৬
বৃহস্পতিবারটা আসলেই আনলাকি ফর রাফিয়া। আজকেও ধরা!
কারণ আজ বৃহস্পতিবার একদম সন্ধ্যাবেলাতেই ধরা খেয়েছে সে। ভয়াবহ রকমের ধরা। অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্টের মতো, অধিক ওস্তাদিতে শিষ্য দুষ্ট অবস্থা হয়েছে ওর। প্যাট্না আসিফ পুরো ঘটনা বুঝে গেছে!
দোষ অবশ্য আমারও একটু আছে। পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেশ খানিকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল আমার নিজেরও। তবে কারণ আছে। প্রথমে বদনা স্যারের প্রাইভেটে যাওয়া। এরপর অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে ছুটি নেয়া। তারপর রিক্সায় করে মূল রাস্তার মোড় পর্যন্ত আসা। সবশেষে সিএনজি-তে বসুন্ধরা। কীভাবে সম্ভব!
ওদিকে রাফিয়া সকাল থেকেই বাসায়। আজ আসেনি প্রাইভেটে। একে তো অসুস্থ, তার ওপর রেকর্ডিং-এর টান টান উত্তেজনা।
উল্টোদিকে প্যাট্না বাবাজিও চূড়ান্ত প্রস্তুত। জায়গামতো পৌঁছে গেছে আমার আগেই। হাজার হোক, ফুলের গন্ধ পেয়ে গেছে ভ্রমরা। ঘুম কি তার আসবে আর?
উপায়ন্তর ছিল-না রাফিয়ার। ঘরে বসে এটা-সেটা গল্প চালানো আর নিজের পায়ে কুড়াল মারা প্রায় সমার্থক ওর জন্য। কারণ যেকোনো সময়ে আমাদের দু’জনের রিলেশন টের পেয়ে যেতে পারে প্যাটনা।
তাই আসামাত্রই সরাসরি স্টুডিও এবং রেকর্ডিং স্টার্ট।
সবকিছুই ঠিক ছিল হয়তো-বা। প্যাট্না হয়তো বুঝত-না কিছুই। আমিও হয়তো পৌঁছেই, সরাসরি ঢুকে পড়তাম ডিরেক্টর’স রুমে।
কিন্তু বাদ সাধল ডিরেক্টরের ওপর হেরোইনের ওস্তাদি। আর সময় না হতেই বাড়তি উত্তেজনা। স্বেচ্ছায় আসিফের ন্যুড ছবি নেবার জন্য বারবার ক্যামেরার দিকে তাকানো এবং নিজেকে লুকানোর চেষ্টা করা।
আসিফকে ক্যামেরার সামনে ন্যুড ধরতে গিয়েই, ধরা খেয়েছে শেষমেষ। ইনফ্রারেডের লাল আলো চোখে লেগেছে প্যাটনা’র। স্বভাবতই সে-ও ন্যালে পে দ্যাহলা, কেজির ওপর দেড়-কেজি। এসব তার অতি পুরাতন খেলা। সুতরাং পুরো খেলা বুঝে নিতে সময় নেয়নি আর। আরামছে ভিন্ন এক্সকিউজ দাঁড় করিয়ে সটকে পড়েছে অতি দ্রুত। শুধু যাবার সময় ইঙ্গিত দিয়ে গেছে, তাকে এমনভাবে ব্ল্যাকমেইল করাটা উচিত হয়নি রাফিয়ার।
কিন্তু এরপরও শেষ রক্ষা হয়নি আমাদের। পড়বি পর মালির ঘাড়েই সে ছিল গাছের আড়েই। ঠিক সিঁড়িতে নামতে গিয়ে দেখা হয়েছে আমার সাথে। এবং ঘটনা বুঝতে আর একমুহূর্তও সময় লাগেনি প্যাটা’র
যথারীতি এভাবেই শেষ-মেষ পুরোপুরি পানিসাৎ আমাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা।