১.১৪.০৫ পুণ্যি পুকুর

প্রথম খণ্ড : লৌকিক ধর্ম-উৎসব ও অনুষ্ঠান । চতুর্দশ পরিচ্ছেদ : ব্রত অনুষ্ঠান – পুণ্যি পুকুর

‘পুণ্যি পুকুর’ ব্রত পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গের উভয় অঞ্চলেই দেখতে পাওয়া যায়। ছড়াও প্রায় একই রকমের, তবু আমরা পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে প্রচলিত একটি ‘পুণ্যি পুকুর’ ব্রতের ছড়াই আপনাদের আকছে তুলে ধরব। বৈশাখ মাসের প্রায় সবগুলি ব্রতই কুমারী ব্রত না হলেও এর প্রত্যেকটি ছড়াতেই লক্ষ্য করবেন এর ভিতর মেয়েরা সব সময়ই চায় একদিকে পিতৃকুলের অপরদিকে শ্বশুর কুলের মঙ্গল। শৈশব হতে মেয়েদের এই ভাবে ঘরের এবং পরের মঙ্গল কামনা করবার পদ্ধতি শিক্ষা দেওয়া হতো বাংলার মেয়েদের। তাই আজও গ্রামাঞ্চলে ঘুরলে শোনা যায় এই সব ব্রত কথা। অতি সংক্ষিপ্ত এসব ব্রত কথা। উঠোনের মাঝখানে ছোট একটি চৌকোণা পুকুর তৈরী করে পহেলা বৈশাখ থেকে সংক্রান্তি পর্যন্ত তার ভিতর প্রতিদন এক ঘটি জল ঢেলে দিয়ে ছড়া বলে, আর একটি করে ফুল ফেলে দিয়ে প্রণাম করে উঠে দাঁড়ায় :

পুণ্যি পুকুর পুষ্প মালা
কে পূজেরে দুপুর বেলা,
আমি সতী নিজ ব্রতী
সাত ভাইয়ের বোন ভাগ্যবতী,
হবে পুত্র মরবে না,
চোখের জল পড়বে না,
পুত্র দিয়ে স্বামীর কোলে
মরণ যেন হয় এক গলা গঙ্গাজলে।

চার বছর ধরে ঠিক একই নিয়মে এই ব্রত করে শেষ বছর করতে হবে উদযাপন। এইবার পুরোহিত ডাকতে হবে, তিনি শাস্ত্রীয় পূজানুষ্ঠান করবেন। অশ্বত্থ নারায়ণের ব্রতের মতো, এ ব্রতেও লাগে সোনার ও রূপোর তৈরি মাছ, বেলপাতা ইত্যাদি। সাধ্যানুসারে নিমন্ত্রণ অথবা ব্রাহ্মণ ভোজন এতো আমাদের ধর্মের একটা অঙ্গই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *