বাঘের দুধ

বাঘের দুধ

তদানীন্তনবাবুর যে বাঘের সঙ্গে দিব্যি খাতির, তা লোকে জানে। খাতির মাগনা হয়নি। একবার নাকি পাতানাতা খুঁজতে ভুটভুটের জঙ্গলে ঢুকে ভারি ফ্যাসাদে পড়েছিলেন। কানাওলা নামে একরকম ভূত আছে, তারা এমনিতে ফট করে কারও সামনে আসে না কিংবা শব্দ-সাড়াও করে না। তাদের কাজ হল মানুষের মগজে ঢুকে স্রেফ তার কাপাসটাকে অকেজো করে দেওয়া। ব্যস, সেই লোক আর কিছুতেই চেনা রাস্তাও চিনতে পারবে না, নিজের বাড়ির সামনে দিয়ে দশবার যাতায়াত করেও বাড়ি ঠাহর করতে পারবে না, একেবারে ভজঘট্টে ব্যাপার বাধিয়ে দেবে। তা ভুটভুটের জঙ্গলে তেমনধারা কানাওলা বিস্তর ছিল। তদানীন্তনবাবু পড়লেন তারই একটার পাল্লায়। জঙ্গল থেকে আর কিছুতেই বেরোতে পারেন না। ওদিকে অন্ধকারও নেমে এল। আর সেই আমলে ডুয়ার্স ছিল এক উদ্ভুটে জায়গা। ভূতপ্রেত দত্যিদানা তো ছিলই, আর ছিল বিস্তর বাঘ, হাতি, গন্ডার, বুনো শুয়োর, সাপখোপের কথা ছেড়েই দিচ্ছি। আর কে-না জানে, জঙ্গলের মধ্যে সন্ধেবেলার চেয়ে ভয়ের সময় আর নেই।

তদানীন্তনবাবু তখন ছোকরা মানুষ। সবে কবরেজিতে পসার হতে শুরু করেছে। ডাক্তার-কবরেজদের এই শুরুর দিকটাই যা বিপদের। প্রথম দিকেই দু-চারটে ভোজবাজি দেখিয়ে দিতে পারলে রুগির একেবারে গাদি লেগে যায় চেম্বারে। পসার হয়ে যাওয়ার পর রুগি মরলেও আর কেউ কিছু মনে করে না। যে-ক-টা ভালো হয়, সেগুলোর কথাই লোকে ফলাও করে বলে বেড়ায়। তা তদানীন্তনবাবু গোটা দুয়েক ভোজবাজি ইতিমধ্যে দেখিয়েছেনও। মহাজন রামপ্রসাদের পেটে একটা টিউমার হয়েছিল। ডাক্তার বলেছে, অস্ত্র করতে হবে। রামপ্রসাদ অস্ত্র করার নামে এমন ভয় খেয়ে গেল যে, তার নাওয়া-খাওয়া বন্ধ হল। সেই টিউমার শেষে কমল তদানীন্তনের দেওয়া ওষুধে। রামপ্রসাদ খুশি হয়ে বলল, ‘তোমাকে কত দিতে হবে বলো, যা চাও তা-ই দেব।’ কিন্তু লোভ তদানীন্তনের ধাতেই নেই। তার ওপর গুরুর বারণ আছে, চিকিৎসা মানে লোকসেবা, লোভ করতে যেয়ো না বাপু। তদানীন্তন তাই দুটি টাকা আর ওষুধের দামটুকু নিয়েছিলেন। এতে সবাই বেশ বাহবা দিল তাঁকে।

এরপর হেডপন্ডিতের বউয়ের ভূতে ধরার ঘটনা। সে-এক বিদঘুটে ব্যাপার। পন্ডিতমশাইয়ের গিন্নি রাখালরানি মহাখান্ডার। তাঁর ভয়ে বাড়ির বেড়ালটা অবধি তটস্থ। অমন যে দাপটের পন্ডিতমশাই, যাঁর ভয়ে ছাত্ররা একেবারে ভিজে বেড়ালটি হয়ে থাকে, সেই-হেন পন্ডিতমশাই রাখালরানির কথায় ওঠেন-বসেন। রাখালরানিকে যে ভূতেরাও ধরার সাহস রাখে, এটাই আশ্চর্যের বিষয়। তবু ধরল, সবাইকে অবাক করে দিয়েই ধরল। আর কী ধরা বাপ। সাঁঝবেলায় পুকুরঘাটে গা ধুতে গিয়েছিলেন, ফিরে এলেন অন্য মানুষ। এক গলা ঘোমটা, নববধূর মতো হাবভাব, কথা নেই, বার্তা নেই, হঠাৎ ফুচফুচ করে কাঁদতে থাকেন, আবার যখন-তখন খিলখিল করে হেসে ওঠেন। অদৃশ্য সব মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে শুরু করলেন। গলা ছেড়ে বিদঘুটে সব গান গাইতে লাগলেন। একদিন দিনে-দুপুরে একটা মোষের পিঠে চেপে খানিকটা ঘুরে এলেন। এইসব কান্ড দেখে ডাক্তার-বদ্যি ডাকা হল। তারা ফেল মারলে ডাকা হল ওঝা। রাজ্যের লোক ভেঙে পড়ল কান্ডটা দেখতে। ওঝা যখন হার মেনে চলে গেল, তখন তদানীন্তনবাবুর ডাক পড়ল।

তা তদানীন্তনের কপাল ভালোই বলতে হবে। খুঁজেপেতে লাগসই গাছগাছড়া পেয়ে ওষুধ বানিয়ে ফেললেন। আর তা লেগেও গেল। সাত দিনের মধ্যে রাখালরানি আবার সেই আগের মতোই খাণ্ডারনি হয়ে উঠলেন। তদানীন্তনের বেশ নাম হল। শুধু কে জানে কেন, পন্ডিতমশাই বিশেষ খুশি হলেন না। কেবল বলতে লাগলেন, ‘কবিরাজ না কপিরাজ, হুঁ:, উনি আবার চিকিৎসা করবেন, লোকচরিত্রই জানে না লোকটা! কোনটা ভালো কোনটা মন্দ, সেই জ্ঞানই হয়নি।’

তৃতীয় যে রুগি হাতে এল, তিনি বলতে গেলে এলাকাটার রাজা। শোনা যায়, নরহরিবাবুর একসময়ে নাম হয়েছিল থরথরি বলে। তা কথাটা মিথ্যেও নয়। নরহরি প্রথম জীবনে ডাকাতি করতেন। তাঁর হাতে মেলা লোক মরেছে, মেলা লোক সর্বস্বান্ত হয়েছে। যথেষ্ট টাকাপয়সা হাতে এসে যাওয়ার পর নরহরি ডাকাতি ছেড়ে ব্যাবসাতে মন দিলেন, জমিজায়গাও কিনে ফেললেন বিস্তর। তাতে অবস্থাটা ফুলেফেঁপে উঠল, খুব নামডাকও হল। এখন উনি ডাকাতি করেন না বটে, কিন্তু হাতে মাথা কাটেন, দোর্দন্ডপ্রতাপ। একদিন তদানীন্তনকে ডেকে পাঠালেন দরবারে। বিশাল ঘর, ঝাড়বাতি, কিংখাব, কী নেই সেই ঘরে। তাকিয়ায় ঠেস দিয়ে বসেছিলেন। তদানীন্তনকে বললেন, ‘দেখো হে বাপু, ইদানীং মনে হচ্ছে আমি কেমন বুড়ো হয়ে যাচ্ছি। ব্যাপারটা মোটেই ভালো ঠেকছে না আমার কাছে। এত টাকাপয়সা, ধনদৌলত, আমি বুড়ো হলে ভোগ করবে কে? অ্যাঁ! বুড়ো হব মানে? একী ইয়ার্কি নাকি? এখনও তেমন বয়সই হল না, বুড়ো হলেই হল? তা তোমাকে এর একটা ব্যবস্থা করতেই হবে…’

শুনে তদানীন্তন মাথা চুলকোলেন। বুড়ো হওয়াটা কোনো রোগ নয়, তবে অকালবার্ধক্য হলে অন্য কথা। তিনি যতদূর শুনেছেন, নরহরির বয়স সত্তরের ওপর, চুলে এখনও পাক ধরেনি, শরীরটাও টানটান আছে। একখানা ছোটোখাটো পাঁঠা, আস্ত কাঁঠাল বা সেরটাক রাবড়ি হাসতে হাসতে খেয়ে ফেলতে পারেন। কিলিয়ে পাথর ভাঙা নরহরির কাছে এখনও কিছু নয়। কিন্তু তা বলে তো আর জরা-বুড়ি ছাড়বে না। সে একদিন ধরবেই মানুষকে।

তদানীন্তনকে দ্বিধাগ্রস্ত দেখে নরহরি বললেন, ‘দেখো হে, রোগটা যদি সারাতে পারো তো তোমাকে আর ফ্যা ফ্যা করে ঘুরে বেড়াতে হবে না। রাজা করে দেব। আর যদি না-পারো তবে কী হবে, সেটা উহ্য থাক…’

তদানীন্তন বুঝলেন।

বুড়ো-হওয়া ঠেকানোর ওষুধ যে নেই, তা নয়। তবে বেশির ভাগ লোকই এটাকে রোগ বলে মনে করে না, চিকিৎসাও করাতে আসে না। আর ওষুধ জোগাড় করাও বেশ শক্ত। বাঘের দুধ, ব্রহ্মকমলের বীজ এবং আরও নানা দুষ্প্রাপ্য জিনিস লাগবে।

তদানীন্তন বললেন, ‘দেখি।’

‘দেখো, বেশ ভালো করে দেখো। এইটে তোমার অগ্নিপরীক্ষা, এই কথাটা মনে রেখেই কাজ কোরো বাপু।’

‘যে আজ্ঞে।’

এটা যে একটা প্রচ্ছন্ন হুমকি তা বুঝতে কষ্ট হল না তদানীন্তনের। ভারি চিন্তায় পড়ে গেলেন তিনি। তবে তিনি এটাও জানেন যে, নরহরির চিকিৎসা যদি লেগে যায়, তাহলে পসারের জন্য আর ভাবতে হবে না।

ভাবতে ভাবতে তদানীন্তন শুকিয়ে যাচ্ছিলেন। রোজ সকালে নরহরির দুটো যমদূতের মতো পাইক সড়কি হাতে এসে হেঁড়ে গলায় হাঁক মারে, ‘কই কবরেজমশাই, ওষুধ জোগাড় হল? বাবু যে হেদিয়ে পড়লেন। রোজ রাতে পনেরোখানা পরোটা খান, কাল রাতে চোদ্দোর বেশি পারেননি। যা করার তাড়াতাড়ি করুন।’

তদানীন্তন কবিরাজ অমায়িকভাবে বলেন, ‘হচ্ছে বাবারা, হচ্ছে।’

তা দৌড়ঝাঁপ করে, নানা ফন্দিফিকির খাটিয়ে, কিছু কিছু জিনিস পেয়েও গেলেন তদানীন্তন। এখন বাঘের দুধটা হলেই হয়। কিন্তু সেটা কী হবে? কথাতেই আছে ‘বাঘের দুধ’। অভাবে গোরু বা মোষের দুধ দেওয়া যায় বটে, কিন্তু তাতে বিশেষ কাজ হবে না।

তা সে যা-ই হোক, নানা ভাবনাচিন্তায় পড়ে জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে বেঘোরে তো অন্ধকার নেমে এল। চারদিকে নানারকম জন্তুজানোয়ারের হাঁকডাক শোনা যাচ্ছে। তদানীন্তন অগত্যা একটা বেশ বড়ো গাছে উঠে পড়লেন। বিশ হাতমতো উঠে তিনটে শাখার সংযোগস্থলে দিব্যি একটা রাত কাটানোর মতো ফাঁদালো জায়গাও জুটে গেল। সেখানে বসে বসে আকাশ-পাতাল ভাবতে লাগলেন। পেটে খিদে, শরীরটার ওপর দিয়ে ধকলও গেছে কম নয়। তার ওপর কাঠপিঁপড়ে আর মশার কামড়েও জ্বালাতন হচ্ছেন।

ক্রমে রাত বেশ নিশুতি হয়ে এল। তদানীন্তনের একটু ঢুলুনি এসেছিল। হঠাৎ শুনলেন, গাছের তলায় কীসের যেন শব্দ হচ্ছে। কেউ যেন কান্নাকাটি করছে বলে মনে হল। তবে মানুষ নয়।

তদানীন্তন অন্ধকারে ভালো দেখতে পাচ্ছিলেন না বলে একটু ঝুঁকলেন। আর সঙ্গে-সঙ্গে তাঁর মনে হল, কে যেন তাঁর ঘাড়ে একটা ধাক্কা মেরে টালমাটাল করে দিল।

হড়াস করে তদানীন্তন গাছ থেকে পড়লেন। তবে সোজাসুজি নয়। সোজা পড়লে ঘাড় ভেঙে যেত নির্ঘাত। ডালপালায় আটকে এবং গোঁত খেয়ে খেয়ে যখন নীচে এসে পড়লেন, তখন ঘাড় না-হোক হাড়পাঁজর কিছু-না-কিছু ভাঙারই কথা। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, ভাঙা তো দূরের কথা, ব্যথাটুকুও টের পেলেন না তিনি।

কিছুক্ষণ হতভম্বের মতো বসে থেকে হঠাৎ বোঁটকা গন্ধটা পেলেন। আঁতকে উঠে দেখলেন—যা দেখলেন, তা প্রত্যয় হল না।

একটা বিশাল বাঘ। বাঘ যে এত বড়ো হয়, তা ধারণাতেই ছিল না তদানীন্তনের। লেজ থেকে মাথা অবধি বোধহয় হাত দশেক হবে। উঁচুও একটা বড়ো মোষের সমান। বাঘটা মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে আর একটা অদ্ভুত শব্দ করে গোঙানি ছাড়ছে।

এরকম অবস্থায় তদানীন্তন আর পড়েননি কখনো। শত্রুও যেন না-পড়ে।

কিছুক্ষণ বিস্ময়ভরে বাঘটার দিকে চেয়ে রইলেন। হঠাৎ তাঁর কানে তাঁরই বিবেক যেন বলে উঠল, ‘তুমি না চিকিৎসক! চিকিৎসক কী রুগি বাছে? জীব কষ্ট পাচ্ছে, তোমার কাজ তুমি করো।’

তদানীন্তনের ভিতরের সুপ্ত কবিরাজটি জেগে উঠল। তিনি যন্ত্রণাকাতর বাঘটার কাছে নির্ভয়ে এগিয়ে গেলেন।

আশ্চর্যের বিষয়, তদানীন্তন একটু চেষ্টা করতেই বাঘটার সামনের ডান পায়ের থাবায় কিছু ওপরে নাড়িটাও টের পেলেন। বেশ চঞ্চল নাড়ি। বুঝতে পারলেন, বাঘটার পিত্ত কুপিত হয়েছে। বাঘটা হ্যাহ্যা করে হাঁফাচ্ছিল, আর জ্যোৎস্নাটাও নিশুতরাতে বেশ জোরালো হয়ে পড়েছে বলে জীব পরীক্ষা করতেও বেগ পেতে হল না। চোখ টেনে চোখের কোলটাও পরীক্ষা করে নিলেন।

জঙ্গলে গাছগাছড়ার অভাব নেই। মোক্ষম ওষুধটি খুঁজে বের করতে কষ্টও হল না। এনে খাইয়ে দিলেন। বাঘটাও, আশ্চর্যের বিষয়, খেল।

তারপর বাঘটা একটু আরাম বোধ করে শুয়ে পড়ল। তদানীন্তন তার পিঠ চুলকে দিলেন। কানে সুড়সুড়ি দিলেন। বাঘটা নাক ডাকিয়ে ঘুমোতে লাগল।

এরপর বাঘের দুধ জোগাড় করতে আর কষ্ট পেতে হয়নি তাঁকে।

লোকে দেখেছে, সন্ধেবেলা বাঘটা এসে তদানীন্তনের গোয়ালঘরে ঢুকত, আর তদানীন্তন বালতি নিয়ে গিয়ে সের-সের দুধ দুইয়ে নিতেন। লোকে বলে, সেই দুধ থেকে ছানা, দই, এমনকি ঘি অবধি তৈরি করতেন তদানীন্তন। নিজে তো খেতেনই, চড়া দামে বিক্রিও করতেন।

কিন্তু যে-কথাটা বলার জন্য এই এত কথা, তা হল নরহরিকে নিয়ে।

তদানীন্তনবাবু তো বাঘের দুধ ও আর-সব দুষ্প্রাপ্য জিনিস দিয়ে বার্ধক্য ঠেকানোর ওষুধ তৈরি করলেন। তারপর গিয়ে হাজির হলেন নরহরির দরবারে।

নরহরি ওষুধের শিশিটা খুলে নাকের কাছে ধরে ঘেন্নায় মুখ ফিরিয়ে নিয়ে বললেন, ‘এঃ, বিচ্ছিরি গন্ধ। এতে কাজ হবে তো হে কবরেজ? নইলে কিন্তু…’

কাজ হল কি না, তা ঠিক বোঝা গেল না।

তবে ক-দিন বাদে একদিন রাস্তায় হঠাৎ দেখা। তদানীন্তন তাঁর গাছগাছড়ার খোঁজে যাচ্ছিলেন। আর ঘোড়া দাপিয়ে প্রাতভ্রমণে বেরিয়েছিলেন নরহরি।

একেবারে মুখোমুখি পড়ে গেলেন।

‘এই যে কবরেজ! কী খবর?’

তদানীন্তন তটস্থ হয়ে বললেন, ‘যে আজ্ঞে। খবর ভালোই। তা আপনাকে বেশ ছোকরা-ছোকরা দেখাচ্ছে কিন্তু।’

এ-কথায় হঠাৎ ঘোড়া থেকে লাফ দিয়ে নামলেন নরহরি। তারপর গাঁক গাঁক করে চেঁচিয়ে বলে উঠলেন, ‘এ-কথাটা আজকাল আমাকে সবাই বলে কেন বলো তো! একী ইয়ার্কি নাকি?’

‘আজ্ঞে না, ইয়ার্কি হবে কেন? যথার্থই বলে।’

নরহরি অগ্নিশর্মা হয়ে বললেন, ‘ইয়ার্কি পেয়েছ। ছোকরা দেখালেই হল? বয়স কত হয়েছে তা খেয়াল আছে? একাত্তর ছাড়িয়ে বাহাত্তরে পড়লুম, আর ছোকরা দেখাবে মানে? বয়সের গাছপাথর নেই, তা জানো? ওসব কবরেজি একদম করবে না আমার কাছে। বুড়ো বয়সে বুড়ো হওয়াটাই ধর্ম, বুঝলে? ছোকরা দেখানোটা কাজের কথা নয়।’

‘যে আজ্ঞে।’

‘চুলে পাক ধরেছে, দেখেছ? কষের দাঁত পড়েছে জানো? আজকাল দশখানা পরোটার বেশি খেতে পারি না, খবর রাখো?’

‘আজ্ঞে না।’

‘খুব কবরেজ হয়েছ! পন্ডিত ঠিকই বলে, কবিরাজ না কপিরাজ।’ এই বলে ফের ঘোড়া ছোটালেন নরহরি।

তদানীন্তন হাঁ করে চেয়ে রইলেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *