তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!! ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কাল্-বোশেখির ঝড়। তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!! আস্ছে এবার অনাগত প্রলয়-নেশার নৃত্য-পাগল, সিন্ধু-পারের সিংহ-দ্বারে ধমক হেনে ভাঙ্ল আগল। মৃত্যু-গহন অন্ধ-কূপে মহাকালের চণ্ড-রূপে– ধূম্র-ধূপে বজ্র-শিখার মশাল জ্বেলে আস্ছে ভয়ঙ্কর– ওরে ঐ হাস্ছে ভয়ঙ্কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!! ঝামর তাহার কেশের দোলায় ঝাপ্টা মেরে গগন দুলায়, সর্বনাশী জ্বালা-মুখী ধূমকেতু তার চামর ঢুলায়! বিশ্বপাতার বক্ষ-কোলে রক্ত তাহার কৃপাণ ঝোলে দোদুল্ দোলে! অট্টরোলের হট্টগোলে স্তব্ধ চরাচর– ওরে ঐ স্তব্ধ চরাচর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!! দ্বাদশ রবির বহ্নি-জ্বালা ভয়াল তাহার নয়ন-কটায়, দিগন্তরের কাঁদন লুটায় পিঙ্গল তার ত্রস্ত জটায়! বিন্দু তাহার নয়ন-জলে সপ্ত মহাসিন্ধু দোলে কপোল-তলে! বিশ্ব-মায়ের আসন তারি বিপুল বাহুর 'পর– হাঁকে ঐ 'জয় প্রলয়ঙ্কর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!! মাভৈ মাভৈ! জগৎ জুড়ে প্রলয় এবার ঘনিয়ে আসে! জরায়-মরা মুমূর্ষদের প্রাণ লুকানো ঐ বিনাশে! এবার মহা-নিশার শেষে আস্বে ঊষা অরুণ হেসে করুণ বেশে! দিগম্বরের জটায় লুটায় শিশু চাঁদের কর, আলো তার ভর্বে এবার ঘর। তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!! ঐ সে মহাকাল-সারথি রক্ত-তড়িত-চাবুক হানে, রণিয়ে ওঠে হ্রেষার কাঁদন বজ্র-গানে ঝড়-তুফানে! খুরের দাপট তারায় লেগে উল্কা ছুটায় নীল খিলানে! গগন-তলের নীল খিলানে। অন্ধ করার বন্ধ কূপে দেবতা বাঁধা যজ্ঞ-যূপে পাষাণ স্তূপে! এই তো রে তার আসার সময় ঐ রথ-ঘর্ঘর– শোনা যায় ঐ রথ-ঘর্ঘর। তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!! ধ্বংস দেখে ভয় কেন তোর? –প্রলয় নূতন সৃজন-বেদন! আসছে নবীন– জীবন-হারা অ-সুন্দরে কর্তে ছেদন! তাই সে এমন কেশে বেশে প্রলয় বয়েও আস্ছে হেসে– মধুর হেসে! ভেঙে আবার গড়তে জানে সে চির-সুন্দর! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!! ঐ ভাঙা-গড়া খেলা যে তার কিসের তবে ডর? তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!– বধূরা প্রদীপ তুলে ধর্! কাল ভয়ঙ্করের বেশে এবার ঐ আসে সুন্দর!– তোরা সব জয়ধ্বনি কর্! তোরা সব জয়ধ্বনি কর্!!