বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা – রমাকান্ত চক্রবর্তী
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক প্রয়াত সুধীরকুমার মিত্রের স্মরণসভায় আমন্ত্রিত হয়ে আমি ধন্য; আমি তাঁর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা নিবেদন করি। সাহিত্যিক, সমাজসেবক, বঙ্গভাষা ও সংস্কৃতি সম্মেলনের প্রতিষ্ঠাতা, এবং তিন খন্ডে রচিত হুগলী জেলার ইতিহাস ও সংস্কৃতি গ্রন্থের রচয়িতা সুধীরকুমার মিত্র। বিশেষভাবে হুগলি জেলার ইতিহাস লিখে অমরত্ব অর্জন করেছেন। তাঁর আগে, একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলার পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস লেখার নিদর্শন নেই বললে বোধ হয় অত্যুক্তি হয় না। সমাজ, ধর্ম, উৎপাদন-ব্যবস্থা, ভূমি-ব্যবস্থা—এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্বন্ধে তাঁর গবেষণা আধুনিক কালের ঐতিহাসিকদের অনুপ্রাণিত করে। বড়ো দুঃখ পাই, যখন ভাবি যে এমন একজন ঐতিহাসিকের সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলাম না। তাঁর বই পড়ে কত যে জেনেছি, তাই স্মরণ করি, তাঁকে প্রণাম করি।
এখন আমার আলোচনার বিষয়, ‘বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চা’।
বঙ্কিমচন্দ্র লিখেছিলেন :
সাহেবরা যদি পাখী মারিতে যান, তাহারও ইতিহাস লিখিত হয় কিন্তু বাঙ্গালার ইতিহাস নাই।
কথাটা অংশত সত্য। বঙ্কিমচন্দ্রের কালে বাংলার ইতিহাস পূর্ণভাবে রচিত হয়নি। তার একটা বড়ো কারণ ছিল ইতিহাস জ্ঞানের অভাব, এবং ইতিহাস রচনার জন্য প্রয়োজনীয় বাংলা বাক-বিন্যাসের অভাব। শিক্ষিত বাঙালিরা তখন ইংরেজি ভাষা যেমন জানতেন ও লিখতেন, বাংলা ভাষা তেমন জানতেনও না, লিখতেনও না। এই বিশেষ দুর্বলতা এখনও বেশকিছু খ্যাতনামা বাঙালি ঐতিহাসিকদের আছে। বাংলায় ইতিহাস লিখতে বললে তাঁর মাথায় যেন বাজ পড়ে। এর একটা বড়ো কারণ বোধ হয় আমাদের দুরপনেয় ঔপনিবেশিক মানসিকতা। এ সম্বন্ধে আমেরিকান সমাজতত্ত্ববিদ এডওয়ার্ড শিলস [Edward Shils] ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে মন্তব্য করেছিলেন :
The intellectuals of Asian and African Societies have come in varying degrees to depend for their modern cultural Sustenance on the intellectual output which emanates from metropolises located outside their own countries. Asia and Africa have in consequence been pushed into a condition of provinciality vis-a-vis the great cultural capitals in the Western world, London, Oxford, Cambridge, Paris, Leiden, Utrecht, Berlin, New York etc.
আগে বলেছি, ‘‘বাঙ্গালার ইতিহাস নাই’’ কথাটি আংশিক সত্য। অষ্টাদশ শতকেও, এমনকী তারও আগে, ইউরোপীয় ঐতিহাসিকগণ মোগল যুগ সম্বন্ধে বহু ধরনের বই লিখেছিলেন, তাতে সুবাহ বাংলার বিবরণও ছিল। তাঁদের মধ্যে স্মরণীয় নাম John Ogilby, James Renney, Alexander Dow, Luke Scrafton, Robert Orme, Francis Gladwin, G. Grant। এঁদের রচনাবলি জাতীয় গ্রন্থাগারে এবং এশিয়াটিক সোসাইটির গ্রন্থাগারে রয়েছে। Ogilby-র গ্রন্থটি ১৬৭৩ খ্রিস্টাব্দে রচিত হয়েছিল, এটি মানচিত্র এবং কাঠ খোদাই-এর চিত্র-সংবলিত একটি নিতান্ত দুষ্প্রাপ্য বই; সম্প্রতি এই বইটির পুনঃপ্রকাশনার কাজ এশিয়াটিক সোসাইটি শুরু করেছেন।
রণজিৎ গুহ দেখিয়েছেন যে, ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রচলিত হওয়া পর্যন্ত ভূমিব্যবস্থা ও রাজস্ব সংক্রান্ত সুদীর্ঘ বিতর্কের মৌল অংশই ছিল ভারতের ইতিহাস বিষয়ক আলোচনা।
১৯০১-এ লণ্ডনে প্রকাশিত হয়েছিল H. Creighton-রচিত The Ruins of Gaur; তিনি গৌড়ের সুলতানদের অবলুপ্ত প্রাসাদের একটি মানচিত্র অঙ্কন করেছিলেন। Buchanan Hamilton-এর ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনসমূহ উনিশ শতকের প্রথম দশকেই রচিত হয়। Charles Stewart-এর History of Bengal ১৮১৩-তে লণ্ডনে প্রকাশিত হয়েছিল। J. C. Marshman-এর Outline of the History of Bengal প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৩৯-এ। এসব বই ছিল ছাত্রপাঠ্য। কিন্তু বাংলার ইতিহাস সম্বন্ধে গবেষণাও হয়েছিল; তার প্রমাণ আছে ১৮৩২ থেকে অত্যাধুনিক কাল পর্যন্ত প্রচলিত Journal of the Asiatic Society-তে। অতএব, ‘‘বাঙ্গালার ইতিহাস নাই’’—বঙ্কিমচন্দ্রের এই সাধারণীকরণ সর্বাংশে গ্রাহ্য নয়।
তবে, সন্দেহ নেই যে, ১৮৭২-এর J. A. Bourdillon-এর জনগণনার প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসচর্চার সূত্রপাত হয়েছিল। এ বিষয়ে প্রেরণা এসেছিল দশ বাৎসরিক জনগণনার প্রতিবেদন থেকে, ডব্লু. ডব্লু. হান্টার-প্রণীত বাংলার সমস্ত জেলার সংখ্যাতাত্ত্বিক বিবরণ থেকে, এইচ. এইচ. রিজলে-র দুই খন্ডে রচিত Tribes and Castes of Bengal থেকে, James Wise-রচিত Notices of the Races, Castes, and Traders of East Bengal থেকে, এবং O’ Malley-সহ অন্য প্রশাসকদের দ্বারা রচিত Bengal District Gazetteers থেকে। তবে, প্রসঙ্গত স্মরণীয়, Francis Buchanan, যাঁর নাম আগে উল্লেখ করেছি, বাংলার ও বিহারের আঞ্চলিক ইতিহাস তিনিই প্রথমে বিপুল পরিমাণে তথ্য দিয়ে লিখেছিলেন উনিশ শতকের প্রথম দশকে। অথচ, তাঁরই অসামান্য রচনা নিজের নামে প্রকাশ করেন Montgomery Martin, তাঁর The History, Antiquities, Topography and Statistics of India-র তিনটি খন্ডে (Delhi Reprint, 1976)। ফ্রান্সিস বুকানান সর্বদা সাধারণ, খেটে-খাওয়া মানুষের দারিদ্র্যদুঃখময় জীবনধারার প্রসঙ্গে বহু তথ্য দিয়েছিলেন। সম্ভবত এজন্যই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসকগণ Buchanan-এর বিবরণকে তেমন কিছু গুরুত্ব দেননি।
বিভিন্ন জেলার বিবরণাত্মক বই লিখেছিলেন Walter Hamilton; বইটির নাম Description of Hindoostan (2 volumes, Delhi, Reprint, 1971)। তুলনামূলক বিচারে Buchanan-এর বিবরণ Hamilton-এর বিবরণ থেকে অনেক বেশি সমৃদ্ধ। লক্ষণীয়, প্রাচীন গৌড় নগর ইংরেজ ঐতিহাসিকদের কৌতূহলকে উদ্দীপিত করেছিল। পূর্বে উল্লিখিত H. Creighton ছাড়াও ১৮৭৮-এ H. Ravenshaw লিখেছিলেন Gaur : Its Ruins and Inscriptions। এটিও একটি বিখ্যাত বই।
লক্ষণীয়, হিন্দু কলেজের ডিরোজিয়োপন্থী ছাত্র-বুদ্ধিজীবীদের জ্ঞানবুদ্ধি প্রশংসনীয়ভাবে তীক্ষ্ণ হলেও বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাস রচনায় তাঁদের উৎসাহ দৃশ্যমান ছিল না। কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সাংবাদিকরূপে পূর্ববঙ্গের বহু জায়গাতে গিয়ে সেসব জায়গার লোকজন সম্বন্ধে ভ্রমণকারী বন্ধুর পত্র লিখেছিলেন। এসব পত্র ছিল অনেক ক্ষেত্রেই হাস্যরসাত্মক সাংবাদিক প্রতিবেদন মাত্র, তাতে ইতিহাস নেই।
এই প্রসঙ্গে পাদ্রি James Long-এর উল্লেখ না করলে অপরাধ হয়। বাংলা ভাষা, বাঙালি ও বাংলার ইতিহাস সম্বন্ধে তাঁর কৌতূহল ও গবেষণা ছিল নিরন্তর, অপ্রতিহত। তাঁর কয়েকটি গ্রন্থ, যেমন Calcutta and Its Neighbourhood : History of People and Localities from 1690 to 1857 (Second ed. Calcutta 1974), The Banks of the Bhagirathi (Calcutta, 2nd ed. 1968), এবং Selections from Unpublished Records of Government for the years 1748 to 1767 (Calcutta, 1973) আঞ্চলিক ইতিহাসের অমূল্য আকরগ্রন্থ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ব্রিটিশ ঐতিহাসিকদের রচনায় প্রধানত মধ্যকালীন বঙ্গ প্রাধান্য পেয়েছে। ১৮৯৬-তে অসাধারণ পন্ডিত John Beams-এর দুর্মূল্য রচনা Notes on Akbar’s Subahs, with reference to Ain-i-Akbari, Journal of the Royal Asiatic Society-তে প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁরও আগে H. Blochmann-এর Contributions to the History and Geography of Bengal, Journal of the Asiatic Society-তে প্রকাশিত হয়েছিল। রচনাটি এখন গ্রন্থাকারে Asiatic Society-তে পাওয়া যায়। ১৮৭৬-এ একটি জেলার ইতিহাস লিখেছিলেন H. Beveridge; গ্রন্থটির নাম District of Bakerganj: Its History and Statistics (London 1876)। এটি একটি আকরগ্রন্থ।
উনিশ শতকের শেষ দিকে ব্রিটিশ ঐতিহাসিকদের বঙ্গের ইতিহাসচর্চার তিনটি সংমিশ্রিত ধারা ছিল। প্রধান ধারা ছিল ঐতিহাসিক প্রমাণ-সহ গবেষণা। এই ধারার প্রবর্তক ছিলেন Blochmann, Beveridge, Ravenshaw, Beglar। Beglar প্রত্নতত্ত্ব সম্বন্ধে কাজ করেছিলেন। এঁরা প্রধানত মধ্যকালীন বঙ্গকেই গবেষণার বিষয়রূপে নির্বাচিত করেছিলেন। এঁদের কাজে প্রমাণের ব্যবহার শিক্ষণীয় ছিল। বঙ্গের ইতিহাসাশ্রিত ভৌগোলিক বিবরণ এইসব গবেষকদের রচনাবলিতে সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। পরবর্তীকালে Bengal Past and Present নামক বিখ্যাত সাময়িক পত্রে বহু ঐতিহাসিক এই বিশেষ ধারাটিকে সুসমৃদ্ধ করেন।
দ্বিতীয় ধারা ছিল সর্বাত্মক। এটাই ছিল প্রাচীনতর ধারা যা ফ্রান্সিস বুকানান-এর রচনায় স্পষ্ট। কিন্তু, সর্বাত্মক হলেও এই ইতিহাস-আলোচনার ধারায় সমাজের ও বিভিন্ন জাতির আনুপূর্বিক বিবরণ বিশেষ প্রাধান্য পেয়েছে। ব্রিটিশ শাসকবর্গ সব কিছুই জানতে চাইছেন, বুঝতে চাইছেন, এবং যা জানা যাচ্ছে, বোঝা যাচ্ছে, তা থেকে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তও গ্রহণ করা হচ্ছে। সর্বাত্মক বিবরণের জন্যই James Wise-এর পূর্ববঙ্গ বিষয়ক গ্রন্থটি অদ্যাবধি মূল্যবান বিবেচিত হয়। সাম্প্রতিককালে Richard M. Eaton তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থে, The Rise of Islam and the Bengal Frontier : 1204-1760 (OUP, 2003), বার বার James Wise-এর উল্লেখ করেছেন।
তৃতীয় ধারাটির সাম্প্রতিকতা লক্ষণীয়, লক্ষণীয় ভিন্ন বিচার, ভিন্ন প্রমাণের ব্যবহার। এই ধারায় সংখ্যাতত্ত্বের ও নৃতত্ত্ববিষয়ক গবেষণার প্রাধান্য দেখা যায়। এই ধরনের রচনার একটি মূল্যবান নিদর্শন W. W. Hunter-এর Annals of Rural Bengal (London 1868), এবং James Wise-এর পূর্বোক্ত রচনা। Hunter ছিয়াত্তরের মন্বন্তর-এর বা Bengal Famine of 1769-70-এর যে বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, তা শুধু বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ উপন্যাসেই অভিব্যক্ত হয়নি, তা অধ্যাপক রঞ্জন গুপ্তের Economic Life of a Bengal District, Birbhum 1770-1857 (B U 1984) নামক গ্রন্থেও দেখা যায়।
এই প্রসঙ্গে G. Westland রচিত Report on the District of Jessore and Its Antiquities (1871) গ্রন্থটিও দ্রষ্টব্য। এই গ্রন্থটিতে প্রদত্ত বিভিন্ন তথ্য সতীশচন্দ্র মিত্র তাঁর যশোহর-খুলনার ইতিহাস গ্রন্থের দুই খন্ডে প্রায়শ ব্যবহার করেছেন।
এই প্রসঙ্গে একথাও বলতে হয় যে, বঙ্গবিদ্যাচর্চায় নিমগ্ন ব্রিটিশ ঐতিহাসিকদের জ্ঞানার্জনস্পৃহা প্রশংসনীয় হলেও, তার সঙ্গে কখনো কখনো মিশ্রিত হয়েছিল শাসিতজন সম্বন্ধে শাসকশ্রেণির ঔপরিক কূটৈষা বা Superiority Complex। বিশেষভাবে H. H. Risley-যিনি লর্ড কার্জন-কৃত বঙ্গভঙ্গের একজন প্রধান প্রস্তাবক ছিলেন, তাঁর Tribes and Castes of Bengal-গ্রন্থের দু-টি খন্ডে ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণ বাঙালিদের ও বিহারীদের সম্বন্ধে বহু রকমের ভ্রান্ত এবং নেতিবাচক মূল্যায়ন করেন। এইরূপ মূল্যায়ন দ্বারা যে সমকালীন সমাজতাত্ত্বিক পন্ডিত যোগীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য যথেষ্ট প্রভাবিত হয়েছিলেন তা তাঁর Hindu Castes and Sects (2nd ed. 1968) পড়লে বোঝা যায়। James Wise-এর পূর্বোক্ত গ্রন্থেও কোথাও কোথাও নেতিবাচক কথা দেখা যায়। সম্ভবত এই কারণে বঙ্গপ্রেমিক Henry Beveridge তাঁর District of Bakerganj : Its History and Statistics (পূর্বোক্ত) গ্রন্থে লিখেছিলেন :
My idea always has been that the proper person to write the history of a district is one who is a native of it and who has abundance of leisure to collect information. It is only a Bengali who can treat satisfactorily of the productions of his country, or of its social condition—its castes, leading families, peculiarities of language, customs, etc.
সম্ভবত এমনও বলা যায় যে, উনিশ শতকের বঙ্গীয় রেনেসাঁস-এ তিন রকমের দেশ-ভাবনা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। আদি ভাবনা ছিল ভারতভাবনা—যা রাজা রামমোহন রায়ের বিশেষভাবে ইংরেজি রচনাবলিতে সুস্পষ্ট। সেই ভাবনা থেকেই উৎসারিত হয় রাজপুত ও মারাঠাদের সম্বন্ধে ‘রোমান্টিক’ এবং দেশপ্রেমময় সাহিত্যচিন্তা। দ্বিতীয় ভাবনা, বঙ্গভাবনা। যে মা-র বন্দনাগীতি বঙ্কিমচন্দ্র-রচিত ‘বন্দেমাতরম’-এ দেখি, তিনি বাংলা-মা, তাঁর ভাষায়, যিনি ‘এক্ষণে কালগর্ভে নিমজ্জিত’। তৃতীয়ত, পদদলিত, সাম্রাজ্যবাদ দ্বারা নিষ্পেষিত বাংলা মা-এর প্রসঙ্গে আসে বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাস-প্রসঙ্গ। বিশ শতকের আগে থেকেই আঞ্চলিক বিবরণ রচিত হতে থাকে; তার একটি প্রমাণ, অনবদ্য ইংরেজি ভাষায় লেখা রমেশচন্দ্র দত্তের Peasantry of Bengal, ভোলানাথ চন্দ্রের Travels of a Hindoo (দুই খন্ডে)। বিশ শতকের প্রথম দশক থেকে বাংলার জেলাগুলোর গেজেটিয়ার প্রকাশিত হতে থাকে। গেজেটিয়ার-এর প্রকাশনা এই তৃতীয় চিন্তাকে বিশেষভাবে উদ্দীপিত করেছিল।
বহু গবেষক আঞ্চলিক ইতিহাস রচনা করেছিলেন। এ বিষয়ে অসংখ্য প্রবন্ধ রচিত হয়েছিল। বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসের Bibliography সুবৃহৎ; তা এখন ধারানিবদ্ধ করা বিশেষভাবে প্রয়োজনীয়।
বাংলার আঞ্চলিক ইতিহাসের গবেষণায় পথিকৃৎ ঐতিহাসিকদের নাম অবশ্যই স্মরণীয়। আমি তাঁদের কয়েক জনের নাম করি, যথা :
নিখিলনাথ রায়, মুর্শিদাবাদ কাহিনী (১৮৯৭), মুর্শিদাবাদের ইতিহাস (প্রথম খন্ড, ১৯০২)
রজনীকান্ত চক্রবর্তী, গৌড়ের ইতিহাস (১৩০৯ বঙ্গাব্দ)
যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত, বিক্রমপুরের ইতিহাস (বঙ্গাব্দ ১৩১৬, ২খন্ড)
যতীন্দ্রমোহন রায়, ঢাকার ইতিহাস (২ খন্ড, ১৯১২-১৩)
সতীশচন্দ্র মিত্র, যশোহর-খুলনার ইতিহাস (২ খন্ড বঙ্গাব্দ ১৩২১-১৩২৯)
মহিমানিরঞ্জন চক্রবর্তী, বীরভূম বিবরণ (৩ খন্ড বঙ্গাব্দ ১৩২৩-১৩৩৪)
যোগেশচন্দ্র বসু, মেদিনীপুরের ইতিহাস (১৩২৮ বঙ্গাব্দ)
অচ্যুতচরণ তত্ত্বনিধি, বৈদ্যনাথ দে, শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (১৯১৭)
কুমুদনাথ মল্লিক, নদীয়া কাহিনী (১৩১৭ বঙ্গাব্দ)
রাধারমণ সাহা, পাবনা জেলার ইতিহাস (১৯২৩)
কান্তিচন্দ্র রাঢ়ী, নবদ্বীপ মহিমা (১৯৩৭)
মহেন্দ্রনাথ করণ, হিজলীর মসনদ-ই-আলা, খেজুরী বন্দর,হিজলীর বিবরণ (১৯৫৬)
কালীকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, শান্তিপুর পরিচয়, ২ খন্ড ১৯৩৭-১৯৪২
সুধীরকুমার মিত্রের আগে হুগলি জেলার ইতিহাস লিখেছিলেন কলকাতা উচ্চ আদালতের উকিল শম্ভুচন্দ্র দে; তাঁর রচনাটির নাম Hooghly, Past and Present, M. M. Dey & Co. দ্বারা এই গ্রন্থটি ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল। শম্ভুচন্দ্র দে’র আগেও হুগলি জেলার ইতিহাস লিখেছিলেন D. G. Crawford। কলকাতার সরকারি মুদ্রণালয় থেকে তাঁর গ্রন্থ Brief History of Hooghly District ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। সাম্প্রতিককালে বর্ধমানের ইতিহাস সম্বন্ধে ব্যাপক গবেষণা করেছেন যজ্ঞেশ্বর চৌধুরি। তিনি পেশাদার ঐতিহাসিক না হলেও প্রশংসনীয় গবেষণা করেছেন।
এই ধরনের আঞ্চলিক ইতিহাস রচনার কতকগুলো বৈশিষ্ট্য দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রথমত ‘মহামতি’ আখ্যায় ভূষিত হেনরি বিভারিজ-এর পূর্বে উল্লিখিত মতের প্রভাব বেশ স্পষ্ট। ঐতিহাসিক স্থানীয় বাঙালি; তাই তাঁর রচনায় কালের বিচার কম, স্থানের ও পাত্রের মাহাত্ম্য বেশি। এর ব্যতিক্রম সুধীরকুমার মিত্রের রচনায়, এবং দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার খ্যাতনামা ঐতিহাসিক কালিদাস দত্তের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় সুস্পষ্ট। সুধীরকুমার শুধু যে হুগলি জেলার ইতিহাস লিখেছিলেন তাই নয়; সামাজিক গঠনের, এবং সমাজের বিচিত্র ঘটনাবলির ইতিহাস লিখে দক্ষিণ রাঢ় অঞ্চলের বাঙালি-সহ অন্যান্য মানুষের ইতিহাসও পরিস্ফুট করেছিলেন। কালিদাস দত্ত নিজের বাসগৃহে এক বিরাট সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু, অন্যান্য অনেক আঞ্চলিক ইতিহাস রচনায় সুপ্রাচীন স্থাপত্যের ভাস্কর্যের বা অন্যান্য প্রত্নবস্তু সম্বন্ধে আলোচনা বহু ক্ষেত্রেই আনুমানিক বা অবৈচারিক। সাম্প্রতিককালে এই বিষয় সম্বন্ধে ইংরেজ ঐতিহাসিক ডেভিড ম্যাককাচন তাঁর Late Mediaeval Temples গ্রন্থে, তারাপদ সাঁতরা এবং হিতেশরঞ্জন সান্ন্যাল তাঁদের প্রাসঙ্গিক প্রবন্ধসমূহে ও গ্রন্থে সম্পূর্ণভাবে ঐতিহাসিক বিচারের প্রবর্তন করেছেন; এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মচারী অমিয়কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও স্মরণীয়। পূর্বে উল্লিখিত অনেক রচনায় প্রায়শ গেজেটিয়ার-এর রীতি অবলম্বিত হয়েছে। লোকশ্রুতির বা কিংবদন্তির প্রয়োগও কখনো কখনো দৃশ্যমান। এর কারণ ছিল এই যে, আঞ্চলিক ইতিহাসের ‘পাথুরা’ প্রমাণ সম্বন্ধে এখন যেমন ব্যাপক গবেষণা হয়, পূর্বে তার ধারা, দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া, প্রচলিত ছিল না। সুধীরকুমার মিত্র বা কালিদাস দত্ত যে দুর্গম পথে হেঁটেছিলেন, সেই দুর্গম পথের সন্ধান অনেকেই পাননি। তবুও বলা যায় যে, কোনো কোনো আঞ্চলিক ইতিহাসে ভৌগোলিক বিবরণ অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক। সতীশচন্দ্র মিত্র এর একটি দৃষ্টান্ত। তিনি যশোহর-খুলনার ইতিহাস-এর প্রথম খন্ডে (তৃতীয় সংস্করণ, ১৯৬৬) ভয়ংকর নরখাদক ব্যাঘ্র অধ্যুষিত সুন্দরবনের যে প্রত্যক্ষদৃষ্ট সুবিস্তৃত বিবরণ দিয়েছেন, তা অত্যন্ত মূল্যবান ও চিত্তাকর্ষক।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সতীশচন্দ্র মিত্রকে একটি পত্রে লিখেছিলেন [প্রথম খন্ডে উদ্ধৃত] : আপনি ঐতিহাসিক; আপনাকে একথা বলা বাহুল্য যে, ইতিহাস দেশের গৌরব ঘোষণার জন্য নহে, সত্য প্রকাশের জন্য।
কিন্তু এই দেখা গেল যে, অধিকাংশ আঞ্চলিক ইতিহাসে ‘দেশের’ অর্থাৎ অঞ্চলের ‘গৌরব’ ঘোষিত হয়, তার একটা বড়ো প্রমাণ, অচ্যুতচরণ তত্ত্বনিধি ও বৈদ্যনাথ দে-রচিত শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত। এখানে অপ্রামাণিকভাবে এই দেখাতে চাওয়া হয়েছে যে, মধ্যকালীন নবদ্বীপের অসামান্য কৃষ্টির স্রষ্টাগণ ছিলেন প্রধানত শ্রীহট্ট থেকে নবদ্বীপে আগত কিছু বুদ্ধিজীবী। মেদিনীপুরের বৈষ্ণবরাই শ্রীচৈতন্যকে সব কিছু শিখিয়েছিলেন। কোনো প্রমাণ না-দিয়েই একজন পেশাদার ঐতিহাসিক এই দাবি করেছেন। আঞ্চলিক মাহাত্ম্যকে কি এভাবে গুরুত্ব দেওয়া যায়? বর্ধমান জেলার সাম্প্রতিক ইতিহাসে, যাঁদের জন্ম বর্ধমান জেলাতে হলেও বর্ধমান জেলায় থাকতেন না, তাঁদের গুণগান করা হয়েছে। অথচ, যাঁরা বর্ধমান জেলায় জন্ম না-হলেও বর্ধমানে থেকে, বর্ধমানের জনজীবনের সঙ্গে, বর্ধমানের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত হয়ে থেকে বহু সার্থক কর্ম করেছেন, তাঁরা পাদপ্রদীপের আলোকে আসেননি। কলকাতার ইতিহাসে অবাঙালি ভারতীয়দের বহু অবদান, দু-একজন লেখক ছাড়া, সামগ্রিকভাবে আর কেউ করছেন না। হিমাংশুমোহন চট্টোপাধ্যায়ের তিন খন্ডে রচিত বিক্রমপুর (১৯৩১-’৪৩) নামক দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থের দ্বিতীয় ও তৃতীয় খন্ডে প্রধানত খ্যাতনামা জমিদারদের ছবি-সহ বিবরণ আদৌ রবীন্দ্রনাথ-কথিত ‘সত্যানুসন্ধান’ হয়ে ওঠেনি। সাধারণ মানুষের ইতিহাসের বহু উপাদান থাকলেও তা ব্যবহার করা হয়নি। ইতিহাসে শুধুই সংকীর্ণ আঞ্চলিকতা বা প্রাদেশিকতা স্থান পাবে কেন?
ব্যাপক আঞ্চলিক ভিত্তিতে, যেমন দক্ষিণবঙ্গের বা উত্তরবঙ্গের ইতিহাস রচনাও প্রয়োজনীয় ছিল। প্রাচীনকালে উত্তরবঙ্গ ছিল বঙ্গীয় সংস্কৃতির ও সভ্যতার প্রাণকেন্দ্র। মধ্যকালে পশ্চিমবঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তার পরে, ব্রিটিশ-ঐতিহাসিক পি. জে. মার্শাল দেখিয়েছেন, প্রধানত প্রাকৃতিক কারণে পূর্ববঙ্গের পরিবেশ ও অন্যান্য অবস্থার পরিবর্তন হল, তার আনুপূর্বিক গবেষণা আজ পর্যন্ত হল না। এটা না জানলে, না বুঝলে আঞ্চলিক ইতিহাস অনেকটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আঞ্চলিক ইতিহাসের পরিধি যতই বৃদ্ধি পায়, ততই তার রূপরেখা সম্পূর্ণতর হয়। তা যে কত স্পষ্ট হয়, তা অমিয় বসু-সম্পাদিত, এবং Eastern Bengal Railway-দ্বারা দুই খন্ডে ১৯৪০ সালে প্রকাশিত বাংলায় ভ্রমণ গ্রন্থটি পড়লে বোঝা যায়। আরও বেশি তথ্য ও বিশ্লেষণসমৃদ্ধ গ্রন্থ বিনয় ঘোষ রচিত পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি। অশোক মিত্র সম্পাদিত এবং ভারত সরকার প্রকাশিত পশ্চিমবঙ্গের পূজা-পার্বণ ও মেলার পাঁচ খন্ডে বহু জায়গার ঐতিহাসিক বিবরণ আছে; যেমন, এই গ্রন্থের পঞ্চম খন্ডে, বর্ধমান জেলার বিবরণে, ক্ষীরগ্রামের যোগাদ্যার ইতিহাস অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক। গ্রামবাংলার ইতিহাস জানতে হবে, গ্রামীণ সমাজের ইতিহাস সম্বন্ধে গবেষণা করতে হবে। প্রাগাধুনিক মঙ্গলকাব্যের ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত-বিষয়ক গবেষণাও বহু ফলপ্রসূ। এইরূপ সার্থক গবেষণার একটি ভালো উদাহরণ পঞ্চানন চক্রবর্তী সম্পাদিত রামেশ্বর রচনাবলী (১৯৬৪) এবং বিমানবিহারী মজুমদারের গোবিন্দদাসের পদাবলী ও তাঁহার যুগ (১৯৬১)।
সরকারি নথিপত্র ব্যবহার করে মন্মোহন চক্রবর্তী লিখেছিলেন A Summary of the Changes in the Jurisdiction of District in Bengal : 1757-1916 (1918), (Second Edition, 1999)। এটি প্রকৃত অর্থেই অপরিহার্য আকরগ্রন্থ। রায়বাহাদুর মন্মোহন চক্রবর্তী ছিলেন উদ্ভিদবিদ্যার মেধাবী ছাত্র, কিন্তু তিনি বাংলার সংস্কৃতি সম্বন্ধে বহু মূল্যবান প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন। তাঁর বেশ কিছু প্রবন্ধ Asiatic Society-র Journal-এ প্রকাশিত হয়েছিল। বিভিন্ন প্রাদেশিক সাহিত্য তিনি নিবিড়ভাবে অধ্যয়ন করেছিলেন। প্রধানত তাঁর সাহায্য নিয়ে O’ Malley বহু District Gazeteer রচনা করেছিলেন। ইতিহাস লিখে নাম হবে এটা কোনো কথাই নয়। আসল কথা, ইতিহাস লেখার প্রেরণা। এ বিষয়ে শ্রদ্ধেয় নীহাররঞ্জন রায় লিখেছিলেন :
প্রাণের যে প্রেরণায় সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের মধ্য দিয়া জীবনের প্রথম অধ্যায়ের সূচনা হইয়াছিল সেই প্রেরণাই আমাকে ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে আনিয়া পৌঁছাইয়া দিয়াছে। বাংলার মাটিকে, বাংলার মানুষকে আমি চিনিয়াছি। পান্ডিত্যকে আমি কামনা করি নাই… ইতিহাস নিষ্প্রাণ শাস্ত্র মাত্র নয়। তাহার মধ্যে প্রাণের স্পন্দন বর্তমান। কোনও দেশের ইতিহাসকে যদি সম্যকরূপে উপলব্ধি করিতে হয় তবে সর্বাগ্রে সেই প্রাণচেতনার সহিত পরিচিত হওয়া প্রয়োজন। সেই চেষ্টাই আমি করিয়াছি। আপাত নিষ্প্রাণ পাথরের মূর্তিকেও বুকে তুলিয়া তাহার প্রাণস্পন্দনের সন্ধান করিয়াছি। দেশের মাটি, মানুষ আর সমাজকে চিনিবার সাধনাই আমার সাধনা। [১৭ জানুয়ারি, ১৯৫২, ভাষণ।]
অধ্যাপক নীহাররঞ্জন রায় কথিত এই প্রেরণা এখনও আছে। অধুনা আঞ্চলিক ইতিহাস রচনার চারটি প্রধান ধারা সুস্পষ্ট। সেগুলো এইরূপ, যথা :
১. সর্বাত্মক বিবরণ। এতে ইতিহাস, ভূগোল, ভূমিতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, সমাজতত্ত্ব, অর্থনৈতিক বিবরণ, ভাষা, সাহিত্য, সংবাদপত্র, সংগীত, শিল্প স্থান পায়। এটাকে ঐতিহ্যসম্মত ধারা বলা যেতে পারে। কিন্তু ‘গেজেটিয়ার’ বলা যায় না।
২. জেলার পুরাকীর্তির বিবরণ।
৩. জেলার মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামের বা কৃষকদের জমির জন্য আন্দোলনের বিবরণ।
৪. জেলার ঔপনিবেশিক ভূমিব্যবস্থার ও অর্থনৈতিক বিবরণ। এসব বিষয় সম্বন্ধে গবেষণা ক্রমশ ব্যাপক হয়ে উঠছে দেখে ভালো লাগে। সময়াভাবে যাঁরা এসব বিষয়ে গবেষণা করেছেন বা করছেন, তাঁদের নাম উল্লেখ করা সম্ভব হবে না। তবে বলতেই হয়, যে বিষয়টি পূর্বকালে রচিত আঞ্চলিক ইতিহাসে অনালোচিত ছিল, তা হল শ্রেণিভেদ, কোনো বিশেষ শ্রেণির আধিপত্য, কোনো বিশেষ শ্রেণির অনগ্রসরতা। এমন কোনো কোনো ঐতিহাসিক আঞ্চলিক ইতিহাসে এই গুরুত্ববহ বিষয়টিকে যথেষ্ট মর্যাদা দিয়েছেন। যেমন, হুগলি জেলায় ঐতিহাসিককালে শ্রেণিবিভাজন সম্বন্ধে মনোজ্ঞ নিবন্ধ লিখেছেন সুভাষচন্দ্র সেন। রঞ্জন গুপ্ত রচিত বীরভূম জেলার অর্থনৈতিক ইতিহাস-এ, হরশঙ্কর ভট্টাচার্য রচিত বর্ধমানে জমিদারির ইতিহাস-এ বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।
সুধীরকুমার মিত্রের স্মরণসভায় আমাকে এই প্রবন্ধ পাঠ করার সুযোগ দিয়ে উদ্যোক্তাগণ এক অকৃতী ইতিহাসের ছাত্রকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিলেন। এজন্য আমি তাঁদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে আমার কথা শেষ করি।
২৫.১২.০৭