বস্তুর আকার ও পরিমাণ।
সকল বস্তুরই আকার ভিন্ন ভিন্ন; কোন কোন বস্তু বড় ও কোন কোন বস্তু ছোট। ঘটী অপেক্ষা কলসী বড়; বিড়াল অপেক্ষ ঘোড়া বড়; শিশু অপেক্ষা যুবা বড়। সকল বস্তুরই আকারে দৈর্ঘ্য, বিস্তার, বেধ এই তিন গুণ আছে। বস্তুর লম্বা দিকের পরিমাণকে দৈর্ঘ্য কহে; দুই পার্শ্বের পরিমাণকে বিস্তার, ও দুই পৃষ্ঠের পরিমাণকে বেধ কহে। কোন পুস্তকের উপরি ভাগ হইতে নিম্ন পর্য্যন্ত দৈর্ঘ্য; এক পার্শ্ব হইতে অপর পার্শ্ব পর্য্যন্ত বিস্তার; এক পৃষ্ঠ হইতে অপর পৃষ্ঠ পর্য্যন্ত বেধ।
বস্তুর দৈর্ঘ্য মাপা যাইতে পারে; আমরা কাপড়ের দৈর্ঘ্য মাপিতে পারি। এক স্থান হইতে অন্য স্থান কত দূর তাহাও মাপা যায়। আমরা হস্ত দ্বারাই সকল বস্তু মাপিয়া থাকি। কনুই অবধি মধ্যম অঙ্গুলির অগ্রভাগ পর্যন্ত এক হাত। সকলের হাত সমান নয়, এই নিমিত্ত, হাতের নিরূপিত পরিমাণ আছে; তাহা এইরূপ; ৮ যবোদরে এক অঙ্গুল, ২৪ অঙ্গুলে ১ হাত। যবোদর শব্দে যবের মধ্যভাগ। আট টী যব সারি সারি রাখিলে উহাদের মধ্যভাগের যে পরিমাণ তাহাই অঙ্গুল। এই রূপ ২৪ অঙ্গুলে অর্থাৎ ১৯২ যবোদরে ১ হাত হয়। ৪ হাতে ১ ধনু, ২০০০ ধনুতে অর্থাৎ ৮০০০ হাতে এত ক্রোশ হয়, চারি ক্রোশে ১ যোজন।
লোকে বস্তুর দৈর্ঘ্য যে রূপে মাপে, বস্তুর উচ্চতাও সেই রূপে মাপা যায়। আমরা দেওয়াল, খুটী, কপাট, বাড়ী, গাছ ইত্যাদির উচ্চতা মাপিতে পারি। উপরের দিকে যে দৈর্ঘ্য তাহাকে উচ্চতা কহে। এই রূপ কোন বস্তুর নীচের দিকে যে দৈর্ঘ্য তাহার নাম গভীরতা। দৈর্ঘ্য যে রূপে মাপা যায় গভীরতাও সেই রূপে মাপ যাইতে পারে। কোন কোন কুপের গভীরতা ১০, ১২ হাত; কোন কোন পুষ্করিণীর গভীরতা ২০, ২৫ হাত।
কোন কোন বস্তু কোন কোন বস্তু অপেক্ষা অধিক ভারি। ক্ষুদ্র পুস্তক অপেক্ষা বৃহৎ পুস্তক অধিক ভারি; সমান আকারের এক খণ্ড কাষ্ঠ অপেক্ষা এক খণ্ড লৌহ অধিক ভারি। অনেক বস্তু ওজনে বিক্রী হয়। বস্তুর ভারের পরিমণকে ওজন কহে। সেই পরিমাণ এই প্রকার;
১ টাকার যত ভার তাহা ১ তোলা;
৫ তোলায় ১ ছটাক;
৪ ছটাকে ১ পোয়া;
৪ পোয়ায় ১ সের;
৪০ সেরে ১ মন।
যাহারা চিনি, লবণ, মিঠাই, সন্দেস ও এইরূপ আর আর দ্রব্য বিক্রয় করে তাহার এই সকল পরিমাণ ব্যবহার করিয়া থাকে।