্য করবে।
—এইবার যেতে যেতে, খেতে খেতে, তুমি গিয়ে হাজির হলে যমরাজের প্রাসাদের সামনে। অর্থাৎ গেটে।
—আমার এটা প্রশ্ন আছে। জায়গাটা কোথায়? ইউরোপে, আমেরিকায়, আফ্রিকায়? পথটা শুরু হচ্ছে কোথা থেকে? আমাদের শ্মশানের পশ্চিমে গঙ্গা। পুব দিকে পঞ্চাননতলা। পশ্চিমে শুধু গঙ্গা নয় পাথরঘাটা। উত্তরে কলেজপাড়া। দক্ষিণে চটকল। টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে। সে যাক; কিন্তু পথটা কোথায়? আকাশ দিয়ে প্লেনে করে নিয়ে যাচ্ছে, যম এয়ারওয়েজ, অদৃশ্য প্লেন, তাহলেও হত। এ একটা বিতিকিচ্ছিরি পথ। তার মুখটা ঠিক কোন জায়গায়। বি টি রোড, কল্যাণী রোড, সব রোডই দেখা যায়, যম অ্যাভিনিউ কেউ দেখেছে!
বড়মামা কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন, শোন, এই জায়গাটা খুব পরিষ্কার নয়। আমিও ঠিক ধরতে পারিনি। হঠাৎ একটা লোক মরার সঙ্গে সঙ্গে দেখছে, তার একটা দেহ রয়েছে, সেই দেহের নাম ‘যাতনা দেহ’। এইবার একটা ভীষণ পথ দিয়ে ভীষণ আকৃতির একটা লোক তাকে টানতে টানতে, পেটাতে পেটাতে নিয়ে যাচ্ছে। কোথায় সেই পথ? আমার কি মনে হয় জানিস, ওটা আর একটা ডাইমেনসানে আছে, যেটাকে বলে ফোর্থ ডাইমেনসান। যেমন আমরা কেউই আমাদের পিঠটা দেখতে পাই না। নিজের মুখ দেখতে হলে একটা আয়না চাই। ওই আয়নাটা হল ফোর্থ ডাইমেনসান। এলিস-ইন-দি-ওয়ান্ডারল্যান্ড পড়েছিস? এলিস একটা গর্তের ভেতর দিয়ে পড়ে গেল, সেখানে আর একটা জগৎ, আর একটা সময়। এই ব্যাপারটা নিয়ে আর একদিন বসা যাবে, আগে তোকে নরকে ঢুকিয়ে দি।
—যমপুরী বিউটিফুল জায়গা। লোহার বাগান; মানে গাছপালা সব লোহা দিয়ে তৈরি। খাঁড়ার মতো, ছুরির মতো সব পাতা। গাছের একটা ডাল ভাঙা মানে তোর হাতে একটা লোহার রড এল। গাছে গাছে লোহার ফুল। লোহার কুঁড়ি। গাছে গাছে লোহার বল, লোহার জামরুল, লোহার পেয়ারা। ভেতরে স্টিলের বিচি। লোহাচুরের সন্দেশ, রসগোল্লা। জল চাইলে এক গেলাস পেট্রল এনে দেবে। গায়ে মোবিল মেখে ডিজেল দিয়ে স্নান করে। সিরিশ কাগজ দিয়ে গা ঘষে। সব মানুষ সেখানে লোহার।
—আপনি মানুষ বলছেন কেন? মানুষ তো পৃথিবীর জীব!
—তাহলে কি বলব?
—’যমানুষ বলা যেতে পারে।’
—বেশ! তাই হোক। সেখানে কিরকম জানিস, দুজনে ধাক্কা লেগে গেলে ঠং করে শব্দ হয়। লোহার গাছে লোহার দাঁড়কাক ক্রাং, ক্রাং করে ডাকে। স্প্রিং-এর সঙ্গে টিনের ফণা তুলে ঘুরে বেড়ায়। লোহার আরশোলা অনবরত গায়ে এসে পড়ে। লোহার ইঁদুর, লোহার ছুঁচো সবই ঘুরছে। যমরাজের ড্যাঙ্গোসের ছবি দেখেছিস! ডাণ্ডার মাথায় বিরাট একটা গোল, খোঁপ খোঁপ কাঁটা। ওটা হল যমরাজের বাগানের লোহার কাঁঠাল। গাছ থেকে যে লোহার মরচে ঝরেঝরে পড়ে, সেইগুলো হয়ে যায় লন। আর মাছ ধরা বঁড়শিরা সব মশা। যমরাজের ঠোঁট দুটো স্টেনলেস স্টিলের। লোহার দাঁত। সেই দাঁত দিয়ে কড়মড় করে লোহার রুইমাছের মুড়ো চিবোন। এইবার যমপুরীর বাইরে একটা পেরেকের মাঠ আছে, সেইখানে তোমাকে থেবড়ে বসিয়ে রাখা হবে। ভেতরে চলবে বিচার। রায় বেরোবে। কোন নরকে তোমাকে ফেলা হবে।
—কত রকমের নরক আছে?
—রৌরব নরকের নাম বহুবার শুনেছিস। এরপর আছে মহারৌরব। তারপর অতি শীত, নিকন্তক, তপকুম্ভ, কুম্ভীপাক, অন্ধকূপ। আরও অনেক নরক আছে। ধর তোকে তপকুম্ভ নরকে ফেলা হল। বিশাল জালা, ভেতরে টগবগ করে ফুটছে লোহাচুর মিশ্রিত তেল। তোর মাথাটা থাকবে নীচের দিকে, পা দুটো ওপর দিকে। পা দুটো চেন দিয়ে বাঁধা। সেটা আবার অটোমেটিক কপিকলে ফিট করা। নির্দিষ্ট সময় অনুসারে তোকে টেনে ওপর দিকে তুলবে আবার ঝপাং করে ফেলে দেবে। তুমি চিমিচিমি শব্দে ভর্জিত হতে থাকবে। হাজার বছর, তিন হাজার বছর। কে তোকে বলেছে নরক ভালো জায়গা! নরকের কথা ভাবলেই আমার শরীর শিউরে ওঠে।
শেষ চাটুকু খেয়ে বড়মামা বললেন, আমরা নরকে যাব কেন? আমরা বেকুণ্ঠে যাব। সেখানে ভগবান আছেন। চিরবসন্ত। মন্দাকিনীর নীলজলে সাদা সাদা হাঁস। নারদমুনি বীণা বাজাতে বাজাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কামধেনুর তলায় বালতি ধরলেই একবালতি খাঁটি দুধ। সন্দেশের পাহাড়, আইসক্রিমের পাহাড়। চতুর্দিকে পারিজাত ফুল। ‘বার্ডস অফ প্যারাডাইস’ এ গাছ থেকে ও গাছে উড়ে যাচ্ছে। সে যে কি জায়গা! আমরা বৈকুণ্ঠে যাব।
মাসিমা ঠিক এই মুহূর্তে প্রবেশ করলেন, কোথায় যাবে?
বড়মামা উঠে দাঁড়িয়েছেন, বৈকুণ্ঠ। একেবারে ভগবানের পাশে।
—চোর কখনো বৈকুণ্ঠে যেতে পারে না।
—ঠিক, ঠিক। সেখানে সাধু-সজ্জনরাই যায়।
—ফ্রিজ থেকে অত বড় চকোলেটটা কে বের করে খেয়েছে?
—ও কোনও ছোটদের কাজ।
—সেই ছোট হলে তুমি, এ তোমার কাজ।
বড়মামা হা হা করে হেসে বললেন, ছোট হতে পারি, ছোটলোক তো নই। স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অমন চুরি কত বার করেছেন!