পরিশিষ্ট ৩ : হিব্রু পঠন
আদি পবিত্র ভূমি কানানের একমাত্র যে ভাষাটি বর্তমানে ব্যবহৃত হয়, তা হলো হিব্রু ভাষা। বাকি ভাষাগুলো এখন মৃত; হিব্রুও মৃত ছিল, কিন্তু তা পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে চেষ্টা করে। ইহুদীরা একে ডাকে ‘লাশন হা-কোদেশ’ বলে, যার অর্থ ‘পবিত্র ভাষা’। ২০০ থেকে ৪০০ সালের মাঝে কোনো এক সময় হিব্রু বলা বন্ধ হয়ে যায়। তবে কাব্য আর বিভিন্ন লেখনির মাধ্যমে ভাষাটি বেঁচে থাকে। বর্তমানে ইসরাইলের রাষ্ট্র ভাষা ‘আধুনিক হিব্রু”, এবং সেমেটিক ধর্মের প্রাচীন নামগুলো সবচেয়ে কাছাকাছি উচ্চারণে পড়ার জন্য হিব্রু পঠন জেনে নেয়াটা উপকারী। একারণেই আমি চেষ্টা করে পড়াটা শিখে নিই, এ বই লিখতে গিয়ে অনেক নামই হিব্রুতে পড়তে হয়েছে যেটা হিব্রু পড়তে জানা না থাকলে সম্ভব হতো না। আগ্রহী পাঠকদের সাথে তাই শেয়ার করতে চাই হিব্রু উচ্চারণে নামগুলো কীভাবে পড়া যায় সেটা।
বলা বাহুল্য আজকের হিব্রু লিপি আর প্রাচীন হিব্রু লিপির মাঝে দৃশ্যমান পার্থক্য রয়েছে, আগের লিপিকে বলা হয় প্রাচীন হিব্রু বা প্যালিও হিব্রু, ঐ হিব্রুতেই তাওরাত ও অন্যান্য কিতাব লিখিত হতো।
বর্তমান হিব্রু নতুনদের জন্য সহজ করে লেখা হয়। ঠিক যেমন অনারবদের জন্য পরবর্তীতে আরবিতে জের জবর পেশ ইত্যাদি যোগ করা হয়েছিল, অথচ দেড় হাজার বছর আগের আরবিতে আপনি নুক্তা ও হরকত খুঁজে পাবেন না। আরবিতে যেখানে ২৯টি বর্ণ, সেখানে হিব্রুতে ২২টি অক্ষর, কিন্তু হিব্রুতে স্বরবর্ণ বেশি, তাই বিভিন্নভাবে নানা শব্দ উচ্চারণ করা যায়, যা আরবিতে সম্ভব হয় না–যেমন ‘এ’ ধ্বনি। আরবিতে এক অক্ষরের সাথে আরেক অক্ষর যোগ করে কার্সিভ লেখা যায়, কিন্তু হিব্রুতে সেটি সম্ভব নয়, আলাদা আলাদা লিখতে হয়। তবে দুটো ভাষাই সেমেটিক অর্থাৎ শাম দেশীয়, তাই তাদের উচ্চারিত শব্দ ও অর্থগুলোর ব্যাপক মিল রয়েছে। আরবির মতো হিব্রুও ডান থেকে বামে লেখা হয়, এবং আরবি জানা থাকলে হিব্রু অক্ষর শেখা সাপেক্ষে সহজেই হিব্রু শব্দ বা বাক্য পাঠ করা যায়। আরবিতে একে ইব্রানি ভাষা ডাকা হতো।
(অসম্পূর্ণ)