পটলা সমগ্র ১
পটলা সমগ্র ২

পটলার বসন্তোৎসব

পটলার বসন্তোৎসব

দোলের দিনটা এবছর পঞ্চপাণ্ডব ক্লাব অর্থাৎ আমাদের পাঁচজনের খুবই দুর্দিন গেছে। গেছে তাও বলা যায় না, এখনও তার জের চলছে। আর এই ঘন তমসার কারণ ওই পটলা।

ওটাকে নিয়ে আর পারা যাচ্ছে না। অবশ্য ওই পটলচন্দ্রই আমাদের পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের সেক্রেটারি-কাম-ক্যাশিয়ার-কাম-কামধেনু। অর্থাৎ যখন ইচ্ছা তাকে দোহন করা যায়। ক্লাবের যাবতীয় খরচখরচা, ফুটবল টিম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভ্রমণ ইত্যাদি দমকা খরচ ছাড়াও দৈনন্দিন খরচা যেমন গুপির দোকানের চা টোস্ট ওমলেট, ভজুয়ার ঝালমুড়ি, গোকুলের আইসক্রিমের বিল সব ওই পটলাই মিটিয়ে দেয়। অবশ্য ওদের অনেক টাকা। বিশাল বাড়ি, বাবার বিরাট কারখানা, কাকার ব্যবসা, ঠামার বিরাট সম্পত্তি, কি নেই! তাই পটলাকে আমাদের দরকার।

তবে পটলার ওই এক দোষ। সব ভালো ওর, কিন্তু মাথায় মাঝে মাঝে উদ্ভট সব খেয়াল চাপে। আর তা মেটাতে গিয়ে নিজে তো বিপদে পড়বেই, সেই সঙ্গে আমাদেরও বিপদে ফেলবে। এবার দোলের দিন ওর খেয়ালেই নেমে এল পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের ঘোর দুর্দিন।

কুলেপাড়া চ্যালেঞ্জ শিল্ড ওই অঞ্চলের নামকরা শিল্ড। আই. এফ. এ শিল্ডের পরই তার নাকি সাইজ। সেই দুর্লভ শিল্ড আমরা পরপর দুবছর কুলেপাড়া ইলেভন বুলেটসকে কলা দেখিয়ে জিতেছি। এবারও সেমি-ফাইনালে উঠে গেছি, ওদিক থেকে উঠেছে কুলেপাড়া ইলেভন বুলেটস। ফাইনালে আর একবার মুখোমুখি হবো আমরা দুটো টিম। আর এবারও শিল্ড জিতব আমরাই তা কুলেপাড়াও জানে। এবার শিল্ড জিতলে ওই বিরাট শিল্ড পাকাপাকিভাবে এসে যাবে আমাদের হাতে। এ যেন আকাশের চাঁদ পাওয়া। তারই প্রস্তুতি চলেছে। ন্যাপাদার কোচিং-এ রোজ মাঠে নামছি আমরা। হোঁৎকা ব্যাকে, আমি পটলা ফরোয়ার্ড লাইনে, গোবর্ধন দশাসই চেহারা নিয়ে চায়না ওয়ালের অর্থাৎ দুর্ভেদ্য চীনের প্রাচীরের মত গোল আটকে দাঁড়ায়। অন্যরা তো আছেই।

আমাদের অন্যতম কর্মকর্তা ফটিক খেলাধুলা করে না। ক্লাবের সাংস্কৃতিক সম্পাদক সে। মাঠে তার দলবল নিয়ে সাধা গলা পঞ্চমে তুলে আমাদের উৎসাহিত করে আর আমরা গোল দিলে মাঠে নেমে কত্থক নৃত্য পরিবেশন করে। এবার হ্যাট্রিক করব তাই ফটিকচন্দ্র মাঠে কোরাস নৃত্যগীত পরিবেশনের প্ল্যান করছে ঢোল সহকারে। কিন্তু বরাতে যে এমনি সর্বনাশ লেখা আছে তা ভাবিনি।

দোল এসে গেছে। বিভিন্ন ক্লাব ওইদিন উৎসব করে। আমরাও এতদিন ক্লাবের মাঠে ফটিকের পরিচালনায় পাড়ার খেঁদি, বুচি, ছিপলি, মস্তানদের নিয়ে বসন্তোৎসব করেছি। তা সেদিন পটলা স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে গুপির দোকানের গরম ফিশ্ কাটলেট্ আনিয়ে সামনে ধরে। হোঁৎকা বলে, ফিশ্-কাটলেট্! দুইখান দে।

গোবরার দেহটা গিরিগোবর্ধনের মিনি সংস্করণ। কিন্তু বুদ্ধিতে ঈষৎ কম। সে বলে, কাটলেট-এর সঙ্গে রুটিও দিতে বল পটলা। পেটের কোণে পড়ে থাকবে।

তাই এল। পটলা যেন আজ কল্পতরু হয়ে গেছে। যে যা চাইছে তাই দিচ্ছে।

পটলা সঙ্গে এনেছে তার মাসতুতো ভাই আকাশচন্দ্রকে। তার শরীরটা সিঁটকে লগার মত হাওয়ায় কাঁপে। কাঁধ ছাপিয়ে পড়েছে বাবরি চুল। পরনে কাজকরা গুরু পাঞ্জাবি-পায়জামা । বেশ শৌখিনই।

পটলা বলে, এবার দ-দ্-দোলে বসন্তোৎসব হবে নতুন আইডিয়ায়।

ফটিকই এসব করে। তবু জানাই, পটলা, এবার হ্যাট্রিক করে শিল্ড ঘরে তুলতেই হবে। খরচা আছে অনেক। ব্যান্ড আনতে হবে। দোলে বেশি খরচা করিস না।

পটলা অভয় দেয়, খ-খরচার জন্য ন-নো ফিয়ার। আইডিয়াটা শোন। হোঁৎকা বলে, খাওয়া হইব তো। বেশ কবজিভোর মাংস-টাংস? হোঁৎকার নজর খালি খাবারের দিকে। পটলা বলে, হবে।

—তালে ক’তর আইডিয়াটাই শুনি।

পটলা অবশ্য এত কথা একসঙ্গে বলতে গেলে অনেক টাইম নেবে। কারণ জিবটা ওর প্রায় ব্রেকফেল করে আলটাকরায় সেঁটে যায়। পটলার সেই মাসতুতো ভাই-ই বলে, কারণ আইডিয়াটা আসলে তারই।

আমরা শুনি। শ্রোতামাত্র। ফটিক গানটান নিয়ে থাকে। সে বলে, তা মন্দ হবে না। সকালেই প্রভাতফেরি একেবারে শান্তিনিকেতনী স্টাইলে ওই পবিত্র পোশাকে। শুধুমাত্র সংহতি, মিলনের গান গেয়ে পরিক্রমা। দারুণ হবে।

পটলা বলে, ত-হবে। আকাশদা কি যে সে। দেখবি ক্যামন হবে। এ-এক্কারে নতুন।

ক’দিন ধরে পঞ্চপাণ্ডব ক্লাব মেতে উঠেছে আগামী বসন্তোৎসবের প্ল্যান নিয়ে। পটলার ‘ছোটকাকার প্রেসে ছাপা বাসন্তী রংয়ের হাজার কয়েক লিফলেট এরই মধ্যে বিতরণ করা হয়ে গেছে পাড়ার সর্বত্র।

ফটিক এখন আকাশদার সঙ্গে ক্লাবের ঘরে পাড়ার কিল্লিবিল্লিদের চকোলেট লজেন্স বিলিয়ে ডেকে এনে তারস্বরে গানের তালিম দিচ্ছে নৃত্য সহযোগে। ফটিক তবলা পিটছে আর আকাশদা ওর লগার মত হাত-পা আকাশে ছুঁড়ে নৃত্যশিক্ষা দিচ্ছে, ‘ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে’, ফাগুন নয়, যেন আগুনের শিখা লকলক করে নাচছে।

পটলা বলে, ব-বলিনি এবার নতুন করে প-পঞ্চপাণ্ডব ক-ক্লাব প-পাড়ায় আগুন লাগাবে। দোলের দিন সাতসকালে ক্লাবের মাঠে এসে গেছে ফটিকের অক্লান্ত চেষ্টায় গড়া কিল্লিবিল্লিদের দল। সকলের পরনে বাসন্তী রংয়ের পোশাক

পটলার দৌলতে আমাদেরও পরতে হয়েছে বাসন্তী রংয়ের পায়জামা-পাঞ্জাবি আর উড়ুনি। গোবরার বিশাল দেহে পাঞ্জাবিটা টিংটিং করছে, পায়জামা উঠেছে হাঁটুর কাছে। হোঁৎকা বেঁটে গোলগাল, তার পাঞ্জাবিটা সেমিজ হয়ে গেছে। হাঁটু ছাড়িয়ে ঝুলছে। আকাশদা ফটিকও ওই পোশাকে, একেবারে রংয়ের বাহার ।

পটলার মুখে আজ খুশির চোটে বাক্য সরছে না। কেবল কয়েকটা স্বরবর্ণ, ব্যাঞ্জনবর্ণই বের হচ্ছে মাত্র।

হোঁৎকা আমাদের ফুটবল টিমের ক্যাপটেন। ওই বাসন্তী রংয়ের পায়জামা-পাঞ্জাবি পরেই হুইসেল বাজিয়ে আগে আগে চলেছে সে। পেছনে আকাশদা আর ফটিক। কাঁধে জম্পেশ করে ঝোলানো হারমোনিয়াম। পিছনে গোবরা, আমি, পটলা, অন্যরা, তৎসহ ওই কিল্লিবিল্লির দল। তারস্বরে ফটিক গাইছে। আকাশদাও তার দীর্ঘ সিঁটকে হাত আকাশে তুলে গলার শির ফুলিয়ে চিৎকার করছে, ‘ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে বনে বনে’।

কোথায় ফাগুন, কোথায় বন আর কোথায় ঘিঞ্জি রাস্তা! রাসমণি বাজারের ওদিকে রাস্তার দুদিকে বুকভোর খোলা নর্দমায় কাদা থিকথিক করছে, দুপাশে দোকান, লালার আটাকল, ওদিকে ভুসির আড়ত, সামনে বাজার, তরকারির খোসা, শুকনো পাতা, কপির ডাঁটা, পটা বেগুন-টম্যাটোর স্তূপীকৃত আবর্জনা। এখানেই তবু বসন্তের সাড়া এনেছি আমরা ওই মনোরম সাজে আর বেসুরো চিৎকারে। পথের দুদিকে অটোমেটিক লোক জুটে গেছে। দেখছে ওরা ওই অবাক ব্যাপার ।

পথে রং খেলছে অনেকেই। আজ দোলের দিন, রং তো খেলবেই। তবে আমরা আবির ছড়াচ্ছি। রংয়ের ব্যাপারই নেই ।

হঠাৎ গলির মুখ থেকে কুলেপাড়ার দল খোল করতাল মাইক তাসাপার্টি নিয়ে ড্যাম কুড়ু কুড়ু বাদ্যি বাজিয়ে আর উন্মাদ নৃত্যে কলরব তুলে একদল পিশাচের মত হা রে রে রে করে তেড়ে আসে। মুখে বাঁদুরে কালো রং। তারা তৈরি হয়েই এসেছে। বালতি থেকে ইয়া বোম্বা পিচকারিতে লাল খুনখারাপি রং ভরে কয়েকজন মিলে আক্রমণ করে আমাদের। নিমেষের মধ্যে হোঁৎকা, গোবরা, আকাশদা, পটলার রং বদলে করে দেয় একেবারে লাল টুকটুকে ।

ওই অতর্কিত আক্রমণে আমরাও দিশেহারা। কিল্লির দল হাউমাউ চিৎকার করতে করতে নিমেষের মধ্যে ফরসা। পিছনে কোরাস গাইবার কেউ নেই। অবশ্য বনে বনে ফাগুন লাগার গানও তখন থেমে গেছে। প্রভাতফেরির দল ছত্রভঙ্গ। ফটিক হারমোনিয়াম বুকে করে সেঁধিয়েছে ভুসিমালের আড়তে। ছিটকে পড়েছে ভুসির গাদার উপর। মুখে গায়ে ভুসি মেখে দেখাচ্ছে একটা মর্কটের মত।

পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের বাদবাকিরা পথেই রয়ে গেছে লাল আপেল সেজে। কুলেপাড়ার সভ্যরা কাজ সেরে ততক্ষণে পলাতক। ওরা আমাদের বনে বনে ফাগুন লাগানোর চেষ্টাকে ব্যর্থ করে বিজয়ীর মত পালিয়েছে। কিন্তু আমাদের কপালে যে আগুন লাগিয়ে গেছে সেটা তখনও বুঝিনি। যখন বুঝলাম তখন আর করার কিছুই নেই।

রংয়ের চোটে চোখ জ্বলছে। পথের দুদিকে কৌতূহলী জনতা বিনা খরচায় এমন মজা দেখে বেশ উপভোগ করছে। হঠাৎ কলরব করে ওঠে জনতা—ভাগো, ভাগো, পালা—পালা ! হোঁৎকা চোখ খোলামাত্র দেখে সামনে চার পা তুলে শিং উঁচিয়ে ধেয়ে আসছে রাসমণি বাজারের ভোলানাথ ৷

ভোলানাথকে এ অঞ্চলের সবাই চেনে। এ এখানকার পার্মানেন্ট বাসিন্দা। বাজারের ওদিকে মন্দিরের চত্বরেই সে থাকে। আর বাজারের সবজি-আনাজপত্র, লালার দোকানের মুফৎ ভুসি, রেশনের দোকানে জোরজবরদস্তি চাল-গম সেঁটে নধর দেহ আর রাজকীয় মেজাজ নিয়ে ঘোরে।

ভোলানাথের সর্বাঙ্গে কুলেপাড়ার সভ্যরা বালতি কয়েক রং ঢেলে তার মেজাজ গরম করে দিয়েছে। সুখনিদ্রা ভেঙে গিয়ে সেও বের হয়েছে তার শত্রুদের সন্ধানে। এ হেন অবস্থায় সামনেই লালবর্ণ আমাদের ক’জনকে দেখে এবার হুঙ্কার ছেড়ে তেড়ে আসে।

প্রথমেই সে পেয়ে যায় হোঁৎকাকে। ওর বেঁটে গোলগাল দেহটা শূন্যে তুলে একপাক ঘুরিয়ে নিয়েই ছুড়ে দেয়। হোঁৎকা খবাৎ করে গিয়ে পড়ে ওদিকের নর্দমার ধারে দণ্ডায়মান লালাজির নধর ভুঁড়ির উপর, তারপর রিবাউন্ড করে সোজা চলে আসে সবজিওয়ালার কুমড়ো টালে—টালমাটাল হয়ে গড়িয়ে পড়ে রাস্তায়। তখন গোবর্ধনকে দেখা যায় ভোলানাথের শিং-এ চক্কর খাচ্ছে। তারপরেই সে গিয়ে পড়ে খোলা নর্দমার খিঁচের মধ্যে।

পটলার জিবটা আলটাকরায় আটকে গেছে। ব-ব-ব—একটা বিজাতীয় শব্দ ওঠে। পটলা ভোলানাথের শিং-এ চড়ে মাত্তর হাপচক্কর খেয়ে ছিটকে পড়ে পিচরাস্তার উপর। সঙ্গে সঙ্গে জিবটা খুলে গিয়ে বাকি শব্দটা বের হয়—বাপ রে ।

আকাশ অবশ্য করিতকর্মা ছেলে, বেগতিক দেখে সে এর মধ্যে লম্বা পা ফেলে, ভোলানাথের নাগালের বাইরে চলে গেছে। তবু ভোলানাথ তার দিকে শিং চালাতে ওর ঢোলা পায়জামাটাই পেয়ে যায় আর একটানে সেটাকেই শিং-এ জড়িয়ে ফেলে। নেহাত আকাশদার পাঞ্জাবিটার ঝুল বেশি ছিল, তাই উইদাউট পায়জামাও পার পেয়ে যায় ।

ডামাডোলের মধ্যে আমি হঠাৎ আবিষ্কার করি ভোলানাথের ঘাড়ে কি করে যেন অধিষ্ঠান হয়ে গেছি। কে বলে, বসে থাক। নড়বি না !

ষাঁড় নাকি মহাদেবের বাহন। কিন্তু মহাদেব কি করে ষাঁড়ের পিঠে বসে কৈলাস পাহাড় টপকে মুভমেন্ট করে জানা নেই। এক ঝটকায় ষণ্ডমহারাজ আমাকে ছিটকে ফেলতেই পথের পাশের পত্রহীন বটগাছের ডালটাই ধরার চেষ্টা করি। কিন্তু পারি না। হাত ফসকে পড়ি কালভার্টের উপর। তারপর আর হুঁশ নেই কে কোথায় কীভাবে রইল।

জ্ঞান ফেরে হাসপাতালে। দেখি পাশাপাশি বেড়ে পড়ে আছি পঞ্চপাণ্ডব ক্লাবের চার মূর্তি। ওনলি ফটকে সটকেছিল আর আকাশটাই ওনলি পাঞ্জাবি পরা অবস্থায় কোনমতে পটলার বাড়িতে গিয়ে বসন্তোৎসবের ‘ফুল রিপোর্ট’ দিয়েছিল। জনতা কোন ঠ্যালাওয়ালাকে ধরে হাসপাতালে আমাদের জমা করেছিল।

হোঁৎকার বাঁ হাত ভেঙেছে, গোবরার গেছে ডান পা। আমার গোড়ালিতে চোট। পটলার সর্বাঙ্গ থেঁতলে গেছে পিচরাস্তায় পড়ে। ফলে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে থেকে বের হয়ে এলাম। সেদিন দেখি পাড়ায় বিরাট প্রসেশন করে তিন দল ব্যান্ডপার্টি তাসাপার্টি নিয়ে কুলেপাড়া ইলেভেন বুলেটস্ কুলেপাড়া শিল্ড জয়ের বিজয়-উৎসব করছে। পঞ্চপাণ্ডব ক্লাব এবার সেমি-ফাইনাল থেকেই মাঠে অনুপস্থিত। তারা তখন হাসপাতালে ।

পটলার আকাশদা নেই। বনে বনে ফাগুনের আগুন নয়, আমাদের বরাতেই নুড়ো জ্বেলে তিনি বিদায় নিয়েছেন। এখন পটলা বলে, মি-মি-মিসটেক হয়ে গেছল র‍্যা? কে-কে জানত বসন্তোৎসব এ-এমনি হবে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *