শ্মাশান হতে বাপ ফিরে এল।
তখন সাত বছরের ছেলেটি— গা খোলা, গলায় সোনার তাবিজ—একলা গলির উপরকার জানলার ধারে।
কী ভাবছে তা সে আপনি জানে না।
সকালের রৌদ্র সামনের বাড়ির নিম গাছটির আগডালে দেখা দিয়েছে; কাঁচাঅম-ওয়ালা গলির মধ্যে এসে হাঁক দিয়ে দিয়ে ফিরে গেল।
বাবা এসে খোকাকে কোলে নিলে; খোকা জিজ্ঞাসা করলে, ‘মা কোথায়।’
বাবা উপরের দিকে মাথা তুলে বললে, ‘স্বর্গে।’
২
সে রাত্রে শোকে শ্রান্ত বাপ, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ক্ষণে ক্ষণে গুমরে উঠছে।
দুয়ারে লণ্ঠনের মিট্মিটে আলো, দেয়ালের গায়ে একজোড়া টিকটিকি।
সামনে খোলা ছাদ, কখন খোকা সেইখানে এসে দাঁড়াল।
চারি দিকে আলো-নেবানো বাড়িগুলো যেন দৈত্যপুরীর পাহারাওয়ালা, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমচ্ছে।
উলঙ্গ গায়ে খোকা আকাশের দিকে তাকিয়ে।
তার দিশাহারা মন কাকে জিজ্ঞাসা করছে, ‘কোথায় স্বর্গের রাস্তা।’
আকাশে তার কোনো সাড়া নেই; কেবল তারায় তারায় বোবা অন্ধকারের চোখের জল।
আশ্বিন ১৩২৬