বে-আব্রু

বে-আব্রু

আজকাল আর দেখা যায় না—তিরিশ বছর আগেও গােলােকধাম নামে একটা খেলা ছিল। কালীঘাট, শােভাবাজার কিংবা হাতিবাগানের মতাে পুরােনাে বনেদি বাজারের দশকর্মা ভাণ্ডারে চার ছ-আনায় এ-খেলার কোট পাওয়া যেত। সাধারণ একখানা কাগজে সাপ-লুডাের মতাে অনেক ঘর। শৌণ্ডিকালয়, অমৃতলােক, রসাতল—আরও কীসব ঘর ছিল। কড়ি দিয়ে খেলতে হত। উপুড়-চিতে ভাগ্য ঠিক হয়ে যেত। শেষ ঘর ছিল স্বর্গ। তার খানিক আগেই রসাতল।

 তিরিশ বছর আগে কাটা পােনা এক সের পাওয়া যেত দু-টাকায়। ট্রামে উঠলে বসা যেত। সিনেমার টিকিট অমিয়কে ব্ল্যাকে কিনতে হয়নি। মাসমাইনে আড়াইশাে টাকায় সে বউ নিয়ে বাসা ভাড়া করেছে। অফিসে টিফিন সেরেছে দু-আনায়। তারপর মানুষ চাঁদে গেল। টেস্ট টিউবে মানুষের ভ্রণ জিইয়ে রেখে অজন্মা মাকে পােয়াতি করা হল। পি. ডবলু. ডি-র ফার্স্ট ক্লাস কন্ট্রাক্টর অমিয় ঘােষাল হাতঘড়িতে দেখল, সাড়ে চারটে বাজে। জানুয়ারির কুয়াশা কাটিয়ে সূর্য উঠতে এখনাে দু-ঘণ্টা। রােদ উঠলেই তাে সরকারি ভাবে ভাের হয়ে।

সে তার মর্নিং ওয়াকের পােশাক পরে পাশের ঘরে উঁকি দিল। অণিমা অঘােরে ঘুমােচ্ছে। উঠবে সেই আটটায়। অণিমার বিশ্রাম দরকার। এক্সরে বলে, পেছন দিকটায় মেরুদণ্ডের নীচে একখানা হাড়ে ঘুণ ধরে হাড়খানা একটু বেঁকে ছােটো হয়ে যাচ্ছে। দিদিমা হবার পর অণিমা আর অপারেশনে রাজি হয়নি। পরিষ্কার বলেছে, এখন আর অপারেশন করে কী হবে? কদ্দিনই বা আছি! তার ভেতর আর কাটাকাটি করে গণ্ডগােল পাকিয়ে লাভ নেই। বাকি জীবনটা সাবধানে কাটালেই চলবে।

অণিমার মাটিতে বসা বারণ। তাহলে দুই হাড়ে ঠোকাঠুকি হয়ে বিষম যন্ত্রণা। একবার হয়েছিল। তাই অমিয় ঘােষাল তার বিবাহিত বউয়ের জন্য লাগােয়া বাথরুমে ওয়াটার হিটার বসিয়েছে। বসিয়েছে আরও অনেক কিছু। যাতে ব্যথা যেন আর না বাড়ে।

 রবারের জুতাে পায়ে নীচে একতলায় নেমে যাবার আগে অণিমার ঘরখানিকে সে মনে মনে নাম দিল, রােগশােক। কলকাতার শেষ রাতের রাস্তায় মাংকি ক্যাপ মাথায় একজন ফার্স্ট ক্লাস কন্ট্রাক্টর যতটা তাড়াতাড়ি হাঁটতে পারে, অমিয় সেইভাবেই হাঁটছিল। কেননা, তাকে দিনের বেলায় যেসব অঙ্ক কষতে হয়—তার অনেকগুলােই কোটি টাকার ওপর। সেইসব অঙ্কের ভেতর টন টন সিমেন্ট, লােহা, মজুরি স্বচ্ছন্দে সাঁতার দিতে পারে।

তার হাঁটার রাস্তাটা কারখানা পাড়ার ভেতর দিয়ে গঙ্গায় পড়েছে। সেখানে ভােররাতেই কঁাচা কয়লার উনুনগুলাে ধরে উঠেছে। সরু ড্রেনে ময়লা থিকথিকে জল। কারখানার লােকজনের কোয়ার্টার। অমিয় ঘােষাল জায়গাটার নাম দিল—ঘাের সংসার।

পথে আরেকটা দোকান পড়ল। বাইরে থেকে তালা বন্ধ। ক-দিন আগে এই দোকানেই শেষ রাতে ডাকাতি হয়। অমিয়র মাথায় ঘরখানার নাম—তস্করী।

এইভাবে হাঁটতে হাঁটতে গঙ্গার তীরে এসে দেখল, কুয়াশায় গঙ্গা দেখা যাচ্ছে না। জলে নেমে যাওয়া সিঁড়িগুলাে আবছা। তাতে আবছা মানুষজন। স্নানে নামছে। কেউ-বা নেমে গিয়ে কোমরজলে মন্ত্র আওড়াচ্ছে। পাশেই সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ঘণ্টাধ্বনি। সেখানে মেয়েদের আলাদা ঘাটের নাম—সর্বমঙ্গলা ঘাট। হঠাৎ তার নজরে পড়ল, পুরুষদের ঘাটের সিড়ি দিয়ে ঘাগু জ্ঞানার্থীর মতােই খাটালের চারটে মােষ ধাপে ধাপে পা দিয়ে নেমে গেল। পাশাপাশি মানুষজনও একই সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে গিয়ে স্নান করছে। জায়গাটার নাম ঠিক করে ফেলল অমিয় ঘােষাল—মুক্তি।

 এইভাবেই একদিন ঠিকেদারির পেমেন্ট আটকে গেলে সে-অফিসের নাম অমিয় দিয়ে ফেলল—রসাতল। শীতের মুখে মুখে একটা রাস্তা তৈরির কাজ

রে রাস্তাটা অমিয় মিলিটারির হাতে সময় হওয়ার আগেই তুলে দিতে পেরে খুশিতে রাস্তাটার নাম রাখল-নন্দনকানন! এইভাবেই একদিন নিজের বাবাকে ডিলিরিয়ামে ভুল বকতে দেখে অমিয় ঘােষালের মুখ দিয়ে একটা কথা বেরিয়ে এল-রঙ্গালয়। বাকি ছিল শৌণ্ডিকালয়। তাও বাইরের মূর্তির জায়গা থেকে বাড়িতে তুলে নিয়ে এল অমিয়। নিজেই ঢালে। নিজেই খায়। বয়সের বাড়তি মেদে বিকেলের ছায়া পড়লে মুখ-চোখ বিষাদে থমথম করে। মনে হয়—এ সংসারে কী করলাম? খেলা ঘুটি ছাড়া কিছু নয়। উপুড়-চিত হয়ে রােগশােক, ঘাের সংসার, তস্করী, মুক্তি, রসাতল, নন্দনকানন, রঙ্গালয় আর শৌণ্ডিকালয় ঘুরে ঘুরেই জীবন কাটিয়ে দিলাম। আমি তাে এ জীবনের পারানির কড়ি বই কিছু নই।

কলকাতা থেমে ছিল না। তার ভেতরই নিজের বৈঠকখানায় একা বসে অমিয় ঘােষাল এইসব ভেবে দেখছিল। বিষয় অনুযায়ী মনে মনে ওজন করে দেখছিল। শৈশবে কত জিনিসে লােভ ছিল। যৌবনে সে-সব সুযােগ এলেও তুচ্ছ করে ছুঁয়েও দেখেনি অমিয়। তার সবই স্বােপার্জিত। তাই সে অ-ঋণী লােক। অ-ঋণী লােকের কোনাে বন্ধু হয় না। কেননা সে তাে কারাের কাছে দায়বদ্ধ নয়। বরং অমিয় এক বাক্স ভালােবাসা নিয়ে বসে থাকলেও তাকেই সবাই ভুল বােঝে আগে।

পি. ডবলু. ডি রােড়সের এক ইঞ্জিনিয়ারকে সে বােঝাতে গিয়েছিল, দেখুন আমায় ভুল বুঝবেন না।

সেই ইঞ্জিনিয়ার বুঝতে চাইল না। সে আশা করেছিল, ঘুষ দেবার সময় অমিয় ঘােষাল খানিকটা অবনত হবে।

কিন্তু অমিয় অবনত হয় কী করে? সে তাে গােলােকধাম কোটের অমােঘ। ঘরগুলােতে মনে মনে ঘােরে। তার এইসব ঘােরাফেরা একদম অবধারিত। টেন্ডার জমা দেবে। জমা দেবে গ্যারান্টি মানি। সময়মতাে কাজ তুলে দিয়ে বিল সেকশন ঘুষে ভাসিয়ে দেবে। পেমেন্ট অবধারিত। না হলে সে জায়গাটা

অমিয় ঘােষালের কাছে—রসাতল। তবে সে রসাতলে পড়ে কদাচ। তার তৈরি ব্রিজ কখনাে ধসে পড়েনি। তার বানানাে রাস্তা কখনাে বসে যায়নি।

এইবার আশা করা যায় গল্পটা বললে কারাের বুঝতে অসুবিধা হবে না। চুয়ান্ন বছর বয়সে একটা বড়াে পেমেন্ট পাবার পর অমিয় ঘােষাল তার বউ অণিমা ঘােষালকে নিয়ে একা বেড়াতে বেরােল। বেশিদূর সে যায় না। অযােধ্যা পাহাড়ে নিজের একটা সুন্দর বাড়ি বানানাে আছে। কম্পাউন্ডের ভেতর ভালাে ভালাে ফলের গাছ। পাশেই দুধেল গাইয়ের বাথান। নিজস্ব জেনারেটর। বাবুর্চি। নিজস্ব পাহারাদার বাহিনী।

এর আগে সে আর অণিমা নাতি-নাতনি, বউমা-মেয়ে নিয়ে বেরিয়ে দেখেছে। তখন নিজের বউয়ের সঙ্গে একটা কথা বলা হয় না।

এবার হানিমুনে আসার মতাে এসেছে দুজনে। তার বিয়ের প্রায় তিরিশ-চল্লিশ বছর পরে। অণিমারই এখন সাতচল্লিশ। এক জায়গায় খানিকক্ষণ বসে থাকলে ঘুমিয়ে পড়ে। বাড়ি, ঘরদোর, গাছপালা, গাড়ি, জামাকাপড়, খাবার-দাবার কোনােটাতেই অণিমার কোনাে আকর্ষণ নেই। বড়াে একটা ঘরে ঢুকলে সে আগে দেখে নেয়—কোথায় বসে খানিকক্ষণ চুলে নেওয়া যায়। অমিয় জিজ্ঞাসা করলে বলে, তুমিই তাে কথা বলে নিচ্ছিলে। তাই আমি চোখ বুজে এনার্জি স্টোর করছিলাম।

অ্যাতাে এনার্জি দিয়ে কী করবে?

যদি পরে কম পড়ে।

পরে আর সময়টা কোথায় অণু ?

কেন? কত সময় পড়ে থাকবে জানাে?

এইসব কথায় না গিয়ে অমিয় সিধে বাই-রােডে অণিমাকে নিয়ে অযােধ্যা পাহাড়ের বাড়িতে এসে উঠল। বেলা চারটে। বাড়িটায় শহরের সব ব্যবস্থার সঙ্গে গাঁয়ের সব সুবিধা মেলানাে। গান থেকে খবর শােনা—শুয়ে শুয়ে বই পড়ার স্টাডি, ছােটো মােয়ার চালাতে চালাতে লনের ঘাস কাটা আর ব্যায়াম একই সঙ্গে উপভােগের ব্যবস্থা—কী নেই অমিয় ঘােষালের ওখানে!

সুগন্ধী চা। বসার ঘরে রঙ মিলিয়ে ভাসে টাটকা ফুল। চা খেয়ে অণিমা একজন সম্পন্ন ঘরনির মতােই সােফায় গা এলিয়ে দিল। একটা পান খেলে ভালাে হত। মুখটা কেমন লাগছে—

পান এসে গেল! সুন্দর শাড়ির ওপর সুন্দর কাজ করা কাশ্মীরী পশমিনা। গােরুগুলাে সুন্দর ডাক তুলে দোহালদের ডাকছে। কেননা, দুধে বাঁট ভারি হয়ে আঁটো হয়ে ওঠার জোগাড়। সবই দেখতে পাচ্ছিল অণিমা। গােরু এবং স্বামী-দুই তরফই স্বাস্থ্যে ফেটে পড়ছে।

বাবুর্চি জানতে চাইল কী রান্না হবে।

দরকারি কথাগুলাে অণিমাই বলে দিল। স্বামী-স্ত্রী অনেকদিন পরে এ বাড়ির বারান্দায় বসে চাঁদ উঠতে দেখল। টিনের ম্যাংগাে পাল্প ফ্রিজের বরফ টুকরাে মিশিয়ে দুজনেই একটু একটু করে খেল। ওয়ালনাট কাঠের একটা ছােটো তেপায়ায় পা তুলে দিয়ে বিরাট গদির ভেতর অণিমা ঢুলতে লাগল এক সময়।

একটু হাঁটবে দুজনে? হাঁটার হয় তুমি হেঁটে এসাে। আমি উঠচি নে— একটা গান করাে অণু।

এই হেঁড়ে গলায় এখন গান করা যায় না। ক্যাসেট রয়েছে—যা ইচ্ছে হয় শােন।

তােমার গান অনেক দিন শুনিনি। আরেকদিন শােনাব। তাহলে হেঁটে আসি চল। খিদে হবে।

আমি খিদে চাই না। কী চাও তুমি? ছেলেমেয়েদের আনলে ভালাে লাগত তােমার?

 ওরা তাে এখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। আর অনেকবার তাে এসেছে একসঙ্গে। ওদের মতাে করে ওদের সংসার করতে দাও।

আমি তাে নাক গলাই না অণু। আমি এতদিন শুধু কাজ করেছি। এখন আমি আমার জীবনটা যাপন করতে চাই।

সেটা কীরকম? দ্যাখাে—মা-বাবা নেই যে তাদের কাছে গিয়ে শৈশবের স্বাদ পাব।

এই বয়সে শৈশব? হাসালে তুমি। কোন মা এমন ধেড়ে ছেলে নিয়ে ফিরে শৈশবের হাট বসাবে!

ফিরে বসানাের কথা নয় অণু। মায়ের কাছে বসে সে-সব কথা মনে পড়াই তাে অনেকটা। ভাইবােনেরা যে-যার মতাে ব্যস্ত। তারাও অ্যাতােদিনে আমার মতােই ডালে পালায় ছড়ানাে এক একটি ইনস্টিটিউশন। তাই স্বামী-স্ত্রী হিসেবে তাে আমরা আবার আমাদের একটু একটু করে বুঝতে পারব অণু।।

এই তিরিশ বছরেও বুঝতে পারােনি? ঘটনাগুলাে ঘটেছে। কিন্তু বােঝার আগেই তাে অ্যাকশনে নেমে পড়েছি। সে টেন্ডার পাওয়াই বল—আর ছেলে হওয়াই বল।

অ—বলে চুপ করে গেল অণিমা ঘােষাল। কচি মুর্গির স্টু, পেঁপের সুস্বাদু রান্না আর খানিকটা আপেল জুস খেয়ে অণিমা উঠে দাঁড়াল। অমিয়র জন্যে ভাজা মুর্গি, বড়াে রুইয়ের গাদা দিয়ে ঝােল, সরু চালের ভাত চাপাটির সঙ্গে। অণিমা মুখ ধুয়ে টেবিলে এসে বসল। অমিয়র তখনাে শেষ হয়নি। সে বলল, ভাবছি তুমি আর আমি এখানেই থেকে যাব।

তিন চার দিনের বেশি এখানে আমি থাকতে পারব না। এখানেই আমরা থাকব। শুধু তুমি আর আমি।

তুমি থাক—আমি পারব না। কলকাতার বাতাসের গন্ধ না শুকলে আমার বুক শুকিয়ে যায়।

ধরাে অযােধ্যা পাহাড়ই যদি আমাদের বাড়ি হত—তাহলে? তাহলে তােমার সঙ্গে আমার বিয়ে বাবা দিতেনই না—

এ-কথা শুনে অমিয় চুপ করে গেল। নিজের বাড়িতেও অণিমার এই আলগা আলগা ভাব তার একদম ভালাে লাগল না।

জায়গাটা নির্জন। দুরে কারা জঙ্গল পােড়াচ্ছে। তার ধ্যাবড়া ধ্যাবড়া আলাে। হাতের ম্যাগাজিনটা মেঝের কার্পেটে পড়ে যেতেই অণিমা উঠে দাঁড়াল। নাঃ! যাই—ঘুমিয়ে পড়ি—

মাস্টার বেডরুমে বিরাট ডবল বেডের কাছাকাছি পুরু গদির সােফায় দুজনে বসে হালকা ম্যাগাজিনের পাতা ওলটাচ্ছিল। এর ভেতরে উঠে দাঁড়িয়ে অণিমার ওই কথা। তারপরই অণিমা বড়াে পালঙ্কের একটা মাথার বালিশ তুলে নিয়ে ঘরের এক কোণে সিঙ্গল বেডের দিকে হাঁটতে লাগল।

শােনাে।।

অণিমা ঘরের মাঝখানটায় ঘুরে দাঁড়াল।। আমরা কিন্তু অনেকদিন একসঙ্গে শুই না অণু— আর কোনােদিন আমরা একসঙ্গে শােব না। কারণ? আমার তাে খুব ইচ্ছা রয়েছে এখনাে। পুরুষদের থাকে। আমার নেই– তােমার বয়েসেই আমেরিকার মেয়েরা একদম খেপে ওঠে।

আমার বয়সে কেউ মেয়ে থাকে নাকি! তােমার যা ইচ্ছে হয় করতে পার। যেখানে ইচ্ছে হয় যাও না—

কী বলছ অণু। এই বয়সে আমি অন্য জায়গায় যাব? পুরুষরা সব পারে।

অমিয় ঘােষাল আর কিছু বলল না। নিজের বউকে সিঙ্গল বেড়ে গিয়ে শুয়ে পড়তে দেখল। বড়াে আলাে নিভিয়ে দিয়ে সে রিডিং ল্যাম্প জ্বেলে নিল। ফলে ছােটো আলােয় তার নিজের এলাকাও ছােটো হয়ে গেল। হাতের ম্যাগাজিন মেঝেতে পড়ে যেতে দিয়ে সে মনে করার চেষ্টা করল—সেই চার-ছ-আনার গােলকধাম কোটে আরও কী একটা ঘর ছিল যেন—

কুপল্লী ? না না। তা কী করে হয়! কিংবা কীসের আলয় যেন? | একটু একটু করে নির্জনে অমিয় ঘােষালের মনে পড়তে লাগল। একটা ঘরের নাম ছিল—শিবালয়। সেখান থেকে দানের ভুলে গােলকধাম খেলার ভাষায় বিরাট এক পতন ঘটত—সিধে বেশ্যালয়। আবার সেখান থেকেই উত্থান হত আরেক ঘরে—অমৃতালয়।

সবই ঘরের খেলা! রােগশােক, ঘাের সংসার, তস্করী, মুক্তি—কত কী? অমিয় ঘােষাল বুঝতে পারল, পতনের ঘর এমন পষ্টাপষ্টি থাকার দরুনই গেরস্ত বাঙালিরা অমন পপুলার খেলাটা বাতিল করে দিয়েছে।

আসলে কোনাে আড়াল ছিল না। ছিল না কোনাে আব্রু।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *