কাস্তে দাও আমার এ হাতে
সোনালী সমুদ্র সামনে, ঝাঁপ দেব তাতে ।
শক্তির উন্মুক্ত হাওয়া আমার পেশীতে
স্নায়ুতে স্নায়ুতে দেখি চেতনার বিদ্যুৎ বিকাশ :
দু পায়ে অস্থির আজ বলিষ্ঠ কদম ;
কাস্তে দাও আমার এ হাতে ।
দু চোখে আমার আজ বিচ্ছুরিত মাঠের আগুন,
নি-শব্দে বিস্তীর্ণ ক্ষেতে তরঙ্গিত প্রাণের জোয়ার
মৌসুমি হাওয়ায় আসে জীবনের ডাক ;
শহরের চুল্লী ঘিরে পতঙ্গের কানে ।
বহুদিন উপবাসী নিঃস্ব জনপদে,
মাঠে মাঠে আমাদের ছড়ানো সম্পদ,
কাস্তে দাও আমার এ হাতে ।
মনে আছে একদিন তোমাদের ঘরে
নবান্ন উজাড় ক’রে পাঠিয়েছি সোনার বছরে,
নির্ভাবনার হাসি ছড়িয়েছি মুখে
তৃপ্তির প্রগাঢ় চিহ্ন এনেছি সম্মুখে,
সেদিনের অলক্ষ্য সেবার বিনিময়ে
আজ শুধু কাস্তে দাও আমার এ হাতে ।
আমার পুরনো কাস্তে পুড়েন গেছে ক্ষুধার আগুনে,
তাই দাও দীপ্ত কাস্তে চৈতন্যপ্রখর ——
যে কাস্তে ঝল্ সাবে নিত্য উগ্র দেশপ্রেমে…
জানি আমি মৃত্যু আজ ঘুরে যায় তোমাদেরও দ্বারে,
দুর্ভিক্ষ ফেলেছে ছায়া তোমাদের দৈনিক ভান্ডারে ;
তোমাদের বাঁচানোর প্রতিজ্ঞা আমার,
শুধু আজ কাস্তে দাও আমার এ হাতে ।
পরাস্ত অনেক চাষী ; ক্ষিপ্রগতি নিঃশব্দ মরণ——
জলন্ত মৃত্যুর হাতে দেখা গেল বুভুক্ষের আত্মসমর্পণ,
তাদের ফসল প’ড়ে দৃষ্টি জ্বলে সুদূরসন্ধানী
তাদের ক্ষেতের হাওয়া চুপিচুপি করে কানাকানি——
আমাকেই কাস্তে নিতে হবে |
নিয়ত আমার কানে গুঞ্জরিত ক্ষুধার যন্ত্রণা,
উদ্বেলিত হাওয়া আনে মাঠের সে উচ্ছ্বসিত ডাক,
সুস্পষ্ট আমার কাছে জীবনের সুতীব্র সংকেত ;
তাই আজ একবার কাস্তে দাও আমার এ হাতে ।।
ফসলের ডাক ১৩৫১ শিরোনামার কবিতাটি পোষ্ট করা হয় নি অথবা কোন কারণে খুজে পাচ্ছি নাl আবার শরৎ রচনাবলীতে শ্রীকান্ত উপন্যাসটি নেইl রবীন্দ্র নাথের শেষের কবিতায় মাঝে মাঝে বাদ পড়েছে, এই সকল বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছিl আশা করি সমাধান পাবl
ব্যাপারগুলো ঠিক করা হবে। ধন্যবাদ।