বেজি
অনেকদিনের এই ডেস্কো–
আনমনা কলমের কালিপড়া ফ্রেস্কো
দিয়েছে বিস্তর দাগ ভুতূড়ে রেখার।
যমজ সোদর ওরা যে সব লেখার–
ছাপার লাইনে পেল ভদ্রবেশে ঠাঁই,
তাদের স্মরণে এরা নাই।
অক্সফোর্ড ডিক্সনারি, পদকল্পতরু,
ইংরেজ মেয়ের লেখা “সাহারার মরু’
ভ্রমণের বই, ছবি আঁকা,
এগুলোর একপাশে চা রয়েছে ঢাকা
পেয়ালায় মডার্ন্ রিভিয়ুতে চাপা।
পড়ে আছে সদ্যছাপা
প্রুফগুলো কুঁড়েমির উপেক্ষায়।
বেলা যায়,
ঘড়িতে বেজেছে সাড়ে পাঁচ,
বৈকালী ছায়ার নাচ
মেঝেতে হয়েছে শুরু, বাতাসে পর্দায় লেগে দোলা।
খাতাখানি আছে খোলা।–
আধঘণ্টা ভেবে মরি,
প্যান্থীজ্ম্ শব্দটাকে বাংলায় কী করি।
পোষা বেজি হেনকালে দ্রুতগতি এখানে সেখানে
টেবিল চৌকির নীচে ঘুরে গেল কিসের সন্ধানে–
দুই চক্ষু ঔৎসুক্যের দীপ্তিজলা,
তাড়াতাড়ি দেখে গেল আলমারির তলা
দামি দ্রব্য যদি কিছু থাকে;
ঘ্রাণ কিছু মিলিল না তীক্ষ্ন নাকে
ঈপ্সিত বস্তুর। ঘুরে ফিরে অবজ্ঞায় গেল চলে,
এ ঘরে সকলি ব্যর্থ আরসুলার খোঁজ নেই ব’লে।
আমার কঠিন চিন্তা এই,
প্যান্থীজ্ম্ শব্দটার বাংলা বুঝি নেই।
শান্তিনিকেতন, ৪ অক্টোবর, ১৯৩৮