নরক সংকেত – ২৩

২৩

ব্রাসেলস থেকে নতুন ট্রেনে ওঠার পর।

এখন সেই ট্রেন ছুটছে দুরন্ত গতিতে। বাইরের জানলা দিয়ে নিকষ কালো অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না।

রুদ্র খুটখাট ঘেঁটেই চলেছিল ওর ফোন। প্রিয়ম একবার উঁকি মেরে দেখল, উইকিপিডিয়া নয়, পিডিএফ ফাইল খুলে পড়ছে রুদ্র।

প্রিয়ম একবার জিজ্ঞেস করল, ‘কী দেখছ বলো তো?’

রুদ্র ফোনটার দিক থেকে চোখ উঠিয়ে বলল, ‘শুধু আগের এক বছরেই দশ লক্ষেরও বেশি রিফিউজি ইউরোপে প্রবেশ করেছে, তাদের আশ্রয় দিয়েছে বিভিন্ন ইউরোপীয় দেশ। আন্তর্জাতিক মাইগ্রেশন সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, এদের মধ্যে অধিকাংশই এসেছে সমুদ্রপথে। তবে কিছু শরণার্থী প্রাণের দায়ে হাজার হাজার মাইল পেরিয়েও এসেছে। এখনো আসছে। টার্কি আলবেনিয়া এইসব দেশের মধ্য দিয়ে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে হেঁটে আসছে।’

প্রিয়ম বলল, ‘সিরিয়ার লোকেদের নিয়ে আবার হঠাৎ পড়লে কেন! কথা তো হচ্ছিল, ড শ্যুমাখারের ডায়েরি নিয়ে।’

রুদ্র মাথা নাড়ল, ‘সিরিয়ার লোক শুধু নয়। এরা সবাই যে শুধু সিরিয়া থেকেই আসছে তা নয়। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ তো এখন মোটামুটি থিতিয়ে এসেছে, পুরো দামাস্কাস শহরটাই প্রায় পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। ধ্বংস করার জন্য আর কিছুই তেমন নেই ওখানে। কিন্তু আফগানিস্তান আর ইরাকে দিনের পর দিন হিংসা বেড়ে চলেছে, তার পাশেই এরিট্রিয়াতেও সন্ত্রাসবাদীদের অত্যাচার চরমে উঠেছে, কসোভ বলে ছোট্ট দেশটায় তো দারিদ্র সীমা ছড়াচ্ছে। এরাও উপায়ান্তর না দেখে কষ্ট করে হোক, আইনি বা বেআইনি পথে হোক, চলে আসছে ইউরোপে।’ রুদ্র একটা বড়ো নিশ্বাস ফেলল, ‘ইউরোপ যেন একটা ইউটোপিয়া। সব পেয়েছির দেশ, একবার ঢুকে পড়তে পারলেই হল, বড়োলোক দেশগুলো ঠিক জায়গা দেবে তাদের, তারপর আস্তে আস্তে তারাও সব কষ্ট কাটিয়ে একজন সফিস্টিকেটেড ইউরোপিয়ান হয়ে উঠবে। ইউরোপের সব দেশগুলোই এইসব শরণার্থীদের জায়গা দিয়ে চলেছে, আন্তর্জাতিক মহলে নাম খারাপ করতে রাজি নয় কেউ। কিন্তু তাদের আইনমাফিক প্রসেসের বাইরেও লক্ষ লক্ষ অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়ছে প্রতিনিয়ত। আর এদের পছন্দের দেশের মধ্যে একনম্বরে রয়েছে জার্মানি।’

প্রিয়ম বলল, ‘লক্ষ লক্ষ?’

রুদ্র বলল, ‘আগের এক বছরে সরকারি খাতায়—কলমে প্রায় পাঁচ লক্ষ রিফিউজিদের জার্মানি আশ্রয় দিলেও বেআইনিভাবে ঢুকে পড়েছে দশ লক্ষেরও বেশি। ওদিকে টার্কি থেকে গ্রিসের ছোটো ছোটো দ্বীপ, যেমন কস, সামস, চিওস এইসব আইল্যান্ডগুলোর দূরত্ব কম বলে অনেকে ছোটো ছোটো নৌকো করেও পাড়ি জমাচ্ছে গ্রিসে।’

প্রিয়ম বলল, ‘নৌকো করে গ্রিসে চলে যাচ্ছে? বাহ, বেশ মজা তো! সেই আগেকার দিনের অ্যাডভেঞ্চার নভেলগুলোর মতো।’

রুদ্র বলল, ‘শুনতে সোজা মনে হলেও এদের যাত্রাটা মজার তো নয়ই, বরং যথেষ্ট বিপজ্জনক। গত দু—বছরে আফ্রিকার উত্তর অঞ্চল থেকে ইটালি আসতে গিয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা পড়েছে, টার্কি থেকে গ্রিস আসার সমুদ্রপথেও প্রাণ হারিয়েছে প্রচুর মানুষ। তবু, বেঁচে থাকার লোভ বড়ো বালাই! লিবিয়ার একটা জাহাজ তো আটশো মানুষকে নিয়ে আগের মাসেই ডুবে গেল সমুদ্রে। নিজের ক্ষমতার তুলনায় অতিরিক্ত মানুষের লোড সামলাতে পারেনি জাহাজটা। ইস। কী প্যাথেটিক বলো তো! নিজের দেশের অত্যাচার থেকে বাঁচতে গিয়ে শেষ অবধি জলে ডুবে মরতে হল তাদের।’

প্রিয়ম একের পর এক স্যান্ডউইচ খেয়ে চলেছিল। এতক্ষণের খিদেটা এখন যেন ওর একসঙ্গে পেয়েছে। তিনটে পরপর স্যান্ডউইচ খেয়ে, জল খেয়ে ও জিজ্ঞেস করল, ‘বুঝলাম। কিন্তু তুমি ওই কথাটা শেষ করলে না। এটা কী করে বলছ যে আমরা চাইলেও ড শ্যুমাখার ডায়েরিটা দেখাবেন না? ডায়েরিটা তো ওঁর কাছেই আছে!’

রুদ্র যেন বাস্তবে ফিরে এল, হেসে বলল, ‘তোমার সমস্যা হচ্ছে, তুমি সবার সব কথা বিশ্বাস করে নাও। জিজ্ঞেস করে দ্যাখো না, দেখাতে পারেন কিনা? আর দেখাতে পারলেও সেটা হবে জাল। কারণ,’ ও একমুহূর্তের জন্য থামল, ‘ওরকম কোনো ডায়েরির অস্তিত্বই নেই।’

প্রিয়ম হতভম্ব হয়ে গেল, ‘সে আবার কী!’

রুদ্র বলল, ‘বিশ্বাস করতে পারছ না, তাই তো?’ কথাটা বলে ও ওর হ্যান্ডব্যাগটা খুলে একটা ভাঁজ করা খবরের কাগজ মেলে ধরল প্রিয়মের সামনে।

প্রিয়ম খবরের কাগজটা নিয়ে বলল, ‘আরে, এটা তো কাল আমিই তোমাকে দেখালাম, ওই কিংস্টনে মার্ডার হয়েছে।’

রুদ্র বলল, ‘ওটা নয়, ওর একটু নীচের খবরটা পড়েছিলে?’

প্রিয়ম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ কাগজের নীচের দিকে তাকাল। নীচের অংশটুকু বিজ্ঞানভিত্তিক খবরের জন্য রিজার্ভড। দু—একটা খুচরো খবর ছাড়া আরেকটা যে খবরে ওর চোখ আটকাল, সেটার হেডলাইন হল, ‘দু—সপ্তাহ কেটে গেল, কিন্তু এখনও নেগেটিভ চুরির কিনারা হল না।’

ও রুদ্রর দিকে তাকাতে রুদ্র ইশারায় বলল ওই খবরটাই। প্রিয়ম পড়তে শুরু করল।

‘যদিও জার্মান চ্যান্সেলর স্বয়ং এই তদন্তের ব্যাপারে জোর দিয়েছেন, তবু বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও প্রায় একশো বছরের পুরোনো সেই কুখ্যাত নাতসি বাহিনীর তথ্যসমৃদ্ধ ঐতিহাসিক নেগেটিভগুলোর চুরি এবং ক্যাসপার ফটোগ্রাফি স্টুডিয়োর ওই সিকিউরিটি গার্ড খুনের কিনারা করতে পারল না জার্মান পুলিশ। প্রায় এক মাস আগে আইসল্যান্ডের ভাটনাজুকল হিমবাহ অঞ্চলে একদল জার্মান অভিযাত্রী এক্সপিডিশনে গিয়ে একটা পরিত্যক্ত এক্সপ্লোরেশন কটেজের মধ্যে পুরু বরফের স্তরে লুকিয়ে রাখা এক অত্যাশ্চর্য জিনিস আবিষ্কার করেন। একটা ছোটো কালো বাক্স, তার মধ্যে ছিল বারোটি সেলুলোজ নাইট্রেটের নেগেটিভ। নেগেটিভগুলো স্বাভাবিকভাবেই খুব ভালো অবস্থায় ছিল না, কিন্তু ওই এক্সপিডিশন টিমটি তাঁদের দেশে ফিরে বার্লিনের বিখ্যাত ক্যাসপার ফটোগ্রাফি স্টুডিয়োর সঙ্গে যোগাযোগ করলে ওই স্টুডিয়োর কিছু অভিজ্ঞ ফটোগ্রাফি কনজারভেটর অত্যন্ত কর্মদক্ষতার সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা ধরে প্রথম দুটি নেগেটিভ রেসটোর করতে সক্ষম হন। ফটো হিসেবে সে—দুটো দেখার সঙ্গে সঙ্গে আলোড়ন সৃষ্টি হয় কারণ, ছবি দুটি ছিল জার্মান স্বৈরাচারী একনায়ক অ্যাডলফ হিটলারের, সঙ্গে আরও দুজন ব্যক্তি, যার মধ্যে একজন নাতসি যুগের কুখ্যাত শাসক ভিক্টর ব্র্যাক। অনুমান করা হচ্ছে ওই সময়ের কোনো অভিযাত্রী ওই বাক্সটাকে ইউরোপের বৃহত্তম হিমবাহ ভাটনাজুকল অঞ্চলে এইভাবে লুকিয়ে রেখে আসেন কোনো এক অজ্ঞাত কারণে। অন্য নেগেটিভগুলোকেও রেসটোর করা হয়, কিন্তু সেগুলি দেখার আগেই রহস্যজনকভাবে সেই রাতে ওই স্টুডিয়োর ল্যাব থেকে খোয়া যায় এবং স্টুডিয়োর রাতের পাহারায় থাকা গার্ডের ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার হয়। জার্মান পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এখনও তাতে কোনো অগ্রগতি হয়নি বলে তাদের দাবি। বিরোধী দল পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে গতকাল জার্মানির পার্লামেন্টে বিক্ষোভও জানায়।’

প্রিয়ম পুরোটা পড়ে রুদ্রর দিকে হাঁ করে তাকাল, বিস্ফারিত চোখে বলল, ‘মানেটা কী! হিটলারের ছবি!’

‘মানেটা এটাই যে,’ রুদ্র ট্রেন অথরিটির দিয়ে যাওয়া কম্বলগুলো প্যাকেট থেকে খুলে ব্যর্থ দুটোয় রাখছিল, ‘উনি আমাকে বড্ড বোকা ভেবেছিলেন। ভেবেছিলেন যা হোক কিছু একটা টুপি পরিয়ে আমার কাছ থেকে এই ফটোগুলোর লেখার মানেটা উদ্ধার করে নেবেন। তাই ওই পন্ডিচেরির দাদুর গল্প ফেঁদেছিলেন। ইনফ্যাক্ট আমি গল্পটা খেয়েও নিতাম যদি না এই ডাউটগুলো আমার মাথায় স্ট্রাইক করত, আর টেলিপ্যাথিকালি এই খবরটা আমার চোখে না পড়ত।’

প্রিয়ম এখনও ব্যাপারটা হজম করতে পারছিল না, ‘মানে, ড শ্যুমাখার ওই ফটোল্যাব থেকে চুরি করেছেন জিনিসটা?’

রুদ্র একটা হাই তুলে একদিকের বার্থে শুয়ে পড়তে পড়তে বলল, ‘সেটা উনি নিজে চুরি করেছেন, না কেউ করে নিয়ে এসে ওঁকে দিয়েছে সেটা তো এখনও বুঝতে পারছি না। তবে উনি যে এই ব্যাপারটার সঙ্গে যুক্ত, এটা আমি কনফার্মড, না হলে ওই গল্পটা ফাঁদতেন না। কাল ওই লোকটা চলে যাওয়ার পর দুপুরে লাঞ্চ করে আমি ওঁর ক্লিনিকেও গিয়েছিলাম।’

প্রিয়মের বিস্ময় উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছিল, ‘সেটা তুমি আমাকে জানাও পর্যন্ত নি! তারপর?’

‘জানাইনি তার কারণ তুমি ড শ্যুমাখারকে যে বলে ফেলবে না, সেটা আমি বুঝতে পারছিলাম না। আমার নিজের কাছেই নিজের অনেকগুলো প্রশ্ন ছিল।’

প্রিয়ম বলল, ‘গিয়ে দেখা করলে?’

রুদ্র এবার আরও একটা বড়ো হাই তুলল, ‘নাহ! উনি ছিলেন না। গিয়ে ফিরে এলাম। নাও শুয়ে পড়ো। কাল সকালে উঠতে হবে। আপাতত বার্লিন শহরে গিয়ে সত্যিটা বের করা আর তারপর উলটোপালটা কিছু দেখলে পুলিশ স্টেশন অবধি নিরাপদে এটাকে নিয়ে যাওয়াটাই আমার লক্ষ্য।’

প্রিয়ম তবু থ হয়ে দাঁড়িয়ে রইল কিছুক্ষণ, তারপর রুদ্র আর দু—তিনবার তাড়া দেওয়ায় চুপচাপ ওপাশের বার্থে শুয়ে পড়ল।

শুয়ে পড়েও কিছুক্ষণ বাদে আবার চোখ পিটপিট করে উঠল, ‘আচ্ছা, ওই ছবিগুলোই যদি এগুলো হয়, তবে তো বারোটা থাকার কথা, কিন্তু তোমার কাছে দশটা রয়েছে কেন?’

রুদ্র বলল, ‘এর কারণ একটাই হতে পারে, বাকি দুটো আমাকে দেওয়া হয়নি।’

প্রিয়ম বলল, ‘কেন?’

রুদ্র বলল, ‘নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে না দেওয়ার। তুমি এখন ঘুমোও তো।’

কিন্তু আলো নিভিয়ে দেওয়ার পর অনেকক্ষণ রুদ্রর নিজেরই ঘুম এল না। এখানকার ট্রেনগুলোর টেকনোলজি এতটাই ডেভেলপড, চলছে বোঝাই যায় না, সামান্যটুকুও ঝাঁকুনি নেই। হালকা একটা নীলচে আলো ছড়িয়ে রয়েছে গোটা ক্যুপটায়।

ওর বার্থের দেওয়ালে একটা খুব সুন্দর স্থাপত্যের ছবি, অনেকটা গ্রিসের পার্থেনন স্টাইলের, কিংবা কলকাতার প্রিন্সেপঘাটের মতো, বড়ো বড়ো থামগুলো একটা গেট, তার ওপরে চারটে ছুটন্ত ঘোড়া, তাদের চালনা করছে এক অশ্বারোহী। মোবাইলের আলো জ্বেলে নীচে নামটা পড়ল ও, ব্র্যান্ডেনবার্গ গেট, বার্লিন। কোনো কিছু নতুন নাম বা জিনিসের কথা শুনলেই সেটাকে সঙ্গে সঙ্গে গুগল করাটা এখন ওর প্রায় ম্যানিয়ায় পরিণত হয়েছে।

মনের মধ্যে অনেক জট, অনেক প্রশ্ন কিলবিল করছে, তবু তার মধ্যে অন্ধকার বার্থে শুয়ে থেকে ও হিটলার এবং ভিক্টর ব্র্যাক সম্পর্কে কিছুক্ষণ ঘাঁটাঘাঁটি করল। কাল বাবার সঙ্গে কথা বলার সময় হিটলার সম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানা গেল। তবে হিটলারের আত্মজীবনী মেইন ক্যাম্ফ তো ও স্কুলে থাকার সময়েই পড়েছে, বাবাই কিনে দিয়েছিলেন এইট না নাইনে পড়ার সময়।

হিটলারের নিজের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লেখা সেই বই। পড়লে বোঝা যায় কী অদ্ভুত পাশবিক ছিল লোকটা। এমনকী, ব্রিটিশদের ভারতকে পরাধীন করে রাখাটাও যে একদম ঠিক কাজ, ভারতবর্ষের মতো দেশকে পরাধীনই রাখা উচিত, সেটাও লেখা ছিল তাতে।

ওই বয়সে পড়ে ভীষণ রাগও হয়েছিল ওর।

এই নাতসি যুগের নৃশংসতা ও আগেও বিভিন্ন আর্টিকলে পড়েছে। আজ বাবার কথামতো কয়েকটা বইয়ের পিডিএফ—ও পড়ল ফোনে। উফ, মানুষই এমন নিষ্ঠুর হতে পারে। হিটলারের আমলে ‘অ্যাকশন টি ফোর’ বলে একটা প্রোগ্রাম শুরু করা হয়েছিল, যার প্রধান হিসেবে ভিক্টর ব্র্যাকের আদেশে মেরে ফেলা হয়েছিল সত্তর হাজারেরও বেশি অসুস্থ মানুষকে, কেননা তারা অসুস্থ বলে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার তাদের নেই। শুধুমাত্র ইহুদি, এই অপরাধে বিষাক্ত গ্যাস চেম্বারে ঢুকিয়ে মারা হয়েছিল ষাট লক্ষেরও বেশি মানুষকে। একটু আগে পড়া তথ্যগুলো মনে করতে করতে নিজের মনেই শিউরে উঠছিল রুদ্র।

ঘণ্টাখানেক পরে ঘুমোনোর আগে শেষবারের জন্য ও ফেসবুকটা খুলল।

ড শ্যুমাখারের প্রোফাইলটা প্রথমেই চোখে পড়ল ওর। এখনকার দিনে একটা মানুষের ফেসবুক বা অন্য কোনো সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্রোফাইল ভালো করে খুঁটিয়ে দেখলেও তার সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়। ভদ্রলোকের ডিটেইলস, অ্যালবাম, লাইফ ইভেন্ট দেখতে দেখতে ও কেমন যেন চমকে উঠল।

ক্যুপের ওপাশে একজন মানুষ অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রেন চলতে শুরু করার পর, ডিনার সেরেও অনেকে বাইরে বেরোয়, সেই অপেক্ষায় হয়তো। কিন্তু দু—ঘণ্টা পরেও যখন কেউ বেরোল না, দুটো কম্পার্টমেন্টের মাঝখানের ভেস্টিবিউল দিয়ে সন্তর্পণে অন্য কামরায় চলে গেল সে, অধৈর্য অথচ চাপা গলায় ফোনে কথা বলতে বলতে।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *