দূরবর্তিনী

সেদিন তুমি দূরের ছিলে মম,
     তাই ছিলে সেই আসন-‘পরে যা অন্তরতম।
          অগোচরে সেদিন তোমার লীলা
               বইত অন্তঃশীলা।
                   থমকে যেতে যখন কাছে আসি
               তখন তোমার ত্রস্ত চোখে বাজত দূরের বাঁশি।
ছায়া তোমার মনের কুঞ্জে ফিরত চুপে চুপে,
     কায়া নিত অপরূপের রূপে।
          আশার অতীত বিরল অবকাশে
               আসতে তখন পাশে;
                   একটি ফুলের দানে
চিরফাগুন-দিনের হাওয়া আনতে আমার প্রাণে।
     অবশেষে যখন তোমার অভিসারের রথ
          পেল আপন সহজ সুগম পথ,
ইচ্ছা তোমার আর নাহি পায় নতুন-জানার বাধা,
     সাধনা নাই, শেষ হয়েছে সাধা।
তোমার পালে লাগে না আর হঠাৎ দখিন-হাওয়া;
     শিথিল হল সকল চাওয়া পাওয়া।
মাঘের রাতে আমের বোলের গন্ধ বহে যায়,
     নিশ্বাস তার মেলে না আর তোমার বেদনায়।
উদ্‌বেগ নাই, প্রত্যাশা নাই, ব্যথা নাইকো কিছু,
     পোষ-মানা সব দিন চলে যায় দিনের পিছু পিছু।
               অলস ভালোবাসা
          হারিয়েছে তার ভাষাপারের ভাষা।
     ঘরের কোণের ভরা পাত্র দুই বেলা তা পাই,
               ঝর্‌নাতলার উছল পাত্র নাই।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *