বাঙালির বোরখা
ষাটের দশকের শেষ দিকে আমি বিদ্যাময়ী ইস্কুলে পড়ি। ময়মনসিংহ শহরের সবচেয়ে নামকরা মেয়েদের ইস্কুল। হাজারো ছাত্রী, কিন্তু কেউই কখনও বোরখা পরতো না। কোনো ছাত্রী তো নয়ই, কোনও শিক্ষিকাও নয়। বোরখার কোনও চলই ছিল না। খুব পদানসীন মৌলবী পরিবারের বয়স্ক মহিলারা বাইরে বেরোলে রিকসায় শাড়ি পেঁচিয়ে নিত। ওদেরও পরার বোরখা ছিল না। সত্তরের দশকে আমি ওই শহরেই রেসিডেন্সি য়াল মডেল ইস্কুলে পড়ি। সারাইস্কুলে একটি মেয়েই বোরখা পরতো। তখন বোরখা কিনতে পাওয়া যেত না। পরতে চাইলে কাপড় কিনে বানিয়ে নিতে হত। মেয়েটির বোরখাও কাপড় কিনে বানিয়ে নেওয়া। তার মৌলবী-বাবা জোর করে তাকে বোরখা পরাতো। মেয়েটি আমাদের ক্লাসেই পড়তো। নাম ছিল হ্যাপি। লম্বা টিংটিঙে মেয়ে। আমিও ছিলাম হ্যাপির মতো লম্বা টিংটিঙে। হ্যাপি তার বোরখাটা ইস্কুলের গেটের কাছে এসেই খুলে ফেলতো, বোরখাটাকে বইখাতার ব্যাগে ঢুকিয়ে তবেই ইস্কুলে ঢুকতো। সে যে বোরখা পরে ইস্কুলে আসে তা কাউকে জানতে দিতে চাইতো না। কিন্তু খবরটা একদিন ঠিকই জানাজানি হয়ে যায়। জানাজানি হওয়ার পর ইস্কু লের মেয়েরা সবাই হ্যাপিকে নিয়ে হাসাহাসি করতো। হ্যাপি ক্লাসের পেছনের বেঞ্চে বসতো বোরখা পরার লজ্জায়। সঙ্গে আবার পড়াশোনা ভালো না করার লজ্জাও ছিল। আমি ভালো ছাত্রী হলেও সবার সঙ্গেই মিশতাম। হ্যাপির সঙ্গেও। হ্যাপি খুব অসভ্য অসভ্য গালি জানতো। ক্লাসের অন্য মেয়েরা হ্যাপির মতো অত গালি জানতো না। আমি তো আগে কোনওদিন শুনিনি ওসব গালি। হ্যাপি যখন ক্লাস নাইনে বা টেন-এ, তখন তার বাবা জোর করে তার বিয়ে দিতে চাইছিল। হ্যাপি তার হবু-স্বামীর কথা বলতো আর তার বাপ মা তুলে গালিগালাজ করতো। আমি অবাক হয়ে ওসব শুনতাম। ক্লাসের সবচেয়ে ডাকাবুকো মুখ-খারাপ মেয়ে কিনা বোরখা পরে। আর আমরা যারা কোনও গালি জানি না, আমরা যারা সরল সোজা ভালোমানুষ, তারা কোনওদিন বোরখার কথা কল্পনাও করিনি। বোরখা একটা হাস্যকর পোশাক ছিল ষাট আর সত্তর দশক জুড়ে। দুএকজন যারা পরতে বাধ্য হতো, তারা লজ্জায় রাস্তাঘাটে মাটির সঙ্গে মিশে থাকতো।
আশির দশকের শেষ দিকে শাড়ির ওপর একটা বাড়তি ওড়নার মতো কাপড় পরা শুরু হয়েছিল। নব্বই দশকের শুরুতেও তাই ছিল। একটা বদ হাওয়া টের পাচ্ছিলাম, প্রাণপণে রুখতে চাইছিলাম সেই বদ হাওয়া। সমাজের ইসলামীকরণ এবং নারীবিরোধী ইসলামী আইনের প্রতিবাদ করেছিলাম। সে কারণে আমাকেই তাড়িয়ে দেওয়া হল দেশ থেকে। চুরানব্বই থেকে দেশের বাইরে। নির্বাসন জীবনে দেশে কী হচ্ছে না হচ্ছে সব খবর রাখার সুযোগ হতো না। হঠাৎ সেদিন, এই বছর দুয়েক আগে, চমকে উঠেছি কিছু ছবি দেখে। আমাদের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে ঘটে যাওয়া রজত জয়ন্তী উৎসবের ছবি, যে উৎসবে আমার প্রচুর সহপাঠী গিয়েছিল, সবাই এখন দেশ বিদেশের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। ছবিগুলোর সামনে আমি হতভম্ব, হতাশ বসে থেকেছি সারাদিন। প্রায় সব সহপাঠী মেয়ের মাথায় হিজাব, কালো কাপড়ে কপাল অবধি ঢাকা, অত সুন্দর চুলগুলো সব লুকিয়ে ফেলেছে। আর প্রায় সব সহপাঠী ছেলের মুখে দাড়ি নয়তো মাথায় টুপি, কপালে মেঝেয় কপাল ঠুকে নামাজ পড়ার কালো দাগ। এই ছেলেমেয়েগুলো পুরো আশির দশক জুড়ে আমার সঙ্গে ডাক্তারি পড়েছে, কোনওদিন কাউকে এক রাকাত নামাজ পড়তে দেখিনি, কোনওদিন কাউকে আল্লাহর নাম মুখে নিতে শুনিনি। এমন আধুনিক সব চিকিৎসাবিজ্ঞানী কি না হয়ে উঠেছে পাঁড় ধর্মান্ধ? কে এই বিজ্ঞানীদেরও মাথার খুলি খুলে গোবর ভরে দিয়েছে। তবে কি সেই বদ হাওয়া, যেটিকে রুখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু রুখতে দেওয়া হয়নি, সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল বিষাক্ত ভাইরাস, যুক্তি বুদ্ধি চিন্তাশক্তি লোপ পাইয়ে দেওয়ার ভাইরাস? যদি ডাক্তারদেরই এই হাল, কল্পনা করতে পারি আর সব সাধারণ মানুষ এখন ধর্মান্ধতার কোন স্তরে পোঁচেছে। পোঁচেছে না বলে সম্ভবত তাদের কোন স্তরে পোঁছোনো হয়েছে বলা ভালো। আজ দেশ থেকে একজন জানালো, মিতা হকের বক্তব্য নিয়ে দেশে নাকি হুলস্থুল কাণ্ড হচ্ছে। ইউটিউবে কিছুক্ষণ আগে শুনলাম ওঁর কথা। চলতে ফিরতে রাস্তাঘাটে বাজারে অফিসে যেখানেই যত মেয়েদের চোখে পড়ে, প্রায় সবারই পরনে নাকি থাকে কালো বোরখা, শুধু চোখদুটো খোলা, যেন হোঁচট না খায়! প্রায় সবাই তবে চলমান কয়েদি! সবারই গায়ে মস্ত কালো সতীত্ব বন্ধনী! মিতা হক যা বলতে চেয়েছেন, তা হল, নিজেদের সংস্কৃতিকে সম্মান করো, আরবের ধর্ম গ্রহণ করেছো, কিন্তু আরবের পোশাক-সংস্কৃতি তোমাকে গ্রহণ করতে হবে কেন!
বোরখা ঠিক আরবের পোশাক নয়, বোরখা ইসলামের পোশাক। আরবে ইসলাম আসার আগে বোরখা বলে কিছু ছিল না। ইসলামকে নিরীহ বাঙালি মুসলমানদের মস্তিষ্কের কোষে কোষে এমন গভীরভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে যে গত দুদশক ধরে বাঙালি মুসলমান মেয়েরা বোরখাকে নিজের পরিচয়ের অংশ বলে মনে করছে, অথবা মনে করতে বাধ্য হচ্ছে। আমরা বৌদ্ধ, আমরা হিন্দু, আমরা খিস্টান, আমরা। মুসলমান, আমরা সবাই বাঙালি–সত্তর দশকে বাঙালিরা এই গানটা খুব গাইতো। এই গান কেউ আর এখন গায় বলে মনে হয় না। এখন বাঙালি পরিচয়ের চেয়ে বড় পরিচয় মুসলমান পরিচয়। এই পরিচয়টি যখন বড় হয়ে দাঁড়ায়, তখন বোরখার চল বাড়ে। দাড়ি টুপির প্রকোপ বাড়ে। তুমি মসজিদ মাদ্রাসা বানিয়ে দেশ ছেয়ে ফেলবে, তুমি ইসলামি আইন রাখবে দেশে, তুমি সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখবে, তুমি ইসলামি মৌলবাদীদের রাজনীতি করতে দেবে, তাদেরকে সংসদে বসতে দেবে, তাদেরকে অবাধে ওয়াজ মাহফিল আর ইসলামি জলসা করতে দেবে, তোমার চোখের সামনে ইসলামিকরণ হবে দেশটার, আন্তর্জাতিক মৌলবাদী-সন্ত্রাসী চক্র কাড়ি কাড়ি টাকা পাঠাবে দেশের যুব সমাজকে নষ্ট করার জন্য, যুব সমাজ নষ্ট হতে থাকবে আর তুমি শাড়ি পরে কপালে টিপ পরে সাহিত্য সংস্কৃতির ছোট একটা শহুরে গোষ্ঠীর মধ্যে ঘোরাঘুরি করে রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতে গাইতে স্বপ্ন দেখবে বাঙালির বাঙালি পরিচয়টা বড় মুসলমান পরিচয়ের চেয়ে, তা কী হয়! এ তো রীতিমত জেগে ঘুমোনোর মতো
মেয়েদের বোরখা পরার অর্থ হল, মেয়েরা লোভের জিনিস, ভোগের বস্তু, মেয়েদের শরীরের কোনও অংশ পুরুষের চোখে পড়লে পুরুষের যৌন কামনা আগুনের মতো দাউ দাউ করে জ্বলে, লোভ লালসার বন্যা নামে, ধষর্ণ না করে ঠিক শান্তি হয় না। পুরুষদের এই যৌনসমস্যার কারণে মেয়েদের আপাদমস্তক ঢেকে রাখতে হবে। এই হলো সপ্তম শতাব্দীতে জন্ম হওয়া ইসলামের বিধান। এই বিধান বলছে, পুরুষেরা সব অসভ্য, সব বদ, সব যৌন কাতর, ধর্ষক, তারা নিজেদের যৌন ইচ্ছেকে দমন করতে জানে না, জানে না বলেই শরীরের আপাদমস্তক ঢেকে রাখার দায়িত্ব মেয়েদের নিতে হয়। সত্যি কথা বলতে কী, বোরখা মেয়েদের যত অপমান করে, তার চেয়ে বেশি করে পুরুষদের। বোরখার প্রতিবাদ পুরুষদেরই করা উচিত। অবাক হই, পুরুষেরা কী করে তাদের নিজেদের ধর্ষক পরিচয়টিকে টিকিয়ে রাখতে চায় মেয়েদের বোরখা পার বিধানটি জারি রেখে নিজেদের আত্মসম্মানবোধ বলে কিছুই কি নেই পুরুষের? তারা কেন এখনও বলছে না, আমরা মেয়ে দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়বো না, আমরা আমাদের যৌনইচ্ছেকে সংযত করতে জানি, আমরা বর্বর নই, আমরা অসভ্য অসংযত ধর্ষক নই। আমরা শিক্ষিত, সভ্য। মেয়েরাও আমাদের মতো মানুষ। মেয়েদেরও তো যৌনইচ্ছে আছে, সে কারণে আমাদের তো বোরখা পরতে হয় না। যদি মেয়েরা তাদের যৌনইচ্ছেকে সংযত করতে জানে, আমরা জানবো না কেন? আমরা জানি মেয়েদের সম্মান করতে। আমাদের দোহাই দিয়ে মেয়েদের বোরখার কারাগারে ঢুকিয়ে অত্যাচার করা আর চলবে না। মিতা হকের আরব সংস্কৃতি নিয়ে বেশ রাগ। আরব সংস্কৃতি কেন বাংলায় এসেছে, এ প্রশ্ন অবান্তর। আরব, পারস্য, তুরস্ক, সমরখন্দ– এসব দেশ থেকে মুসলমানরা ভারতবর্ষে এসেছে, সঙ্গে ইসলাম এসেছে, দশম-একাদশ শতাব্দীতে মুসলমান সুফিয়া বেশ জনপ্রিয় হতে শুরু করেছিল। আমাদের হিন্দু পূর্বপুরুষ ধর্মান্তরিত হয়েছেন নানা কারণে, সুফিদের অমায়িক ব্যবহারে অথবা ব্রাহ্মণদের জাতপাতের অত্যাচারে। কোনও ভাষা বা কোনও সংস্কৃতি মন্দ নয়, অসুন্দর নয়। আমাদের নিজেদের ভাষা আর সংস্কৃতিও পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষা আর সংস্কৃতির সঙ্গে মিলেছে, মিশেছে। ভাষা আর সংস্কৃতির বিবর্তন সবসময় ঘটছে, বাংলার মেয়েরা সবসময় এভাবে শাড়ি পরতো না, যেভাবে এখন পরে। বাঙালিরা সবসময় ঠিক এই ভাষায় কথা বলতো না, যে ভাষায় আমরা এখন কথা বলছি বা লিখছি। আমাদের ভাষার মধ্যে অন্য অনেক ভিনদেশি শব্দ ঢুকেছে। দরজা খোলা রাখাই ভালো, অন্য শব্দ, অন্য সুর, অন্য গল্প ঢুকতে চাইলে ঢুকুক। নিজের ভাষা আর সংস্কৃতি এতে মরে যায় না, বরং সমৃদ্ধ হয়। কিন্তু ক্ষতি হয় যখন কোনও ধর্ম তার মৌলবাদী চরিত্র নিয়ে ঢোকে। কারণ মৌলবাদী ধর্ম মানবতার আর মানবাধিকারের ঘোর বিরোধী। ভারতবর্ষে যে। সুফি ইসলামের প্রচার হয়েছিল, সেটির চরিত্র ছিল উদার। সুফিরা নামাজ রোজায় বিশ্বাসী ছিলেন না। বুলেহ শাহ নামের এক সুফি কবি তো মসজিদ মন্দির সব ভেঙে ফেলার কথা বলতেন। বলতেন, মসজিদ মন্দির ভেঙে ফেলো, হৃদয় ভেঙো না, হৃদয়ই সবচেয়ে বড় পবিত্র স্থান, কাবার চেয়েও পবিত্র। সুফি ইসলামকে সরিয়ে মৌলবাদী ইসলাম গেড়ে বসলো ভারতবর্যে, সম্ভবত তিরিশ চল্লিশের দশকেই, গোটা পৃথিবীকেই দখল করার জিহাদি স্বপ্ন নিয়ে তখন মাওলানা মওদুদি বানিয়ে ফেললেন তাঁর জামাতে ইসলামি দল। ভারত ভাগের পর ভৌগোলিক সুবিধের কারণে অত দ্রুত মৌলবাদী ইসলাম এসে নষ্ট করতে পারেনি হিন্দু বৌদ্ধ বেষ্টিত পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মুসলমানদের। পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকের দুঃশাসন থেকেও পূর্ব পাকি স্তান ব্যস্ত ছিল নিজেদের বাঁচাতে। সুফি ইসলামের তখনও রেশ ছিল বলে মুস লমানিত্বের চেয়ে বাঙালিত্ব বড় ছিল বাঙালি মুসলমানদের কাছে। একাত্তরের পর যখন সেনাবাহিনীর লোকেরা শাসন করতে শুরু করলো দেশ, মৌলবাদী ইসলামকে তারা বেশ সোহাগ করে বড় আসন পেতে দিল বসতে, ননীটা ছানাটা খাইয়ে নাদুস। নুদুস করলো, আর সত্যিকার নষ্ট হতে থাকলো তখন দেশ। মৌলবাদী ইসলামে দেশ ছেয়ে গেলে বাঙালি পরিচয়ের চেয়ে অনেক বড় হয়ে ওঠে মুসলমান পরিচয়, বাংলা ভাষার চেয়ে মূল্যবান হয়ে ওঠে আরবী ভাষা, হৃদয়ের চেয়ে পবিত্র হয়ে ওঠে মক্কা মদিনা। আমি মনে করি না ভালোবেসে কেউ তখন আরবীয় সংস্কৃতিকে নিজের সংস্কৃতি বলে গ্রহণ করে। ভয়ে গ্রহণ করে, আল্লাহর ভয়ে, দোযখের ভয়ে। ইসলামের জন্মভূমির সব কিছুকে অনুকরণ করে দোযখের আগুন থেকে যদি বাঁচা যায়, চেষ্টা করে। মানুষ তখন বিভ্রান্ত। একগাদা রূপকথাকে সত্যি বলে ভেবে নিলে অপ্রকৃতিস্থর মতো আচরণ তো করবেই। দোকানপাটে তো ঝুলবেই শত শত রেডি মেইড বোরখা। কালো কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হবে মেয়েদের নাম পরিচয়, মেয়েদের অস্তিত্ব। মেয়েরা তখন শুধু জম্বি, ওয়াকিং ডেড, ফেসলেস। শুধুই নো-বডি, কেউ। নয়। দুঃখ এই, এইটুকু বোঝার ক্ষমতাও মেয়েরা হারিয়ে ফেলছে যে বোরখা তাদের কেউ থেকে কেউ নয় বানিয়ে ফেলে।
বোরখার বিরুদ্ধে বলেছেন বলে মিতা হককে নাকি লোকেরা খুব গালি গালাজ করছে। যে পুরুষগুলো বলে বোরখা খুব ভালো পোশাক, সুন্দর পোশাক, চমৎকার। পোশাক, ওই পুরুষগুলো কেন বোরখা পরছে না কেউ জিজ্ঞেস করেছে? কেউ কেন ওদের জিজ্ঞেস করছে না, বোরখা যদি অত ভালো পোশাক, তাহলো তোরা বোরখা পরছিস না কেন? দুদিন ভালো পোশাকটা পরে দেখ না কেমন ভালো লাগে!?
ব্যক্তিগত কিছু ঈর্ষা-জনিত কারণে তাঁর স্ত্রীদের জন্য বোরখার প্রচলন শুরু করে ছিলেন পয়গম্বর। বেশ ছিল। হঠাৎ কী মনে হল কে জানে, বলে দিলেন সব মুসলমান মেয়েকেই এখন বোরখা পরতে হবে। চৌদ্দশ বছর আগে যে কারণেই মুসলমানদের মধ্যে বোরখার চল শুরু হোক না কেন, এখন এই একবিংশ শতাব্দীতে মেয়েদের বোরখা পরার পেছনে কোনও যুক্তি নেই। সত্যি বলতে কী, বোরখা মেয়েদের কাজে লাগে না, লাগে পুরুষের কাজে। বোরখাআসলে পুরুষের পোশাক, চোর ডাকাত খুনী পুরুষের পোশাক। পুরুষেরা যখন চুরি ডাকাতি করে, খুন করে, বোরখা পরে নেয়। এতে ওদের সুবিধে হয় বেশ, কেউ চিনতে পারে না। চোর ডাকাতের পোশাককে ধর্মের নামে মেয়েদের গায়ে চাপানোর কোনও মানে হয়?