পাণ্ডু

বিচিত্রবীর্যের দ্বিতীয় পুত্র। বিচিত্রবীর্যের মৃত্যুর পর তাঁর মা সত্যবতীর অনুরোধে ব্যাসদেব (সত্যবতীর কুমারী জীবনের পুত্র) বিচিত্রবীর্যের স্ত্রী অম্বালিকার সঙ্গে মিলিত হলে পাণ্ডুর জন্ম হয়। মিলনকালে ব্যাসদেবকে দর্শন করে অম্বালিকা ভয়ে পাণ্ডুবর্ণা হয়ে যান বলে পুত্রও পাণ্ড বর্ণের হন এবং পরে সেই পুত্র পাণ্ডু নামে পরিচিত হন। বিচিত্রবীর্যের প্রথম পুত্র, ধৃতরাষ্ট্র (ইনিও ব্যাসদেবের পুত্র – অম্বিকার গর্ভে জন্মান) জন্মান্ধ হওয়ায়, পাণ্ডু হস্তিনপুরের সিংহাসনে বসেন। পাণ্ডু কুন্তিভোজের পালিতা কন্যা কুন্তি ও মদ্ররাজের কন্যা মাদ্রীকে বিবাহ করেন। একবার মৃগয়াতে গিয়ে পাণ্ডু মৈথুনরত মৃগকে শরাঘাত করায় মৃত্যুমুখী মৃগ (আসলে মৃগরূপধারি কিন্দম-নামা মুনি) পাণ্ডুকে অভিশাপ দেয় যে, মৈথুনে লিপ্ত হলেই পাণ্ডুর মৃত্যু হবে। এই অভিশাপের ফলে পুত্র-হীন পাণ্ডু কুন্তিকে ক্ষেত্রজ পুত্র ধারণের জন্য অনুরোধ করতে লাগলেন। ছোটবেলায় দুর্বাসা মুনি কুন্তিকে বর দিয়েছিলেন যে, যে-কোনও দেবতাকে আহবান করে তিনি তাঁর সন্তান ধারণ করতে পারবেন। কুন্তি পাণ্ডুর ইচ্ছায় ধর্ম, পবন ও ইন্দ্রকে আহবান করে যথাক্রমে যুধিষ্ঠির, ভীম ও অর্জুনকে জন্ম দিলেন। পাণ্ডুর ইচ্ছায় তিনি সপত্নী মাদ্রীকে শিখিয়ে দিলেন কি করে দেবতাকে আহবান করতে হয়। মাদ্রী অশ্বিনীকুমার-দ্বয়কে আহবান করে নকুল ও সহদেবকে জন্ম দিলেন। এর কিছুদিন বাদে কামার্ত হয়ে অভিশাপ উপেক্ষা করে মাদ্রীর সঙ্গে মিলনকালে পাণ্ডুর মৃত্যু হয়।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *