চোদ্দো
“এই প্রস্ফুট বন-কুসুম-গন্ধ আমার মনে মাঝে মাঝে কেমন একটা বেদনা জাগায়, যেন কী পেয়েছিলুম, হারিয়ে ফেলেছি। এই উদীয়মান সূর্যের অরুণ রাগ অতীত দিনের কত কথা মনে এনে দেয়…।”
অনুপম দৃষ্টিপ্রদীপ পড়ছিলেন আবার। কল্পনায় নিজেকে দৃষ্টিপ্রদীপের জিতুর জায়গায় বসিয়ে সুখ পান। শোভন বেরিয়ে যেতে অনেক নিশ্চিন্ত হয়ে বই নামিয়েছিলেন অনুপম শেল্ফ থেকে। ব্যালকনির ওপারের বাড়ি ভাঙা শুরু হয়েছে দোতলা থেকে। সামনের অংশ মানে সেই শূন্য ব্যালকনি অটুট আছে। পেছন দিক ভাঙা হচ্ছে। তাঁর মনে হচ্ছিল যখন সমস্ত পৃথিবীর ইঞ্চি ইঞ্চি জায়গা ভর্তি হয়ে যাবে ইট-কাঠে, নদী, বনভূমি, প্রান্তর মুছে যাবে সব, তখন মানুষই সব আবার ভাঙতে শুরু করবে। ডোর বেল বাজল। ফিরে এল নাকি শোভন? আতঙ্কিত হয়ে পড়লেন তিনি। ফাইনাল বন্ধ। কীসের ফাইনাল? তাঁর পড়া বন্ধ হল। সামনে বসে অজ্ঞানতা জাহির করবে। বলবে, শেক্সপিয়র পড়েছ মামা, হেভি গপ্পো, আর সোমেন লাহার বই, রবি ঠাকুরের সঙ্গে বউদির প্রেম। উফ! ফাটাফাটি। একদিন বলে, মামা শান্তিনিকেতনের খোয়াই নদী কি খুব বড়? রবি ঠাকুরের সম্পত্তি ওসব। হ্যাঁ হ্যাঁ করতে থাকবে। তিনি দরজা খুলতেই দেখলেন চারতলার অবনের বউ তন্দ্রিমা। কাকু আসব?
এসো, কী ব্যাপার, অবনের মা ভালো আছেন তো?
হ্যাঁ। বলতে বলতে ভিতরে ঢুকে তন্দ্রিমা বলল, কাকু উনি আপনার ভাগ্নে?
সরাসরি নয়, কেন কী হল, চাকরির পরীক্ষা দিতে এসেছে।
কাকু, আমার খুব লজ্জা করছে বলতে, উনি কেমন মানুষ? তন্দ্রিমা মাথা নিচু করে বলল।
একদিন উপরে গিয়ে কফি খেয়ে এসেছে শুনলাম।
কাকু, আপনি আমার হোয়াটস আপ নম্বর চেয়েছিলেন?
না তো। অনুপম উদ্বিগ্ন হয়ে বললেন, ও কি তাই নিয়েছে?
হ্যাঁ কাকু, আমি দিলাম, বাট হি ইজ সেন্ডিং ব্যাড মেসেজেস, ব্যাড মেসেজ অ্যান্ড পিকচারস, গতকাল আমাকে সিনেমায় যেতে বলেছিল, আমি জবাব দিইনি।
অনুপম বললেন, কী খারাপ, ব্লক করা যায় না?
করেছিলাম, কাল অন্য ফোন থেকে মেসেজ দিয়েছে, ভয়ানক ডিস্টার্বিং। চোখ মুছতে লাগল তন্দ্ৰিমা
অনুপম বললেন, হি ইজ আ লুম্পেন, আমি ওকে তাড়িয়ে দেব।
তন্দ্রিমা বলল, ও নাকি পার্টি করে, আমাকে বলছে আপনার ছেলেরই মতো …।
অনুপম কাঁপতে লাগলেন উত্তেজনায়। ছি ছি ছি। ছেলেটা অন্তত আটটা ইরোটিক লাভ মেসেজ দিয়েছে। বলছে মামা যখন থাকবে না ফ্ল্যাটে আসতে। ফ্ল্যাটের চাবি সে নিয়ে নেবে মামার কাছ থেকে। তন্দ্ৰিমা বলল, সে তার স্বামীকে আসতে বলেছে।
অনুপম বললেন, তিনি ব্যবস্থা নেবেন।
ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু কী ব্যবস্থা? তন্দ্রিমা চলে যেতে তিনি খুব বিহ্বল বোধ করলেন। এখন কী করবেন? শোভনকে বললে, ও অস্বীকার করে বলবে ওই তন্দ্রিমাই তাকে বলেছিল সিনেমা দেখার কথা। এক হাতে তালি বাজে নাকি? শোভন ফিরল আচমকা। ও কি টের পেয়েছে যে তন্দ্রিমা আসতে পারে! শোভন ওসবের পরোয়া করে বলে মনে হয় না। অনুপম ভেবেছিলেন সুমিকে ফোন করে বলবেন, কিন্তু শেষ অবধি বিরত হন। মাতৃস্নেহে বিশ্বাসই করবে না। অনুপম অপেক্ষা করছিলেন শোভনের জন্য। রাগে তাঁর শরীর কাঁপছিল। মনে হচ্ছিল ফ্ল্যাটে তালা দিয়ে দূরে কোথাও চলে যান। শোভন ঢুকতে ঢুকতে বলল, মামা টিভি খোলো টিভি খোলো।
কেন কী হয়েছে? বিরক্ত হলেন অনুপম।
চারটে চ্যানেল ছিল, দেখি কিছু দেখাচ্ছে কি না। শোভন উত্তেজিত।
কী বলছ কী, বুঝতে পারছি না।
শোভন নিজেই টিভি খুলে দিল। সাউন্ড বাড়িয়ে দিয়ে সোফায় বসে পড়ল। তিনি সহ্য করতে পারছিলেন না। কী ভাবে প্রসঙ্গের সূচনা করবেন তা ঠিক করতে পারছিলেন না। রুচিতে বাঁধছিল। তখন শোভন চিৎকার করে ওঠে, ক্যালানিটা দ্যাখো মামা, সব ফুটে গেছে, অ্যাকশন হয়ে গেছে মামা, দেখো দেখো, আজ ধর্না ভেঙে দেওয়া হল, এর নাম ফাইনাল।
ফাইনাল হচ্ছে ঠিক দুপুরে। প্রকাশ্য দিবালোকে। ধর্না মঞ্চে ঝাঁপিয়ে পড়েছে লেঠেলের দল। টেলিভিশন দেখাচ্ছে। রে রে করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে একদল যুবক। মাথা ফাটল একটি মেয়ের। মাথা চেপে বসে পড়েছে সে। টেলিভিশনকে জানানো হয়েছিল আজ আপস মীমাংসা হবে। মিটিং হয়েছে। মিটিংয়ে শোভন ছিল। মিটিংয়ে ফয়সালা হয়নি।
ওই দ্যাখো মামা, মিটিং…, মিটিংয়ে কিছু না হতে আমি অর্ডার দিয়ে চলে এসেছি, শোভন গর্জন করতে লাগল, মার শুয়োরের বাচ্চাদের, মেয়েগুলোকে বেশি করে ক্যালা, জামা-কাপড় খুলে দে, সব পতিবাদ ভিত্তারে চলে যাবে।
আহত একটি মেয়ে গর্জন করছে, মেরে ফেললেও ছাড়ব না, অন্যায়ের প্রতিকার চাই।
শোভন চাপা গলায় বলল, তুলে নিয়ে গিয়ে মাপলেই তোর ক্যাদ্দানি চলে যাবে শালী।
যাব না, আমরা এখেনেই থাকব। মেয়েটি গর্জন করল বাঘিনির গলায়, লড়াই লড়াই লড়াই চাই।
মেয়েটাকে তুলে নিয়ে যা ভজনদা, তুলে মেসে নিয়ে যা, শালীকে বুঝিয়ে দে।
অনুপম থামাতে চাইলেন শোভনকে, বললেন, বন্ধ করো, খারাপ কথা আর চিৎকার করবে না, এটা ভদ্রলোকের বাড়ি।
শোভন বন্ধ করল না, কিন্তু সাউন্ড মিউট করে দিল। টিভিতে রক্তারক্তি দেখাতে লাগল। তারপর অন্য খবর শুরু হতে শোভন বন্ধ করে দিল টিভি, একটু নরম গলায় বলল, তোমার প্রেস্টিজের জন্যই আমি চলে এলাম মামা, যদি টিভি ক্যামেরায় দেখিয়ে দেয়, আমি নেই ওর ভিতরে।
মিটিংয়ে আছ তা তো দেখাল এক ঝলক। অনুপম গর্জন করলেন।
আরে রাগ করছ কেন মামা, মিটিংয়ে থাকা আর ক্যালানি এক নয়, আমি ভেবেছিলাম দাঁড়িয়ে দেখব, আর ওই মেয়েটাকে দেখে নেব, কিন্তু পরে ভাবলাম ঠিক হবে না, তোমার পেস্টিজ আছে। তোমার সঙ্গে আমার কথা আছে। গম্ভীর গলায় অনুপম বললেন।
তুমি ফালতু রেগে গেছ মামা, আমি তো নেই এর ভিতরে, আমি শান্তিপূর্ণ মিটিং করে আদেশ দিয়ে চলে এসেছি। শোভন বলল। আরও বলল, গভমেন্ট চায় ধর্না উঠে যাক।
তুমি তন্দ্রিমাকে কী বলেছ? প্রসঙ্গ বদলে দিলেন অনুপম। রাগে তাঁর ভিতরটা জ্বলছিল।
কে তন্দ্রিমা? ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করল শোভন।
চারতলার অবনের ওয়াইফ তন্দ্রিমাকে তুমি মেসেজ করো?
কী যে বলো মামা, আমি কি চিনি অবন বলে কাউকে, উপরের বউদি কফি খেতে ডেকেছিল, সেও তোমার ভাগ্নে বলে, তুমি এসব কী বলছ?
গতকাল সিনেমা দেখতে যেতে বলেছিলে?
মাথা ঝাঁকায় শোভন, বলে, বউদিই তো আমায় বলেছিল ‘কলঙ্কিনী রাই’ দেখবে, আমি যেতে পারিনি ভবতোষদা এল না বলে…। এক নাগাড়ে বানিয়ে মিথ্যে কথা বলে যেতেই থাকে শোভন। ক্রমাগত সব অস্বীকার করতে থাকে। বলে, মেসেজ নিয়ে আসুক উনি, আমিও দেখাব, মুখ বাদ দেয়া পিকচার আছে।
মিথ্যে কথা বলো না। অনুপম রাগে কাঁপছিলেন।
হান্ডেড পারসেন্ট ট্রুথ মামা, ওর মেসেজ দেখবে, মামা ও যে রাতে ফোন করে, একটা দেড়টার সময়…।
হতবাক হয়ে বসে আছেন অনুপম। অভিযোগ অস্বীকার করে শোভন বলছে, মেসেজ দেখাবে, দরকারে কাউন্সিলরকে দেখাবে। অনুপম বুঝতে পারছিলেন শোভন একটা ঘোঁট পাকাতে চাইছে। এবং তা তন্দ্রিমার পক্ষে ভালো হবে না। অন্যের মেসেজ তন্দ্রিমার বলে চালাবে। সমাজ এমন যে আদি রসের গন্ধ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে। শোভনের সঙ্গে কাউন্সিলরের ভাব হয়ে গেছে নাকি! তিনি চুপ করে গেলেন। শোভন বলল, তুমি কিছু মনে কোরো না মামা, মা বলে তোমার মতো ভালোমানুষ হয় না, তোমার একটা ক্যারেক্টার আছে, ওই মেয়েছেলেটা একদিন তোমাকেও ফাঁসাবে, আমার কি মেয়ের অভাব যে ওই বুড়ির দিকে হাত বাড়াব?
গা ঘিনঘিন করে উঠল। অনুপম হাত তুলে থামালেন। সহ্য হচ্ছে না। শোভনও আন্দাজ করে থেমে গেল। বিকেলে সে বেরোল। অনুপমের মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। তিনি চুপ করে বসে থাকলেন ব্যালকনিতে। সন্ধের সময় সুমির ফোন, ও বাবলুদা, কী হয়েছে গো?
বিরক্ত লাগল, তবু বিরক্তি চেপে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোর ছেলের এগজাম কবে?
ধর্না ভেঙে দিয়েছে, এবার হবে, হ্যাঁ, বাবলুদা, তুমি কদিন এখেনে আমার কাছে এসে থাকো না গো।
কেন? অনুপম বললেন, আমি ওখেনে গিয়ে কী করব?
কী আর করবে, এখেনে কী ভালো ওয়েদার, বৃষ্টি হলে গায়ে চাপা দিতে হয়, আমার ছেলে কলকাতায় থাকুক, তুমি আমার কাছে এসো, ভালো লাগবে, তোমাকে প্রাণভরে সেবা করতে পারব বাবলুদা, বাড়িতে তুমি আর আমি শুধু।
সম্ভব না। তিনি প্রত্যাখ্যান করলেন, বললেন, তোর কি বয়স হয়নি সুমি?
না হয়নি, তুমি আসবে, আসবে, তোমার ফ্ল্যাট পাহারা দেবে আমার ছেলে,আর তুমি বাবলুদা আসবে আমার কাছে, ভালো মন্দ রেঁধে খাওয়াব তোমাকে, আমার কতদিনের সাধ আমার বাবলুদাকে রেঁধে খাওয়াই, ও বাবলুদা, বাবলুদা… বাবলু। চাপা গলায় ফিসফিস করল সুমি। বিরক্ত অনুপম বললেন, তোর ছেলে শোভন কোন দিন কিছু ঘটিয়ে দেবে, কেমন মানুষ করেছিস?
ওরটা ও বুঝবে, বড় হয়েছে, পার্টি ওকে শেল্টার দেয়, এখন ও আসবে না এদিকে, তুমি আমার কাছে এসো বাবলুদা।
কেন যাবে না ওদিকে? অনুপম জিজ্ঞেস করলেন, কী করে এসেছে?
কিছু না, কিন্তু আমিই বারণ করে দিয়েছি ফিরতে, বাদ দাও।
সুমির ফোন একসময় থামল। অনুপমের মনে হল, সুমি কিছু গোপন করে গেল। শোভন তার শহরে কিছু অপরাধ করে কলকাতা চলে এসেছে, এমন হতে পারে। আবার না-ও হতে পারে। কিন্তু কদিন এই শহরে এসে যা করছে তাতে নিজের শহরে যে গোলমাল করে পালায়নি সে কথা কে বলবে? রাতে শোভন ফিরে বলল, দুদিন সে বর্ধমান যাবে, বিনয়জেঠু বলেছে যেতে, বর্ধমানে তার মামার বাড়ি। দুদিন বাদেই ফিরবে। অনুপমের মনে হল, গা ঢাকা দিতেই যেন বর্ধমান যাচ্ছে শোভন। স্পটে না থাকলেও জড়িয়ে যেতে পারে। সে তো মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচ গিয়েছিল। যে মেয়েটার মাথায় লাঠি পড়েছিল সে মৃত্যুর সঙ্গে যুঝছে। যদি কিছু হয়ে যায়, ওর ফ্যামিলি ছাড়বে না। তিনি নিশ্চিন্ত হলেন, যাক। ও যেমন তাড়া খেয়ে নিজের জেলা থেকে কলকাতা এসেছে, তেমনি যেন তাড়া খেয়ে আর যেন কলকাতায় না ঢুকতে পারে। শোভন পরদিন সকালে বর্ধমান চলে গেল। তিনি যেন শ্বাস নিতে পারলেন।
বেলা দশটা নাগাদ ভবতোষ এল খোঁজ করতে। মানে ভবতোষও জানে না শোভন পালাচ্ছে শহর থেকে। অনুপম বসালেন ভবতোষকে, জিজ্ঞেস করলেন, আপনি ওকে মেটিয়াবুরুজ নিয়ে গেছিলেন?
ভবতোষ বলল, হ্যাঁ স্যার, আপনার ভাগ্নে।
আমি বলেছিলাম মেটিয়াবুরুজের গুন্ডা খুঁজতে, পুলিস তো এবার গুন্ডাকে ধরবে, নুরুল আর জ্যোতি।
কী হয়েছে, ওরা টাকা নিয়ে কাজ করেছে, কলকাতায় কি আছে?
আপনার বিপদ, শোভন কি মেটিয়াবুরুজ চিনত, গুন্ডারা ধরা পড়লেই বলে দেবে কারা তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল।
ভবতোষের মুখ অন্ধকার হয়ে গেল, ভয়ের ভাব জেগে উঠল, বলল, আমি কী করব, আমার কী স্বার্থ?
টাকা পেয়েছেন তো?
না, মানে স্যার…। ভবতোষের গলা জড়িয়ে গেল। সে আচমকা উঠে দাঁড়ায়, এর মানে কী স্যার, আমার সারাদিন বাইরে থাকতে হয় স্যার, তাই আমি আপনার ভাগ্নেকে নিয়ে গিয়েছিলাম মেটিয়াবুরুজে, শোভন কলকাতা ছেড়েছে, এখন ফোন বন্ধ রেখেছে, আমি তো এর সঙ্গে জড়িত নই।
অনুপম বললেন, পুলিস যদি এই ফ্ল্যাটে আসে, আমি বলব আপনি সব জানেন।
আমি কিছুই জানি না স্যার, এইভাবে মারবে ভাবিনি, কাল সন্ধেয় কথা হল শোভনের সঙ্গে, সে কিছুই বলল না…। কথা খুঁজে পাচ্ছিল না ভবতোষ। উঠে পড়েও আবার বসল, বলল, আমি কী করব স্যার, আমি তো কিছুই জানি না।
অনুপম বললেন, আপনার বন্ধু শোভন বলতে পারবে। আপনার ভাগ্নে তো। ভবতোষ পাল্টা বলল চাপ দিতে। দূর মশায়, আমার কোনও বোন নেই, ওকে জোর করে আপনি আমার ফ্ল্যাটে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন, আমাকে ওর মা বলেছিল, কিন্তু আমি না করে দিয়েছিলাম…।
ভবতোষ হতভম্ব হয়ে বসে থাকল। বসেই থাকল। তিনি কথা বন্ধ করলেন। ভবতোষ অনেকক্ষণ পরে চলে গেল। অনুপম এর ভিতরে একবার শোভনের মোবাইলে ফোন করলেন, কিন্তু ফোন বন্ধ। ফোন বন্ধ মানে আত্মগোপন করেছে শোভন। গতকালের ঘটনার জন্যই তা। টিভিতে আজও দেখাচ্ছে তা। কী ভয়ানক আক্রোশে লেঠেলরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সহ্য করা যায় না। চতুর্দিকে নিন্দার ঝড় উঠেছে। পুলিস তদন্ত শুরু করেছে। থানার ওসি বদলি হয়ে গেছে এক দিনেই। পরের দিন সন্ধ্যায় চিনি ফোন করল, কাকু, আমার খুব বিপদ।
অনুপম জিজ্ঞেস করলেন, পুলিসে যাওনি?
কাকু আমি নাকি তান্ত্রিক, আমি আমার মা বাবাকে মেরেছি, আমি কী করব?
যেতে বলছ আমাকে?
আপনি এলে আপনার নামে বলবে, পাল দাদা এসেছিল, পাশের ফ্ল্যাটের কাকিমা বলেছে পালের সঙ্গে আমার খারাপ সম্পর্ক আছে…, বলতে পারছি না কাকু।
আমি কী করতে পারি? অনুপম জিজ্ঞেস করলেন, থানা, কাউন্সিলারের কাছে যাও!