পিরামিডের পেটের মধ্যে
প্রথম থেকেই আমার ইচ্ছে ছিল পিরামিডের ভেতরে ঢুকব৷ কিন্তু প্রথমদিন পিরামিড দেখতে গিয়ে হতাশ হলুম৷ কায়রো শহর থেকে পাঁচ-ছ’ মাইল দূরেই তিনটি পিরামিড পাশাপাশি৷ কাছেই বিশালাকার জগদ্বিখ্যাত স্ফিংক্স৷ হোটেল থেকে বেরিয়ে বাসে চেপেই সেখানে পৌঁছানো যায় আধঘণ্টার মধ্যে৷ সেখানে পৌঁছেই আমি হতাশ হলুম৷ যদিও পিরামিডগুলো ঠিক পিরামিডই, সুউচ্চ ত্রিকোণ পাথরের ঢিপি, বহু পর্যটক ভ্রমণার্থীর ভিড় সেখানে, অনেকে খাবারদাবার সঙ্গে এনেছে পিকনিক করার জন্য, কেউ কেউ পিরামিডের গা বেয়ে ওপরে উঠে গেছে, প্রচুর ক্যামেরা ও ট্রানজিস্টার, অনেকটা মেলার মতন আবহাওয়া৷ সন্ধেবেলা, এখন দিল্লির লালকেল্লায় যেমন দেখানো হয়, সে ‘সঁ এ লুমিয়ে’ হল৷ সবই ঠিক, তবু আমি মনমরা হয়ে ছিলুম৷ ওখানকার কোনো পিরামিডের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয় না৷ ছাদ ধসে পড়ে দুর্ঘটনার ভয়ে সব কটির মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷
অনেক ঘোড়া ও উটের সমাবেশ সেখানে৷ সহিসরা এসে টানাটানি করছে সেগুলো ভাড়া নেবার জন্য৷ ওদের মুখে ভাঙা ইংরাজি৷ ‘ওয়ান আওয়ার ট্রিপ, কাম কাম মাস্টার, ফিফটি পিয়াসতা, গিভ পারটি পিয়াসতা৷ ফরটি ফাইভ? নো?’ সামনের বালুকাময় প্রান্তরে উটের পিঠে চেপে একটুখানি মরুভূমি ভ্রমণের স্বাদ পাবার জন্য অনেকে ভাড়াও নিচ্ছে৷ শুনতে পেলাম ওখান থেকে দশ-বারো মাইল দূরে মেমফিসে কয়েকটা পিরামিড আছে৷ সেগুলোর মধ্যে ঢোকা যায়৷ উটের পিঠে সেখানে যেতে হবে৷ মনে মনে ঠিক করে ফেললুম৷ সেদিন নয়, তার দু’দিন পর ওখানে ফিরে এসে একটা উট ভাড়া নিয়ে একা বেরিয়ে পড়লুম মেমফিসের উদ্দেশে৷ আঃ, কী ভালো লেগেছিল সেই সকালবেলা৷ খালি একটু আপসোস হচ্ছিল, চেনাশোনা কেউ আমাকে এ অবস্থায় দেখল না৷ নিজেকে মনে হচ্ছে খাঁটি অভিযাত্রী একজন৷ আমার পরনে জিনের প্যান্ট, গায়ে লাল ছাপ ছাপ জামা, রোদ ঢাকার জন্য একটা টুপিও পরেছি৷ গলায় ঝোলানো ওয়াটার বটল, চোখে রোদ-চশমা, আমি আমেরিকার উট মার্কা সিগারেট খাচ্ছি৷ ‘ইহার চেয়ে হতেম যদি আরব বেদুইন’—তখন তো আমি সত্যিই আরব বেদুইন! বাংলাদেশে, শুধুমাত্র আমার বাবা-মায়ের ধারণা, আমার গায়ের রং ‘উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ’৷ কিন্তু বন্ধুবান্ধব বা মেয়েদের চোখে আমি ছাতার মতন কালো৷ অথচ এক জার্মান মহিলা আমাকে দেখে বলেছিলেন, আমাকে নাকি আরবদের মতন দেখতে৷ আমার শরীর কত না সূর্যের আলো শুষেছে! বারবার সেই কথা মনে হতে লাগল৷ ভাবলুম, এ জন্মে না হোক, গত জন্মে আমি নিশ্চিত আরব ছিলুম৷
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোদ চিড়বিড় করতে লাগল৷ আগস্ট মাসের গরমে ইজিপ্টে ইওরোপ-আমেরিকার ট্যুরিস্টরা সাধারণত আসে না৷ সুতরাং পুরো যাত্রায় আমি একা৷ উটের পিঠে ভ্রমণ করতে বেশ আরাম লাগে বটে, কিন্তু পরদিন, শরীরের সবচেয়ে নরম স্থানদুটিতে এমন ব্যথা হয় যে, মনে হয় সারারাত্রি বিছানায় শোওয়ার বদলে দাঁড়িয়ে থাকি৷ ক্রমে মেমফিসের পিরামিড চত্বরে এসে পৌঁছলুম৷ পাথর ও বালুকাময় প্রান্তরে ছড়ানো কয়েকটি পিরামিড৷ অসংখ্য ভাঙা মূর্তি ও স্তম্ভ৷ একটি পিরামিড দেখামাত্র চিনতে পারলুম৷ বহু ছবিতে দেখেছি, সেটার নাম স্টেপ পিরামিড৷ ওর গাটা মসৃণ নয়, সিঁড়ির মতন ধাপে ধাপে উঠে গেছে৷ এটাই মিশরের রাজধানী৷ আর্য সভ্যতার চেয়েও প্রাচীন এক সভ্যতার একদা লীলাভূমিতে আমি এসে দাঁড়িয়েছি৷
কিন্তু দাঁড়িয়েছি দর্শক হিসেবে আমি একা৷ এখানে আর কেউ আসেনি, যত দূর দেখা যায় শুধু বালি আর সভ্যতার পাথুরে কঙ্কাল৷ মাঝে মাঝে একটু জোর বাতাসের সাঁ সাঁ শব্দ৷ উট থেকে নামিয়ে সহিস আমাকে বলল, ‘কাম, কাম৷’ খানিকটা পাথর বাঁধানো রাস্তা দিয়ে উঠেই দেখা গেল সরকারি নোটিশ ও একটা কুঁড়েঘর৷ নোটিশের মর্মার্থ, এখানে ঘুরতে গেলে সঙ্গে গাইড নিয়ে ঘুরতে হবে৷ আমার সহিসের নাম রফিক৷ বেশ হাসিখুশি এক তরুণ৷ সে আঙুল দেখিয়ে বলল, ‘সি…’ দেখলাম একজন বিশালাকায় পুরুষ মাটিতে উবু হয়ে নামাজ পড়ছে৷ তার পাশে একটা শাবল পড়ে আছে৷ তার একটা তিন-চার বছরের ফুটফুটে বাচ্চা ছেলে বালি নিয়ে খেলা করছে৷
হঠাৎ কোথা থেকে বিষম ভয় আমাকে পেয়ে বসল৷ জানি না সবারই এরকম হয় কি না! কিন্তু আমার অন্তত বিদেশের কোথাও হঠাৎ খুব ফাঁকা কোনও জায়গায় পৌঁছলেই কীরকম যেন ভয় হয়েছে৷ তা ছাড়া, আমি ভাবলুম এ জায়গাটা ঘুরে দেখতে আমার অন্তত তিন-চার ঘণ্টা সময় লাগবে, ততক্ষণ আমাকে নিয়ে একা একা ঘোরাবার পর, গাইড যদি শেষে অসম্ভব বেশি টাকা চায়, অন্য দিক দিয়ে মোটরেও এখানে আসার রাস্তা আছে৷ ভেবেছিলাম, আরও অনেক ট্যুরিস্ট নিশ্চিত আসবে৷ সকলে একসঙ্গে দেখব৷ আজ শুধু আমিই একমাত্র দর্শক৷ আমাকে ঘুরিয়ে দেখাবার দরকারই বা কী, ওই তো ওই জোয়ান লোকটা যদি শাবলের এক ঘা আমার মাথায় মারে, তাহলেই আমার শেষ৷ তারপর গাইড ও সহিস দুজনে মিলে আমার পকেটের সব কিছু ভাগাভাগি করে নিয়ে, ওই শাবল দিয়েই বালির যে-কোনো জায়গায় গর্ত খুঁড়ে আমাকে যদি কবর দেয়, তাহলে ভূ-ভারতে কারুর জানার উপায় নেই৷ কিংবা যে-কোনো একটা পিরামিডের ভেতরেও আমার মৃতদেহটা দুমড়ে-কুঁকড়ে রেখে দিতে পারে৷ হয়তো কুড়ি কী পঞ্চাশ বছর বাদে কেউ আমার দেহটা আবিষ্কার করে ভাববে, আর একটা পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো মমি! আমাকে নিয়ে আবার নতুন করে গবেষণা শুরু হবে৷
এই কথাটা ভাবামাত্র আমি হেসে ফেললুম৷ এখন মুখটা হাসি হাসি রাখা দরকার৷ ওদের কাছে আমার ভয় পাওয়া মুখ মোটেই দেখানো চলবে না৷ গাইডের তখনও নামাজ পড়া শেষ হয়নি৷ শাবলের ফলাটা কী চকচকে! এশিয়া মাইনর সম্পর্কে একটা ভ্রমণ কাহিনিতে পড়েছিলুম, এক জোড়া জুতো পাবার লোভেও কুর্দরা মানুষ খুন করে৷ আমার তো জুতো, জামা-কাপড়, রোদ-চশমা, ফ্লাস্ক, পকেটে বেশ কিছু ইজিপশিয়ান পাউন্ডও রয়েছে৷ ওসব কথা মন থেকে তাড়িয়ে আমি নাচের ভঙ্গিতে পা দোলাতে দোলাতে দুঃসাহসী যুবার মতন শিস দিয়ে ইংরাজি গানের সুর ভাঁজতে লাগলুম৷ আমার চেনাশোনা কেউ সেই সময় আমায় দেখলেই বুঝতে পারত, আসলে তখন আমি ভয়ে আধমরা হয়ে গেছি৷ ভাগ্যিস কেউ দেখেনি৷ বাচ্চা ছেলেটা আমার শিস শুনে খল খল করে হেসে উঠল৷ তাকে দেখে হঠাৎ আমার মাথায় বুদ্ধি এল৷ এ বাচ্চা ছেলেটাই আমায় বাঁচাতে পারে৷ আমি ওকে দেখিয়ে সহিসকে বললুম, ‘লাভলি চাইল্ড৷ ভেরি সুইট লুকিং৷’
সহিস একগাল হেসে বলল, ‘ইয়েস, হিজ নেম বাকু৷’
আমি সোল্লাসে বললুম, ‘বাকু? হোয়াট এ সুইট নেম৷’
নীচু হয়ে ছেলেটাকে আমি কোলে তুলে নিলুম৷ ওর চুলে হাত বুলিয়ে নাচাতে নাচাতে বললুম, ‘বাকু৷ ডার্লিং, উম উম৷ কী সুন্দর ছেলেটা, কাঁদিস না বাবা, আল্লার দোহাই এখন কাঁদিস না, বাঃ বাঃ প্রিটি চাইল্ড, আই লাভ ইউ৷’
ছেলেটা কাঁদল না, মজা পাচ্ছিল বেশ, আমি ওকে নিয়ে খেলা করতে লাগলুম, সুড়সুড়ি দিয়ে হাসালুম, এমনকি ওর ধুলোমাখা গালে ফটাফট করে কয়েকটা চুমুও খেলাম৷ আমার একমাত্র আশা, ছেলেটাকে আদর করছি দেখে ওর বাবা যদি খুশি হয়, যদি আমার মাথায় শাবল না মারে! খুনিরও তো পিতৃস্নেহ থাকে! নামাজ পড়া শেষ করে গাইড আমার দিকে হাসিমুখে তাকিয়েছিল৷ তারপর কুঁড়েঘরের মধ্যে ঢুকে একটা লণ্ঠন নিয়ে বেরিয়ে এল৷ শাবলটা এক হাতে তুলে নিয়ে বলল, ‘কাম স্যার৷ পিরামিড ইনসাইড অর আউটসাইড?’
মাথার ওপর গনগনে ইজিপশিয়ান সূর্য, বালিতে চোখ-ধাঁধানো আলো, লোকটির হাতে লণ্ঠন৷ তখন আমার একমাত্র ইচ্ছে বেঁচে ফিরে আসা৷ কোনোরকমে পালানো৷ পিরামিডের ভেতরটা কীরকম জানি না, যদি সেখানটাই খুনের প্রশস্ত স্থান হয়? একবার ইচ্ছে হল, ভেতরে ঢুকব না বলি৷ কিন্তু তাহলে সহিসটা অবাক হয়ে যাবে৷ বুঝবে, ভয় পেয়েছি৷ সুতরাং বেপরোয়াভাবে বললুম, ‘ইনসাইড অর আউটসাইড?’
শুনেছিলাম, মিশরের প্রাচীন লিপি হিয়েরোগ্লিফিক্সে নাকি কোনো স্বরবর্ণ নেই৷ তেমনই লক্ষ করলাম, মিশরি লোকদের ইংরেজিতে প্রায় কোনো ক্রিয়াপদ নেই৷ এক ওই ‘কাম’ ছাড়া৷ শুকনো মুখে, প্রাণ হাতে করে তার সঙ্গে চললুম৷ সহিস ওখানে অপেক্ষা করতে লাগল৷ স্টেপ পিরামিডের ভেতরে ঢোকা যাবে না৷ ওটা এত প্রাচীন যে, ঢোকা নিরাপদ নয়৷ একটা ছোটো নতুন পিরামিড, এই হাজার তিনেক বছর বয়েস, সেটার মধ্যে ঢুকতে বলল গাইড৷ ভেবেছিলাম, পিরামিডের গায়েই কোনো দরজা থাকবে৷ সেখানে টুপ করে ঢুকে এক পলক দেখেই বেরিয়ে আসব৷ কিন্তু পিরামিডটা থেকে বেশ কিছুটা দূরে, প্রায় পঞ্চাশ ফুট, থেমে গিয়ে গাইড বলল, ‘হিয়ার৷ কেয়ারফুল৷ হ্যান্ডস লাইক দিস৷ ওয়াল৷ কেয়ারফুল!’
একটা গর্ত মাটির নীচে সুড়ঙ্গের দিকে নেমে গেছে৷ অন্ধকার এবং ঢালু৷ মাথা নীচু করে দু-হাতে দু-পাশের দেয়ালে ভর দিয়ে পা টিপে টিপে নামতে হবে, হাত একটু আলগা হলেই গড়িয়ে নীচে পড়ে যাবার সম্ভাবনা৷ প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছে না এলেই ভালো হত৷ সামনে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেই শাবল হাতে গাইড৷ জানি না, নীচে নেমে আমার ভাগ্যে কী আছে!
নীচে নেমে দেখলুম, মাটির ওপরে যে বিশাল ত্রিভুজ, সেটা পিরামিডের অকিঞ্চিৎকর অংশ৷ নিছক মাথার টুপিও বলা যায়৷ পিরামিডের আসল অংশ মাটির নীচে৷ সেখানে নানান ছোটো ছোটো ঘর, ঘরের দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা অসংখ্য ছবি৷ সেই সব ছবিতে অনেক গল্প আর পড়ে আছে কারুকার্য করা কিছু শূন্য কফিন৷ ভেতরে সব মমি পাচার হয়ে গেছে৷ একসময় এই সব পিরামিডের অন্দর ভরা ছিল খাঁটি সোনার আসবাব ও মূর্তিতে৷ তার অনেক চুরি হয়ে গেছে৷ কিছু দেখেছি কায়রো মিউজিয়ামে৷ আর একটা পাশের কবরেরও ভেতরে নেমেছিলাম৷ সেখানে নামার পথ একটা সোজাসুজি গভীর কুয়োর মধ্যে দিয়ে৷ আগে সেই কুয়োতে পাথরের সিঁড়ি ছিল, এখন মিশর সরকার লোহার ঘোরানো সিঁড়ি বসিয়েছে৷ সেই সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে মনে হয়, যেন অনন্তকাল ধরে নামছি তো নামছিই৷ নিজের হাত দেখা যায় না, এমন অন্ধকার৷ একটু বাদেই মাথা ঘুরে যায়৷
সেই গাইডটির মতন সরল ও নিষ্পাপ মানুষ আমি জগৎসংসারে খুবই কম দেখেছি৷ আমি ভয় পাচ্ছিলুম, সে হয়তো আমাকে খুন করবে৷ বস্তুত, অত বড়ো বিশাল চেহারায় সে একটা নেহাত শিশু৷ অন্য যে-কোনো জায়গায় গাইডরা খুনি না হোক রক্তশোষক৷ টাকা নিয়ে এমন ঝুলোঝুলি করে! এই গাইডটি নিতান্তই লাজুক৷ টাকাকড়ির কথা মুখ ফুটে বলতেই চায় না৷ তার ধারণা, কত দূর দূর দেশ থেকে লোকেরা এই যে সব পাথরের স্তূপ দেখতে আসে, এতে যে তাদের অত কষ্ট হয়, সব যেন তারই লজ্জা৷ ঘোরানো সিঁড়ির কবরখানায় নামার পর আমার মাথা ঝিমঝিম করছিল৷ আমি অবসন্নভাবে সেই অন্ধকার ভূগর্ভে এসে পড়েছিলাম৷ ভেবেছিলাম, অতগুলো সিঁড়ি বেয়ে আর আমার দ্বারা ওপরে ওঠা সম্ভব হবে না৷ সে তখন তার বিশাল কাঁধ আমার হাতের তলায় দিয়ে একপ্রকার বহন করেই সেই কয়েকশো সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে এল৷ তারপর আমাকে ওর কুঁড়ের কাছে নিয়ে গিয়ে নিজের হাতে লেবু-চা তৈরি করে খাওয়াল৷ জীবনে সেই একবারই চা-কে মনে হয়েছিল মৃত-সঞ্জীবনী৷
সরকারি বাঁধা রেট অনুযায়ী ওর ন্যায্য প্রাপ্য অর্থ মিটিয়ে দেবার পর, আমি ওকে চায়ের দাম দিতে চাইলুম৷ ও লজ্জিত নারীর মতন হাত নেড়ে বলতে লাগল, কিছুতেই চায়ের দাম নেবে না৷ লোকটি দরিদ্র, তা ছাড়া সেই মরুভূমির মাঝখানে চায়ের যথেষ্ট দাম৷ সুতরাং আমি ওকে দাম দেবার জন্য জোরাজুরি করতে লাগলুম৷ ও তখন ছাপানো চায়ের প্যাকেটটা আমার চোখের সামনে তুলে ধরে বলল, ‘সি, টি ফ্রম ইন্ডিয়া৷ ইউ মানি? নো নো নো…’
—