পটলা সমগ্র ১
পটলা সমগ্র ২

পটলার বৃক্ষরোপণ উৎসব

পটলার বৃক্ষরোপণ উৎসব

সেদিন পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের বার্ষিক সভায় পটলা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাটা নানা বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে জোর গলায় পেশ করে।

পঞ্চপাণ্ডব নামটা যেমন জবরদস্ত শোনায়, আমাদের ক্লাবকেও তেমন জবরদস্তই বলা যেতে পারে। আকারে খুব বড় না হলেও প্রকারে বড়সড়ই। নিজেদের খেলার মাঠ আছে, সেটা ওই পটলার দৌলতেই। কারণ ওর পূর্বপুরুষরা এখানে এসে যখন কাঠগোলা, করাতকল, ধান-চাল-পাটের আড়ত খোলেন তখন বেলেঘাটার কুলেপাড়া, খালধারে মানুষজনের বসতি তো দূরের কথা, ভয়ে মানুষজন এমুখো হত না। চারদিকে জলা, হোগলাবন, বাঁশ-ঘেঁটুগাছের জঙ্গল। এলাকাটা ছিল কলকাতার পূর্ব সীমান্ত, তার পরেই বাদাবন, ভেড়ি।

সেই আমলে পটলার পিতামহরা জলের দরে বিঘের পর বিঘ্নে ওই জলা কিনেছিলেন। তারপর তাঁদেরও রমরমা শুরু হয়। এখন ওসব ব্যবসা ছাড়াও পটলাদের কাকা-বাবার কারখানা, অফিস, বিল্ডিং ব্যবসা। নানা কিছুতে মা লক্ষ্মীকে তাঁরা বেঁধেছেন নিজের ঘরে।

তাঁদের একমাত্র কুলপ্রদীপ ওই পটল—অবশ্য ভালো নাম একটা আছে, সেটা থাকে স্কুলের খাতায়। দিনান্তে রোলকল করার সময় শুনি সুবুদ্ধি নারায়ণ রায়-এর নাম। সেটা ঢাকা পড়ে গেছে মেঘে ঢাকা তারার মতই, জেগে উঠেছে ওই পটলাই। তবে সুবুদ্ধি নামটা থাকার জন্য তার মাথায় মাঝে মাঝে নানারকম বুদ্ধি গজিয়ে ওঠে। আর তার নানারকম বুদ্ধির প্রকাশ নিয়েই যত সমস্যা! সে সবের হ্যাপা সামলাতে হয় আমাদেরই—অর্থাৎ পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের বাকি চারজন সদস্যকে। কারণ পটলাই আমাদের কামধেনু।

পুরাকালে মুনি-ঋষিদের আশ্রমে এরকম রেডিমেড কামধেনু থাকত। বশিষ্ঠ মুনির আশ্রমেও ছিল। তার কাছে যা চাইতেন ঋষিরা, তাই পেতেন। স্বর্ণ, ঐশ্বর্য, আহার্য এসব তো ইচ্ছানুসারেই মিলত। তাই দিয়ে তাঁরা বহু মুনিদের ভোজন করাতেন, দানধ্যান করতেন। আর দুধ? সে যখনই দুইবেন, পাবেন। পটলাও আমাদের কাছে সেইরকম কামধেনুই।

ওদিকে কুলেপাড়ার পাশেই সেভেন বুলেটস্ ক্লাবের নিজেদের খেলার মাঠ আছে। আমাদেরও মাঠ চাই, না হলে পাড়ার কচিকাঁচাদের ভবিষ্যৎ জাতি গঠনের কাজে বাধা আসছে। পটলার ঠামারও অঢেল সম্পত্তি, বহু জমি-জায়গা একমাত্র নাতির ক্লাবের জন্য খেলার মাঠ হবে না? ঠাকুমা আমাদেরও খুবই স্নেহ করেন।

আমরা গেছি তাঁর কাছে। ঠাকুমাই তাঁর জমি থেকে একটা বিঘে চারেকের প্লটে খেলার মাঠ করার অনুমতি দেন। ক্লাবঘরও তৈরি হল— দরমার ঘর, উপরে টিন। রং-চং করে মহাসমারোহে তার উদ্বোধনও করা হল। কোন মন্ত্রীকে যেন ঠাক্‌মা প্রধান অতিথি করে ফিতে কাটালেন।

পটলার দৌলতে ক্লাবও রমরমিয়ে চলছে। এ হেন পটলার ওই জ্ঞানগর্ভ সিদ্ধান্ত আমাদের মানা ছাড়া পথ নেই ।

পটলা বলে, বি-বি-বৃক্ষ রোও—। পটলার একটা স্বাভাবিক বাধা আছে, মানে উত্তেজনার সময়ই তার জিবটা ‘বিট্রে’ করে। তখনই কেমন জিবটা আলটাকরায় ‘সেট’ হয়ে যায়। কোনোরকমে ‘ফ্রি’ করে নিয়ে বাক্যটা শেষ করে, ‘রোপণ উৎসব’।

আমিই ব্যাখ্যা করে দিই, বৃক্ষরোপণ উৎসব?

পটলা ঘাড় নাড়ে। ফটিক সঙ্গীতচর্চা করে-টরে। প্রায় শুনি এককলি গানই মাস ছয়েক ধরে ওই দরমার ক্লাবঘরে সাধছে। পাড়ার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও করে। ফটিক বলে, দারুণ হবে। একেবারে নিউ আইডিয়া। বুঝলি আমার পিসেমশাইয়ের ভাইয়ের শালা শান্তিনিকেতনে থাকেন, দারুণ গান। ওখানে দেখেছি বৃক্ষরোপণ উৎসব হয়। ছেলে-মেয়েরা সেজেগুজে গান গাইতে গাইতে যায়—পিছনে চতুর্দোলায় সাজানো চারাগাছ।

ফটিক চোখ বুজে সেই দৃশ্যের কল্পনা করে গেয়ে ওঠে—মরু বিজয়ের কেতন উড়াও– হোঁৎকা এতক্ষণ চুপচাপ ছিল। সে আমাদের সেক্রেটারি কাম ট্রেজারার। আর পটলাই ভাইস প্রেসিডেন্ট। হোঁৎকা তার দেশজ ভাষায় বলে, চুপ মাইরা যা ফটকা ।

ফটিক পটলার সমর্থক। সে বলে, কেন? চুপ করব কেন? পটলা কি খারাপ প্রস্তাব দিয়েছে? একটি গাছ একটি প্রাণ—গাছই মানুষের বন্ধু। পিওর অক্সিজেন দেয় ৷

হোঁৎকা বলে, অক্সিজেন কখন দিতি হয় র‍্যা? এক্কেরে যহন মানষের দম শ্যাষ হই আসে তহন? হাসপাতালে দ্যাখসনি মুখে ঠুঙ্গি দেই –

আমি বলি, সে অক্সিজেন নয়, বাতাসকে শুদ্ধ করে গাছ। বৃষ্টি আনে, ভূমিক্ষয় রোধ করে। গাছ না থাকলে প্রাণীজগৎ বাঁচত না ।

হোঁৎকা বলে, বিপিনস্যারের ক্লাস মনে লয়? খুইব তো জ্ঞান দিছস! বোঝলাম বৃক্ষরোপণ মহৎ কাজ।

পটলা এবার সমর্থন পেয়ে বলে, ত-তবে? সেই উৎসবই করব।

হোঁৎকার পকেটে সব সময়ে একটা পদত্যাগপত্র থাকে। মাঝে মাঝেই ক্যাশের স্বাস্থ্য খারাপ দেখলে সে হুমকি দেয়, রেজিকনেশন দিমু। ই ক্লাবে আর থাকুম না। সেভেন বুলেটস্ পায়ে ত্যাল দিতাছে। ওহানেই যামু। আজও সে বলে, ক্যাশ কড়ি ফিনিশ। ওই তগোর উৎসব, নাচ-গান কইরা বৃক্ষরোপণ করনের পয়সা নাই, সাধ যায় বোষ্টম হতি, কপাল ফাটে মচ্ছব দিতি! তাই কই বৃক্ষরোপণ করতি চাস তো একখান চারা আইনা পুঁইতা দে। তা নয়, নেত্য-টেত্য-ক্যাটাভারাস।

হোঁৎকা ইদানীং ওই কথাটা কোথায় শুনেছে কে জানে, প্রায়ই প্রয়োগ করে।

ফটিকের কত স্বপ্ন। কুলেপাড়ার মাঠে একেবারে শান্তিনিকেতনের স্টাইলে বৃক্ষরোপণ উৎসব করবে, পাড়ার ছেলে-মেয়েদের নাচ-গানে তালিম দেবে। দরকার হয় শান্তিনিকেতন থেকে সেই পিসেমশাইয়ের ভাইয়ের শ্যালককেই আনাবে। গান-নাচ, স্তোত্র পাঠ, বৃক্ষবন্দনা—এসব করে তামাম কুলেপাড়াকে তাক লাগিয়ে দেবে পঞ্চপাণ্ডব ক্লাব। ধন্য ধন্য রব উঠবে। সেভেন বুলেটস্ এসব কল্পনাও করতে পারে না। এমন একটা পরিকল্পনায় একেবারে জল ঢেলে দিল ওই হোঁৎকা।

গোবর্ধন বলে, হোঁৎকা, বৃক্ষরোপণ যদি করবি, চালকুমড়ো, না হয় তারকেশ্বরের আর্লি মিষ্টি কুমড়োর চারাই লাগা। তিন মাসে ইয়া মৃদঙ্গের সাইজের কুমড়ো হবে। এখন পাইকেরি আট টাকা কেজি, সাড়ে সাতশো টাকা কুইন্টাল, পড়তে পারে না। চালকুমড়ো তো লাগালেই হবে—অঢেল।

গোবর্ধনের মামার কুমড়ো, চালকুমড়োর হোলসেল বিজনেস। ট্রাকে করে নানা সাইজের কুমড়ো, চালকুমড়ো আসে তারকেশ্বর, নালিকুল, দশঘরার ওদিক থেকে।

হোঁৎকা গর্জে ওঠে, চুপ মাইরা থাক গোবরা! খেলার মাঠে কুমড়োর চাষ করুম? তার চে সরষের চাষই কর গিয়া। চক্ষে দিনরাত সরষের ফুলই দেখবি। তগোর ক্লাবে আর নাই, রেজিগনেশনই দিমু।

পকেট থেকে রেডিমেড রেজিকনেশন লেটারটা বের করতে গিয়ে দেখে দীর্ঘদিন ধরে সেটা পকেটে পড়ে থেকে ভাঁজে ভাঁজে ফর্দাফাই। হোঁৎকা তারই আধখানা বের করে বলে, আধখানা লেটার রাইখা দে, পুরাটা কালই দিমু।

আমিই ক্লাবের সংবিধান কিছু বুঝি। ওরাও তা মানে। তাই বলি, আধখানা রেজিকনেশন লেটার গ্রাহ্য হবে না। পুরোটা চাই।

হোঁৎকা বলে, তাই দিমু। কালই। তগোর সনে নো কানেকশন। হক্কলে তরা ওই ক্যাডাভারাস কাণ্ড করবি এদিকে ফান্ড নিল, বড় বড় ফর্দ দিয়া খালাস।

পটলা বলে, ফা-ফান্ডের জন্য নো ফিয়ার। আই শ্যাল ম্যানেজ।

পটলা গতজন্মে বোধহয় সাহেবই ছিল। ইংরেজিটা ওর জিবে আটকায় না। ব্রেক ফেলও করে না। গড়গড় করে বলে যায়। যত গোলমাল বাংলার বেলাতেই। বোধহয় ওর কাছে ওটা এখনও বিদেশি ভাষা। তাই জিবটা গড়বড় করে ওঠে তখন।

পটলা বলে, হাও মাচ? ক-কত টাকা চাই? সে—হাও মাচ মানি ?

পটলা যখন টাকার ভার নিজে নিয়েছে তখন আর ভাবনার কিছু নেই। হোঁৎকা জানে কলের জলের মতই মসৃণ গতিতে টাকা আসবে। তাই সে বলে, তয় রেজিকনেশন তুইলা নিতাছি। ফটিক-সমী তরা টাকার হিসাবটা কইরা দে। তয় টেন পার্সেন্ট বাড়তি কইরা ধরবি। আলুর দাম বারো টাকা, পিঁয়াজ কয় চল্লিশ, ত্যাল তো ধরাই যায় না—পিছলাই যায়। খাওনের ঘটা ধরতি হইব। সেইমত আমরাও পরিকল্পনা বাজেট এবার নিয়ে বসি।

মাঠে প্যান্ডেল হবে, স্টেজ, সামিয়ানা, চেয়ার, মাইক, লাইটও চাই। নৃত্যনাটিকা হবে শেষে। ওদিকে প্রধান অতিথি, সভাপতিও চাই।

ফটিক বলে, তারপর ধর নাচগানের রিহার্সালের খরচা। খাস শান্তিনিকেতন থেকে সেই নবুদাকেই আনব। সারা উৎসব সেইই পরিচালনা করবে। তার ট্রেন ভাড়া, অন্য খরচা, ট্যাক্সি ভাড়া। প্রধান অতিথি, সভাপতিকেও ধুতি-চাদর দিতে হবে।

হোঁৎকা বলে ওঠে, আরে কস কি? ওই প্রধান অতিথি-ফতিথিদের দিতে লাগবো ক্যান ফটিক বলে, গাইয়ে-বাজিয়েরা টাকা ছাড়া এক পাও নড়ে না। আগাম টাকা বাড়িতে রেখে তবে ফাংশনে আসে। অথচ এই প্রধান অতিথি মস্ত বড় সাহিত্যিক। এঁর কি কোনো সম্মান দক্ষিণাও থাকবে না? এঁরা কি এতই মূল্যহীন লোক? বল ?

পটলা ব্যাপারটা বুঝে বলে, না, ঠিক বলেছিস, গরদের ধুতি, চ-চাদর দিয়ে প্র-প্রণাম করতে হবে।

সব পরিকল্পনাই হয়ে যায়। হোঁৎকা বলে, এসব কথা, ওই উৎসবের কথা যেন কাকপক্ষীরেও কেউ কইবি না। ওই সেভেন বুলেটস্ ক্লাব তো কান খাড়াইয়া আছে আমাগোর টেক্কা দিবার জন্য, খবরটা পাইলেই ওরা কিছু কইরা বসবো।

গোবর্ধন বলে, হ্যাঁ। একদম যেন ‘লিক্‌’ না হয়। সেই কারণেই বলে—ওইসব নাচগানের রিহার্সেলও গোপনে করতে হবে পটলাদের বাড়ির কোনও ঘরে।

সকলেই মতটা সমর্থন করে। আর পটলাদের বাড়িও বিশাল। কয়েক বিঘের উপর। উঁচু প্রাচীর ঘেরা, গেটে দারোয়ানও মজুত থাকে। ওদিকে বাগান মন্দির, কয়েকটা ঘরও আছে, মালপত্র থাকে। ফাঁকাও আছে দু’একটা ঘর। ওখানেই রিহার্সেল হবে। বাইরের কেউ টেরই পাবে না ।

পটলা বলে, ঠি-ঠিক বলেছিস। একেবারে সিক্রেট থাকবে ব্যাপারটা।

ফটিক বলে, তাই থাকবে। সব রেডি করে তিনদিনের মাথায় এমন পাবলিসিটি মারব, পোস্টার-ব্যানার ছড়াব যে সারা এলাকার মানুষ এসে পড়বে। এক্কেবারে নতুনত্ব হবে। পটলার মাথাটা কিন্তু দারুণ রে।

পটলা এখন থেকেই দিলদরিয়া। বলে, সবকিছু ফাইনাল ক-করে ফ্যাল। গো-গোবরা, নবুর দোকানে চা-টোস্ট বলে দে।

হোঁৎকা গম্ভীরভাবে জোগান দেয় পাঁচ-ছয়খান ওমলেটও দিতে কইয়া দে। প্রোটিন না হইলি ব্রেন খুলব না ঠিক মত ।

তার পরদিন থেকেই পটলাদের দুর্গের মত বাড়ির বাগানের দিকে একটা ঘরে ফটিক পাড়ার মলি, ডলি, কলি, পুটু, ভোট্‌কা, পট্‌কা, মোনাদের নিয়ে নাচ-গানের তালিম শুরু করেছে।

ওদের জন্য চাই লালপাড় শাড়ি। ছেলেদের জন্য বাসন্তী রংয়ের ধুতি-পাঞ্জাবির অর্ডার চলে গেছে গোপনে পাড়ার বাইরের কোনও দোকানে। প্যান্ডেলের কারুকার্যের ব্যাপারে মেদিনীপুরের কাঁথি অঞ্চলের দু’জন কারিগর বাড়িতেই শোলা, পাটকাঠি আইসক্রিমের চামচে, বাবুই পাখির বাসা, তালপাতা, নানা কিছু বৃক্ষজাতীয় দ্রব্যাদি দিয়ে অলংকরণের কাজ শুরু করেছে। পটলার ঠাকুমাও সব শুনে বলেন, বৃক্ষ দেবতা রে! আগের দিনে বড়লোকেরা অশ্বত্থ, বট এসব গাছ প্রতিষ্ঠা করত। রোজ জল দিয়ে প্রণাম করত। বৃক্ষপূজা ভালো কাজ

হোঁৎকা এই মৌকায় বলে, কিন্তু ক্যাশকড়ি তো ত্যামন নাই। পূজা-টুজা করুম ক্যামনে, কন ঠাকুমা? লোকে আধুনিক লারে-লাপ্পা গানে মোটা টাকা চাঁদা দেয়, কিন্তু শুভকাজে কেউ দিতিই চায় না। পটলা কইল—নামছি, এহন বৃক্ষ চাপাই না পড়ি।

ঠাকুমা বলেন, বালাই ষাট। শুভ কাজ করছিস দেবো হাজার পাঁচেক টাকা ।

ব্যস—আমরা পাঁচজনও খুশির চোটে ঠাকুমাকে ফটাফট পাঁচটা পেন্নামই ঠুকে দিই । আর ভাবনা নেই। প্যান্ডেল, অলংকরণ, ফাংশন, নাচগান সব জোর কদমে চলছে। হঠাৎ গোবরা সেদিন ওর কুমড়ো কোম্পানির ঢংঢংয়ে সাইকেলটা নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে হাজির। সাইকেল থেকে নেমে ছুটে এসে ভগ্নদূতের মত খবর দেয়, সব্বোনাশ হয়ে গ্যাছে। আমরা অবাক হই। পটলা টাকার হিসাব ফেলে শুধায়, হোয়াট?

গোবরা দম নিয়ে বলে, সেভেন বুলেটস্ স্পাই লাগিয়ে আমাদের সব খবর জেনে নিয়েছে। ওরা এই রবিবারই ওদের ক্লাবের মাঠে বৃক্ষরোপণ উৎসব করছে। অ্যাই দ্যাখ—

পকেট থেকে দলা পাকানো একটা লিফলেট বের করে দেখায়। পড়ে তো আমাদের চক্ষুস্থির।

ফটিক ওদিকে তখন গানের কোরাসের রিহার্সেল করছে। পটলা গর্জে ওঠে, স্টপ ফুলস্টপ। ওরাও থেমে যায়। তারপর খবরটা শুনে মুষড়ে পড়ে।

একেবারে স্যাবোটেজ। আমাদের আগে ওরাই বাজি মেরে দেবে? ততক্ষণে নন্টেও একটা পোস্টার নিয়ে আসে। বলে, সারা পাড়া, রেলবাজার, সিনেমা হলের সামনে পোস্টারে ছয়লাপ করেছে সেভেন বুলেটস্। ফেস্টুন যা টাঙিয়েছে একেবারে রাস্তার এদিক থেকে ওদিকে । ক্যালি আছে ওদের।

পটলার অবস্থা তখন চুপসানো বেলুনের মত নেতিয়ে পড়েছে। বলে, একেবারে ‘ডিফিট’ হয়ে গেলাম রে? সেভেন বুলটেস্ই জি-জিতে যাবে? পা-পাড়ায় মুখ আর রইল না। ক-ক্লাব তুলেই দে এবার।

হোঁৎকা এতক্ষণ গুম হয়ে কি ভাবছিল। নাচগান থেমে গেছে। ডেকরেটারের লোকেরা বলে, তাহলে কাজ হবে না বাবু? ওদিকে দর্জির লোকও ছেলে-মেয়েদের পোশাক এনেছে। সেও বলে, আমার যে ভরাডুবি হবে স্যার?

পটলা বলে, আমরাই ডু-ডুবে গেছি। নো ফাংশন। উঃ! কি স-সর্বনাশ না হয়ে গেল রে? আমরা জানি না কি করব। স্তব্ধতার মাঝে হোঁৎকা হঠাৎ ফুঁসে ওঠে, বৃক্ষরোপণ উৎসব, ফাংশন—সবকিছুই হইব ।

শোকাচ্ছন্ন পটলা বলে, ওরাই সব কিছু করে দেবে আগেই। তু-তুই তো ফ-ফেল। বলবে ওরা আমাদের নকল করেছে। ন-নতুনত্ব-

হোঁৎকা বলে, ওদের ব্যবস্থা যা করার কইরা দিমু। আমাগোর উৎসবই হইব ফার্স্ট। ফটিকও সাহস পায়, বলছিস?

গোবরা বলে, আমাদের উৎসব হবে ?

আলবৎ হইব। হোঁৎকা কইছে হইব—হইব। তরা যে যার কাজ কইরা যা, সব রেডি কইরা ফ্যাল। মায় প্যানডেল, ডেকরেশান। সমী, তুই প্রধান অতিথিরে কইয়া আয়। ফটিক— ফটিক বলে, আমার সব রেডি থাকবে।

হোঁৎকা বলে, ওসব যা করছিস কর। পটলা—তর বাজেটে ধর শ’পাঁচেক টাকা। অত নাও লাগতি পারে, শ’দুয়েতেই ম্যানেজ হইব, ওটা একস্ট্রা লাগবো ওগোর ব্যবস্থা করতি।

পটলা বলে, শ-শ পাঁচেক পুরোই নে, দ-দরকার হয় থাউজেন্ডই দেব। ও-ওদের ব্যবস্থা বেশ পা-পা-

আমিই পাদপূরণ করে দিই, পাকাপাকি করে দিতে হবে।

পটলা বলে, সিওর।

হোঁৎকা বলে, ওদের প্রোগ্রামের সব খবরই নিতে হইব। আর গোবরা, তুই কালই তোর কুমড়ো মামার যত সাপ্লায়ার আছে ওই নালিকুল, দশঘরা, আরামবাগ-ফাগের ওহানে, নিজে গিয়া যত পারিস বৃক্ষ লইয়া আইবি।

কি বৃক্ষ? আমাদের বৃক্ষরোপণ করা হবে বকুল, আমলকী, আকাশমণি। তবে আবার ও গাছ আনবে কেন?

হোঁৎকা বলে, গাছ ওই গোবরাকেই আনতি হইব, হেই গাছের নাম ওরেই কইমু, আর ওহানে বড়বাজারে কবিরাজী ওষুধ, গাছগাছড়া যারা বিক্রি করে তাগোর থনে—

কি ভেবে বলে—থাউক। ইটা আমি নিজে করুম। শ’পাঁচেক টাহাই দে পটলা। গোবরারেও আজই যাবার লাগবো, বৃক্ষ আনতি হইব।

পটলা টাকা দিতে হোঁৎকা বলে, চল গোবরা, তরে সব কইয়া দিই গিয়া। হ্যাঁ, একখান হাত করাত কিনতি হইব। সেরা ফরেনের মাল হইতে হইব। তরাও ওগোর প্রোগ্রামের খবর লইবি। আর কাম য্যানো সব রেডি থাকে, আমাগোর প্যানডেলও।

হুকুম দিয়ে চলে যায় হোঁৎকা। ফটিক আবার নতুন উদ্যমে নাচগান শুরু করে। ওদিকের কাজকর্মও শুরু হয়। দর্জির ড্রেসও নেওয়া হল। কাল থেকে ড্রেস রিহার্সালও শুরু হবে। তবু মনের মধ্যে একটা ভয় থেকেই যায়।

বাইরের রাস্তায় পটলাদের বাউন্ডারি ওয়ালে ওই পোস্টার যেন বেশি করে পড়েছে- সেভেন বুলেটরে পরিবেশ দূষণের বিপক্ষে বৃক্ষরোপণ উৎসব। আসুন—দেখুন—নয়ন সার্থক করুন। স্থান—সেভেন বুলেটস্ ময়দান। বিশাল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ।

লাল-নীল সবুজ রংয়ের পোস্টার, সবুজ কলাপাতার ধরনের ব্যানার। চারিদিকে যেন ওদের জয়ধ্বজা উড়ছে—এবার উঠবে ওদের জয়ধ্বনি।

আমাদের সেখানে যেন কোনও ঠাঁইই নেই ।

সেভেন বুলেটরে ভোঁদা, নুলো বলে, দেখলি তো যা কখনও এ পাড়ায় হয়নি তাই করছি।

আমরা মুখ বুজেই থাকি। করার কিছুই নেই। শুনি ওদের মুখেই প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন চাঁদুবাবু, চন্দ্রমোহন চন্দ্র। অর্থাৎ চন্দ্র স্কোয়ার। ওই নামেই পরিচিত। অঢেল টাকার মালিক । মাথায় চাঁদের আলো পেছলানো চকচকে টাক আর স্কোয়ার নয়—চেহারাটা একটা সার্কেলই, একেবারে গোলাকার। বিরাট মক্কেলই পাকড়েছে। ইদানীং ভোটে দাঁড়াবেন চন্দ্র স্কোয়ার, তাই ক্লাবকে হাতে রাখতে চান। আর প্রধান অতিথি হবেন কোনও উপমন্ত্রী। ফুলমন্ত্রীদের ধরতে পারেনি, তা উপ একজনকেই ধরেছে ওরা। আর এর মধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ওপাড়ার সবুজ বাহিনীকেও আনছে। তারা নাকি এক একজন এক একটা গাছ লতা-ফতা সেজে পরিবেশকে সবুজ স্নিগ্ধ করে দেবে।

দূর থেকে দেখি সেভেন বুলেটসে মাঠে মঞ্চ হয়েছে। সুন্দর বেশ উঁচু মঞ্চ। সব সবুজ। আর কলাগাছ একেবারে কাঁদি সমেত এনে বসানো হয়েছে সবুজ পরিবেশ গড়ার জন্য। ওদিকে গাছের ডালে মাচা বেঁধে সানাই বসবে মই দিয়ে উঠে বৃক্ষশীর্ষ থেকে সানাইবাদন হবে। একেবারে সব নতুন আইডিয়া। আমাদের ভিতরের সব খবর জেনে এবার আমাদেরই পথে বসালো ওরা। হোঁৎকা সেই থেকে খুবই ব্যস্ত। তার ব্যক্তিগত সচিব নন্টেরও দেখা নেই । গোবরাকে কোথায় কোন বৃক্ষাদি আনতে দূর গ্রামে পাঠিয়েছে তারও দেখা নেই। পড়ে আছি মাত্র আমরা ক্লাবের তিনপিস মেম্বার।

ডেকরেটারের লোক আমাদের মাঠে কেবলমাত্র বাঁশ খুঁটি ফেলছে। এর মধ্যেই সেভেন বুলেটস্ উল্টে প্যাক দিচ্ছে, নকলনবিশের দল। আমরা যা করব ওরা তাই দেখে করবে।

পটলা বলে, উঃ লাইফ হেল ক-করে দিল রে। এসবও শু-শুনতে হচ্ছে। আমার পা-পাতাল প্রবেশ করতে ইচ্ছে হচ্ছে।

বলি, ওটা একমাত্র রামায়ণের যুগে সীতাই করেছিল। কলি যুগে তুই আর করিস না। ওরা গে-গেল কোথায়? নো পাত্তা ওই হো-হোঁৎকা—গ-গোবরার।

পটলা একেবারে ভেঙে পড়েছে। আমি বলি, একটা পথ হবেই।

ক-কবে হবে? কালই তো ওদের ফ-ফাংশন। পটলাও ধৈর্য হারিয়েছে। আমিও ভাবনায় পড়ি। হোঁৎকা, গোবরার কোনও পাত্তাই নেই। কাল রাত পোহালে ওদের জয়-জয়কার ঘোষিত হবে। মঞ্চে সুন্দর টবে কালকের রোপণ করার জন্য গাছগুলোকে এনে সাজানো হচ্ছে। টেবিল-চেয়ারও বসানো হচ্ছে।

কাল ব্রাহ্মমুহূর্ত থেকে ওদের প্রভাতফেরী। তারপর সকালেই বৃক্ষরোপণ উৎসব। উপমন্ত্রী, এলাকার এম-এল-এ, কাউন্সিলর, খবরের কাগজের লোক, টিভির লোকরাও আসবেন। এলাহি কারবার। আমরা একেবারে পথে বসে গেলাম। পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের নামই মুছে দেবে ওরা।

রাতে ঘুম আসে না। পটলা বলে, ওরাও ফিরল না। ইনসাল্টের ভয়ে মু-মুখ লুকিয়েছে। কাওয়ার্ড। উঃ! টাকা-পয়সা গেল-বে-বেইজ্জত।

ফটিক বলে, আমার নাচগানের প্রোগ্রাম রেডি।

পটলা বলে, আমার শ-শ্মশানে করবি। উঃ! লাইফ স্যাক্রিফাইস করব সিওর। কোনওমতে ওকে নিরস্ত করি ।

দুঃখের রাত তবু কেটে যায়। ভোর হতেই শুনি পথ দিয়ে কলরব করে ওদের প্রভাতফেরী চলেছে। ও পাড়ার তাবৎ কুচোগুলোর হাতে সবুজ পতাকা। আর ভোঁদা, ন্যাপারাও রয়েছে পুরোভাগে সেভেন বুলেটস্রে বিজয় পতাকা হাতে। সারা পাড়া কাঁপিয়ে চলেছে তারা বিজয়গর্বে।

ওদিকের মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে ওদের মূল উৎসব দেখছি। সুন্দর মঞ্চ, ওদিকে টবে গাছের সারি। ওপাশে মঞ্চে উঠছেন প্রধান অতিথি, সঙ্গে পুলিশ। চেয়ার জুড়ে বসে আছেন চন্দ্র স্কোয়ার, এঁর চক্‌চকে টাকটাই দেখা যাচ্ছে, ওঁর জন্য স্পেশাল চেয়ার আনাতে হয়েছে। অন্য মাননীয় অতিথি, এলাকার ভূষিমাল, চিটেগুড়ের আড়তদার দাঁমশাইও উঠছেন। দুটো লোক তাঁকে ধরে তুলছে। বিশাল দেহ। বেশ মোটা টাকা চাঁদা তাঁর কাছে আদায় করেছে ওরা। অতিথিরা মঞ্চে রাখা টবের বৃক্ষগুলোকে স্পর্শ করছেন, প্রদক্ষিণ করছেন। তারপর বসছেন চেয়ারে। শাঁখ বাজছে জোরে।

হঠাৎ দেখি হোঁৎকা-গোবরাকে। পটলা আর্তনাদ করে ওঠে—কী হল? তো-তোরা! ওদিকে ক্যামেরা, টিভি ক্যামেরার আলো জ্বলছে। ছবি উঠছে।

পটলা বলে, লাইফ স্যাক্রিফাইস ক-করব।

হোঁৎকার চেহারা কেমন বিধ্বস্ত। যেন রাতভোর ঘুমোয়নি। গোবরার চেহারাও তেমনি। হোঁৎকা বলে, তার দরকার হইব না। দ্যাখ না-

এরপরই দেখি মঞ্চে মৃদু আলোড়ন শুরু হয়েছে। বৃক্ষ প্রদক্ষিণ করা, স্পর্শ করার পর চেয়ারে বসেই মন্ত্রীমশাই লাফ দিয়ে ওঠেন। হাত-পা চুলকোতে শুরু করেন। তারপর চন্দ্র স্কোয়ার চলন্ত পিপের মত যেন গড়াতে থাকেন। তাঁরও চুলকানি শুরু হয়েছে প্রবল বেগে। ভূষিমালের আড়তদার সাঁ করে গায়ের পাঞ্জাবিটা খুলে বিশাল রোমশ বুক বের করে খসোর খসোর করে তীব্র গতিতে চুলকোতে থাকেন। তৎসহ লাফ ও পাড়া কাঁপানো চিৎকার-ওরে বাপরে!

ক্যামেরায় ওঁদের সেই নৃত্যরত ছবিও উঠছে। উপমন্ত্রী, চন্দ্র স্কোয়ার আর দাঁমশাই শুধু নন, মঞ্চে উপস্থিত সব সুধীজন তখন চুলকানির কমপিটিশন লাগিয়েছেন। গাছের ছোঁয়া যাঁর লাগছে তিনিই শুরু করছেন। মঞ্চ তখন ওঁদের চুলকানির চোটে টলমল।

কে মাইকে ঘোষণা করে—শান্ত হোন। মঞ্চ কাঁপছে। কিন্তু কে কার কথা শোনে। টিভির ছবিতে একটিবার মুখ দেখাবার জন্য তখন মঞ্চে তামাম সভ্যরা উঠে পড়েছে তারপরই মড্ মড় শব্দ। মঞ্চর একপাশ নামছে। টাইটানিক ডোবার সময় যেমন ভীত যাত্রীরা জাহাজের এদিকেই জড়ো হতে লেগেছিল, তেমনি সবাই মিলে মঞ্চের ওদিক থেকে এদিকে আসার চেষ্টা করতেই পুরো মঞ্চটা মড়মড় করে ভেঙে পড়ল। চন্দ্র স্কোয়ার তখন গড়াচ্ছেন আর আর্তনাদ করছেন। দাঁমশাই পড়েছেন শীর্ণ উপমন্ত্রীর ঘাড়ে। কে কোনদিকে পড়ে তার ঠিক নেই। মঞ্চটা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই এবার উপরের তেরপল সমেত বাঁশ, চাদর সবকিছু পড়ে ওদের ওপর, যেন জালে বন্দি মাছের ঝাঁক। কে কি করবে তার ঠিক নেই। চিৎকার, কলরব ওঠে। অনেকেই মাঠ ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বের দিকে দৌড়াচ্ছে। মঞ্চ তখন ধ্বংসস্তূপ। নীচে ওই জনতা–সেভেন বুলেটস্রে কর্মিবৃন্দ।

কোনওমতে ওঁরা নিজেরাই ঠেলেঠুলে বের হয়ে আসেন। চন্দ্রমোহনের গরদের পাঞ্জাবি তখন ফর্দাফাঁই, দাঁমশাই তখনও গড়াচ্ছেন। পুলিশ উপমন্ত্রীকে বের করে গাড়িতে তোলে। থানার দারোগাবাবু ভোঁদা, ন্যাপা প্রমুখ ক’জন কর্মকর্তাকে থানায় নিয়ে চলে গেল।

ক্রমশ মাঠের লোকজনও কমে আসে। এক বিচিত্র অনুষ্ঠানই বটে। যাকে বলে কেলোর কাণ্ড। ওদের অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে ওখানেই।

এরপর রহস্যটা পরিষ্কার হয়। পটলাদের বাড়ির সেই ঘরে বসে এবার হোঁৎকা বলে, কি! কইনি ওগোর ব্যবস্থা করুম। খুব বাড়ছে। স্যাবোতাজ করবো আমাগোর ?

গোবরা ক’দিন ধরে গ্রামে ঘুরে এনেছে অনেক বিছুটি গাছ। টবে বসিয়ে রাতারাতি তাদের ওই মঞ্চে তুলে ওদের গাছগুলোকে সরিয়ে দিয়েছে, আর চেয়ার-টেবিলে এতদিনের চেষ্টায় সংগৃহীত আলকুসির চূর্ণ ছড়িয়ে রেখেছিল। আলকুসির কিছুমাত্র চূর্ণ গায়ে-হাতে লাগলে শুরু হবে রাম চুলকানি। তাই হয়েছিল।

ওতেই থামত। কিন্তু ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি করে মঞ্চে উঠেছিল পুরো পাড়ার সবাই, ফলে পল্কা মঞ্চের যা দশা হবার তাই হয়েছে এবং অনুষ্ঠানপর্ব ওইখানেই শেষ।

এর পরদিন রাতারাতি গড়ে উঠল আমাদের মঞ্চ। আর পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের অনুষ্ঠান সেদিন যা হয়েছিল তা সত্যিই অপূর্ব। সারা এলাকার মানুষ বলে, হ্যাঁ। সত্যি বৃক্ষরোপণ অনুষ্ঠানের দরকার আছে।

হোঁৎকা বলে, কি রে পটলা, দ্যাখ বৃক্ষের গুণ। ভালোমানষের জন্য ভালো যেমন করে, ভণ্ড পোলাদের তেমনি ঠান্ডাও করতি পারে। বিছুটি-আলকুসি হক্কলই তো বৃক্ষই। ঠিক কইনি?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *