পৃথিবী গোল
পৃথিবী যে গোল তার পরিচয় পেলাম সেদিন।
আর গ্লোব-এর মত মানুষের মাথাও যে গোলাকার কিছু কম নয়, তার ভেতরেও গোলের কিছু কমতি নেই তাও আমি টের পেলাম সেই সঙ্গে।
অনেককাল পরে আমার বাল্যবন্ধু তারাপদর এক চিঠি এল হঠাৎ—তাতে লেখা—
জীবন-পরিক্রমার পথে ঘুরতে ঘুরতে তোমার ‘অদ্বিতীয় পুরস্কার’ গল্পগ্রন্থের সঙ্গে ধাক্কা লাগল। তাতে আমাদের ইস্কুলে পড়ার সময়কার সেই ভূত এখার গল্পটা লিখেছ দেখলাম। আমাদের সবার নাম-ধাম দিয়ে লিখেছ। তোমার সঙ্গে আমি-হেন লোকের আবাল্য পবিচয়টা আমার নিজ এবং পাড়াতুতো নাতি-নাতনীরা বিশ্বাসই করে না। তোমার ঐ গল্পটাতে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করায় তোমার ঐ সব ক্ষুদে ভক্তরা আমার সঙ্গে তোমার পরিচয়ের সুযোগে সশরীরে স্কুল শরীরে তোমার দর্শনের ভীষণ অভিলাষী।
জানি না এখনও মুক্ত-আরামে তুমি মুক্তারামে বিরাজ করছ কিনা। তোমার জবাব পেলে আমার এই নাতিবৃহৎ পরিবার নিয়ে তোমার ওখানে গিয়ে হাজির হব একদিন
চিঠির মাথায় ডায়মন্ড হারবার রোডের ওপরেই কাছাকাছি একটা জায়গার ঠিকানা।
চিঠিটা পড়ে আমার মনে হলো, আমি কখন কলকাতায়, কখন পাটনায়, কখন বা ঘাটশিলায় তার যখন কোন ঠিক-ঠিকানা নেই, তখন সপরিবার শ্রীতারাপদকে বিড়ম্বিত না করে বরং তার ঠিকানায় গিয়ে হানা দেওয়াটাই ঠিক হবে।
তাছাড়া, করবরতিরা কজু হয়, কে না জানে! অবশ্যি, চকরবরতিদের ভেতর যাঁরা রাজতুল্য সেই রাজচক্রবর্তীরা কেমন হয়ে থাকেন জানি না, তাঁদের কথা নিশ্চয়ই আলাদা। তাঁদের হৃদয় আর পকেট দুই-ই হয়তো বেশ দরাজ হবে। তবে আমি খোদ আমাকে তো জানি, খোদার ওপর খোদকারি-করা আমার আত্মানং বিদ্ধি হয়ে গেছে, তাই এই বাজারে নিজেকে বেশি করে আর বিদ্ধ করতে চাই না। ভেবে দেখলাম সেই নাতিবৃহৎ পরিবারের আতিথ্য করতে আমায় যতখানি আরাম থেকে বিমুক্ত হতে হবে, তার চেয়ে আগে-ভাগে আমিই যদি তাদের ঠিকানায় যাই তাহলে তাদের ঘরে এবং ঘাড়ে গোটাকতক সন্দেশ বসিয়ে আসতে পারি। তাতেই আমার লাভ বরং, অন্ততঃ কোনই লোকসান নেই।
চলে গেলাম পুতুলদের বাড়ি। বললাম, চ, তোদের গাড়ি করে ডায়মন্ড হারবার থেকে একটু ঘুবে আসবি চল। শহরতলীর শোভা দেখে আসা যাবে।
শহরের বাইরে যাবে তুমি? বল কি গো? পুতুল যেন হতবাক, তুমি না প্রকৃতির ওপর হাড়ে-হাড়ে চটা, প্রাকৃতিক সোন্দর্য একদম নাকি তোমার সথ হয় না? তোমার এমন বিমতি হলো যে হঠাৎ?
প্রকৃতির প্রতি হাড়ে চটা—আমি? কে বললে? সে হলো গে অচলা প্রকৃতি। যে প্রকৃতি নড়ে-চড়ে না, এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে ঠায়, যেমন গাছ-পালা পাহাড় -পর্বত ইত্যাদি পদার্থ জাতীয় এই সব। যাদের রূপ একটুখানি দেখলেই ফুরিয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃতির লীলা কি সেইখানেই শেষ নাকি? সচলা প্রকৃতি নেই? তাদের প্রতি তো ভাই আমার অচলা ভক্তি। কবির প্রতিভার ন্যায় মুহূর্তে মুহূর্তে যার রূপের নব নবোন্মেষ সেই সব অপদার্থ প্রকৃতির প্রতি আমার টান তুই কখনো কিছু কম দেখেছিস?
কিন্তু অ্যাতো জায়গা থাকতে হঠাৎ ডায়মন্ড হারবার কেন দাদা? ইতু শুধোয়, কলকাতার আর কোনদিকে কি কোন শহরতলী নেইকো?
আমার এক বাল্যবন্ধুর খবর পেয়েছি। তার বাড়ি যাব। চিঠিখানা দেখালাম তাদের।
বাল্যবন্ধুর কাছে কেউ আবার যায় নাকি কখনো? ইতু দ্বিরুক্তি করে।
সে বন্ধুত্ব তো বাল্যকালেই খতম হয়ে যায়।
তার মানে?
তোমার বাল্যবন্ধুর কাছে যাবার আমাদের উৎসাহ হয় না। সে ব্যক্ত করে, সে তো তোমার বয়সীই হবে প্রায়। তার কাছে গিয়ে আমাদের লাভ?
আরে, যেখানে দেখিবে ছাই, উড়াইয়া দ্যাখো তাই, পেলেও পাইতে পার লুকনো রতন। কে বলেছিল একথা? আমি জানতে চাই।
আমি বলিনি।পুতুল বলে। আমি কাউকে এমনধারা কথা বলতে শুনিনি কখনো। ইতু জানায়।
কী করে শুনবি! তোদের কালে তো পাঠ্যবই পাল্টে গেছে। ইস্কুলে কি পদ্যপাঠ পড়ায় আর—জানবি কী করে! আমরা পড়েছি ইস্কুলে। কার ও কি মদনমোহন তকালকার এদের কেউ একজন বলে থাকরেন। বিদ্যাসাগর মশাইও হতে পারেন।
নিজের বিদ্যার বহর শহর করি।
তোমার মার খবরে আমাদের কাজ নেই। ইতুর সাফ জবাব। -সাগরের খবরও চইনে।
তখন বাধ্য হয়ে আমি গুপ্তকথার সহজ ব্যাখ্যায় চলে আসি—মানে হচ্ছে কি, বিধাতা এই দুনিয়ায় ধানে-চালে মিশিয়ে দিয়েছেন। তোমাকে একটু কষ্ট করে সেটা বেছে নিতে হবে কেবল। তুই সেখানে একটা আধবুড়ো লোক আছে বলে ঘাবড়াচ্ছিস, ভাবছিস যে গিয়ে কী লাভ হবে। কিন্তু তার পেছনে এই নাতিবৃহৎ পরিবারটি রয়েছে, বৃহৎ বৃহৎ নাতিও রয়ে গেছে নিশ্চয়—সেদিকটা তো নজরে পড়ছে না তোদের।
বলে দৃষ্টান্তস্বরূপ আমি নিজেকেই উদাহরণ-স্থল করি, আগে তো আমি ছেলেদের গল্প লিখতাম কেবল। তাই ছেলেরাই গায়ে পড়ে মিশতে আসত আমার সঙ্গে। তাদের সতেই আলাপটা হতো প্রথম। তারপর ভাব জমলে তাদের বাড়ি গেলে মেয়েদের দেখা পেতাম না কি? যেমন বোনান্তরালে ভাইরা থাকে তেমনি ভাইরাস-এর পেছনে বোন। বিধাতার এই নিয়ম। ঘোড়া ডিঙিয়ে কি ঘাস খাওয়া যায় কখনন? এই তোদের বেলাই দ্যাখ না। প্রথমে তো তোদের দাদার সঙ্গেই ভাব হয়েছিল আমার। গোরাই আমায় ল্যাজে বেঁধে যোত গোড়ায়। তারপরে তো তোদের সঙ্গে মিশলাম। কিন্তু গোড়ায় তার সঙ্গে ভাব না হলে কি তোদের আর পাত্তা পেতাম কোনদিন! তারপরে যখন তোদের সঙ্গে ভাব হলো, তারপর থেকে তোদের সঙ্গেই ঘুরছি তো! গোরাকে নিয়ে কি সিনেমায় রেস্তরাঁয় যাচ্ছি আর? আর, গোরাই কি আমার সঙ্গে ঘুরছে আরো? সে তো এখন সবিতার সঙ্গে…
হয়েছে, হয়েছে। বুঝতে পেরেছি। তোমায় আর ব্যাখ্যান করতে হবে না।
ইতু আর পুতুলকে নিয়ে ওদের গাড়ি করে ডায়মণ্ড হারবার পাড়ি দেওয়া হলো।
অকুস্থলে পৌঁছে দেখা গেল, সেখানে এক চায়ের দোকান—নটবর কেবিন…রাস্তার ঠিক ওপরেই—চাতকদের অপেক্ষায়।
চৌরাস্তার মাথার ওপর দোকানটা—কোনদিকে যাই এখন?
ওই চা-ওয়ালাকে জিজ্ঞেস করে জেনে নাও না কেন? বাতলালো ইতু। এখানকার হদিশ ও-ই তো ভাল দিতে পারবে।
তা বটে। চায়ের দোকানে সবাইকে আসতে হয়। ওখানেই সব খবর, সবাব খবর মেলে।
নামলাম গাড়ির থেকে। শুধালাম গিয়ে দোকানীকে।
অশীতিপর এক ভদ্রলোক।
ঠিক সময়ে এসেছিলাম, ভাগ্যিস। এই শীতের পর আর ওঁর দেখা মিলত কিনা সন্দেহ।
কার ঠিকানা চান? ঘাড় নাড়তে নাড়তে তিনি বললেন।
তারাপদবাবু! এইখানেই কোথাও থাকেন। আমি জানালাম।
ও? তারাপদবাবু! বলে বৃদ্ধটি যেন কেমন গুম হয়ে গেলেন। আর কোন কথাটি নেই তাঁর।
তুমি আর লোক পেলে না—এই বুড়োর কাছে জানতে গেলে। ইতু ফিসফিস করে, একটা বাচ্চাটাচ্চা কারো কাছে জানতে হয় বরং!
বাচ্চারা কি বয়স্ক লোকের খোজ রাখে নাকি? ধার ধারে বয়সীদের? উনি সাবেক লোক, উনি বলতে পারবেন বরং। বলে আমি ভদ্রলোককে উসকে দিলাম আবার : প্রভাত-কুটিরটা এখানে কোথায় বলতে পারেন?
প্রভাত-কুটির, ও! বলে তিনি গম্ভীর হয়ে গেলেন আবার।—ও! সেই প্রভাত-কুটির।
হ্যাঁ, তার হদিশটা বাতলাতে পারেন আমাদের?
কার হদিশ?
প্রভাত-কুটির। তারাপদবাবুরা থাকেন যেখানে।
অ! তারা নতুন এসেছেন বুঝি?
না, না। গত যুদ্ধের সময় থেকেই আছেন মনে হয়।
গত যুদ্ধের সময় থেকে?
হ্যাঁ, তাই হবে। সায় দিই আমি।
তাহলে ঠিক হয়েছে। গত যুদ্ধের সময় থেকে। আবার তিনি ঘাড় নাডেন, হ্যাঁ, তারাপদবাবুই বটেন। আমরা এখনো তাদের সম্বন্ধে বিশেষ কিছুই জানি না। তবে ওই নাম বটে।
তাঁরা এখন কোথায় আছেন সেইটে জানতে চাইছি।
আমি বলি। প্রভাত-কুটিরেই আছেন বটে। বেশিদিনের নয় বাড়িটা। হালেরই বলতে হয়। সন তেরোশো তিন সালে তৈরি। বাড়ির মাথাতেই খোদাই করা আছে তারিখটা। প্রভাত-কুটির। সেইখানেই তারা থাকেন।
বলে তিনি পিছন ফিরতেই আমরা তাকে ফিরে ডাকলাম, আজ্ঞে, দয়া করে তার বাড়ির পাত্তাটা যদি জানাতেন আমাদের।… প্রভাত-কুটির যেতে হলে…
প্রভাত-কুটিরে যেতে চান? তিনি ফিরে দাঁড়ালেন ফের : এই পাশের বাস্তাটা ধরে চলে যান সোজা। ইমদাদ আলির বাড়িটা পেরুলেই…
তা, সেই আলি সাহেবের বাড়িটা কোন্ জায়গায়? বাধা দিয়ে জিজ্ঞেস করতে হলো আবার।
আলিসাহেব? ও, ইমদাদ আলি!.. বলে বৃদ্ধলোকটি এক দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেনতিনি অব সেখানে থাকেন না। তার সঙ্গে যদি দেখা করতে এসে থাকেন তো মিছে বববাদ করলেন সময়টা। দুবছর হবে তিনি কবরখানায়। তাকে পেতে হলে আরো ঢেব আগে আসতে হতো।
তখন আমাদের বলতে হলো যে, না, আমরা ইমদাদ আলিকে চাইনে, কবরখানায় যাবারও ইচ্ছা নেই আমাদের, প্রভাত-কুটিরেই যেতে চাই আমরা।
ও! …তা, যদি প্রভাত-কুটিরেই যেতে চান তো এই পথ ধরে সোজা চলে যান, খানিকটা গিয়ে বাঁ দিকে ঘুরবেন—তারপর আবার খানিকটা গিয়ে ফের আবার বাঁ দিকে—সেই মোড়ের ওপরের বাড়িটাই হচ্ছে যেখানে ইমদাদ মিঞা থাকতেন। বললাম তো আমি।
মোড়ের ওপরেই? আমি আওড়ালাম। তারপর বাঁ দিকে টার নিতে হবে?
হ্যাঁ, যেখানে সেই সাইনবোর্ডটা ছিল। তিনি জানালেন তার থেকে আর খানিকটা গেলেই…না, ভুল হবার কিছু নেই।
সেই সাইনবোর্ড-বরাবর যাব বলছেন?
সেই সাইনবোর্ড কি আর সেখানে আছে মশাই? সেই আশ্বিনের ঝড়ে উড়ে গেছে কোকালে।
যাকগে, সেই স্বৰ্গত সাইনবোর্ডের পাশ দিয়ে খানিকটা গেলে তারপর?…
ডান দিকে লিচুগাছটা রেখে ফের আবার বাঁ দিকে ঘুরতে হবে।
লিচু গাছটা ডান দিকে পড়বে তো? জেনে আমার উৎসাহ হয়। লিচুগাছ চিনতে ভুল হবে না আমার কিছুতেই কত ওদের ডালে ডালে ঘুরেছি লিচু ফলার ঋতুতে। পেয়ারাগাছ না হয়েও সে আমার পেয়ারের গাছ। বছরের এ সময়টায় গাছটা একটু মাফলেষু হলেও পুরনো পরিচয় বিস্মৃত হবার নয়। চিনতে পারব ঠিক।
পড়ত, গাছটা সেখানে থাকত যদি। বলে তিনি আবার দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন—সেটাও সেই ঝড়ে পড়ে গেছে কিনা। তারপর কারা এসে তার ডাল-পালা কেটে-কুটে নিয়ে চলে গেছে কবে যেন। চিহ্নমাত্রও নেই এখন।
লিচুগাছটাও নেই! শুনে দীর্ঘনিশ্বাস পড়ল আমাণও।
না। তবে গাছের গুঁড়িটা আছে। পাশ দিয়ে যেতে নজরে পড়বে। ভুল হবার যে নেই।
বেশ। তারপর সেখান থেকে বাঁ ধারে বাঁক নেব আবার?
গোড়াগুড়ি সোজা বলেই মনে হচ্ছে পথটা—এই গোড়ার থেকে ওই গুঁড়ি পর্যন্ত অন্ততঃ।
বাঁ ধারেই বেঁকেছে রাস্তাটা। তারপর সেখান থেকে সোজা চলে যাবেন সেই শহীদ-স্তম্ভ অব্দি। পাড়ার ছেলেরা কোথাথেকে একটু উঁচু পাথর নিয়ে এসে খাড়া করেছিল সেখানে। বিয়াল্লিশের শহীদদের স্মৃতিচিহ্ন।
উঁচু পাথরের শহীদ-স্তম্ভ? আমি ঘাড় নাড়ি-না, এবার আর ভুল হবার কিছু নেই।
সেই শহীদ-স্তম্ভটাই কি আছে নাকি আর? লরির ধাক্কায় কাত হয়ে পড়েছিল কবে। ও-পাড়ার বনমালী মুদি সেটাকে তুলে নিয়ে গিয়ে তার মুদিখানার পৈঠা বানিয়েছে।
শহীদ-স্তম্ভের কথায় ইতু যাও বা একটু উৎফুল্ল হয়েছিল, বনমালীর কাণ্ডে মুদিত হয়ে গেল তৎক্ষণাৎ। প্রস্তরীভূত শহীদদের পরিণামে—পাদপীঠে এই পরিণতিতে আমিও স্তম্ভিত।—সেই পাথরটাও নেই আর!
না। তবে সেই জায়গাটা আছে। নেবার জো আছে কি না জানি না, তবে সেইখানটা হেড়ে বাঁ ধারে একটু গেলেই আপনার সেই প্রভাত-কুটির। সোজা রাস্তা, ভুল হবার কিছু নেই।
সোজা বলে তো বাতলালেন নটবরবাবু। কিন্তু যাওয়া মোটেই সোজা না, এমনি করে মোড় ঘুরে ঘুরে—এইভাবে বাঁ পারে চর নিতে নিতে যাওয়া কোনো চক্করবরতির পক্ষেও সহজ নয়। যাই হোক, দুরপাক খেতে খেতে এগুলাম।
ভালো লোক পাকড়েছিলে দাদা। বলল পুতুল।
লোকটার বয়সের গাছ-পাথর নেই! মুখ ব্যাঁকাল ইতু। বাব্বাঃ!
মিনিট পাঁচেক বাদে একটা মোড়ে এসে পৌঁছলাম, মনে হলো সেই বাড়িটার সামনেই এসে পড়েছি, আলিসাদ্যে যে বাড়িতে মরেছেন, তারপর সেখান থেকে বাঁ মোড় ধরে খানিক এগুতেই সেই যেখানে সেই সাইনবোর্ডটা হিল সে জায়গাটা পেলাম মনে হয়, তার খানিক বাদে বিয়াল্লিশের শহীদরা যেখানে দ্বিতীয়বার শহীদ হয়েছিলেন সেখানটাও পেরিয়ে গেল বোধ করি, ইতিমধ্যে কোনো ফাঁকে অন্তহিত সেই লিচুগাছটাও ছাড়িয়েছি সভবতঃ; তারপর আরেক চকরের পর সোজা এসে পড়লাম বড় রাস্তায় আবার। ডায়ম হারবার রোডে। সেই নটবর কেবিনের সামনেই সটান।
আমাদের দেখে নটবরবাবু নড়বড় করে এগুচ্ছেন দেখা গেল।
কিন্তু আমরা আর গাড়ি থামালাম না। নটবরকে নট করে দিয়ে কলকাতার পাড়ি ধরলাম সোজা।