বাসন্তী
কুহেলির দোলায় চড়ে এল ওই কে এল রে? মকরের কেতন ওড়ে শিমুলের হিঙুল বনে। পলাশের গেলাস-দোলা কাননের রংমহলা, ডালিমের ডাল উতলা লালিমার আলিঙ্গনে॥ না যেতে শীত-কুহেলি ফাগুনের ফুল-সেহেলি এল কি? রক্ত-চেলি করেছে বন উজালা। ভুলালি মন ভুলালি, ওলো ও শ্যাম-দুলালি, তমালে ঢাললি লালি, নীলিমায় লাল দেয়ালা॥ ওলো এ ব্যস্ত-বাগীশ মাধবের নকল-নবিশ মধুরাত নাই হতে — ইস মাধবীর কুঞ্জে হাজির! বলি ও মদনমোহন! না যেতে শীতের কাঁপন এলো যে, থালায় এখন ভরিনি কুঙ্কুম আবির॥ হা-রা-রা হোরির গীতে মাতিনি আজও শীতে অধরের পিচকিরিতে পুরিনি পানের হিঙুল। গাহেনি কোয়েল সখী — 'মর লো গরল ভখি!' এখনই শ্যাম এল কি আসেনি অশোক শিমুল॥ মোরা সই বকছি মিছে ওলো দ্যাখ শ্যামের পিছে এসেছে কে এসেছে দুলে কার চেলির লালি। তখনই বলেছি ভাই আমাদের এ মান বৃথাই, এলে শ্যাম আসবেনই রাই — শ্রীমতী শ্যাম দুলালি॥ পউষের রিক্ত শাখায় বঁধু যেই বংশী বাজায়, নীলা বন লাল হয়ে যায়, ফুলে হয় ফুলেল আকাশ। এলে শ্যাম বংশীধারী গোপনের গোপ-ঝিয়ারি ফুল সব শ্যাম-পিয়ারি ভুলে যায় ছার গেহ-বাস॥ সাতাশে মাঘ-বাতাসে যদি ভাই ফাগুন আসে আঙনে রঙন হাসে আমাদের সেই তো হোরি! শ্রীমতীর লাল কপোলে দোলে লো পলাশ দোলে, পায়ে তার পদ্ম ডলে দে লো বন আলা করি॥