প্রিয়ার দেওয়া শরাব

প্রিয়ার দেওয়া শরাব

কোঁকড়া অলক মূর্ছেছিল ঘাম-ভেজা লাল গাল ছুঁয়ে,
কাঁপছিল, সে যায় যেন বায় ঝাউ-এর কচি ডাল নুয়ে।
কম্পিত তার আকুল অধর-পিষ্ট ক্লেশে সামলে নে
শরাব-ভরা সোরাই হাতে গভীর রাতে নামলে সে।
দরদ-ভিজা মিহিন সুরে গাইল গজল আপশোশের,
চোখ দুটি নীর-সিক্ত যেন ফাগুন-বুকে ছাপ পোষের!
কোন বেদনার কন্টকে গো বুকের বসন দীর্ণতার,
ছিন্ন-তারের সেতার-সম কণ্ঠে বাণী খিন্নতার!
এলিয়ে দেয়ে আমার পাশে ব্যথায় বিবশ ম্লান তনু
কইল ক্লেশে, ‘কান্ত আমার আমার চেয়েও ক্লান্ত, উঃ!’
শঙ্কা-আকুল মুখটি শেষে কানের কাছে চুমিয়ে সে
জিজ্ঞাসিল, ‘আজ কি তবে শ্রান্ত আশেক ঘুমিয়েছে?’
ঘুমিয়ে সে কে রইতে পারে কান্তা এসে ডাক দিলে,
নিঝুম ঘুমে ঘুমন্তেরও মুখ ফোটে যে – বাক মিলে!
কম্পিত বাম হাতটি থুয়ে স্পন্দিত মোর বুকটিতে
শরাব নিয়ে আরেক হাতে কইল চুমুক এক দিতে।
বেহেশতি সে শরাব, না তা আঙুর-গলা রস ছিল,
জিজ্ঞাসি নাই – কানে শুধু মিনতি তার পশছিল।
এমনি বেশে মুক্ত কেশে এমনি নিশুত রাত্তিরে
শরাব নিয়ে এসে প্রিয়া রাখলে বুকে হাত ধীরে;
প্রেমের এমন বেদিল কাফের কে আছে গো বিশ্বে সে
শরাব সোরাই এক নিশেষে পান করে না নিঃশেষে?
ওগো কাজি, কামখা নীরস শাস্ত্রবাণী কও কাকে?
ভাঙতে পারে পিয়ার ঈষৎ চাওয়া লাখো তৌবাকে!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *