প্রণয়-ছল
কত ছল করে সে বারেবারে দেখতে আসে আমায়। কত বিনা-কাজের কাজের ছলে চরণ দুটি আমার দোরেই থামায়॥ জানলা আড়ে চিকের পাশে দাঁড়ায় এসে কিসের আশে, আমায় দেখেই সলাজ ত্রাসে, গাল দুটিকে ঘামায়। অনামিকায় জড়িয়ে আঁচল দুরু দুরু বুকে সবাই যখন ঘুমে মগন তখন আমায় চুপে চুপে দেখতে এসেই মল বাজিয়ে দৌড়ে পলায় রঙ খেলিয়ে চিবুক গালের কূপে। দোর দিয়ে মোর জলকে চলে কাঁকন মারে কলস-গলে অমনি চোখোচোখি হলে চমকে ভুঁয়ে নখটি ফোটায়, চোখ দুটিকে নামায়। সইরা হাসে দেখে ছুঁড়ির দোর দিয়ে মোর নিতুই নিতুই কাজ-অকাজে হাঁটা। করবে কী ও? রোজ যে হারায় আমার পথেই শিথিল বেণির দুষ্টু মাথার কাঁটা! একে ওকে ডাকার ভানে আনমনা মোর মনটি টানে, চলতে চাদর পরশ হানে আমারও কী নিতুই পথে তারই বুকের জামায়॥ পিঠ ফিরিয়ে আমার পানে দাঁড়ায় দূরে উদাসনয়ান যখন এলোকেশে, জানি, তখন মনে মনে আমার কথাই ভাবতেছে সে, মরেছে সে আমায় ভালোবেসে। বই হাতে সে ঘরের কোণে জানি আমার বাঁশিই শোনে, ডাকলে রোষে আমার পানে নয়না হেনেই রক্তকমল-কুঁড়ির সম চিবুকটি তার নামায়॥