দেশপ্রেমিক – অ্যামব্রোস বিয়ার্স
সম্রাট আম দরবারে বসেছেন। এমন সময়ে সেই প্রতিভাধর দেশপ্রেমিক পকেট থেকে কাগজ বার করে বললেন– সম্রাট, আপনি শুনে খুশি হবেন যে, আমার কাছে এমন এক ফরমুলা আছে যার ফলে এমন ধাতব চাদর তৈরি হবে যেটাকে কোনও কামানের গোলা বিদীর্ণ করতে পারবে না। এমন সব প্লেটগুলো যদি রাজকীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজে লাগানো হয়, তাহলে আপনার যুদ্ধজাহাজ দুর্ভেদ্য হয়ে উঠবে অর্থাৎ অজেয় হবে। আপনার মন্ত্রীর রিপোর্টও আছে… ওঁর মতে এই আবিষ্কার অতীব প্রয়োজনীয়। দশ লক্ষ মুদ্রার বিনিময়ে আমি এই ফরমুলা আপনাকে দিতে পারি।
কাগজগুলো সরেজমিনে দেখার পর সম্রাট মন্ত্রীকে এগুলি রাখতে দিলেন এবং অর্থমন্ত্রীকে প্রার্থিত মুদ্রা দিয়ে দেবার আদেশ দিলেন।
এরপর দেশপ্রেমিক পকেট থেকে আরও একটি কাগজ বার করে বললেন– সম্রাট এই কাগজে এমন এক কামানের নক্সা আছে যা ওই অজেয় প্লেটটাকে বিদীর্ণ করতে পারবে… এটাও আমারই আবিষ্কার। আপনার ভ্রাতা ব্যাঙ্গের সম্রাট নিজেই কিনে নেবার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু আপনার প্রতি আমার আনুগত্যই আমাকে বাধা দিল। আপনাকেই আমি এটা দিতে চাই। এটার মূল্যও একলক্ষ মুদ্রা।
এই মুদ্রা পাবার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আর এক পকেট থেকে আর একটা কাগজ বার করলেন দেশপ্রেমিক।
–সম্রাট, ওই কামানের গোলার হাত থেকেও ধাতব চাদর আরও দুর্ভেদ্য করে তোলা যায় যদি আমার এই ফরমুলা অনুযায়ী সেই ধাতব চাদরকে…
কথা শেষ হবার আগেই ইশারায় সেনাপতিকে ডাক দেন সম্রাট।
এই লোকটির সব পকেট খোঁজো আর গুনে বলো মোট ক-টা এর পকেটে আছে।
–তেতাল্লিশ স্যার। সর্বাঙ্গ অনুসন্ধান করে সেনাপতি উত্তর দিল।
–সম্রাট, বিয়াল্লিশটা হবে… একটাতে শুধু চুরুট আছে। দেশপ্রেমিকের কণ্ঠস্বরে আতঙ্কের ছাপ! –দু’পায়ে গোড়ালি বেঁধে মাথা নিচু করে শূন্যে ঝুলিয়ে দাও একে… তারপরে দাও জোরে জোরে ঝাঁকানি। হ্যাঁ, ওকে বিয়াল্লিশ লক্ষ মুদ্রার চেকটাও দিয়ে দিও। তারপর ওকে শূলে চড়াও। রাজ্যময় ঘোষণা করে দাও যে, উদ্ভাবনী দক্ষতা এক জঘন্য অপরাধ… শাস্তি মৃত্যুদণ্ড!