অনেক পুরোনো দিন থেকে উঠে নতুন শহরে আমি আজ দাঁড়ালাম এসে। চোখের পলকে তবউ বোঝা গেল জনতাগভীর তিথি আজ; কোনো ব্যতিক্রম নেই মানুষবিশেষে। এখানে রয়েছে ভোর,- নদীর সমস্ত প্রীত জল;- কবের মনের ব্যবহারে তবু হাত বাড়াতেই দেখা গেল স্বাভাবিক ধারণার মতন সকাল- অথবা তোমার মতন নারী আর নেই। তবুও রয়েছে সব নিজেদের আবিস্ট নিয়মে সময়ের কাছে সত্য হ’য়ে, কেউ যেন নিকটেই র’য়ে গেছে ব’লে;- এই বোধ ভোর থেকে জেগেছে হৃদয়ে। আগাগোড়া নগরীর দিকে চেয়ে থাকি; অতীব জটিল ব’লে মনে হ’লো প্রথম আঘাতে; সে-রীতির মতো এই স্থান যেন নয়ঃ সেই দেশ বহুদিন সয়েছিলো ধাতে জ্ঞান মানমন্দিরের পথে ঘুরে বই হাতে নিয়ে; তারপর আজকের লোক সাধারণ রাতদিন চর্চা ক’রে, মনে হয় নগরীর শিয়রের অনিরুদ্ধ ঊষা সূর্য চাঁদ কালের চাকায় সব আর্ষপ্রায়োগের মতো ঘোরে। কেমন উচ্চিন্ন শব্দ বেজে ওঠে আকাশের থেকে; মনে বুঝে নিতে গিয়ে তবুও ব্যাহত হয় মন; একদিন হবে তবু এরোপ্লেনের- আমাদেরো শ্রুতিবিশোধন। দূর থেকে প্রপেলার সময়ের দৈনিক স্পন্দনে নিজের গুরুত্ব বুঝে হ’তে চায় আরো সাময়িক; রৌদ্রের ভিতরে ওই বিচ্ছুরিত এলুমিনিয়ম আকাশ মাটির মধ্যবর্তিনীর মতো যেন ঠিক। ক্রমে শীত, স্বাভাবিক ধারণার মতো এই নিচের নগরী আরো কাছে প্রতিভাত হয়ে আসে চোখে; সকল দুরুহ বস্তু সময়ের অধীনতা মেনে মানুষ ও মানুষের মৃত্যু হয়ে সহজ আলোকে দেখা দেয় ;- সর্বদাই মরণের অতীব প্রসার,- জেনে কেউ অভ্যাসবশত তবু দু’চারটে জীবনের কথা ব্যবহার ক’রে নিতে গিয়ে দেখে অলক্লিয়ারেরও চেয়ে বেশি প্রত্যাশায় ব্যপ্তকাল ভোলেনি প্রাণের একাগ্রতা। আশা-নিরাশার থেকে মানুষের সংগ্রামের জন্মজন্মান্তর- প্রিয়দের প্রাণে তবু অবিনাশ, তমোনাশ আভা নিয়ে এসে স্বাভাবিক মনে হয়ঃ উর ময় লন্ডনের আলো ক্রেমলিনে না থেমে অভিজ্ঞভাবে চ’লে যায় প্রিয়তর দেশে।