নিয়তি পুরুষ

নিয়তি পুরুষ

রাত প্রায় পৌনে বারোটা৷ ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে! সেইজন্যেই রাস্তাঘাট এর মধ্যে ফাঁকা হয়ে গেছে৷ লাস্ট বাস থেকে নামবার সময়ই আমার পা-টা মচকে গেল৷

বেশি রাত্রির বাস এমনিতেই ঝড়ের বেগে ছোটে৷ কোথাও বেশিক্ষণ থামতেই চায় না৷ যাত্রী খুব কম৷ টালিগঞ্জ ট্রামডিপোর কাছে একমাত্র আমিই নামব৷ দরজার কাছে হাতল ধরে দাঁড়ানো মাত্র কন্ডাক্টর গাড়ি ছাড়ার ঘণ্টা দিয়ে দিল৷ চলন্ত গাড়ি থেকে আমাকে লাফিয়ে নেমে পড়তে হল৷

হুমড়ি খেয়ে পড়েই যেতাম৷ অতিকষ্টে নিজেকে সামলে নিয়েছি৷ কিন্তু বাঁ-পায়ের গোড়ালির কাছে বেশ চোট লেগেছে৷ একটু হাঁটতে গিয়েই বুঝলাম, রীতিমতন ব্যথা৷

এইসময় একটা রিকশা পেলে ভালো হত৷ অন্যদিন অনেক রিকশা থাকে এখানে৷ আজ বৃষ্টির জন্য রাস্তা ফাঁকা, তাই রিকশাও নেই৷ মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল৷ বৃষ্টির মধ্যে এখন খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে যেতে হবে৷

দু-একটা রিকশা ফুটপাথের ওপর তুলে রেখে তাদের চালকরা ঘুমোচ্ছে৷ ডেকে তুললে অনেকসময় ওরা যেতে চায় না৷ মেজাজ দেখায়৷ কী করব দাঁড়িয়ে-দাঁড়িয়ে ভাবছি, এইসময় পেছনে ঠুং-ঠুং শব্দ কানে এল৷ একটা ফাঁকা রিকশা৷ বুড়ো মতন একজন লোক সেটা চালাচ্ছে৷ মাথার ওপরে একটুকরো প্লাস্টিক টুপির মতন পরে আছে৷ সে নিজেই আমাকে জিজ্ঞেস করল, বাবু যাবেন?

এ যেন মেঘ না চাইতেই জল৷ কোনও দরাদরি না করে উঠে বসলাম৷ মেজাজটা আবার একটু প্রসন্ন হতে একটা সিগারেট ধরালাম৷

বড়রাস্তা থেকে আমার বাড়ি মিনিট সাতেকের পথ৷ সেখানে পৌঁছোবার পর আমি নেমে পড়ে রিকশাওয়ালাকে একটা টাকা দিলাম৷

সে বেশ খুশিই হয়েছে মনে হল৷ অনেকখানি ঝুঁকে সেলাম করল৷ তারপর যখন আবার সোজা হল, তার মুখখানা দেখে আমি দারুণ চমকে উঠলাম৷

কেন চমকালাম তা নিজেই জানি না৷ খুব সাধারণ চেহারার একজন বুড়ো৷ মুখে অল্প-অল্প দাড়ি৷ খুব একটা খারাপ দেখতেও নয়৷ তবু চমকে ওঠার কারণ কী! কিছুই বুঝতে পারলাম না৷ শুধু বুকের মধ্যে শিরশির করতে লাগল৷

ভেতরে এসে সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময়েও মনের মধ্যে খচখচানিটা রয়েছে৷ লোকটার মুখ-চোখে তো অস্বাভাবিক কিছু নেই৷ তবু হঠাৎ ওকে দেখেই আমার গা-টা কেঁপে উঠেছিল কেন?

জামাকাপড় ছেড়ে, আলো নিভিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ার পর মনে পড়ল৷ এই রিকশাওয়ালাটার সঙ্গে আর-একটা লোকের দারুণ মিল আছে!

বছর-দেড়েক আগে সমস্তিপুর থেকে ফিরছিলাম একবার একাই৷ স্টেশানে হকারদের কাছ থেকে দুটো ডিমসেদ্ধ আর তিনপাতা আলুরদম খেয়েছিলাম৷ ট্রেন ছাড়ার আধঘণ্টার মধ্যেই আমার অসম্ভব পেটব্যথা শুরু হল৷ তিনবার বমি করলাম৷ কিছুতেই ব্যথা কমে না৷ বাথরুমের বাইরে দরজার কাছে মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম একবার—মনে হল, আমার কলেরা হয়েছে, আমি এক্ষুনি মরে যাব৷

হয়তো মরেই যেতাম৷ সেইসময় ভিড় ঠেলেঠুলে একজন বিহারি ভদ্রলোক এসে জিজ্ঞেস করলেন, কী হয়েছে? দেখি, জিভ দেখি আপনার—৷

ভদ্রলোক ডাক্তার৷ সঙ্গে তাঁর ওষুধের বাক্স৷ তিনি আমাকে পাঁজাকোলা করে তুলে নিয়ে শুইয়ে দিলেন এক জায়গায়৷ তারপর এমন সেবা করতে লাগলেন যে, অনেক নিকট আত্মীয়ও সেরকম পারে না৷

তাঁর ওষুধে কিছুক্ষণের মধ্যে আমার পেটব্যথা কমে গেল৷ আর-একটা ওষুধে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম৷

কিন্তু সেই ডাক্তার ভদ্রলোককে আমি কৃতজ্ঞতা জানাবার সুযোগ পাইনি৷ ঘুম ভাঙার পর আর দেখতে পাইনি তাঁকে৷ অন্য লোকজনের মুখে শুনলাম, তিনি বারাউনিতে নেমে গেছেন৷ দারুণ আপশোশ হয়েছিল৷ আমার সেই উপকারী বন্ধুর নামটাও জানতে পারিনি৷ মুখটা অবশ্য মনে আছে৷ মধ্যবয়স্ক লোক৷ মুখে অল্প-অল্প দাড়ি৷ অবিকল আজকের রিকশাওয়ালার মতন৷ এ কখনও হয়? মানুষে-মানুষে এত মিল থাকে! যমজ ভাই হলে অনেক সময় হতেও পারে৷ কিন্তু একজন ডাক্তার, আর-একজন রিকশাওয়ালা? সেই ডাক্তারই কোনওরকম ভাগ্য-বিপর্যয়ে রিকশাওয়ালা হয়েছে? তাহলে তো আমার উচিত ব্যাপারটা খোঁজ করা৷ কিংবা যদি সেই ডাক্তারের ভাই-ও হয়—!

পরদিন পায়ে এমন ব্যথা হল যে, বাড়ি থেকে বেরুতেই পারলাম না৷ আমার ছোট ভাই-ই ডাক্তার! সে আমার হাঁটাচলা একদম বন্ধ করে দিল৷ সাতদিন পরে বাড়ি থেকে বেরিয়েই সেই রিকশাওয়ালার খোঁজ করেছিলাম৷ পেলাম না৷ অন্য দু-একজন রিকশাওয়ালাকে তার কথা জিজ্ঞেস করেও কোনও সন্ধান পাওয়া গেল না৷ অবশ্য এত সামান্য বর্ণনায় কোনও মানুষকে খুঁজে বের করাও যায় না৷ মধ্যবয়স্ক এবং মুখে সামান্য দাড়িওয়ালা আরও দু-তিনজন বিহারি রিকশাওয়ালা আছে৷ কিন্তু কেউই সেই লোকটি নয়৷ হতে পারে সেই রিকশাওয়ালা অন্য পাড়ার৷ সেদিনই শুধু এদিকে এসে পড়েছিল৷

তবু মনের মধ্যে একটা খটকা রয়ে গেল৷ আমার দু-দুবার বিপদের সময় ঠিক একইরকম চেহারার দুজন লোক আমাকে সাহায্য করার জন্যে এসে উপস্থিত হয়েছিল! এ কেমন করে হয়!

বন্ধুবান্ধবদের বললাম ঘটনাটা৷ তারা হেসেই উড়িয়ে দিল৷ কয়েকজন নানারকম ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করল৷ মাঝরাত্তিরের অন্ধকারে আমি রিকশাওয়ালার মুখ ভালো করে দেখতে পাইনি৷ আমার অচেতন মনে নাকি সেই সময়েই ট্রেনের সেই ডাক্তারটির কথা ঘুরছিল৷ সেইজন্যেই নাকি আমি রিকশাওয়ালার মুখখানা সেই ডাক্তারের মতন কল্পনা করে নিয়েছি! কী জানি, হতেও পারে!

এর ঠিক বছর-দেড়েক বাদে আর-একটা ঘটনা ঘটল৷ সেদিন আমি যাচ্ছিলাম ট্যাক্সি করে৷ আমার সঙ্গে অনেক কাগজপত্র৷ খুব মন দিয়ে আমি কয়েকটা চিঠিপত্র পড়ছিলাম এবং যেগুলো অপ্রয়োজনীয় সেগুলো ফেলে দিচ্ছিলাম জানলা দিয়ে৷ একসময় দেখলাম, ঠিক আমার জানলার পাশেই একটা ট্যাক্সি জোরে-জোরে হর্ন দিচ্ছে এবং পেছনের সিট থেকে একজন লোক হাত-পা নেড়ে আমাকে কী যেন বলতে চাইছে৷ লোকটির মুখে খুব একটা ব্যস্ত ভাব৷ আমি আমার ট্যাক্সি-ড্রাইভারকে বললাম, রোখকে! রোখকে!

পাশাপাশি দুটো ট্যাক্সিই দাঁড়িয়ে গেল৷ অন্য ট্যাক্সির একজন বাঙালি ভদ্রলোক আমাকে বললেন, আপনার চিঠিপত্র যে সব উড়ে যাচ্ছে! আমি দুটো কুড়িয়ে এনেছি—৷

আমি অবহেলার সঙ্গে বললাম, ওগুলো তো আমি ফেলে দিয়েছি! কেন মিছিমিছি আপনি তুলতে গেলেন?

পরক্ষণেই মনে হল, যাই হোক, ভদ্রলোক এরকম কষ্ট করেছেন যখন, ওঁকে একটা ধন্যবাদ জানানো উচিত অন্তত৷

কিন্তু ধন্যবাদ জানাবার আগেই দুটি ব্যাপারে আমাকে চমকে উঠতে হল৷ আমার ট্যাক্সিটা থেমে পড়ায় পেছনের গাড়িটা ওভারটেক করে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে একটা মিনিবাসের সঙ্গে প্রচণ্ড ধাক্কা মারল৷ এত জোর অ্যাক্সিডেন্ট যে, আওয়াজে প্রথমে কানে তালা লেগে যাওয়ার মতো হল এবং সেই মুহূর্তে আমি লক্ষ করলাম, আমার পাশের ট্যাক্সির ভদ্রলোকের মুখখানা অবিকল সেই ট্রেনের ডাক্তার কিংবা মাঝরাত্তিরের রিকশাওয়ালার মতন৷

আমি সঙ্গে-সঙ্গে ট্যক্সি থেকে নেমে পড়লাম৷ এখন ঠিক বিকেল—এখন তো চোখের ভুল হওয়ার কথা নয়!

সামনের অ্যাক্সিডেন্ট দেখতে বহু লোক ছুটে যাচ্ছে৷ গাড়িটার ক্ষতিই হয়েছে বেশি, পেছনের দুজন যাত্রীর অবস্থা সঙ্গিন৷ দৃঢ় ধারণা হল, আমার ট্যক্সিটা যদি হঠাৎ এভাবে না থামত, তাহলে এটা নিশ্চয়ই অ্যাক্সিডেন্ট করত এবং এতক্ষণে আমার ছিন্নভিন্ন শরীর পড়ে থাকত রাস্তায়৷ এই ভদ্রলোকই আমাকে বাঁচিয়েছেন৷

আমি অন্য ট্যাক্সির জানলার ধারে গিয়ে বললাম, আপনি আমার আজ যে কী উপকার করলেন, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না! কী বলে আপনাকে ধন্যবাদ জানাব!

ভদ্রলোক সামনের অ্যাকসিডেন্টটা দেখে একেবারে বিহ্বল হয়ে পড়েছেন৷ ফিসফিস করে বললেন, ওরেঃ বাবা! কী সাংঘাতিক অ্যাকসিডেন্ট! কেউ মারা গেছে নিশ্চয়ই!

এই সুযোগে আমি ভদ্রলোককে ভালো করে দেখে নিলাম৷ মধ্যবয়স্ক, মুখে অল্প দাড়ি৷ খুব লম্বা কিংবা বেঁটে নন৷ সব কিছু সেই ট্রেনের ডাক্তারটির মতন একরকম৷

আমি বললাম, আপনি এখানে একটু নামবেন?

উনি বললেন, আমার বিশেষ জরুরি কাজ ছিল—৷

—কিন্তু এখন তো যেতে পারবেন না৷ রাস্তা জ্যাম হয়ে গেছে৷

—তাই তো, কী যে করি!

ট্যাক্সিভাড়া মিটিয়ে দিয়ে উনি নেমে পড়লেন৷ আমি বললাম, আজ আপনিই আমার প্রাণ বাঁচিয়েছেন৷

উনি লজ্জিতভাবে বললেন, না, না, আমি আবার কী করলাম! আপনার চিঠিগুলো উড়ে-উড়ে পড়ছিল৷ যদি কাজের জিনিস হয়, আপনি হয়তো লক্ষ করেননি৷

—কিন্তু আপনি ওইজন্যে আমার ট্যাক্সিটা না থামালে আমিই ওই অ্যাক্সিডেন্টে পড়তাম নির্ঘাত৷

—কলকাতার রাস্তায় কখন যে কার অ্যাক্সিডেন্ট হবে, তা বলা যায় না!

সামনের গাড়ি থেকে তখন একটা মৃতদেহ নামানো হচ্ছে৷ ভদ্রলোক মুখটা ফিরিয়ে নিয়ে বললেন, ইশ, এইসব দৃশ্য আমি একদম দেখতে পারি না৷

আমি বললাম, চলুন, কোনও দোকানে বসে একটু চা খাই৷

উনি বললেন, আমার বড় জরুরি কাজ ছিল—কিন্তু কী আর হবে!

আমার অনুরোধে ভদ্রলোক রাজি হয়ে গেলেন৷ আমি তখন কৌতূহলে ছটফট করছি৷ ভদ্রলোককে বাঙালি বলেই মনে হচ্ছে৷ যদিও অনেক বিহারি পরিষ্কার বাংলা বলতে পারেন৷

নিজের নামটা বলে, ওঁকে নাম জিজ্ঞেস করলাম৷

উনি বললেন, আমার নাম কৃষ্ণচন্দ্র হালদার৷

খাঁটি বাংলা নাম৷ তবু চেহারার এত অসম্ভব মিল কী করে হয়? রিকশাওয়ালাকে আমি ভালো করে না দেখলেও ট্রেনের সেই ডাক্তারের চেহারা আমার স্পষ্ট মনে আছে৷ হুবহু এইরকম৷

—আপনি কি ডাক্তার?

—না তো!

—আপনি কি সমস্তিপুরের দিকে কখনও গিয়েছিলেন?

—সমস্তিপুর? না, যাইনি তো কখনও!

ভদ্রলোক রীতিমতন অবাক হয়ে তাকালেন আমার দিকে৷ তারপর আস্তে-আস্তে বললেন, এ-কথা জিজ্ঞেস করলেন কেন?

—ঠিক অবিকল আপনার মতন চেহারার একজন লোককে আমি আগে দেখেছি৷ একজন নয় দুজন!

কৃষ্ণচন্দ্র হালদার হাসতে আরম্ভ করলেন৷ হাসতে-হাসতেই বললেন, সে কী মশাই! ঠিক আমার মতন চেহারা? তা হয় নাকি!

—আপনার কোনও ভাই-টাই—৷

—আমার তো কোনও ভাই নেই!

কিছুতেই কিছু মিলছে না৷ অথচ আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস, ঠিক এইরকম চেহারার দুজন লোককে আমি আগে দেখেছি৷ প্রত্যেকবারই আমার কোনও বিপদের সময়৷

কাছাকাছি একটা চায়ের দোকানে ঢুকলাম৷ ট্রেনের সেই ডাক্তারটিকে আমি কিছুই শোধ দিতে পারিনি৷ এই ভদ্রলোকও আমাকে বিপদ থেকে বাঁচিয়েছেন৷ এঁকে কিছুটা অন্তত খাতির করা উচিত৷

—কী খাবেন, বলুন?

ভদ্রলোক কিছুই খেতে চান না৷ শুধু এককাপ চা৷ তা হয় না৷ আমি শেষ পর্যন্ত দু-প্লেট স্যান্ডউইচ আর চায়ের অর্ডার দিলাম৷

ভদ্রলোক বললেন, উঃ এইরকম সাংঘাতিক অ্যাকিডেন্ট…এখনও আমার শরীরটা কাঁপছে৷

—এ অ্যাক্সিডেন্টে আমার মরার কথা ছিল৷

—বলবেন না মশাই, ও-কথা বলবেন না৷ আমি এইসব দৃশ্য একদম সইতে পারি না৷

আমি পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করলাম৷ তাতে একটি মাত্র সিগারেট৷

সেটাই বাড়িয়ে দিলাম ভদ্রলোকের দিকে৷ তিনি নিতে গিয়েও হাত সরিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করলেন, একটা রয়েছে যে! আপনার?

আবার আনিয়ে নিচ্ছি৷

—দাঁড়ান, আমি সিগারেট কিনে আনছি৷

—না, না, আপনি বসুন, আমি আনাচ্ছি৷

—আমার নিজেরই কেনা দরকার৷ অনেকক্ষণ ফুরিয়ে গেছে৷

—বেয়ারাকে পাঠালেই তো—৷

—ভদ্রলোক সে-কথা শুনলেন না৷ নিজেই সিগারেট কিনতে বেরিয়ে গেলেন৷ আমি আমার হাতের কাগজপত্রগুলো গুছিয়ে রাখতে লাগলাম৷ ভাগ্যিস, বাজে চিঠিগুলো জানলা দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছিলাম!

বেয়ারা এসে চা আর স্যান্ডউইচ রেখে গেল৷ ভদ্রলোক তো সিগারেট কিনে ফিরলেন না! দোকানের পাশেই তো সিগারেটের দোকান! হয়তো টাকার খুচরো পাচ্ছেন না৷

আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম৷ ভদ্রলোক এলেন না৷ এত দেরি হওয়ার তো কোনও কথাই নয়৷ উঠে গিয়ে দরজার বাইরে উঁকি দিলাম৷ সিগারেটের দোকানের সামনে সেই ভদ্রলোক নেই৷

সেখানে এগিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, মুখে দাড়িওয়ালা একজন লোক এখানে এসেছিলেন একটু আগে?

দোকানদার বলল, না তো!

অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ভদ্রলোককে আর পাওয়া গেল না৷ সেই দু-প্লেট স্যান্ডউইচ আর চা আমাকে একলাই শেষ করতে হল৷

ভদ্রলোক চলে গেলেন কেন? হয়তো খুব জরুরি কোনও কাজের কথা মনে পড়ে গেছে৷ জরুরি কাজের কথা তো বলছিলেনই৷ কাজেই আর-একটা ট্যাক্সি পেয়ে উঠে পড়েছেন৷

কিন্তু আমাকে একবার বলেও গেলেন না?

মনের মধ্যে খটকাটা রয়েই গেল!

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *