বুকের ওপরে বাঘ

বুকের ওপরে বাঘ

তারপর বাঘটা আমার বুকের ওপর দুটো থাবা রেখে দাঁড়িয়ে পড়ল। আমার মুখের ঠিক সামনেই বাঘের বিশাল মুখখানা, রয়াল গুলির মতন চোখ দুটো জ্বলজ্বল করছে…

আমি যদি এরকম লিখি, কেউ বিশ্বাস করবে? সবাই বলবে, ধুত, গাঁজাখুরি গল্প। কিংবা যদি সত্যি হয়, তাহলে তুমি বেঁচে আছ কী করে? বাঘ তোমার বুকের ওপর থাবা তুলে দাঁড়াল, অথচ তোমাকে কামড়াল না, এ আবার হয় নাকি? সেই বাঘটা কী মহাত্মা গান্ধীর শিষ্য?

কিন্তু এটা গল্পও নয়, মিথ্যে কথাও নয়। খাঁটি সত্যি। এবং আমি যে বেঁচে আছি, সে-কথাও ঠিক। ভূত হয়ে তো আর এসব লিখছি না। আমার গায়ে চিমটি কাটলে ব্যথা লাগে, হোঁচট খেলে উঃ করি, খুব অন্ধকারের মধ্যে বেশিক্ষণ একা থাকলে গা ছমছম করে, সুতরাং আমি মানুষ হয়েই বেঁচে আছি।

খাঁচার বাঘ কিংবা সার্কাসের বাঘ নয়, আমি বেশ কয়েকবার জঙ্গলের বাঘ দেখেছি। সুন্দরবনে, উত্তরবঙ্গের গোরুমারা ফরেস্টে, মধ্যপ্রদেশের বস্তার জেলায়। আফ্রিকায় দেখেছি সিংহ আর গন্ডার, সেখানে বাঘ নেই। অবশ্য সবই দেখেছি কিছুটা দূর থেকে। শুধু একবারই বাঘ এসেছিল খুব কাছাকাছি, একেবারে আমার বুকের ওপর থাবা তুলে দিয়েছিল। আমি আমার গল্পের কাকাবাবুর মতন শক্তিশালী বা ভাগ্যবানও নই, তবু বেঁচে গেলাম কী করে?

তাহলে গোড়া থেকে সব খুলে বলতে হয়।

আমি বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে প্রায় এখানে-সেখানে বেড়াতে যাই। আগে থেকে কিছু ঠিক থাকে না, হঠাৎ ঝোঁক উঠল আর বেরিয়ে পড়লাম। মাঝে মাঝে যেন জঙ্গল কিংবা পাহাড় আমাকে ডাকে। শহরের এত ভিড় আর ধুলো-ধোঁয়া আর কাজের মধ্যে ব্যস্ত থেকে হঠাৎ এক-এক সময় চোখের সামনে একটা দৃশ্য ভেসে ওঠে। ঘন বনের মধ্যে তরতরিয়ে ছুটে যাচ্ছে একটা চঞ্চলা নদী, বড়ো পাথরের চাঁই, অসংখ্য প্রজাপতি ওড়াউড়ি করছে… সেই দৃশ্যটা দেখতে দেখতে মনে হয় এক্ষুনি ওরকম জায়গায় ছুটে যেতে হবে।

সেবারে আমরা গিয়েছিলাম ঝাড়গ্রাম। ঝাড়গ্রাম বেশ সুন্দর জায়গা, তবে এমন কিছু দূর নয়। সেখানে এক বন্ধুর বাড়িতে বসে আড্ডা দিতে দিতে ঠিক হল, সিমলিপাল জঙ্গলে ঘুরে এলে বেশ হয়।

একটা গাড়ি জোগাড় করে বেরিয়ে পড়া হল। সঙ্গীদের মধ্যে রয়েছেন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় এবং একজন বড়ো সরকারি অফিসার ও কবি পার্থসারথি চৌধুরী এবং আরও কয়েকজন। আমাদের যাওয়ার সময় কোনো তাড়াহুড়ো থাকে না, রাস্তার ধারে কোনো আকর্ষক জায়গা দেখলে নেমে পড়ি। হোটেল-রেস্তরাঁয় না খেয়ে, কিছু খাবারদাবার কিনে নিয়ে কোনো জঙ্গলে ঢুকে পিকনিক করি। সেবারে আদিবাসীদের একটা চমৎকার হাটে আমরা অনেক সময় কাটালাম।

সন্ধের একটু পরে আমরা পৌঁছলাম যোশিপুর ডাকবাংলোয়। এই বাংলোটা পাহাড়ের নীচের দিকে, এরপর থেকেই জঙ্গলের শুরু।

আমার যে-গাড়িতে এসেছি, সে-গাড়িটা পাহাড়ে ওঠার পক্ষে খুব সুবিধের নয়। যোশিপুর বাংলোতে জিপগাড়ি ভাড়া পাওয়া যায়। আমাদের গাড়িটা ওখানে রেখে জিপ নিয়ে জঙ্গলে যেতে হবে। আমরা ঠিক করলাম, রাত্তিরটা ওই বাংলোয় কাটিয়ে খুব ভোর-ভোর যাত্রা করব পাহাড়ের দিকে। ভোরের সময় জঙ্গলের পথে অনেক হরিণ, হাতি, এমনকী বাঘও দেখতে পাওয়া যেতে পারে।

যোশিপুর বাংলোটি বেশ সুন্দর। গেট দিয়ে ঢোকার পর অনেকখানি বাগান মতন, তারপর বাংলো বাড়িটির সামনের দিকে একটা বেশ বড়ো গোলমতন ঢাকা বারান্দা, সেখানে একসঙ্গে অনেক লোক বসতে পারে। ওখানকার জেলার ফরেস্ট অফিসার, যাঁদের বলে ডি এফ ও, তাঁর নাম সরোজ চৌধুরী, তিনি এই বাংলোতেই থাকেন।

আমাদের দলের পার্থ চৌধুরী আর শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওই সরোজবাবুর আগে থেকেই খানিকটা আলাপ-পরিচয় ছিল। তিনি আমাদের খাতির করে বসালেন। আমাদের জন্য চায়ের ব্যবস্থা হল।

সবেমাত্র চায়ের কাপ নিয়ে চুমুক দিয়েছি, এমন সময় একটা বাঘের হুংকার শুনতে পেলাম।

চমকে তাকিয়ে দেখি, বেশ কাছেই, বাগানে একটা বাঘ শুয়ে আছে। ছোটোখাটো বাঘ নয়, মস্ত বড়ো বাঘ, এত বড়ো বাঘ জঙ্গলেও সচরাচর দেখা যায় না।

আমাদের বুক ধড়াস ধড়াস করতে লাগল। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে বাঘটা এখানে ঢুকে পড়েছে নাকি?

সরোজবাবু বললেন, ‘ভয় পাবেন না, ও আমার পোষা বাঘ!’

শক্তি চোখ বড়ো-বড়ো করে বলল, ‘ওরে বাবা, সেটা এত বড়ো হয়ে গেছে নাকি?’

পার্থ বলল, ‘এই বাঘটার কথা আগে শুনেছি, এটা এখানে খোলা থাকে নাকি? খাঁচায় থাকে না?’

এই বাঘটার অনেক ইতিহাস-ভূগোল আছে।

এই অঞ্চলে খৈরি নামে আছে একটা ছোট্ট নদী। সরোজবাবু একদিন বনের পথে যেতে যেতে নদীর ধারে দেখতে পান একটি বাঘের বাচ্চা খেলা করছে একা একা। বাচ্চা বাঘকে ফুটফুটে বেড়ালের মতনই সুন্দর দেখায়। কাছাকাছি মা-বাঘিনী কিংবা বাবা-বাঘ নেই দেখে সরোজবাবু সেই বাচ্চাটাকে কোলে করে নিয়ে এলেন। তিনি ঠিক করলেন পুষবেন ওই বাচ্চাটাকে। নদীর নামে ওরও নাম দেওয়া হল খৈরি।

কিন্তু বাঘ তো কুকুর-বেড়ালের মতন পোষ মানে না। কুকুরের মতন বাঘের গলায় চেন বেঁধে রাখলে কিছুদিন পরে সে মরে যায়। খাঁচায় বন্দি করে রাখলেও কীরকম করুণ হয়ে যায় তাদের চেহারা। সার্কাসে যেসব বাঘ খেলা দেখায়, তাদের আফিং খাইয়ে-খাইয়ে নির্জীব করে ফেলা হয় আর ইলেকট্রিকের চাবুক মেরে-মেরে খেলা দেখাতে বাধ্য করা হয় তাদের।

সরোজবাবু বাঘটাকে পোষ মানানোর একটা পরীক্ষা করতে চাইলেন। তিনি খৈরি নামের সেই বাচ্চা বাঘটাকে চেন দিয়ে না বেঁধে কিংবা খাঁচায় বন্দি না করে খোলা রেখে দিলেন। প্রত্যেকদিন তাকে দশ কেজি করে দুধ আর মাংস খাওয়ানো হয়। বনের বাঘকে অনেক পরিশ্রম, অনেক দৌড়োদৌড়ি করে শিকার করে খেতে হয়। আর এই বাঘটা বসে বসে খাচ্ছে, তাই দু-তিন বছরের মধ্যেই সে বিরাট মোটাসোটা আর থলথলে হয়ে গেছে, সেইজন্যই বনের বাঘের চেয়েও তাকে বড়ো দেখায়।

এসব ইতিহাস-ভূগোল শুনেও আমাদের ভয় ভয় করতে লাগল, এত কাছ থেকে একটা বাঘ দেখার অভিজ্ঞতা তো আমাদের নেই। খুব বড়ো চেহারার কুকুর দেখলেও আমার ভয় হয়, সে পোষা হোক আর যাই হোক!

আমরা চা খেতে খেতে গল্প করছি আর বার বার তাকাচ্ছি বাঘটার দিকে। নীহার নামে একজন মহিলা বাঘটাকে মাংস খাইয়ে দিচ্ছে, আর পেছনে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে একজন রক্ষী। বাঘটা মাঝে মাঝে হুঁ-উ-ম, হুঁ-উ-ম শব্দ করছে। মনে হচ্ছে, যেন রোজ রোজ ওই দুধে ডোবানো মাংস খাওয়া তার পছন্দ নয়।

একসময় বাঘটা চলে এল বারান্দায়।

সরোজবাবু বললেন, ‘ও মানুষজন খুব ভালোবাসে, ঠিক যেন আড্ডা দিতে চায়!’

বাঘটা মুখ ঘুরিয়ে-ঘুরিয়ে আমাদের সবাইকে দেখল। তার লেজটা একটু একটু নড়ছে। চাপা গ-র-র গ-র-র শব্দ বেরোচ্ছে মুখ দিয়ে।

আমাদের এক বন্ধুর নাম নিমাই, সে বসে ছিল বারান্দাটার দরজার কাছে। বাঘটা কেন যেন নিমাইকে পছন্দ করে তার কাছে গিয়ে দাঁড়াল।

নিমাই কাঁপাকাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করল, ‘এ কী, এ কী, আমার কাছে আসছে কেন?’

সরোজবাবু হাসতে হাসতে বললেন, ‘ভয় পাবেন না, ভয়ের কিছু নেই!’

যাদের বাড়িতে বিরাট বিরাট পোষা কুকুর থাকে, তারাও এই কথা বলে।

বাঘটা এবার মস্ত বড়ো হাঁ করে নিমাইয়ের একটা কনুই মুখে ভরে ফেলল!

নিমাই আঁ-আঁ করে আর্তনাদ করে উঠল।

একসময় বাঘটা চলে এল বারান্দায়।

সরোজবাবু বললেন, ‘অত বড়ো চেহারা হলে কী হয়, ও তো আসলে বাচ্চা। তাই খেলা করছে।’

আমার মনে হল, দুধে-ডোবানো মাংস খেয়ে খেয়ে অরুচি ধরে গেছে বলেই বাঘটা আজ বুঝি টাটকা মাংস খেতে চাইছে। চোয়ালের একটু চাপ দিলেই নিমাইয়ের একখানা হাত শেষ হয়ে যাবে!

নিমাইয়ের মুখখানা ভয়ে সাদা হয়ে গেছে, মাথার চুলগুলো সব খাড়া। ভয় পেলে মানুষের মাথার চুল খাড়া হয়ে যায়, এ-কথা আগে শুনেছি। এই প্রথম স্বচক্ষে দেখলাম। সত্যিই, তাহলে এরকম হয়!

বাঘটা শেষপর্যন্ত নিমাইকে কামড়াল না।

ওকে ছেড়ে দিয়ে গোল হয়ে ঘুরতে লাগল সবার সামনে দিয়ে। ঘুরতে ঘুরতে থামল আমার সামনে। কেন সে আমাকে পছন্দ করল, তা কে জানে!

এরপর সে একটা অদ্ভুত কান্ড করতে লাগল। আমাকে কামড়াল না বটে, কিন্তু মুখটা তুলে আমার এক বগলের কাছে ঢুঁসো মারল দু-বার।

আমি আঁতকে উঠে বললাম, ‘এ কী! এ কী!’

সরোজবাবু বললেন, ‘ও কিচ্ছু হবে না। ও ঘামের গন্ধ ভালোবাসে। আপনারা গরমের মধ্যে খুব ঘেমে এসেছেন তো!’

আমার সারা শরীর দিয়ে তখন গলগল করে আরও ঘাম বেরোচ্ছে। যদিও জানি পোষা বাঘ, তাহলেও ভয়ে আমার বুকের রক্ত শুকিয়ে যাচ্ছে।

বাঘটা আর-একবার ঢুঁসো মারতেই আমি উঠে দাঁড়ালাম!

সরোজবাবু বলে উঠলেন, ‘দাঁড়াবেন না, দাঁড়াবেন না, দৌড়বেন না, তাহলে খুব খারাপ হবে।’

কিন্তু ততক্ষণে আমি দাঁড়িয়ে পড়েছি।

আর বাঘটাও দাঁড়িয়ে আমার বুকে দুই থাবা চেপে ধরেছে। আমার ঠিক মুখের সামনে ওর মুখ!

সরোজবাবু বললেন, ‘নড়বেন না সুনীলবাবু, আপনি ওর পিঠে হাত বুলিয়ে দিন!’

সত্যি কথা স্বাকীর করতে লজ্জা নেই। আমি তখন এত ভয় পেয়ে গেছি যে, হাত তোলারও ক্ষমতা নেই। সারা শরীর কাঁপছে। নিমাইয়ের মতন আমারও মাথার চুল খাড়া হয়ে গিয়েছিল কি না কে জানে!

একটা কথাই তখন আমার মনে হচ্ছে। আমি যদি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাই, তাহলে বাঘটাও আমার ওপর পড়বে। ও যদি আমাকে নাও কামড়ায়, ওর অত বড়ো শরীরের চাপেই আমি মরে যেতে পারি।

কত মুহূর্ত কাটল জানি না! আর একটুক্ষণ থাকলে আমি নিশ্চয়ই অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতাম। বাঘটার চোখের দিকে আমার চোখ। সরোজবাবু আরও কত কী বলে যাচ্ছেন, আমার কানে যাচ্ছে না।

এবারে সেই বাঘ হঠাৎ ফ-র-র শব্দ করল। আর অমনই একরাশ বাঘের থুতু এসে লাগল আমার মুখে আর জামায়।

বাঘটা এবার আমাকে ছেড়ে গদাইলশকরি চালে দুলতে দুলতে চলে গেল বাগানে।

আমি ধপাস করে বসে পড়লাম চেয়ারে। তাকিয়ে দেখি, শক্তি, পার্থ এবং অন্য বন্ধুরা কেউ সেখানে নেই। সবাই সরে পড়েছে। আমার যেন জীবনীশক্তি আর একটুও বাকি নেই, নড়তে-চড়তে পারছি না, গলা শুকিয়ে কাঠ!

সরোজবাবু বললেন, ‘আপনাদের থাকার জন্য ঘরের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। কোনো অসুবিধে হবে না। তবে রাত্তিরে ঘরের দরজা বন্ধ করবেন না। খৈরি তো সারারাত এখানে ঘুরে বেড়ায়। কোনো ঘরের দরজা বন্ধ দেখলে ধাক্কা মারে। আমরা তো দরজা খুলে শুই। ও বড়োজোর দু-একবার ভেতরে ঢুকে গায়ের গন্ধ শুঁকে চলে যায়।’

আমি আবার তড়াক করে উঠে দাঁড়ালাম। মাথা খারাপ! এই বাংলোয় কেউ আর রাত্তিরে থাকে? রাত্তির বেলা বাঘ এসে ঢুঁসো মারবে।

ব্যাগটা তুলে নিয়ে আমি গুটিগুটি পায়ে চলে এলাম গেটের বাইরে। দেখি যে, অন্য বন্ধুরাও সেখানে সবাই জড়ো হয়েছে। সবাই বলল, ‘রাস্তার ধারে কোথাও শুয়ে থাকব সেও ভালো, কিন্তু এই বাংলোতে রাত কাটাবার কোনো প্রশ্নই ওঠে না!’

সেই রাতেই আমরা উঠে গেলাম পাহাড়ের দিকে।

তাহলে, আমার বুকে যে একটা মস্ত কেঁদো বাঘের থাবার ছাপ আছে, এ-কথাটা মিথ্যে নয়!

এই ঘটনা ঘটেছিল বেশ কিছু বছর আগে।

সেই খৈরি কিন্তু এখন আর বেঁচে নেই। খুব কম বয়সেই সে মারা গেছে। বাঘ নয়, সে ছিল একটা বাঘিনী। আমাদের সে কামড়ায়নি বটে, কিন্তু এর পরে দু-একজন মানুষকে জখম করেছে। বোঝা যাচ্ছিল যে, তাকে ওইভাবে পোষ মানিয়ে রাখার চেষ্টা বৃথা।

তখন তাকে গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দিয়ে আসা হয়েছিল কয়েকবার।

কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, প্রত্যেকবারই সে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ফিরে এসেছে। মানুষের কাছাকাছি থাকার জন্য তার গায়ে বোধ হয় অন্যরকম গন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাই বনের বাঘরা তাকে সহ্য করতে পারত না। অমন একটা মোটাসোটা সুন্দরী বাঘিনী, তবু কোনো বনের বাঘ তাকে পছন্দ করেনি! বারবার অন্য বাঘেরা তাকে আঁচড়ে-কামড়ে, মেরে জঙ্গলের বাইরে তাড়িয়ে দিয়েছে। একবার সেই ক্ষত থেকে সেপটিক হয়ে যায়। তাতেই সে মারা যায়।

বেচারি মানুষের সঙ্গেও থাকতে পারেনি, আবার জঙ্গলেও ঠাঁই পেল না। নদীর ধার থেকে ওকে কোলে করে নিয়ে আসাটাই ভুল হয়েছিল। ‘বন্যেরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’—এই কথাটা কত সত্যি!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *