দেনা-পাওনা – ০৬

ছয়

সন্ধান করিয়া রান্নাঘর হইতে যখন ষোড়শী বোতলের জল গরম করিয়া আনিয়া উপস্থিত করিল, তখনও লোকজন কেহ ফিরিয়া আসে নাই। জীবানন্দ তেমনি উপুড় হইয়া পড়িয়া। সে পদশব্দে মুখ তুলিয়া চাহিয়া বলিল, তুমি? ডাক্তার আসেনি?

ষোড়শী কহিল, এখনও ত তাদের আসবার সময় হয়নি। বলিয়া সে হাতের বোতল দু’টা শয্যার একধারে রাখিয়া দিল।

জীবানন্দ কথাটাকে ঠিক যেন বিশ্বাস করিতে পারিল না; কহিল, এখনও আসবার সময় হয়নি? ডাক্তার কতদূরে থাকেন জানো?

ষোড়শী কহিল, জানি, কিন্তু পনর মিনিটের মধ্যেই কি আসা যায়?

জীবানন্দ নিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিল, সবে পনর মিনিট? আমি ভেবেছি দু’ঘণ্টা তিন ঘণ্টা, কি আরও কতক্ষণ যেন এককড়ি তাঁকে আনতে গেছে। হয়ত তিনিও ভয়ে এখানে আসবেন না অলকা! বলিয়া সে চুপ করিয়া আবার উপুড় হইয়া শুইল। তাঁর কণ্ঠস্বরে এবং চোখের দৃষ্টিতে ব্যাকুল নিরাশ্বাসের কোথাও যেন আর শেষ রহিল না।

ষোড়শী ক্ষণকাল মৌন থাকিয়া স্নিগ্ধস্বরে কহিল, ডাক্তার আসবেন বৈ কি। গরম জলের বোতল ততক্ষণ কেন টেনে নিন না?

জীবানন্দ তেমনিভাবেই মাথা নাড়িয়া বলিল, না, ও থাক। ওতে আমার কিছু হয় না, কেবল কষ্ট বাড়ে।

ষোড়শী সহসা কোন প্রতিবাদ করিল না। এই উপায়হীন রোগগ্রস্ত লোকটির মুখ হইতে তাহার নিজের শিশুকালের নামটা এতক্ষণ পরে যেন এই প্রথম তাহার কানে কানে গুন্‌গুন্‌ করিয়া কি একটা অজানা রহস্যের অর্থ বলিবার চেষ্টা করিতে লাগিল। বোধ হয় ইহাতেই মগ্ন হইয়া সে নিজের ও পরের, সুমুখের ও পশ্চাতের সমস্তই ভুলিয়া গিয়া অভিভূতের ন্যায় দাঁড়াইয়া ছিল, হঠাৎ জীবানন্দের প্রশ্নেই তাহার হুঁশ হইল।

অলকা!

নামটাকে আর সে উপেক্ষা করিতে পারিল না। কহিল, আজ্ঞে?

জীবানন্দ বলিল, এখনও সময় হয়নি? হয়ত তিনি আসবেন না, হয়ত কোথাও চলে গেছেন।

ষোড়শী কহিল, আমি নিশ্চয় জানি, তিনি আসিবেন—তিনি কোথাও যাননি।

বাড়িতে কেউ কি এখনও ফিরে আসেনি?

ষোড়শী বলিল, না।

জীবানন্দ একমুহূর্ত চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, বোধ হয় তারা আর আসবে না, বোধ হয় এককড়িও একটা ছল করে চলে গেল।

ষোড়শী মৌন হইয়া রহিল। জীবানন্দ নিজেও বোধ হয় একটা ব্যথা সামলাইয়া লইয়া একটু পরেই বলিল, সবাই গেছে, তারা যেতে পারে—কেবল তোমারই যাওয়া হবে না।

কেন?

বোধ করি আমি বাঁচব না—তাই। আমার নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে, মনে হচ্চে, পৃথিবীতে আর বুঝি হাওয়া নেই।
আপনার কি বড্ড কষ্ট হচ্ছে?

হুঁ। অলকা, আমাকে মাপ কর।

ষোড়শী নির্বাক হইয়া রহিল। জীবানন্দ একটু থামিয়া পুনরায় কহিল, আমি ঠাকুর-দেবতা মানিনে, দরকারও হয় না; কিন্তু একটু আগেই মনে মনে ভাবছিলুম। জীবনে অনেক পাপ করেচি, তার আর আদি-অবধি নেই। আজ থেকে থেকে কেবলি মনে হচ্চে বুঝি সব দেনা মাথায় নিয়ে যেতে হবে।

ষোড়শী তেমনি নীরবেই দাঁড়াইয়া রহিল। জীবানন্দ কহিল, মানুষ অমরও নয়, মৃত্যুর বয়সও কেউ দাগ দিয়ে রাখেনি, কিন্তু এই যন্ত্রণা আর সইতে পারচি নে—উঃ—মাগো! বলিতে বলিতে তাহার সর্বশরীর ব্যাটার অসহ্য তীব্রতায় যেন কুঞ্চিত হইয়া উঠিল।

ষোড়শী চাহিয়া দেখিল তাহার কেবল দেহই নয়, কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম দিয়াছে এবং বিবর্ণমুখে দুই নিমীলিত চক্ষের নীচে রক্তহীন ওষ্ঠাধর একটা অত্যন্ত কঠিন রেখায় সংবদ্ধ হইয়া গেছে।

পলকের জন্য কি একটা সে ভাবিয়া লইল, বোধ হয় একবার একটু দ্বিধাও করিল; তার পরে এই পীড়িতের শয্যায় হতভাগ্যের পার্শ্বে গিয়া উপবেশন করিল। গরম জলের বোতল-দু’টা সাবধানে তাহার পেটের কাছে টানিয়া দিতে জীবানন্দ কেবল ক্ষণিকের জন্য একবার চোখ মেলিয়াই আবার মুদ্রিত করিল। ষোড়শী আঁচল দিয়া তাহার ললাটের স্বেদ মুছাইয়া দিল, এবং হাতপাখার অভাবে সেই অঞ্চলটাই জড় করিয়া ধীরে ধীরে বাতাস করিতে লাগিল।

জীবানন্দ কোন কথা কহিল না, কেবল তাহার ডান হাতটা ধীরে ধীরে তুলিয়া ষোড়শীর ক্রোড়ের উপর রাখিয়া নিঃশব্দে পড়িয়া রহিল।

মিনিট দশ-পনর এমনি নীরবে কাটিবার পরে জীবানন্দই প্রথমে কথা কহিল। ডাকিল, অলকা!

ষোড়শী কহিল, আপনি আমাকে ষোড়শী বলে ডাকবেন।

আর কি অলকা হতে পারো না?

না।

কোনদিন কোন কারণেই কি—

আপনি অন্য কথা বলুন।

কিন্তু অন্য কথা জীবানন্দের মুখ দিয়া আর বাহির হইল না, শুধু নিবারিত দীর্ঘশ্বাসের শেষ বাতাসটুকু তাহার বক্ষের সম্মুখটাকে ঈষৎ বিস্ফারিত করিয়া দিয়া শূন্যে মিলাইল।

মিনিট দুই-তিন পরে ষোড়শী মৃদুকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিল, আপনার কষ্টটা কিছুই কমেনি?

জীবানন্দ ঘাড় নাড়িয়া বলিল, বোধ হয় একটু কমেচে। আচ্ছা, যদি বাঁচি, তোমার কি কোন উপকার করতে পারিনে?

ষোড়শী বলিল, না, আমি সন্ন্যাসিনী—আমার নিজের কোনও উপকার করাই কারও সম্ভব নয়।

জীবানন্দ কিছুক্ষণ স্থির থাকিয়া হঠাৎ বলিয়া উঠিল, আচ্ছা, এমন কিছুই কি নেই, যাতে সন্ন্যাসিনীও খুশী হয়?

ষোড়শী কহিল, তা হয়ত আছে, কিন্তু সেজন্য কেন আপনি ব্যস্ত হচ্ছেন?
জীবানন্দ এইবার একটুখানি ক্ষীণ হাসি হাসিয়া কহিল, আমার ঢের দোষ আছে, কিন্তু পরের উপকার করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি, এ দোষ আজও কেউ আমাকে দেয়নি। তা ছাড়া এখন বলচি বলেই যে ভাল হয়েও বলবো, তারও কোন নিশ্চয়তা নেই—এমনই বটে! এমনই বটে! সারাজীবনে এ ছাড়া আর আমার কিছুই বোধ হয় নেই।

ষোড়শী নীরবে আর একবার তাহার কপালের ঘাম মুছাইয়া দিল। জীবানন্দ হঠাৎ সেই হাতটা ধরিয়া ফেলিয়া কহিল, সন্ন্যাসিনীর কি সুখদুঃখ নেই? সে খুশী হয়, পৃথিবীতে এমন কি কিছুই নেই?

ষোড়শী বলিল, কিন্তু সে ত আপনার হাতের মধ্যে নয়!

জীবানন্দ বলিল, যা মানুষের হাতের মধ্যে? তেমন কিছু?

ষোড়শী বলিল, তাও আছে, কিন্তু ভাল হয়ে যদি কখনো জিজ্ঞাসা করেন, তখনই জানাবো।

তাহার হাতটাকে জীবানন্দ সহসা বুকের কাছে টানিয়া আনিয়া বার বার মাথা নাড়িয়া কহিল, না না, আর ভাল হয়ে নয়—এই কঠিন অসুখের মধ্যে আমাকে বল! মানুষকে অনেক দুঃখ দিয়েচি, আজ নিজের ব্যথার মধ্যে পরের ব্যথা, পরের আশার কথাটা একটু শুনে নিই। নিজের দুঃখটার আজ একটা সদ্গতি হোক।

ষোড়শী আপনার হাতটাকে ধীরে ধীরে মুক্ত করিয়া লইয়া স্থির হইয়া বসিয়া রহিল। জীবানন্দ নিজেও মিনিট-খানেক স্থিরভাবে থাকিয়া কহিল, বেশ তাই হোক, সকলের মত আমিও তোমাকে আজ থেকে ষোড়শী বলেই ডাকব। কাল থেকে আজ পর্যন্ত আমি এত যন্ত্রণার মধ্যেও মাঝে মাঝে অনেক কথাই ভেবেচি। বোধ হয় তোমার কথাটাই বেশী। আমি বেঁচে গেলুম, কিন্তু তোমার যে এখানে—

ষোড়শী তাড়াতাড়ি বলিয়া উঠিল, কিন্তু আমার কথা থাক।

জীবানন্দ বাধা পাইয়া ক্ষণকাল নীরব থাকিয়া আস্তে আস্তে বলিল, আমি বুঝেচি ষোড়শী! তোমার জন্যে আমি ভাবি এও আর তুমি চাও না। এমনিই হওয়া উচিত বটে! বলিয়া সে একটা নিশ্বাস ফেলিয়া চুপ করিয়া রহিল।

ষোড়শী বিছানা ছাড়িয়া উঠিয়া দাঁড়াইল। জীবানন্দ চোখ মেলিয়া কহিল, তুমিও চললে?

ষোড়শী ঘাড় নাড়িয়া বলিল, না। ঘরটা ভারী নোংরা হয়ে রয়েচে, একটু পরিষ্কার করে ফেলি। বলিয়া সে সম্মতির জন্য অপেক্ষা না করিয়াই গৃহকার্যে নিযুক্ত হইল। ঘরের অধিকাংশ জানালা-দরজাই এ পর্যন্ত খোলা হয় নাই; বিস্তর টানাটানি করিয়া সেগুলি খুলিয়া ফেলিতেই উন্মুক্ত আকাশ দিয়া একমুহুর্তে আলো ও বাতাসে ঘর ভরিয়া গেল; মেঝের উপর আবর্জনার রাশি নানাস্থানে প্রতিদিন স্তূপাকার হইয়া উঠিয়াছিল, একটা ঝাঁটা সন্ধান করিয়া আনিয়া ষোড়শী সমুদয় পরিষ্কার করিয়া ফেলিল, এবং অঞ্চল দিয়া বিছানাটা ঝাড়িয়া ফেলিয়া বালিশ-দু’টা যখন যথাস্থানে গুছাইয়া দিল, তখনও, জীবানন্দ একটা কথা কহিল না, কেবল তাহার মলিন মুখের উপর একটা স্নিগ্ধ আলোক যেন কোথা হইতে আসিয়া ধীরে ধীরে স্থিতি লাভ করিতেছিল। ষোড়শী কাজ করিতেছিল, সে শুধু দুই চক্ষু মেলিয়া তাহাকে নীরবে অনুসরণ করিতেছিল, যেন শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা কি, সমস্ত বেদনা ভুলিয়া সে সংসারের সর্বোত্তম বিস্ময়ের মত জীবনে এই প্রথম দেখিতেছিল।
সহসা বাহিরে অনেকগুলা পদশব্দ শুনিয়া ষোড়শী ঝাঁটাটা রাখিয়া দিয়া সোজা হইয়া দাঁড়াইল। এককড়ি দ্বারের কাছে মুখ বাহির করিয়া বলিল, ডাক্তারবাবু এসেচেন।

ষোড়শী কহিল, তাঁকে নিয়ে এস। বলিয়া সে তাহার পূর্বস্থানে গিয়া উপবেশন করিল।

পরক্ষণেই যে চিকিৎসকের হাতযশ এ অঞ্চলে অত্যন্ত প্রসিদ্ধ, সেই বল্লভ ডাক্তার আসিয়া ঘরে প্রবেশ করিলেন এবং ষোড়শীকে এখানে এভাবে দেখিয়া তিনি একেবারে আশ্চর্য হইয়া গেলেন।

এককড়ি অঙ্গুলিনির্দেশ করিয়া কহিল, ঐ যে হুজুর। যদি ভাল করতে পারেন ডাক্তারবাবু, বকশিশের কথা ছেড়েই দিন—আমরা সবাই আপনার কেনা হয়ে থাকব।

ডাক্তার নীরবে আসিয়া শয্যাপ্রান্তে উপস্থিত হইলেন, এবং পকেট হইতে কাঠের চোঙ্গাটা বাহির করিয়া বিনা-বাক্যব্যয়ে রোগ পরীক্ষা করিতে নিযুক্ত হইলেন। বিস্তর ঘষামাজা করিয়া তিনি বেশ বড় ডাক্তারের মতই রায় দিলেন—অত্যাচার করিয়া রোগ জন্মিয়াছে, সাবধান না হইলে প্লীহা কিংবা লিভার পাকা অসম্ভব নয় এবং তাহাতে ভয়ের কথাও আছে। কিন্তু সাবধান হইলে নাও পাকিতে পারে, এবং তাহাতে ভয়ও কম। তবে একথা নিশ্চয় যে ঔষধ খাওয়া আবশ্যক।

জীবানন্দ প্রশ্ন করিলেন, এ অবস্থায় কলকাতায় যাওয়া সম্ভব কিনা বলতে পারেন?

ডাক্তার কহিলেন, যদি যেতে পারেন, তা হলে সম্ভব, নইলে কিছুতেই সম্ভব নয়।

জীবানন্দ পুনশ্চ জিজ্ঞাসা করিলেন, এখানে থাকলে ভাল হবে কি না বলতে পারেন?

ডাক্তার অত্যন্ত বিজ্ঞের মত মাথা নাড়িয়া জবাব দিলেন, আজ্ঞে না হুজুর, তা বলতে পারিনে। তবে, এ কথা নিশ্চয় যে, এখানে থাকলে ভাল হতে পারেন, আবার কলকাতা গিয়ে ভাল নাও হতে পারেন।

জীবানন্দ মনে মনে বিরক্ত হইয়া আর দ্বিতীয় প্রশ্ন করিলেন না। ডাক্তার ঔষধের জন্য লোক পাঠাইবার ইঙ্গিত করিয়া উপযুক্ত দর্শনী লইয়া বিদায় গ্রহণ করিলেন। এককড়ি তাঁহাকে সঙ্গে করিয়া দ্বারের বাহিরে পর্যন্ত আসিয়া ফিরিয়া গেলে জীবানন্দ তাহার মুখের প্রতি চাহিয়া কহিলেন, কি হবে এককড়ি?

এককড়ি সাহস দিয়া বলিল, ভয় কি হুজুর, ওষুধ এলো বলে। বল্লভ ডাক্তারের একশিশি মিক্সচার খেলেই সব ভাল হয়ে যাবে।
জীবানন্দ মাথা নাড়িয়া বলিলেন, না এককড়ি, তোমাদের বল্লভের মিক্সচার তোমাদেরই থাক, আমাকে তুমি কেবল কলকাতা যাবার একটা বন্দোবস্ত আজই করে দাও। এই বলিয়া তিনি যে দ্বার দিয়া ষোড়শী কয়েক মুহূর্ত পূর্বে অন্যত্র সরিয়া গিয়াছিল, সেইদিকে উৎসুকচক্ষে চাহিয়া রহিলেন।

কিন্তু কেহই ফিরিয়া আসিল না। মিনিট দু-তিন পরে তাঁহার অধৈর্য আর মানা মানিল না, কহিলেন, ওঁকে একবার ডেকে দিয়ে তুমি যাবার একটা ব্যবস্থা কর গে এককড়ি! আজ যাওয়া আমার চাই-ই।

এ সঙ্কেত এককড়ি চক্ষের নিমিষে বুঝিল, এবং যে আজ্ঞে হুজুর, বলিয়া তৎক্ষণাৎ প্রস্থান করিল। কিন্তু ফিরিয়া আসিতে তাহার বিলম্ব হইতে লাগিল, এবং মিনিট-পনর বিলম্বে যখন সে যথার্থই আসিল, তখন একাকীই আসিল; কহিল, তিনি নেই, বাড়ি চলে গেছেন হুজুর!

জীবানন্দ বিশ্বাস করিতে পারিলেন না। ব্যগ্র ব্যাকুলকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, আমাকে না জানিয়ে চলে যাবেন? এমন হতেই পারে না এককড়ি!

বিশ্বাস করা সত্যই কঠিন। অলকা কোন ব্যবস্থা না করিয়াই চলিয়া গেল, একটা কথা বলিয়া গেল না—ডাক্তারের অভিমতটুকু শুনিয়া যাইবার পর্যন্ত তাহার ধৈর্য রহিল না—এ কথা জীবানন্দ কিছুতেই যেন মনের মধ্যে গ্রহণ করিতে পারিলেন না।

এককড়ি বলিল, হাঁ হুজুর, তিনি ডাক্তারবাবু যাবার পরেই চলে গেছেন। বাইরে গোপাল কাওরা বসে আছে, সে দেখেচে ভৈরবী সোজা চলে গেলেন।

জীবানন্দ আর প্রতিবাদ করিলেন না। এককড়ি কহিল, তাহলে একটু বেলাবেলি যাত্রা করবার ব্যবস্থা করি গে হুজুর?

হাঁ, তাই কর, বলিয়া জীবানন্দ পাশ ফিরিয়া দেওয়ালের দিকে মুখ করিয়া শুইলেন। এককড়ি কলিকাতা যাত্রার বিস্তর খুঁটিনাটি আলোচনা করিতে লাগিল, কিন্তু প্রভুর নিকট হইতে কোন কথারই প্রত্যুত্তর আসিল না। কথাগুলা তাঁহার কানেই গেল কি না তাহাও ঠিক বুঝা গেল না।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *