বক্কেশ্বরী
আমার একটি টিয়া পাখি আছে, তার নাম বক্কেশ্বরী। মাদী টিয়া পাখি, গলায় কাঁটি ওঠেনি। বছর চৌদ্দ আগে আমার বাগানের একটা ঝোপের মধ্যে মধ্যে বসে গলায় গিট্কিরি খেলিয়ে গান গাইছিল, আমার সাত বছরের নাতি তাকে ধরে খাঁচায় পুরলো। পাখিটা ধরা পড়ার সময় একটু আঁচড়ে কামড়ে দিয়েছিল, কিন্তু খাঁচায় ঢুকেই সে আবার সঙ্গীতচর্চা আরম্ভ করল। তারপর বিশুদ্ধ মারাঠী ভাষায় গল্প জুড়ে দিল। শেষে প্রশ্ন করল—‘কুঠেরে, কুঠেরে, কুঠেরে—?’ (কোথায় রে?)
নিশ্চয় কোনও মারাঠীর ঘরে ছিল, শিক্লি কেটে উড়ে এসেছে। সেদিন তার নাম রেখেছিলাম—বক্কেশ্বরী; এই চৌদ্দ বছর সে আমার পুণার বাড়িতে আছে; নিজের মনে গান গায় আর অনর্গল কথা বলে। বাড়ির একজন হয়ে গেছে। আগে কেবল মারাঠীতে কথা বলত, এখন বাংলাও বলে—‘কুঠেরে কুঠেরে! তুই কী কচ্ছিস? খেতে দে, ক্ষিদে পেয়েছে। মিঠ্ঠু!’
আমি প্রশ্ন করি—‘তুই কে রে?’
সে গলা নরম করে বলে—‘বক্কু বক্কু বক্কু—’
খাদ্য সম্বন্ধে বক্কুর বাছবিচার নেই। সে শুধু ফলাশী নয়; পেয়ারা, মটরশুঁটি, ছোলা-ভাজা তো আছেই, উপরন্তু সে ভাত খায়, লুচি খায়, বিস্কুট খায়। গিন্নী বলেন——‘বক্কু একটা রাক্কুসী, কোন্ দিন পেট ফেটে মরে যাবে।’
বক্কুর কিন্তু মরার কোনও লক্ষণ নেই। প্রতি বছর বর্ষার আগে তার গায়ের পালক বিবর্ণ হয়ে ঝরে যায়, আবার ঝকমকে নতুন পালকে তার গা ভরে যায়; ল্যাজের পালক আরো লম্বা হয়, ঠোঁটের রঙ হয় গাঢ় লাল। তখন তাকে সবুজ বেনারসী-পরা ঠোঁটে লিপ্স্টিক লাগানো কনে বৌ-এর মতন দেখায়। আন্দাজ করছি তার বয়স এতদিনে যোল-সতরো হল।
কোনও অজ্ঞাত কারণে আমার প্রতি বক্কেশ্বরী বিশেষ অনুরাগিণী। তার লোহার খাঁচা দিনের বেলায় বারান্দায় টাঙানো থাকে। আমি তার জন্যে আধখানা বিস্কুট কিংবা এক টুকরো লুচি নিয়ে খাঁচার কাছে দাঁড়ালেই সে ছুটে এসে খাঁচার কিনারা ঘেঁষে দাঁড়ায়, ঢুলুঢুলু চোখে চেয়ে মুখ উঁচু করে গলার মধ্যে শব্দ করে—কুট্কুট্ কুট্কুট্—
আমি তার মুখের সামনে খাবার ধরি, সে গ্রাহ্য করে না। তখন আমি খাঁচায় খাবার ফেলে দিয়ে শিকের মধ্যে আঙুল গলিয়ে তার গলায় মাথায় ডানায় আঙুল বুলিয়ে দিই; সে বিগলিত দেহে আদর গ্রহণ করে কুট্কুট্ শব্দ করে। এই দৃশ্য আমার গিন্নীর চোখে পড়লে তিনি টিপ্পনি কাটেন, ‘আ মরে যাই। ভরা গাঙে বান ডেকেছে।’
আমি আদরের পালা শেষ করে চলে যাবার সময় পর্যন্ত বক্কু সতৃষ্ণ চোখে চেয়ে থাকে, তারপর ব্রেকফাস্ট খেতে আরম্ভ করে।
এটা নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। যখনি আমি খাঁচার পাশ দিয়ে যাই বক্কু মুখ উঁচু করে গলা বাড়িয়ে দাঁড়ায়।
বক্কেশ্বরীর প্রতি সর্বজীবে সমান নয়। বিশেষত আমার স্ত্রীকে সে দু’ চক্ষে দেখতে পারে না। তিনিও তাকে খেতে দেন কিন্তু সে জন্যে বক্কুর তিলমাত্র কৃতজ্ঞতা নেই। তিনি কদাচ তার খাঁচার পাশ দিয়ে চলে গেলে বক্কু খ্যাঁক্ করে ওঠে, গলার মধ্যে গজ্গজ্ করে যে-সব কথা বলে আমাদের কাছে তা অবোধ্য হলেও সম্ভবত পাখির ভাষায় তার অশ্লীল কুশ্লীল মানে আছে। গিন্নী বলেন—‘হতচ্ছাড়া পাখি হিংসেয় ফেটে পড়ছে।’
স্ত্রীজাতির চরিত্র—তা সে মানবীই হোক আর পক্ষিণীই হোক—কেউ কিছু বলতে পারে না। দেবা ন জানন্তি।
একদিন একটা গুরুতর ব্যাপার ঘটল। গিন্নী বক্কুকে খাবার দিচ্ছিলেন; বোধ হয় একটু অন্যমনস্ক হয়েছিলেন, বক্কু কটাস্ করে তার আঙুল কামড়ে খানিকটা মাংস তুলে নিল। কিছুক্ষণ দুইপক্ষে প্রচণ্ড গালিগালাজ চলল; আমি স্ত্রীর আঙুলে জলপট্টি বেঁধে দিলাম। তিনি বললেন—‘বুঝেছি হতভাগা ছুঁড়ির ইয়ে হয়েছে। দাঁড়াও, আমি দাবাই দিচ্ছি।’
পট্টি-বাঁধা আঙুল নিয়ে তিনি বাজারে চলে গেলেন; কোথায় যাচ্ছ এ প্রশ্নের জবাব দিলেন না, বক্কেশ্বরীর দিকে একটি অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে গেলেন।
পুণা শহরের বাজার-হাট আমার চেয়ে আমার গিন্নী বেশী চেনেন। কিন্তু তিনি বক্কেশ্বরীর জন্যে কী দাবাই আনতে গেলেন আন্দাজ করতে পারলাম না। বিষ-টিষ নয় তো?
ঘণ্টাখানেক পরে গিন্নী ফিরে এলেন। তাঁর হাতে তারের খাঁচায় হৃষ্টপুষ্ট একটি টিয়া পাখি। পাখির গলায় লাল-কালো কাঁটি কুস্তিগীর পালোয়ানের গোঁফের মতন তার পুরুষত্ব ঘোষণা করছে। গিন্নীর গূঢ় মতলব বুঝতে বাকি রইল না।
দু’টো খাঁচার দোর মুখোমুখি জোড়া দিয়ে দোর খুলে দেওয়া হল। নবাগত পাখি গজেন্দ্রগমনে বক্কুর খাঁচায় প্রবেশ করল। তার চালচলন অনেকটা বড় মানুষের বকাটে ছেলের মতন, ‘যো হুকুম’ বলবার গুটি কয়েক মোসায়েব থাকলেই চিত্রটি সম্পূর্ণ হত।
বক্কেশ্বরী এতক্ষণ দোলনা-দাঁড়ে বসে সব দেখছিল, নতুন পাখি তার খাঁচায় ঢুকতেই সে সন্ত্রস্ত হয়ে উঠল, দাঁড় থেকে নেমে একপাশে দাঁড়াল। নতুন পাখিটা একবার বাদশাহী ভঙ্গিতে চারদিকে দৃক্পাত করল, তারপর বক্কুর দোলনা-দাঁড়ে উঠে বসল। বক্কুর মুখে কথাটি নেই, সে নির্বাক হয়ে দেখছে।
এই সময় গিন্নী এক ফালি শসা এনে খাঁচার মধ্যে ফেলে দিয়ে গেলেন। আমি দাঁড়িয়ে দেখছি। নতুন পাখিটা ঘাড় নীচু করে শসা নিরীক্ষণ করল, কিন্তু নেমে আসার কোনও চেষ্টা করল না। বক্কেশ্বরী এক পা এক পা করে শসার দিকে এগুচ্চে, প্রায় শসার কাছে এসে পৌঁচেছে এমন সময় দাঁড় থেকে কড়া হুকুম এল—টর্র্!
বক্কেশ্বরী থমকে দাঁড়িয়ে পড়ল; ঘাড় বেঁকিয়ে দেখল নতুন পাখির চোখে হিংস্র দৃষ্টি। তারপর নতুন পাখি গলার মধ্যে কি যেন বলল; যেন বক্কুকে শাসাচ্ছে, হুকুম দিচ্ছে।
বক্কুর দেহে একটা বিদ্রোহের ভাব ক্ষণেকের জন্যে দেখা দিল, কিন্তু নতুন পাখিটা চাপা গলায় গর্জন করে উঠল। বক্কুর বিদ্রোহ আর রইল না, সে তাড়াতাড়ি শসা ঠোঁটে তুলে নিয়ে নতুন পাখির কাছে গিয়ে দাঁড়াল।
তারপর অবাক কাণ্ড।
নতুন পাখিটা গলার মধ্যে হুমকি দেওয়ার মতন শব্দ করল, বক্কু অমনি ঠোঁট থেকে শসা পায়ে নিয়ে তার মুখের কাছে তুলে ধরল। সে এক অদ্ভুত দৃশ্য। নতুন পাখিটা গদিয়ান চালে শসা খাচ্চে, আর বক্কু এক পায়ে দাঁড়িয়ে তার মুখের সামনে শসা ধরে আছে। নিজে খাচ্চে না; একবার খাবার জন্যে ঠোঁট বাড়িয়েছিল, নতুন পাখি চোখ ঘুরিয়ে ধমক দিয়ে উঠল। যেন বলল-খবরদার!
ঠিক সেই মুহূর্তে নতুন পাখির নাম আমার মাথায় এল—হিট্লার।
গিন্নী রান্নাঘরে রান্না চড়িয়েছিলেন, তাঁকে গিয়ে বক্কুর করুণ অবস্থার কথা বললাম। শুনে তিনি বললেন—‘বেশ হয়েছে, বক্কুর তেজ একটু কমুক।’
নিশ্বাস ফেলে বললাম—‘তুমি কোথা থেকে একটা হিটলার ধরে এনে বক্কুর বিয়ে দিলে, বিয়েটা সুখের হল না। শুভদৃষ্টির সময়েই যখন এমন ব্যাপার—’
গিন্নী বললেন—‘হবে হবে। গাছে না উঠতেই কি এক কাঁদি হয়। স্বামী-স্ত্রী সদ্ভাব হতে সময় লাগে।’ তিনি মুখ টিপে হাসলেন, যেন কথার মধ্যে একটা গোপন শ্লেষ আছে।
বক্কেশ্বরী ও হিটলারের বৈবাহিক জীবন সত্যিই সুখের হল না; যত দিন যেতে লাগল অবস্থার ততই অবনতি হতে লাগল। হিটলারের স্বভাবটা দুর্ধর্ষ গণ্ডার মতন; সবাই তার হুকুম তামিল করবে, সবাই তার কথায় ওঠ্-বস করবে; কেউ যদি না করে তখন বাহুবল আছে। বক্কু যতদিন একলা ছিল ততদিন সে ছিল খাঁচার একচ্ছত্র সম্রাজ্ঞী; এখন তার অবস্থা দাসী-বাঁদীরও অধম। হিট্লারের উচ্ছিষ্ট যা পড়ে থাকে তাই খায়। দোলনা-দাঁড়ে বসবার অধিকার তার নেই। একদিন সে ভয়ে ভয়ে বসতে গিয়েছিল, হিট্লার তাকে কামড়ে রক্ত বার করে দিয়েছিল। সেই থেকে সে নীচে খাঁচার এক কোণে বসে থাকে। এত যে কথা বলত, এখন আর একটিও কথা বলে না, যেন হঠাৎ বোবা হয়ে গেছে।
কিন্তু সবচেয়ে মর্মান্তিক কথা আমি বক্কুর গলায় হাত বুলিয়ে আদর করি এটা হিট্লারের সহ্য হয় না। আমি খাঁচার পাশে গিয়ে দাঁড়ালে বক্কু গুটি গুটি আমার দিকে এগিয়ে আসে, গলা উঁচু করে আদর নেবার উদ্যোগ করে। অমনি হিট্লার দোলনা-দাঁড় থেকে তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বক্কু পালাতে আরম্ভ করে; ওড়ার জায়গা নেই, খুর্ খুর্ করে পা ফেলে খাঁচার চারপাশে চক্কর দিতে থাকে। হিটলার রাগে গজরাতে গজরাতে তাকে তাড়া করে বেড়ায়। বক্কুকে হিট্লারের হাত থেকে বাঁচাবার কোনও উপায় নেই। এ যেন সাপের ছুঁচো-গেলা হয়েছে। দু’জনকে আলাদা করবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বক্কু নিজের খাঁচা ছেড়ে যাবে না; আর হিট্লারের তো কথাই নেই, তাকে লাঠির খোঁচা দিয়েও বার করা গেল না। এমন আরাম ছেড়ে সে কোথায় যাবে? শুধু খাঁচা তো নয়, সেই সঙ্গে একটা কেনা বাঁদী।
বক্কুর দুরবস্থা দেখে গিন্নীও অনুতপ্ত হয়েছেন। লঘু পাপে গুরু দণ্ড; দাবাই হয়ে উঠল হলাহল। তিনি বারবার কৈফিয়ৎ দিতে লাগলেন—‘ভেবেছিলাম একটা জুড়ি পেলে বক্কুর প্রাণ ঠাণ্ডা হবে, ও আর তোমাকে নিয়ে ঢলাঢলি করবে না। তা কী হতে কি হল। কোথায় বক্কু একটি মনের মানুষ নিয়ে সুখে সচ্ছন্দে ঘরকন্না করবে, তা এল একটা দস্যি রাক্কোস। তুমি ওকে তাড়াও না।’
বললাম—‘আজকাল ভাড়াটে তাড়ানো কি সহজ কাজ। মামলা-মোকদ্দমা করতে হয়।’
গিন্নী বিরক্ত হয়ে বললেন—‘জানিনে বাপু। তুমি যা-হয় বিহিত কর। একটা পাখিকে তাড়াতে পারছ না?’
বললাম—‘যদি মেরে ফেলতে বল খুঁচিয়ে মেরে ফেলতে পারি। এ ছাড়া অন্য উপায় নেই।’
‘না না, একেবারে মেরে ফেলার কী দরকার—তবে—’ গৃহিণী রান্না ঘরে চলে গেলেন।
বক্কুর জন্যে মনে বড় অশান্তি হয়েছে। সে আর আমাকে দেখে গলা উঁচু করে খাঁচার পাশে এসে দাঁড়ায় না, নরম সুরে মিঠ্ঠু বলে না। ওদিকে হিটলারের অত্যাচার দিন দিন বেড়েই চলেছে; যখন হুকুম করার কিছু থাকে না, তখন না হোক বক্কুকে খাঁচাময় তাড়া করে বেড়ায়। বক্কু যেন ভয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। কী যে করব ভেবে পাচ্ছি না।
শেষ পর্যন্ত বক্কু নিজের ব্যবস্থা নিজেই করে নিল, আমাদের কিছু করতে হল না। যত নিরীহ জীবই হোক একটা সময় আসে যখন সে আর উৎপীড়ন সহ্য করতে পারে না। তখন সে মরীয়া হয়ে ফিরে দাঁড়ায়।
একদিন বিকেল আন্দাজ চারটের সময় আমি বারান্দায় বেরিয়ে এসেছিলাম; না এলে বোধ হয় এমন নয়নাভিরাম দৃশ্যটা দেখতে পেতাম না। বাইরে তখনো রোদ চড়চড় করছে, রাস্তাঘাট নির্জন।
খাঁচার দিকে চেয়ে দেখলাম, হিট্লার দোলনা-দাঁড়ে বসে পাখ্নার মধ্যে ঠোঁট গুঁজে দিয়ে ঘুমুচ্চে। কিন্তু বক্কু খাঁচায় নেই।
কোথায় গেল বক্কু? আরো ভাল করে দেখি বক্কু খাঁচাতেই আছে কিন্তু সে নীচু হয়ে গুড়ি মেরে মেরে নিঃশব্দে দোলনা-দাঁড়ের দিকে এগুচ্ছে। কী ব্যাপার দেখবার জন্যে আমি নিষ্পলক চেয়ে রইলাম।
দোলনা-দাঁড়ের নীচে বরাবর এসে বক্কু এক অদ্ভুত কাজ করল। হিটলার তখনো পরম আরামে ঘুমোচ্ছে, বক্কু হাউই-এর মতন উড়ে গিয়ে হিট্লারের কণ্ঠনালী কামড়ে ধরল। হিট্লার দু’বার ক্যাঁ ক্যাঁ শব্দ করে হঠাৎ চুপ করল।
কিছুক্ষণ পরে বক্কু যখন তাকে ছেড়ে দিল তখন তার ঘাড় লট্কে গেছে, হিট্লারের ভবলীলা সাঙ্গ হয়েছে। তার দেহটা দাঁড় থেকে খসে নীচে পড়ল।
বক্কু দাঁড়ে উঠে বসে গায়ের পালক ফুলিয়ে বিজয়-গর্বিত স্বরে বলল—‘কুঠেরে কুঠেরে—তুই কি কচ্ছিস? ক্ষিদে পেয়েছে, খেতে দে!’
আমি খাঁচার কাছে গিয়ে বক্কুকে তিরস্কার করলাম—‘ছি ছি বক্কু, খুন করলি।’
বক্কু দাঁড় থেকে নেমে এসে খাঁচার পাশে দাঁড়াল, গলা উঁচু করে গদ্গদ স্বরে বলল—‘মিঠ্ঠু মিঠ্ঠু—’
হিট্লারের মৃতদেহটা ওদিকে ছত্রাকার হয়ে পড়ে আছে। আমি বক্কুর গলায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে ভাবতে লাগলাম—পাখি বলেই বক্কু বেঁচে গেল। খুন করলে পাখিদের ফাঁসি হয় না।
মার্চ ১৯৭০