বাবরের প্রার্থনা

বাবরের প্রার্থনা (রচনা ১৯৭৪-৭৬। প্রকাশ ১৯৭৬)

ধ্বংস করো ধ্বজা

আমি বলতে চাই, নিপাত যাও
এখনই
 বলতে চাই, চুপ

তবু
বলতে পারি না। আর তাই
নিজেকে ছিঁড়ে ফেলি দিনের পর দিন।

বলতে চাই, জানি
জানি যে আমার মজ্জার মধ্য দিয়ে তোমার
 ঘিরে ঘিরে পাক দেওয়া টান

বলতে চাই তোমার শেষ নেই তোমার শুরু নেই, কেবল জল, লবণ
তোমার চোখ নেই স্নায়ু নেই
 শুধু কুসুম

শুধু পরাগ, আবর্তন, শুধু ঘূর্ণি
 শুধু গহ্বর
বলতে চাই, নিপাত যাও- ধ্বংস হও- ভাঙো

কিন্তু বলতে পারি না, কেননা তার আগেই
তুমি নিজে
 নিজের হাতে ধ্বংস করো আমার ধ্বজা, আমার আত্মা।

*

পুরোনো গাছের গুঁড়ি

ছিল-বা হাসির চপলতা। পানপাতা যেন
মুছে নেয় গাল

এমনই সবুজ আভা মুখে
মনে হয়েছিল এত অনাদরে তবুও সজল

স্নেহশাখা, পাতায় পাতায় ক্রীড়াময়, কথা বলা
 শিরায় শিরায়

দুধারে ছড়ানো এই প্রণতি ও উত্থান, মনে হয়েছিল
তুমি আছো, আছো তুমি। তবু

চোখ যদি ফিরে আসে মূলে
খুলে যায় রজনীর নীল

নিচু হয়ে বলি :
পুরোনো গাছের গুঁড়ি, বাকলে ধরেছ কত ঘুণ?

*

সেদিন অনন্ত মধ্যরাত

বৃষ্টি হয়েছিল পথে সেদিন অনন্ত মধ্যরাতে
বাসা ভেঙে গিয়েছিল, গাছগুলি পেয়েছিল হাওয়া
সুপুরিডানার শীর্ষে রুপোলি জলের প্রভা ছিল

আর ছিল অন্ধকারে- হৃদয়রহিত অন্ধকারে
মাটিতে শোয়ানো নৌকো, বৃষ্টি জমে ছিল তার বুকে
ভেজা বাকলের শ্বাস শূন্যের ভিতরে স্তব্ধ ছিল

মাটি ও আকাশ শুধু সেতু হয়ে বেঁধেছিল ধারা
জীবনমৃত্যুর ঠিক মাঝখানে বায়বীয় জাল
কাঁপিয়ে নামিয়েছিল অতীত, অভাব, অবসাদ

পাথরপ্রতিমা তাই পাথরে রেখেছে শাদা মুখ
আর তার চারধারে ঝরে পড়ে বৃষ্টি অবিরল
 বৃষ্টি নয়, বিন্দুগুলি শেফালি টগর গন্ধরাজ

মুছে নিতে চায় তার জীবনের শেষ অপমান
বাসাহীন শরীরের উড়ে-যাওয়া ম্লান ইশারাতে
 বৃষ্টি হয়েছিল বুকে সেদিন অনন্ত মধ্যরাতে।

*

মণিকর্ণিকা

চতুর্দশীর অন্ধকারে বয়ে যায় গঙ্গা
তার ওপরে আমাদের পলকা নৌকোর নিশ্বাস
 মুখে এসে লাগে মণিকর্ণিকার আভা

আমরা কেউ কারো মুখের দিকে তাকাই না
 হাতে শুধু ছুঁয়ে থাকি পাটাতন
 আর দু-এক ফোঁটা জলের তিলক লাগে কপালে

দিনের বেলা যাকে দেখেছিলে চণ্ডাল
আর রাত্রিবেলা এই আমাদের মাঝি
কোনো ভেদ নেই এদের চোখের তারায়

জলের ওপর উড়ে পড়ছে স্ফুলিঙ্গ
 বাতাসের মধ্যে মিলিয়ে যাচ্ছে ভস্ম
পাঁজরের মধ্যে ডুব দিচ্ছে শুশুক

এবার আমরা ঘুরিয়ে নেব নৌকো
দক্ষিণে ওই হরিশ্চন্দ্রের ঘাট
 দুদিকেই দেখা যায় কালুডোমের ঘর

চতুর্দশীর অন্ধকারে বয়ে যায় গঙ্গা
এক শ্মশান থেকে আরেক শ্মশানের মাঝখানে
আমরা কেউ কারো মুখের দিকে তাকাই না।

*

জীবনবন্দী

করুণা চেয়েছি ভাবো? তোমাদের সমর্থন? ভুল।
অনুমোদনের জন্য হৃদয়ে অপেক্ষা নেই আর।
 সে জানে ভুলের মাত্রা, সে জানে ধ্বংসের সব সূচি,
এ হাতে ছুঁলে সে জানে ভস্ম হয়ে যাবে ওই মুখ।
 কার কাছে কথা তবে? কারো কাছে নয়। এ কেবল
 যেভাবে জীবনবন্দী বুকচাপা কুঠুরিতে ব’সে
 দিনের রাতের চিহ্ন এঁকে রাখে দেয়ালের গায়ে
সেইমতো দিন গোনা রাত জাগা মাথা খুঁড়ে যাওয়া
লোহাতে লোহার ধ্বনি জাগানো, বাজানো, বিফলতা।
 যে দেখে সে দেখে শুধু একজন খুলে দিয়ে চুল
সবারই পাঁজর চেপে দাঁড়িয়েছে লোল রসনায়
এ কেবল তারই নাচ বলয়ে বলয়ে বুনে যাওয়া—
 ভালো যদি বলো একে ভালো তবে, না বলো তো নয়।

*

তক্ষক

তোমার কোনো বন্ধু নেই তোমার কোনো বৃত্তি নেই
কেবল বন্ধন
 তোমার কোনো ভিত্তি নেই তোমার কোনো শীর্ষ নেই
 কেবল তক্ষক
তোমার কোনো নৌকো নেই তোমার কোনো বৈঠা নেই
কেবল ব্যাপ্তি
তোমার কোনো উৎস নেই তোমার কোনো ক্ষান্তি নেই
কেবল ছন্দ

তোমার শুধু জাগরণ শুধু উত্থাপন কেবল উদভিদ
তোমার শুধু পান্না আর শুধু বিচ্ছুরণ কেবল শক্তি।

তোমার কোনো মিথ্যা নেই তোমার কোনো সত্য নেই
 কেবল দংশন

তোমার কোনো ভিত্তি নেই তোমার কোনো শীর্ষ নেই
 কেবল তক্ষক
তোমার কোনো বন্ধু নেই তোমার কোনো বৃত্তি নেই
কেবল বন্ধন
তোমার কোনো দৃষ্টি নেই তোমার কোনো শ্রুতি নেই
 কেবল সত্তা।

*

বাবরের প্রার্থনা

এই তো জানু পেতে বসেছি, পশ্চিম
আজ বসন্তের শূন্য হাত–
ধ্বংস করে দাও আমাকে যদি চাও
আমার সন্ততি স্বপ্নে থাক।

কোথায় গেল ওর স্বচ্ছ যৌবন
কোথায় কুরে খায় গোপন ক্ষয়!
চোখের কোণে এই সমূহ পরাভব
বিষায় ফুসফুস ধমনী শিরা!

জাগাও শহরের প্রান্তে প্রান্তরে
ধুসর শূন্যের আজান গান;
পাথর করে দাও আমাকে নিশ্চল
 আমার সন্ততি স্বপ্নে থাক।

না কি এ শরীরের পাপের বীজাণুতে
কোনোই ত্রাণ নেই ভবিষ্যের?
আমারই বর্বর জয়ের উল্লাসে
 মৃত্যু ডেকে আনি নিজের ঘরে?

না কি এ প্রাসাদের আলোর ঝলসানি
পুড়িয়ে দেয় সব হৃদয় হাড়
এবং শরীরের ভিতরে বাসা গড়ে
লক্ষ নির্বোধ পতঙ্গের?

আমারই হাতে এত দিয়েছ সম্ভার
জীর্ণ করে ওকে কোথায় নেবে?
ধ্বংস করে দাও আমাকে ঈশ্বর
 আমার সন্ততি স্বপ্নে থাক।

*

শূন্যের ভিতরে ঢেউ

বলিনি কখনো?
আমি তো ভেবেছি বলা হয়ে গেছে কবে।

এভাবে নিথর এসে দাঁড়ানো তোমার সামনে
 সেই এক বলা

কেননা নীরব এই শরীরের চেয়ে আরো বড়ো
 কোনো ভাষা নেই

কেননা শরীর তার দেহহীন উত্থানে জেগে
 যতদূর মুছে নিতে জানে

দীর্ঘ চরাচর,
 তার চেয়ে আর কোনো দীর্ঘতর যবনিকা নেই।

কেননা পড়ন্ত ফুল, চিতার রুপালি ছাই, ধাবমান শেষ ট্রাম
 সকলেই চেয়েছে আশ্রয়

সেকথা বলিনি? তবে কী ভাবে তাকাল এতদিন
 জলের কিনারে নিচু জবা?

শূন্যতাই জানো শুধু? শূন্যের ভিতরে এত ঢেউ আছে
সেকথা জানে না?

*

মনকে বলো ‘না’

এবার তবে খুলে দেওয়া, সব বাঁধনই আলগা করে নেওয়া
 যখন বলি, কেমন আছো? ভালো?
 ‘ভালো’ বলেই মুখ ফিরিয়ে নেবার মতন মরুভূমি
এবার তবে ছিন্ন করে যাওয়া।

বন্ধ ছিল সদর, তোমার চোখ ছিল যে পাথর
সেসব কথা আজ ভাবি না আর
যাওয়ার পরে যাওয়া কেবল যাওয়া এবং যাওয়ায়
আকাশ গন্ধরাজ।

শিরায় শিরায় অভিমানের ঝর্না ভেঙে নামে
 দুই চোখই চায় গঙ্গযমুনা
 মন কি আজও লালন চায়? মনকে বলো ‘না’
 মনকে বলো ‘না’, বলো ‘না’।

*

কিছু-না থেকে কিছু ছেলে

আমারই বুক থেকে ঝলক
 পলাশ ছুটছিল সেদিন

লোকেরও লাগছিল ভালো–
লোকের ভালো লাগছিল।

লোকে কি জেনেছিল সেদিন
এখনও বাকি আছে আর কে?

আসলে ভেবেছিল সবই
উদাস প্রকৃতির ছবি।

তবু তো দেখো আজও ঝরি
কিছু-না থেকে কিছু ছেলে

তোমারই সেন্ট্রাল জেলে,
তোমারই কার্জন পার্কে!

*

হাসপাতালে বলির বাজনা

আমার ভাই ছিল ফেরার, আমার মাসিমা যখন মারা যান।
চারদিকে ছুটছিল বাজি, কালীপুজোর রাত। হাসপাতালের
বারান্দাও কেঁপে উঠছিল আনন্দে।
তালে তালে জাগছিল হিক্কা, শেষ সময়ের নিশ্বাস। হয়তো
এবার শুনতে পাব : রঞ্জন রঞ্জন
বেজে উঠল ঢাক, হাজার কাঠির ঝনৎকার। আমরা সবাই নিচু
 হয়ে কান নিয়েছি কাছে
ঠোঁটের ভিতর ফেনিল ঢেউ : এল, ওই এল ওদের নিশান,
আমায় ছাড়। তুবড়ি ওঠে জ্বলে।
 আমরা সবাই বলেছিলাম : শেষ সময়ের প্রলাপ।
 হাসপাতালে বলির বাজনা। ভাই ছিল ফেরার।

*

চাপ সৃষ্টি করুন

ঝরে যাবেন? ঝরুন
ঝরুন দাদা, ঝরুন!
ভিতরদিকে আছেন যাঁরা
একটু মশাই নড়ুন–
 চাপ সৃষ্টি করুন!
 চাপ সৃষ্টি করুন!

হঠাৎ ঝাঁপে উলটে যাবেন
শক্ত হাতে ধরুন
খুব যে খুশি পা-দানিতেই
কেইবা চায় দুঃখ নিতে–
 যা পেয়েছেন দেখুন ভেবে
নাক না ওটা, নরুন।

একটু মশাই নড়ুন
ভিতর থেকে নড়ুন
 চাপ সৃষ্টি করুন
চাপ সৃষ্টি করুন।

*

‘মার্চিং সং’

সুন্দরী লো সুন্দরী
কোন্ মুখে তোর গুণ ধরি
দিব্যি সোনার মুখ করে তুই
দুই বেলা যা খাস
ঘাস বিচালি ঘাস।

ঘাস বিচালি ঘাস
ঘাস বিচালি ঘাস
কিন্তু মুখে জ্বলবে আলো
পদ্মভসংকাশ
 নেই কোনো সন্ত্রাস!

নেই কোনো সন্ত্রাস
ত্রাস যদি কেউ বলিস তাদের
ঘটবে সর্বনাশ–
ঘাস বিচালি ঘাস
ঘাস বিচালি ঘাস!

*

রাধাচূড়া

মালী বলেছিল। সেইমতো
টবে লাগিয়েছি রাধাচূড়া।
 এতটুকু টবে এতটা গাছ?
 সে কি হতে পারে? মালী বলে
হতে পারে যদি ঠিক জানো
 কীভাবে বানায় গাছপালা।

খুব যদি বাড় বেড়ে ওঠে
দাও ছেঁটে দাও সব মাথা
কিছুতে কোরো না সীমাছাড়া
 থেকে যাবে ঠিক ঠান্ডা চুপ–
ঘরেরও দিব্যি শোভা হবে
লোকেও বলবে রাধাচূড়া।

সবই বলেছিল ঠিক, শুধু
মালী যা বলেনি সেটা হলো
সেই বাড় নীচে চারিয়ে যায়
শিকড়ে শিকড়ে মাথা খোঁড়ে, আর
এখানে-ওখানে মাটি ফুঁড়ে
হয়ে ওঠে এক অন্য গাছ।

এমনকী সেই মরশুমি টব
ইতস্ততের চোরা টানে
বড়ো মাথা ছেড়ে ছোটো মাথায়
কাতারে কাতারে ঝেঁপে আসায়
 ফেটে যেতে পারে হঠাৎ যে
 সেকথা কি মালী বলেছিল?

মালী তা বলেনি, রাধাচূড়া!

*

আপাতত শান্তিকল্যাণ’

পেটের কাছে উঁচিয়ে আছো ছুরি
কাজেই এখন স্বাধীনমতো ঘুরি
এখন সবই শান্ত, সবই ভালো।
 তরল আগুন ভরে পাকস্থলী
যে-কথাটাই বলাতে চাও বলি
সত্য এবার হয়েছে জমকালো।

গলায় যদি ঝুলিয়ে দাও পাথর
হালকা হাওয়ার গন্ধ সে তো আতর
তাই নিয়ে যাই অবাধ জলস্রোতে–
 সবাই বলে, হা হা রে রঙ্গিলা
জলের উপর ভাসে কেমন শিলা
শূন্যে দেখো নৌকো ভেসে ওঠে।

এখন সবই শান্ত সবই ভালো
 সত্য এবার হয়েছে জমকালো
বজ্র থেকে পাঁজর গেছে খুলে
এ-দুই চোখে দেখতে দিন বা না দিন
আমরা সবাই ব্যক্তি এবং স্বাধীন
আকাশ থেকে ঝোলা গাছের মূলে।

*

বিকল্প

নিশান বদল হলো হঠাৎ সকালে
ধ্বনি শুধু থেকে গেল, থেকে গেল বাণী
আমি যা ছিলাম তাই থেকে গেছি আজও
 একই মতো থেকে যায় গ্রাম রাজধানী

কোনো মাথা নামে আর কোনো মাথা ওঠে
কথা ছুঁড়ে দিয়ে যায় সারসের ঠোঁটে।

আমার গাঁয়েই না কি এসেছিল রাজা
কখনো দেখিনি এত শালু বা আতর
 নিচু হয়ে আঁজলায় চেয়েছি বাতাস
রাজা হেসে বলে যায় : ভালো থোক তোর।

কথা তবু থেকে যায় কথার মনেই
 কঠোর বিকল্পের পরিশ্রম নেই!

*

হাতেমতাই

হাতের কাছে ছিল হাতেমতাই
চুড়োয় বসিয়েছি তাকে
দু-হাত জোড় করে বলেছি ‘প্রভু
দিয়েছি খত দেখো নাকে।
এবার যদি চাও গলাও দেব
 দেখি না বরাতে যা থাকে–
 আমার বাঁচামরা তোমারই হাতে
 স্মরণে রেখো বান্দাকে!’

ডুমুরপাতা আজও কোমরে ঝোলে
লজ্জা বাকি আছে কিছু
এটাই লজ্জার। এখনও মজ্জার
ভিতরে এত আগুপিছু!
এবার সব খুলে চরণমূলে
ঝাঁপাব ডাঁই-করা পাঁকে
এবং মিলে যাব যেমন সহজই
চৈত্র মেশে বৈশাখে।

*

মনোহরপুকুর

শহর তার বুকের থেকে খুলে দিয়েছে ঢাল
অরক্ষিত যে-কোনো দিকে ছুটেছে মানুষেরা
এক নিমেষে মিশে গিয়েছে তরঙ্গ ও ত্রাস

গলির মুখে খুলে গিয়েছে সুড়ঙ্গের ডালা
 হাজার হাত ছড়িয়ে আছে অকালভৈরবী
এ চোখে যদি অসুর তার অন্য চোখে সুরা

অগস্ত্যের চুমুক শুষে নিয়েছে সব জল
পাতাল ছিঁড়ে জেগেছে যত মাছের মৃতদেহ
মাথার থেকে মাথায় ছোটে বিদ্যুতের শিরা।

দিনদুপুরে নিলামডাকে বিকিয়ে গেছে পাড়া
 আমিও শুধু একলা বসে মনোহরপুকুরে
ছিপ করেছি নিজের হাতে নিজেরই শিরদাঁড়া!

*

নচিকেতা

দিয়ে যেতে হবে আজ এই দুই চোখ
 ঘ্রাণ শ্রুতি স্পর্শ সব দিয়ে যেতে হবে।
 উঠোনে দোপাটি হাওয়া স্মৃতি ও ডালিম
মাঠের পথিক শ্রান্তি দিগন্তদুপুর
কিছু উজ্জীবন কিছু হাহাকার আর
দিয়ে যেতে হবে সব সেতুহীন দিন।
 গাভীর শরীরে দ্যুতি অন্ধকারে হীরা
দিয়ে যেতে হবে সব বিচালি ও খড়
নিবন্ত মশাল আর ভিটে মাচা ঘর
যা কিছু করেছি আর করিওনি যত
 এবার যজ্ঞের শেষে দিতে হবে সব।
এবার নিভৃত এই অপমানে শোকে
 যে-কটি অন্তিম জবা উঠেছিল জ্বলে
আগুনে ঝরিয়ে দিতে হবে। আর তোকে
 যমের দক্ষিণ হাতে দিতে হবে আজ
চায় তোকে দৃষ্টিহীন বধির সমাজ!