পত্র-১৬
কুহু কানন/দোতলা-বাঁপাশ
৫৮/এফ পশ্চিম রাজাবাজার
ঢাকা-১২১৫
শিমুল(১৮)
ঘুম আসছে না। খানিকখন চেষ্টা কোরে উঠে পড়লাম। আলো জ্বেলে বোসেছি খাবার টেবিলে। বিছানায় ইসহাক ঘুমুচ্ছে।
অসুস্থ হয়ে তোমার খবর পেলাম অসীম দা-র(১৯) কাছে, শৈবাল গিয়েছিলো। সেই দুপুর থেকে আমার অসুস্থতা। আগের দিন রাত থেকে আমি সম্পূর্ণ একা।
পেটের ব্যথায় মাঝে মধ্যে বিছানায় গড়িয়ে পড়ছি। রান্না করছি, খাচ্ছি। সাকুরায় গিয়ে একটা সুপ, একটা বিয়ার— কিন্তু ব্যথা কমছে না পুরোপুরি। আজ থেকে ওষুদ খাওয়া শুরু করেছি। চমৎকার আছি। যদি শুধু তুমি থাকতে, একেবারে ষোলো আনা। কি চমৎকার এখন শহরটা।
এতো কষ্ট পাচ্ছি এ কদিন। তুমি নেই, তোমার স্পর্শ নেই। তোমার সৌরভ নেই। শুশ্রূষার কেউ নেই বোলেই কি শরীর এতোটা কষ্ট দিচ্ছে!
রান্না ঘর গুছিয়ে ফেলেছি— একেবারে অসাধ্য সাধন। পুরো বাসা এখন আমার নান্দনিক নিয়ন্ত্রনে। শুধু কিছু জিনিশের জাগা পাল্টাতে হবে। সবাই আসুক।
ব্যাপারটা শেষ মুহূর্তে গুলিয়ে গেল নাকি। তুমি তো মোংলার ঠিকানা জানো না, আর আমিও আজ মোংলা যাইনি। শরীর একটু ভালো না-লাগলে যাবো না। কেমন, এলোমেলো হয়ে গেল না!
কতো হাজার বছর পরে ফিরবে কে জানে!
হয়তোবা পারমানবিক ধংশের পর। যখন পৃথিবীতে আর কোনো মানুষই বেঁচে নেই— যে মানুষের যাবতীয় কর্মকান্ড দেখে ঘৃনায় থুতু দেবে।
সেই ততোদিন পরে? কবে? কবে?? কবে???
আমি ভালো নেই।
রুদ্র
১৭.০৪.৯১
—
১৮. শিমুল— শেষজীবনে যাঁকে নিয়ে রুদ্র ঘর বাঁধতে চেয়েছিলেন। শিমুলকে লেখা চিঠি দুটো রুদ্রের ফাইলে পাওয়া গেছে। সম্ভবত, ঠিকানা না-থাকার কারণে চিঠিগুলো তিনি পাঠাতে পারেন নি।
১৯. অসীম দা— কবি অসীম সাহা।