৫০
কিন্তু তবু তরী হঠাৎ ডুবে গেল। কিংবা বলা ভাল ফুটো তরীকে আর তাপ্পি দিয়ে চালানো গেল না। সে ডুবে গেল! অমিতা ভাবে, ভাবতেই থাকে কেবল, সেও কি একটা ফুটো তরী নয়? তার তো কবেই ডুবে যাবার কথা। কিন্তু সে তার ঝাঁঝরা জীবনটাকে নিয়ে কি করে ভেসে আছে? কেমন করে ভেসে থাকল এত দিন?
কিন্তু বাবা, তোমরা বোধ হয় বুঝতেই পারনি, তোমরা যে তরীর উপর তোমাদের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা বোঝাই করে দিয়েছিলে সেটা এমনই হঠাৎ ডুবে যাবে। তাই না? তোমরা তখন হিসেব কষছিলে, গণপরিষদে কতজন সদস্য হবে।
তায়েবকাকা তুমিই তো বলেছিলেন, ‘সুধাকর, ব্রিটিশ-ভারত থেকে মোট প্রতিনিধি আসবে দুই শত বিরানব্বই জন।’
তুমি তায়েবকাকা, দুশ বলতে না, বলতে দুই শত।
‘দেশীয় রাজ্যগুলির জন্য যে কোটা রাখা হয়েছে সুধাকর, তাতে নির্বাচিত প্রতিনিধির সংখ্যা থাকবে মোট নিরানব্বুই জন। এবং কেন্দ্রীয় শাসিত অন্যান্য মোট দুই জন। সর্বমোট তিন শত সাতাশি জন নির্বাচিত সদস্য নিয়ে গণপরিষদ গঠিত হবে।’
এই ছিল তোমাদের হিসাব তায়েবকাকা। তাই তো? এই হিসাব অনুযায়ী প্রাদেশিক আইন পরিষদগুলো থেকে যখন গণপরিষদে সদস্য নির্বাচন হয়ে গেল তখন তোমরা আর তোমাদের উল্লাসকে চেপে রাখতে পারনি। তুমি হুড়মুড় করে বাবার ঘরে ঢুকে বলেছিলে, ‘এই নাও সুধাকর, গণপরিষদ নির্বাচনের ফলাফল। কংগ্রেস পেয়েছে দুই শত এগারটা সিট, আর মুসলিম লিগ পেয়েছে তিয়াত্তরটা।’
তোমাদের আশার তরী তখন পুরো পালে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছিল। বাবা তোমার বয়স কমে যাচ্ছিল। তুমি কি সেটা বুঝতে পেরেছিলে? তোমার চিন্তাক্লিষ্ট কপাল থেকে তখন বলিরেখাগুলো মুছে যাচ্ছিল। হ্যাঁ বাবা। তোমার মনে তখন উৎসাহের যে জোয়ার বইছিল তাতে তোমার গতিবিধি যুবকের মতো হয়ে উঠছিল। তুমি তখন মাঝে মাঝেই জিজ্ঞাসা করতে, ‘হাঁ রে, শামিমের খবর কি? ওর অসুখ কি এখনও সারেনি?’
তখন সমস্ত দেশ উল্লসিত, কেবিনেট মিশন উল্লসিত, ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেল উল্লসিত। তাঁরা উৎসাহের বশে অন্তবর্তী সরকারের মন্ত্রীদের নাম পর্যন্ত ঘোষণা করে দিলেন। মোট চোদ্দোজন মন্ত্রী। তার মধ্যে প্রথম নামটাই পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর। দ্বিতীয় নাম মোহাম্মদ আলি জিন্নার। আর ছিলেন ডাঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ, সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল, জনাব লিয়াকৎ আলি খান, শ্রীরাজাগোপালাচারী, স্যর এন পি ইঞ্জিনিয়ার, খাজা স্যর নাজিমুদ্দিন, শ্রীজগজীবন রাম, শ্রীহরেকৃষ্ণ মহতাব, নবাব মোহাম্মদ ইসমাইল খান, সর্দার বলদেব সিংহ, ডাঃ জন মাথাই এবং সর্দার আবদুর রব নিস্তার।
তায়েবকাকা একটার পর একটা নাম পড়ে শোনাচ্ছেন, আর বাবা মাথা নেড়ে সমর্থন করছেন, এ ছবিটা অমিতার মনে গাঁথা হয়ে আছে।
হরিকিশোরমেসো বলেছিলেন, ‘শরৎ বোসের নাম নেই? আশ্চর্য।’
তায়েবকাকা আর বাবা হরিকিশোরমেসোর মুখের দিয়ে চেয়ে আছেন।
তায়েবকাকা, তুমি না বাবা, কে প্রশ্নটা করেছিলেন, ‘কেন?’
হরিকিশোরমেসো বলেছিলেন, ‘শরৎবাবু তো এখন ভাইসরয়-এর কাউন্সিলে অপজিশন লিডার। পার্লামেন্টারি প্রথা অনুসারে তাঁরই তো মন্ত্রিসভা গঠন করার কথা। অথচ তিনিই তো মন্ত্রিসভা থেকে বাদ!’
বাবা বলেছিলেন, ‘তা বটে। কিন্তু তুমি এটা তো স্বীকার করবে হরিকিশোর, ওয়াভেল মন্ত্রিসভার যে তালিকা ঘোষণা করেছেন, এর চাইতে রিপ্রেজেন্টেটিভ তালিকা আর হয় না।’
‘সেটা অবিশ্যি ঠিক। তবে আমার কেমন সন্দেহ হয়, নেহরু আর জিন্না, দুজনেই এক মন্ত্রিসভায় থাকবেন কি না।’
‘তোমার যদি প্রার্থনায় বিশ্বাস থাকে হরিকিশোর, তাহলে প্রার্থনা করো যে, ওদের যেন সে শুভবুদ্ধি হয়। নাহলে—’
বাবা হঠাৎ চুপ করে গিয়েছিলেন। কেন তুমি চুপ করে গিয়েছিলে বাবা? তোমার মনেও কি এই রকম কোনও সংশয় উঁকি দিচ্ছিল? শামিম তখন প্রচণ্ড অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছিল। তার একটা চিঠিতে সে লিখেছিল, ‘দেশে কি ঘটছে ফুলকি, এখন থেকে তা কিছুই বোঝা যায় না। এখানে খবরের কাগজ আসে না। এখানে উত্তেজনা চরম সীমায় পৌঁছে গিয়েছে। অবিশ্বাস, ঘৃণা, হিংসা যে ভাবে আত্মপ্রকাশ করছে, তাতে আমার কেবলই ভয় হয়।’
রিনিকে তাঁর বাবা লিখেছিলেন, ‘মুসলিম লিগ অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে কেবিনেট ১৬ই মের প্রস্তাব গ্রহণ করেছিল কিন্তু কংগ্রেস এবং অন্যান্য মাইনরিটি দল সেটাকে খারিজ করে দিয়েছে। কংগ্রেস এবং লিগ উভয়ের পক্ষে গ্রহণযোগ্য কোনও সূত্র পাওয়া না যাওয়ায় ভাইসরয় অন্তবর্তী সরকার গড়তে পারেননি। তিনি অফিশিয়ালদের নিয়ে একটা তত্ত্বাবধায়ক সরাকার গড়েছেন। কেবিনেট মিশন ভারত থেকে চলে গিয়েছেন। আমাদের রাজনীতি আবার সেই পুরানো জায়গায় ফিরে এসেছে।
এটা ছিল তোমাদের আশা-তরীর পাটাতনে একটা বড় ধাক্কা। এটা কি তোমরা ভেবেছিলে? আর তখন থেকেই তোমাদের তরী টলমল করতে লেগেছিল। তাই তো?
রিনির বাবা লিখেছিলেন, ‘এমন করে কোনও কাজ করা যায়! আলাপ আলোচনার শর্তই হচ্ছে, কোনও একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেলে তাকে কাজে পরিণত করা। মাঝ পথে নতুন কোনও ফ্যাঁকড়া তোলা নয়। গ্রুপিং ব্যবস্থার কথাই ধর। কংগ্রেস মুসলিম লিগ নানা দিক বিচার করে গ্রুপিং ব্যবস্থাকে মেনে নিয়েছিলেন। তুমি জান যে, ব্রিটিশ-ভারতকে তিনটে গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিল। গ্রুপ এ, গ্রুপ বি আর গ্রুপ সি। গ্রুপ এ-তে রাখা হয়েছিল মাদ্রাজ, বোম্বাই, যুক্ত প্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ আর উড়িষ্যাকে। গ্রুপ বি-তে রাখা হয়েছিল পঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ আর সিন্ধুকে। গ্রুপ সি-তে রাখা হয়েছিল বাংলা আর আসামকে। এই গ্রুপ ব্যবস্থা কংগ্রেস আর লিগ সরকারি ভাবেই মেনে নিয়েছিল। মিঃ গান্ধীও এটা মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু, আশ্চর্যের কথা, মা মণি, মিঃ গান্ধী মিঃ গোপীনাথ বরদলুইয়ের চাপে পড়ে মাঝ পথেই আসামকে বাংলার সঙ্গে জোট বাঁধার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলেন। মিঃ বরদলুইয়ের কথাটা ছিল এই, আসাম যখন মুসলিম মেজরিটি প্রদেশ নয়, তখন সে বাংলার সঙ্গে জোট বামধতে যাবে কেন? মিঃ বরদলুইয়ের যুক্তিতে ভার থাকতে পারে, কিন্তু মিঃ ‘গান্ধীর কথা ও কাজের মধ্যে সামঞ্জস্য আমি খুঁজে পাইনে। প্রথম এটা যদি এতই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হবে, তাহলে আলোচনার শুরুতেই এটা বিবেচনা করা উচিত ছিল। দু পক্ষের মধ্যে একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হবার পর, মাঝ পথে ‘এটা মানব না’, এটা বলা চলে না। বললে, কোনও দিনই কোনও সিদ্ধান্তে আসা যাবে না।
তুমি ভেবেছিলে বাবা, তোমরা একটা ধাপ পার হতে পেরেছিলে। আর সেটাই ছিল কঠিন ধাপ। এই প্রথম ঘাঁ মেরেছিলেন স্বয়ং মহাত্মা। তারপর থেকে কেবলই ধাক্কা। ধাক্কার পর ধাক্কা। এত ধাক্কায় তোমাদের তরী, আশা-তরী, ওই পলকা তরী, কতক্ষণ আর ভেসে থাকতে পারে বল? সে তরী ডুবে গেল।
অমিতার এই সব কথা মনে পড়েল, সে গভীর বিষণ্নতায় ডুবে যেতে থাকে। কেবলই ডুবতে থাকে। ডুবতে থাকে। ডুবতেই থাকে। অমিতা গভীর অন্ধকারে ডুবতে থাকে। ডুবতেই থাকে। সেই প্রগাঢ় অন্ধকারে কিছুই দেখতে পায় না অমিতা। সেই অন্ধকারে কারা যেন তার পাশে এসে বসে। কিছু বলতে চায়। কে তারা? যখন অমিতা প্রচণ্ড যন্ত্রণায় অস্থির, অস্থির অস্থির, তখনই তারা কি সব যেন বলাবলি করে। তার কানের পাশে একটা বাজে টেপ রেকর্ডার থেকে ক্ষয়ে যাওয়া টেপ বাজতে থাকে, কেবলই বাজতে থাকে।
‘মহাত্মা গান্ধী যদি বরদলুই-এর চাপে চুক্তি থেকে সরে না যেতেন, তাহলে গ্রুপিং ব্যবস্থা বানচাল হত না।
‘কিন্তু কংগ্রেস তো গ্রুপিং ব্যবস্থা মেনে নিয়েছিল। বল্লভভাই তো সেই সিদ্ধান্তের অংশীদার ছিলেন।’
‘সে কথা বলে কে?’
‘কিন্তু কেবিনেট মিশন তো গোড়াতেই পাকিস্তানের দাবি খারিজ করে দিয়েছিলেন। তার বদলেই তো গ্রুপিং ব্যবস্থা। এবং জিন্না আর মুসলিম লিগ তো সেটা মেনে নিয়েছিল। তাহলে? তাহলে পাকিস্তানের কথা উঠছে কোথা থেকে?’
‘সে কথা বলে কে?’
‘প্যাটেল জিন্নাকে বিশ্বাস করতেন না।’
‘জিন্নাও কংগ্রেস নেতাদের সদিচ্ছায় বিশ্বাস করতেন না। গান্ধীকেও না।’
‘অথচ এরা দুজনেই ছিলেন গুজরাটি। প্রতিবেশী।’
‘বাড়ির কাছে আরশিনগর
এক পড়শি বসত করে।
…………………
সে আর লালন একখানে রয়
আবার লক্ষ যোজন ফাঁক রে।’
দ্বিতীয় ধাক্কা মারলেন জিন্না। ওয়াভেল অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাবিত তালিকা প্রকাশ করলে জিন্না সেটাকে খারিজ করে দিলেন। অভিযোগ তুলেছিলেন, তাঁর সঙ্গে বড়লাটের যে কথা হয়েছিল তাতে মন্ত্রিসভায় বারো জন মন্ত্রী নেবার কথা ছিল। কিন্তু বড়লাট কংগ্রেসের চাপে মন্ত্রীর সংখ্যা বাড়িয়ে করেছেন চোদ্দো। বাকি দুজন মন্ত্রীর পদ হিন্দুদেরই দিয়ে দিয়েছেন।’
‘আর শেষ ধাক্কা দিলেন জওহরলাল নেহরু। তিনি তখন সবে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট হয়েছেন। এবং এটাও বুঝে গিয়েছিলেন, মুসলিম লিগ যোগ দিক আর না দিক, ওয়াভেলকে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতেই হবে। এবং সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনিই। নেহরু বোম্বাইতে এক সাংবাদিক বৈঠকে ঘোষণা করলেন, কংগ্রেস কেবিনেট মিশনের দীর্ঘমেয়াদি অথবা অল্পমেয়াদি, কোনও পরিকল্পনাই গ্রহণ করেনি। কংগ্রেস কেবলমাত্র প্রস্তাবিত গণপরিষদে যোগ দিতে স্বীকৃত হয়েছে। এবং সে গণপরিষদ হবে স্বাধীন ও সার্বভৌম। ভারতের যে সংবিধান গণপরিষদ রচনা করবে তদনুযায়ীই ভারতেই ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে।
‘মিঃ নেহরুর এই বক্তব্যকেই’, রিনির বাবা রিনিকে লিখেছিলেন, ‘কেবিনেট মিশন প্রস্তাবের মৃত্যু পরোয়ানা বলে ধরে নিতে পার, মা মণি।’
মৃত্যু পরোয়ানা? অমিতা আর্তস্বরে ককিয়ে ওঠে, হ্যাঁ, মৃত্যু পরোয়ানাই তো! ওটা মৃত্যু পরোয়ানাই ছিল শামিম।
জিন্না ডিরেক্ট অ্যাকশন ঘোষণা করলেন। ১৬ই আগস্ট ১৯৪৬! দাঙ্গার সওয়ার হয়ে কলকাতায় মৃত্যু এসে হানা দিয়েছিল। নরকের অশরীরী ঘোড়াগুলো আমাদের মনের তলদেশ থেকে উঠে এসে প্রেম ভালবাসা করুণা দয়া মায়া বিশ্বাস যুক্তি বুদ্ধি, যা নিয়ে মানুষ বাঁচে, সব কিছুকে তাদের হিংস্র খুরে গুঁড়িয়ে মাড়িয়ে দলে থেঁতলে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল রাস্তায় রাস্তায় মহল্লায় মহল্লায়। সেই ঘোড়াগুলোর চেহারা কি?
মনে করতে পারে না অমিতা। এই স্মৃতি তাকে নিস্তেজ করে রাখে। তার মনকে অসাড় করে তোলে। তার অনুভূতিগুলোকে ভোঁতা ছুরি দিয়ে কে যেন চেঁছে ফেলতে চায়। সে ভুলতে চায় কেবলই ভুলতে চায়।
শামিম তুমি তার আগের সন্ধ্যাতেই আমাদের বাড়িতে এসেছিলে। তুমি কি সত্যিই এসেছিলে শামিম? তুমি আমাকে পরের দিন প্যারাগনে দেখা করতে বলেছিলে। তুমি কি আমার জন্য প্যারাগনে অপেক্ষা করেছিলে? তুমি বলেছিলে, সেখানে থাকবে তুমি। সত্যিই কি তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলে? তুমি কি জানতে না, সেটা ছিল ডিরেক্ট অ্যাকশনের দিন? আমি যেতে পারিনি শামিম, যেতে পারিনি। তুমি হারিয়েই গেলে। তুমি কি জানো, কলকাতায় দাঙ্গার চারদিনে কুড়ি হাজার নরনারী শিশু হতাহত হয়েছিল। জানো কি যারা মরেছিল তাদের অনেকেরই শনাক্ত করা যায়নি?
তুমি কি জানো শামিম, কলকাতার পর নোয়াখালি, নোয়াখালির পর বিহার, বিহারের পর গড়মুক্তেশ্বরে কলকাতার মতো একইভাবে মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়েছিল?
তুমি কি জানো শামিম, এক বছর পরে, ঠিক এক বছর পরে, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম। তুমি কি জানো দেশ ভাগ করে আমাদের স্বাধীনতা এসেছিল? তুমি কি জানো শামিম, পাকিস্তান সত্যিই হয়েছে? তুমি কি জানো, দেশভাগের সময় পঞ্জাবেও মৃত্যুর পরোয়ানা জারি হয়েছিল? কত নর নারী শিশু মরেছিল? হাজার হাজার, না লাখ লাখ? বেঁচে থাকতে যারা মিলতে পারেনি, মৃত্যু এসে তাদের এমনভাবে মিলিয়ে দিয়েছিল যে, বোঝা যায়নি কে হিন্দু আর কে মুসলমান। এই সব শনাক্তহীন মৃতদেহ পাশাপাশি শুয়েছিল মহল্লায় রাস্তায় মাঠে ময়দানে। শেয়াল কুকুর চিল শকুন ওদের সদ্গতি করেছে।
কেবল ওরাই জাত বিচার করেনি।
***