।। বিনায়ক চতুর্থী ব্রতস্য মাহাত্ম্য তথা বিধান।।
যন্ত্রসিদ্ধয়ন্তি কর্মানি প্রারব্ধানি নরোত্তমৈঃ। তৎকেন কারনেনৈতৎ পৃষ্টো মে ব্রূহি মাধব।।১।। বিনায়কোর্থসিদ্ধয়র্থং লোকস্য বিনিয়োজিতঃ। গণনামাধিপত্যে চ রুদ্রেন ব্রহ্মণা তথা।২। তেনোপ সৃষ্টো যস্তস্য লক্ষণানি নিবোধত। স্বপ্নেহকাহতেহত্যর্থং জলং পশ্যতি।।৩।। কাষায়বাসসশ্চৈব ক্রব্যাদাংশ্চাধিরোহতি। অন্ত্যজৈর্গভৈরুষ্ট্রেঃ সহৈকত্ৰাবতিষ্ঠতে।।৪।। ব্রজমান স্তথাত্মানং মন্যতে তুগতং পরৈঃ। বিমনা বিফলারম্ভঃ সসীদত্যনিমিত্তত্তঃ।।৫।। পাতকী বিহীনচ্ছায়ো স্নানত্বহেতুলক্ষণঃ। করভারুচমাত্ম্যনং মহিষখরগং তথা।।৬।।
।। বিনায়ক চতুর্থী ব্রত মাহাত্ম্য ও বিধান।।
যুধিষ্ঠির বললেন হে মাধব, শ্রেষ্ঠ পুরুষগণের দ্বারা আরম্ভ কাৰ্য কি কারণে সিদ্ধ হয় না –কৃপাপূর্বক বলুন, শ্রীকৃষ্ণ বললেন — অর্থ সিদ্ধির জন্য বিনায়ককে বিশেষরূপে নিয়োজিত করা হয়েছে। গণপতিকে ভগবান্ রুদ্র ও ব্রহ্মা নিযুক্ত করেছেন।।১-২।।
যাতুধাণাশ্চিতং যানং শ্মশানস্যাস্তিকং নৃপঃ। বীক্ষেত কুরুশাদুল স্বপ্নান্তে নাত্র সংশয়ঃ। তৈলাÁমাত্রং স্বংদেহং করবীরবিভূষিতম্।।৭।। তেনোপসৃষ্টো লভতে ন রাজ্যং রাজনন্দনঃ। কুমারী ন চ ভর্তারমপত্যং গর্ভমংগনা।।৮।। আচার্যত্বং শ্রোত্রিয়শ্চ ন শিপ্যোহধ্যয়নং তথা। বনিগ্লাভং ন চাপ্নোতি কৃষিং চৈব কৃষীবলঃ।।৯।। স্বপণং তস্য কর্তব্যং পুন্যেহহ্নি বিধিপূর্বকম্। গৌরসর্ষপকল্পেন বস্ত্রেণাচ্ছাদিতস্য তু।।১০।। সর্বৌষধৈঃ সর্বগন্ধৈবিলিপ্তশিরসস্তথা। শুক্লপক্ষে চতুর্থাং তু বারে বা ধিষণস্যতু।।১১। পুষ্যে চ বীরনক্ষত্রে তস্যৈব পুরতো নৃপ। ভদ্রাসনোপবিষ্টস্য স্বস্তির্বাচ্যা দ্বিজৈঃ শুভৈঃ।।১২।।
তাঁর দ্বারা যারা উপসৃষ্ট হন সেই লক্ষণ শ্রবণ কর। স্বপ্নে অবগাহনকারী যিনি তাঁর মুন্ড দর্শন করেন তিনি অনুগ্রহ পান। কাষায় বস্ত্রধারীগণকে যিনি দেখেন স্বপ্নে তিনি গর্দভত্ত উষ্ট্রের সাথে অবস্থান করেন। চলমান ব্যক্তি যিনি অপরের দ্বারা নিজকে মনে করেন তিনি উদাস ও বিফল আরম্ভ হন ও বিনা কারণে দুঃখ পান। পাতকী বিহীন কান্তিযুক্ত তথা ম্লানত্ব হেতু নিজেকে করার ও মহিষ, খরঙ্গ পৃষ্ঠে আরূঢ় দেখেন। যিনি স্বপ্নে মাতুধান আশ্রিত হয়ে শ্মশান সমীপে উপস্থিত — এইরূপ স্বপ্ন দেখেন। নিজ দেহ তৈলাÁ এবং করবীর ভূষিত দেখেন।।৩-৭।।
তাঁর দ্বারা উপসৃষ্ট রাজার পুত্র রাজ্যপ্রাপ্ত হননা। কুমারী স্বামী পায়না বধূ গর্ভধারণ করতে পারেনা। শ্রোত্রিয় আচার্য পদ বণিক লাভ এবং কিসান কৃষি প্রাপ্ত হননা। তাঁর স্নপন কোনো পুণ্যদিনে বিধিপূর্বক করা উচিৎ। শ্বেতসরিষা বস্ত্রাচ্ছাদিত করে সর্ববিধ গন্ধ দ্বারা মস্তকে বিলেপন করবে। শুক্লপক্ষের চতুর্থী তিথিতে অথবা পুণ্য ও বীর নক্ষত্রে তাঁর নিকট ভদ্রাসনে বসে দ্বিজ দ্বারা স্বস্তিবাচন করবে।।৮-১২।।
চত্বার ঋগ্যহু সামাথৰ্বণপ্রবণাস্ততঃ।। ব্যোমকেশং তু সংপূজ্য পার্বতীং ভূমিজং তথা।।১৩।। কৃষ্ণস্য পিতরং চাথ অবতারং সিতং তথা। ধিমণং ক্লেদপুত্ৰং চ কোণং লক্ষ্মীং চ ভারত। বিধুন্তুদং বাহুলেয়ং নন্দকস্য চ ধারিণম্।।১৪।। অশ্বস্থানাদ্গজস্থানাদ্ বল্মীকাৎসগমাদধ্রদাৎ। মৃত্তিকাং রোচনাং রত্নং গুম্বুলং চাম্পু নিক্ষিপেৎ।।১৫। যদাহৃতং হোকবনৈশ্চতুর্ভিঃ কলশৈহদাৎ। চর্মন্যানডুহে রক্তে স্থাপ্য ভদ্রাসনং তথা।।১৬।। সহস্রাক্ষং শতধারমৃষিভিঃ পাবনং কৃতম্। তেন ত্বামভিপিঞ্চামি পাবমান্যঃ পুনন্তু মে।।।১৭।। ওঁ ভগংতে বরুণো রাজা ভগং সূর্যো বৃহস্পতিঃ। ভগমিন্দ্রশ্চ বায়ুশ্চ ভগং সপ্তর্যয়ো দদুঃ।।১৮।। যত্তে কেশেষ দৌভাগ্যং সীমন্তে সচ্চ মূৰ্দ্ধনি। ললাটে কর্ণয়োরক্ষোরাপস্ত্যন্তু সর্বদা।।১৯।। স্নাতস্য সাৰ্যপং তৈলং সুবেনৌদুম্বরেণ তু। জুহুয়ান্ মূধ্নি শকলান্ সব্যেন প্রতিগৃহ্য চ।।২০।।
চার বেদের জ্ঞাতা বিপ্র তাঁর পূজা করে শিব-পার্বতীর পূজন করবে। কৃষ্ণের পিতা সিত অবতার, ধিষণ, ক্লেদপুত, কোণ লক্ষ্মী, বিদ্যুদ্ভদ, বাহুলেপ ও নন্দক ধারণ করে পূজন করবে।।১৩-১৪।।
মিতশ্চ সম্মিতশ্চৈব তথা শালকন্টকটৌ। কুষ্মান্ডো রাজপুত্রশ্চেত্যন্তে স্বাহাসমন্বিতৈঃ।।২১।। নামাভিৰ্বলিমন্ত্রৈশ্চ নমস্কারসমন্বিতৈঃ। দদ্যাচ্চতুষ্পথে শূপে কুশানাস্তীর্য সর্বতঃ।।২২।। কৃতাকৃস্তাস্তন্ডুলাংশ্চপল লৌদনমেব চ। মৎস্যান্হ্য পক্বাংশ্চ তথামাংসমেতাবদেব তু।।২৩। পুষ্পান্বিতং সুগন্ধং চ সুরাং চ ত্রিবিধামপি মূলকং পূরিকা পূপাংস্তথৈবোড়েরক স্রজঃ।।২৪।। দধ্যন্নং পায়সং চৈব গুড়বেষ্টিতমোদকম্। বিনায়কস্য জননীমুপতিষ্টেত্ততোম্বিকাম্।। দূর্বা সর্ষপ পুষ্পাণাং দত্ত্বাধ্যং পূর্ণমঞ্জলিম্।।২৫।। রূপং দেহি জয়ংদেহি ভগং ভবতি দেহি মে। পুত্রান্ দেহি ধনং দেহি সর্বকামাংশ্চ দেহি মে।।২৬।। প্রবলং কুরুমে দেবি বলবিখ্যাতি সম্ভবম্। শুক্লমাল্যাম্বধরঃ শুক্লগন্ধানুলেপনঃ। ভোজয়েদ্ ব্রাহ্মণান্দদ্যাদ্ বস্ত্রযুগ্মং গুরোরপি।।২৭।।
অশ্ব রাখার স্থান, গজ বন্ধন স্থান, বল্মীক, সংগণ, হৃদমৃত্তিকা নিয়ে রোচনা করে রত্ন ও গুগল জলে প্রক্ষিপ্ত করবে। সহস্রাক্ষ শতধার ঋষি পাবন করেছেন তুমি তার অভিসেচন করবে। পবমানী তুমি আমায় পবিত্র কর। তোমাকে রাজা বরুণ ভগ দিয়েছেন, সূর্য, বৃহস্পতি, ইন্দ্র ও সপ্তর্ষিগণ ভগ দিয়েছেন। তোমার কেশে যে দুর্ভাগ্য সীমন্ত, মুর্দ্ধা, ললাট, কান, চক্ষুতে যে দুভাগ্য বিদ্যমান সেই জল দুভাগ্যকে বিনষ্ট করবে। নবস্নাত হয়ে উডুম্বর, সর্ষপ তেলে মুর্দ্ধাতে আহুতি দেবে। মিত্র, সম্মিত-শাল কণক কুষ্মান্ড, রাজপুত্র অন্তে স্বাহা মন্ত্র উচ্চারণ করবে।।১৫-২১।।
প্রণাম পূর্বক বলিমন্ত্র দ্বারা চতুষ্পত্রে পথে কুশ বিস্তার করে শূর্প বলি দিতে হয়। তন্ডুল, চপল, লোদন অপক্ক মৎস ইত্যাদি পুষ্প, সুগন্ধি, পুরিকা, পূপ, দধি, অন্ন, পায়স ইত্যাদি নিবেদন করবে। তৎপরে অম্বিকাপূজন, অঞ্জলি ও অর্ঘ দেবে।।২২-২৫।।
এবং বিনায়কং পূজ্য গ্রহাশ্চৈব বিধানতঃ। কর্মণাং ফলমাপ্নোতি শ্রিয়ং প্রাপ্নোত্যনুত্তমাম্।।২৮।। আদিতস্য সদাপূজাং তিলকং স্বামিনস্তথা। মহাগর্ণপতেশ্চৈব কুর্বন্ সিদ্ধিমবাপুয়াৎ।।২৯।। বৈনায়কং বিনয়সত্ববতাং নরাণাং। স্নানং প্রশস্তমিহ বিঘ্নবিনাশকারি। কুর্বন্তি যে বিধিবদত্র ভবন্তি তেষাং কার্যান্যভীষ্টমালদানি ন সংশয়োহত্র।।৩০।। অথাবিঘ্নকরং রাজন্ কথয়ামি ব্রতং তব। যেন সম্যক্ কৃতেনেহ ন বিঘ্নমুপজায়তে।।৩১। চতুৰ্থাং ফাল্গুনে মাসি গৃহীতব্যং ব্রতং ত্বিদম্। নক্তাহারেণ রাজেন্দ্র তিলান্নং পারণং স্মৃতম্।।৩২।। তদেব বহ্নৌ হোতব্যং ব্রাহ্মণায় চ তদ্ভবেৎ।।৩৩।। শূরায় বীরায় গজাননায় লম্বোদরায়ৈকরদায় চৈব।। এবং তু সংপূজ্য পুনশ্চ হোমং কুর্যাদ ব্রতী বিঘ্নবিনাশহেতোঃ।।৩৪।। চাতুর্মাস্যাং ব্ৰতং চৈব কৃত্বেত্থং পঞ্চমে তথা। সৌবর্ণং গজবস্ত্রং তু কৃত্বা বিপ্ৰায় দাপয়েৎ।।৩৫।। তাম্রপাত্রেঃ পায়সভূতৈশ্চতুৰ্ভিঃ সহিতং নৃপঃ। পঞ্চমেন তিলৈঃ সার্দ্ধং গনেশাধিষ্টনেন চ।।৩৬।।
প্রণাম পূর্বক বলবে–হে দেবি, আপনি রূপ, লাবণ্য, পুত্র, বর্ণ ও সকল কামনা পূরণ কর। হে দেবি আমাকে প্রবল বল প্রদান কর। পুনঃ শ্বেত মাল্য, গন্ধ-অনুলেপন করে ব্রাহ্মণ ভোজন করাবে ও বস্ত্রদান করবে। এই প্রকারে বিধিপূর্বক বিনায়কপূজন করবে। যার ফলে মানুষ কর্মফল প্রাপ্ত হয়। সদা আদিত্য পূজনকারী, মহাগণপতি পূজনকারী মানুষ সিদ্ধিলাভ করে। বিনয়ী পুরুষের বৈনায়ক স্নান প্রশস্ততা বিঘ্ন বিনাশ করে।।২৬-৩০।।
ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ বললেন হে রাজন্ এর পর তোমাকে আমি বিঘ্ন দূরকারী এক ব্রত বলব। ফাল্গুন মাসের চতুর্থী তিথিতে রাত্রিতে তিলান্ন ভোজন করে সেই অগ্নিতে হবন করতে হয়। গজানন বিঘ্ননাশক পূজন করে পুনঃ হোম করতে হয়। এই ব্রত চারমাস পালন করে পঞ্চমাসে এক সুবর্ণ নির্মিত গজবক্ত নিয়ে বিপ্রকে দান করবে। হে নৃপ, পায়সভর্তি তাম্রপাত্র পাঁচটি নিয়ে তিল সহিত গণপতিকে দেবে। ধনহীন মৃৎপাত্রে দেবে। এইভাবে মনুষ্য সমস্ত বিঘ্ন বিনাশে সক্ষম হয়।।৩১-৩৬।।
মৃন্ময়ান্যপি পাত্রানি বিত্তহীনস্তু কারয়েৎ। হেরম্বং রাজতং তদ্বদ্ বিধিনানেন দাপয়েৎ।। ইত্থং ব্রতমিদং কৃত্বা সর্ববিঘ্নৈঃ প্রমুচ্যতে।।৩৭।। হয়মেধস্য বিঘ্নে তু সংজাতে সগরঃ পুরা। এতদেব ব্রতং চীত্বা পুনরশ্চং প্রলব্ধবান্।।৩৮।। তথা রুদ্রেণ দেবেন ত্রিপুরং নিম্নতা পুরা। এতদেব কৃতং যস্মাৎত্রিপুরস্তেন খাতিতঃ।।৩৯।। ময়া সমুদ্রং বিশতাং এতদেব ব্ৰতং কৃতম্। তেনাদ্রিদ্রুমসংযুক্তা পৃথিবী পুনরুদ্ ধৃতা।।৪০। অন্যৈরপি মহীপালৈরেতদেব কৃতং পুরা। তপোহৰ্থিভিযজ্ঞ সিদ্ধয়ৈ নির্বিঘ্নং স্যাৎ পরন্তপ।।৪১।। অনেন কৃতমাত্রেন সর্ববিঘ্নেঃ প্রমুচ্যতে। মৃতো রুদ্রপুরং মাতি বহাহবচনং যথা।।৪২। বিঘ্নানি তস্য ন ভবস্তি গৃহে কদাচিদ্। ধর্মার্থকামসুখসিদ্ধিবিঘাতকানি। যঃ সপ্তন্দুশকলাকৃতিকাং তন্দন্ত। বিঘ্নেশমচয়তি নক্তকৃতী চতুর্থ্য্যাম্।।৪৩।।
প্রাচীন কালে অশ্বমেধ যজ্ঞ কর্মে বিঘ্ন বিনাশের জন্য রাজা সগর এই ব্রত পালন করেছিলেন। পুরাকালে মহাদেব রুদ্র ত্রিপুরাসুর হনন করার সময়ে এই ব্রত পালন করেন। আমি সমুদ্রে প্রবেশের সময় এই ব্রত পালন করেছিলাম। অন্যান্য বড় বড় রাজাও এই ব্রত পালন করেছিলেন। হে পরম তপ, এই ব্রতের দ্বারা মানুষ বিঘ্ন থেকে মুক্তি লাভ করে। ভগবান বরাহ বলেছেন, এই ব্রত পালনকারী মৃত্যুর পরে রুদ্রপুর গমন করে। ধর্ম-অর্থ-কাম সিদ্ধির জন্য এই ব্রত আবশ্যিক। চতুর্থীতে ইন্দু খন্ড আকৃতিতদন্ত যিনি গজাননকে উৎসর্গ করেন তিনি সর্বদা অভাবমুক্ত হন।।৩৭-৪৩।।