গাঁয়ের পথে চলেছিলেম অকারণে , বাতাস বহে বিকালবেলা বেণুবনে । ছায়া তখন আলোর ফাঁকে লতার মতন জড়িয়ে থাকে , একা একা কোকিল ডাকে নিজমনে । আমি কোথায় চলেছিলেম অকারণে । জলের ধারে কুটিরখানি পাতা - ঢাকা , দ্বারের ‘পরে নুয়ে পড়ে নিম্বশাখা । ওই যে শুনি মাঝে মাঝে না জানি কোন্ নিত্যকাজে কোথায় দুটি কাঁকন বাজে গৃহকোণে । যেতে যেতে এলেম হেথা অকারণে । দিঘির জলে ঝলক ঝলে মানিক হীরা , সর্ষেখেতে উঠছে মেতে মৌমাছিরা । এ পথ গেছে কত গাঁয়ে কত গাছের ছায়ে ছায়ে কত মাঠের গায়ে গায়ে কত বনে । আমি শুধু হেথায় এলেম অকারণে । আরেক দিন সে ফাগুন মাসে বহু আগে চলেছিলেম এই পথে সেই মনে জাগে । আমের বোলের গন্ধে অবশ বাতাস ছিল উদাস অলস , ঘাটের শানে বাজছে কলস ক্ষণে ক্ষণে । সে - সব কথা ভাবছি বসে অকারণে । দীর্ঘ হয়ে পড়ছে পথে বাঁকা ছায়া , গোষ্ঠঘরে ফিরছে ধেনু শ্রান্তকায়া । গোধূলিতে খেতের ‘পরে ধূসর আলো ধূ ধূ করে , বসে আছে খেয়ার তরে পান্থজনে । আবার ধীরে চলছি ফিরে অকারণে ।