বন্ধুরা মাতি তরজায়

বন্ধুরা মাতি তরজায় (রচনা ১৯৭৬-৮০। প্রকাশ ১৯৮৪)

অগস্ত্যযাত্রা

বিন্ধ্য বলেন, ‘অগস্ত্য
 বড্ড আমায় ভোগাস তো
আর কতদিন রাখব নত এ-মস্তক!’

অগস্ত্য কন, ‘বিন্ধ্য রে
আটকে আছি ভিন দোরে
 কিন্তু তোকেই ভাবছি এত দিন ধরে।

আর কটা দিন থাক্ না ভাই
 আগে তো মৌচাক নাবাই
 তারপরে মান ফিরিয়ে দেব সমস্ত।’

তাই শুনে আজ বিন্ধ্যরাজ
 লাস্যে হলেন দিলদরাজ
গুগলি-শামুক দেখলে ভাবেন নমস্য।

*

সকলের গান

কামাখ্যা তার শিখর থেকে
ব্রহ্মপুত্র দেখায়
তিরিশ বছর থমকে আছে
বশিষ্ঠ-আশ্রমে
নবগ্রহের নীলসবুজে
 ঝাঁপিয়ে ওঠে পা–
 কিন্তু আমি আমিই কি না
আজ সে হিসেব হবে।
 লাঞ্ছনাতে বয়স মাপে
 শাদা খড়ির দাগ
সমস্ত গা-য় উলকি দিয়ে
হলকা তোলে শিখার–
 সেই মুহূর্তে হঠাৎ যেন
 শুনতে পেলাম সুর
হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গলায়
 ভূপেন হাজারিকার।

আবার সাড়া লাগল চোখের
 জলের উপত্যকায়
অন্ধ হয়ে যাবার আগে
 হাত বাড়াতে চাই।
কে যেন গান গেয়েছিলেন
গঙ্গা আমার মা
কী দিয়ে তাল দেবে দু-হাত
মশাল না কি ছাই।
 টুকরো করে দেব আবার
একান্ন তার ভাগ
উড়িয়ে দেব গাঙ্গেয় দিন
অখণ্ড নিশ্বাসের–
 সেই মুহূর্তে আবার যেন
শুনতে পেলাম সুর
ভূপেন হাজারিকার গলায়
হেমাঙ্গ বিশ্বাসের।