দুর্গের মতো সেই বাড়িটা
কেউ আমার কথা বিশ্বাসই করতে চায় না৷ অথচ আমি কি নিজের চোখকে অবিশ্বাস করব?
ব্যাপারটা একটা বাড়ি নিয়ে!
এই বাড়িটা আমি প্রথম যখন দেখি, তখন আমার বয়েস ছিল বারো৷ বয়েজ স্কাউট থেকে আমরা ক্যাম্প করতে গিয়েছিলাম গঙ্গানগরে৷ তিন দিন ধরে দারুণ হৈচৈ হয়েছিল সেখানে৷
তারই মধ্যে একদিন বিকেলবেলা ছিল আমাদের ‘যে-দিকে খুশি যাও’ প্রোগ্রাম৷ সবাইকে একা একা আলাদা যে-কোনো দিকে চলে যেতে হবে, ফিরতে হবে ঠিক দু’ঘণ্টা পরে৷ দু’ঘণ্টা পাঁচ মিনিটের বেশি দেরি হলেই শাস্তি৷ আর ফিরে এসে সেদিন রাত্তিরের ক্যাম্প ফায়ারে বলতে হবে সেদিনের অভিজ্ঞতা৷
অনেকে বানিয়ে বানিয়ে কতরকম গল্পই যে বলেছে! একজন নাকি গঙ্গাসাগরের কাছেই বাঘের পাল্লায় পড়েছিল৷ একজন দেখেছিল একটা পাইথন৷ দু’জন পড়েছিল ডাকাতের পাল্লায়৷ গুলতাপ্পি মারার ব্যাপারে কোনো নিষেধ ছিল না৷ একজনের গল্প শুনতে শুনতে আমরা হাসতে হাসতে খুন৷
আমার অবশ্য ওরকম কোনো অভিজ্ঞতা হয়নি৷ বানাতেও হয়নি৷ আমি দেখেছিলাম একটা দারুণ বাড়ি৷ ওরকম জমকালো বাড়ি আমি আগে কখনো দেখিনি৷
গঙ্গানগর ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে আমি একলা হাঁটা দিলাম অনেকক্ষণ৷ সঙ্গে ঘড়ি নেই, ঠিক দু’ঘণ্টার মধ্যে ফিরতে হবে, সেই চিন্তা সব সময় মাথার মধ্যে৷
হাঁটতে হাঁটতে মনে হল রাস্তার পাশে একটা জঙ্গল৷ ঢুকে পড়েছিলুম সেই জঙ্গলের মধ্যে৷
সেটা আসলে একটা বাগান৷ খুব বড় বড় আম জাম কাঁঠালের গাছ৷ বাগানটার মধ্যে খানিকটা যেতেই চোখ পড়ল সেই বাড়িটা৷
সেই বারো বছর বয়সে আমার মনে হয়েছিল ঠিক যেন একটা রূপকথার বাড়ি দেখছি! রূপকথার কিংবা ইতিহাসের৷ বাড়িটা ঠিক একটা দুর্গের মতন৷ তাও আমাদের দেশে ওরকম দুর্গ হয় না৷ ছবির বইতে কিংবা ইওরোপের অন্য দেশে ওরকম ছোট ছোট দুর্গের ছবি দেখেছি৷
সামনে একটা দু’মানুষ উঁচু লোহার গেট৷ তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে আছে দু’জন বন্দুকধারী পাহারাদার৷ গেটের দু’পাশে দুটো লম্বা গম্বুজ, তাদের মাথায় একটা করে বড় ঘড়ি৷ ঘড়ি দুটো চলছে৷
প্রথমেই ঘড়ি দুটো দেখে আমার খুব ভালো লাগল৷ এরকম জঙ্গলের মধ্যে এসে যে ঘড়ি দেখতে পাবো, তা আশাই করিনি৷ তাহলে আমার ঠিক সময় ফেরার কোনো অসুবিধে হবে না৷
গেটের সামনে দাঁড়াতেই একজন প্রহরী জিজ্ঞেস করল, কেয়া মাংতা? আমি বললুম, কুছ নেই, দেখতা হ্যায়৷
প্রহরী দু’জন খুব রাগী নয়৷ বেশ হাসিখুশি মুখ৷ আমার সঙ্গে আলাপ করবার জন্য জিজ্ঞেস করল, নাম কেয়া? কাঁহাসে আতা হ্যায়?
সব উত্তর দিয়ে আমি জিজ্ঞেস করলুম, ভিতরে একটু যেতে পারি?
কাহে?
ভিতরে ঘুমকে দেখে গা৷
প্রহরী দু’জন নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করল একটু৷ তারপর একজন ঘাড় নেড়ে বলল, নেহি, হুকুম নেহি৷
তাতে আমি খুব একটা দুঃখিত হইনি৷ হুকুম নেই যখন, তখন আর কী করা যাবে!
প্রহরীদের সঙ্গেই গল্প করতে লাগলুম কিছুক্ষণ৷ ভেতরে কী কী আছে জিজ্ঞেস করলুম৷
তাতে জানতে পারলুম যে, ওটা একটা জমিদারের বাড়ি৷ স্কটল্যান্ডের একটা দুর্গের অনুকরণে বাড়িটা বানানো হয়েছে, সাহেব মিস্তিরিরা বানিয়েছে৷
বাড়িটার পেছনে একটা পুকুর আছে, সেটার চারপাশ সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো৷ সেখানে নাকি এত মাছ আছে যে হাত দিয়েই ধরা যায়৷ বাড়ির মধ্যে আছে অনেক ভালো ভালো মূর্তি৷ আর দু’খানা ঘর ভর্তি আছে অনেক রকম অস্ত্র-শস্ত্র৷ জমিদারবাবুর অস্ত্র-শস্ত্র জমাবার শখ খুব৷ দেশ-বিদেশ থেকে তিনি অনেকরকম বন্দুক-তলোয়ার কিনে এনেছেন৷ এর মধ্যে অনেক ঐতিহাসিক অস্ত্রও আছে৷
গম্বুজের ঘড়ির দিকে বার বার চোখ রেখেছিলাম৷ এক ঘণ্টা পার হবার পর ফিরব ভাবছি, এমন সময় ধুতি-পাঞ্জাবি পরা একজন লোক সেই বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে এলেন গেটের কাছে৷
আমার দিকে চেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কী চাই?
আমার হয়ে প্রহরীরাই বলল, এই খোকাবাবু এই কোঠি দেখতে এসেছে৷
ধুতি পরা ভদ্রলোকটি বললেন, বেশ তো, ভেতরে এসো৷
ভদ্রলোক আমাকে খুব যত্ন করে সারা বাড়িটা ঘুরিয়ে দেখালেন৷ যা কিছু দেখি, তাতেই মুগ্ধ হয়ে যাই৷ সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো পুকুর আমি আগে দেখিনি৷ তাতে সত্যিই কিলবিল করছে অনেক মাছ৷ বাড়ির উঠানে আর দোতলার বারান্দায় অনেকগুলো শ্বেত পাথরের মূর্তি৷
কিন্তু অস্ত্রের ঘরটা আমার দেখা হয়নি৷ সেই ভদ্রলোক বলেছিলেন, ও ঘরের চাবি তো থাকে না আমার কাছে৷ দাদা নেই; এসে যাবেন একটু পরেই৷ তুমি একটু অপেক্ষা করো ভাই, দাদা এলেই তোমায় দেখিয়ে দেবো৷
কিন্তু তক্ষুনি গম্বুজের ঘড়িতে ঢং ঢং করে পাঁচটা বাজল৷ আর দেরি করার উপায় নেই৷ আমি ছুট দিলাম ক্যাম্পের দিকে৷
সে রাত্রে ক্যাম্প ফায়ারে আমি শুনিয়েছিলাম ওই বাড়িটির কথা৷
তখন আমি ডাইরি লিখতাম, তাতেও ওই অভিজ্ঞতার কথা লিখব ভেবেছিলাম৷
এর পর দশ বছর কেটে গেছে৷
আমি কলকাতা থেকে বাসে যাচ্ছিলাম শিলিগুড়ি৷ হঠাৎ একসময় চমকে উঠেছিলুম৷
তখন প্রায় সন্ধে৷ এদিকের রাস্তা ভেঙে নতুন করে সদ্য চওড়া করা হয়েছে৷ আমি বসেছিলাম জানালার ধারে৷
একসময় চমকে উঠে দেখি, রাস্তার ঠিক পাশেই সেই দুর্গের মতন বাড়িটা৷ সেই দুটো গম্বুজের মাথায় ঘড়ি রয়েছে৷ গেটের পাশে অবশ্য বন্দুকধারী প্রহরী নেই৷
এ বাড়ির এত কাছ দিয়ে তো রাস্তা ছিল না৷ এখানে ছিল বাগান৷ সেই বাগান কোথাও উধাও হয়ে গেছে, এখন সেখানে রাস্তা৷ গম্বুজ দুটোও অনেকটা ভাঙা ভাঙা৷ দূরে বাড়িটাকেও বেশ জরাজীর্ণ মনে হল৷
চলন্ত বাস থেকে আর কতখানিই বা দেখা যায়! একটু বাদেই বাড়িটা মিলিয়ে গেল৷ আমি একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললুম৷ মাত্র দশ বছর আগেও বাড়িটা কত টাটকা ছিল!
কিন্তু দুঃখ করেই বা কী হবে! এখন জমিদারের দিন চলে গেছে৷ এসব বড় বড় বাড়ি টিকিয়ে রাখাই শক্ত৷ ওই রকম কত বাড়ি এখন হাসপাতাল কিংবা কলেজ হয়েছে৷
তারপর আরও পাঁচ বছর কেটে গেছে৷
আমি গিয়েছিলাম কোচবিহারে৷ সেখান থেকে একটা বাসে এলাম নিউ জলপাইগুড়ি৷ দার্জিলিং থেকে কলকাতায় ফিরব৷ হঠাৎ ঘোষণা শোনা গেল যে কিছু দূরে রেললাইনে একটা অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে, সে রাতে আর দার্জিলিং মেল যাবে না৷
মহা মুস্কিল! অথচ সে রাতে আমায় কলকাতায় ফিরতেই হবে৷
তক্ষুনি চলে এলুম শিলিগুড়ি৷ সেখান থেকে রকেট বাস তক্ষুনি ছাড়বে, ঝট করে উঠে পড়লুম৷
রকেট বাস চলে সারা রাত ধরে৷ যাত্রীরা সবাই ঘুমিয়ে আছে৷ আমিও খানিকবাদে ঘুমিয়ে পড়েছিলুম৷
হঠাৎ একসময় ঘুম ভেঙে গেল৷ দেখি যে বাসটা থেমে আছে রাস্তার পাশে৷
কী ব্যাপার?
জানালা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখলুম, ড্রাইভার-কন্ডাক্টর নেমে ঘোরাঘুরি করছে৷ বাসটা খারাপ হয়ে গেছে৷
আমিও নেমে পড়লুম৷ গায়ে হাতে পায়ে ব্যথা হয়ে গেছে৷ সেই আড়ষ্টতা কাটাবার জন্য দু’এক পা এগিয়েছি৷ হঠাৎ দেখি সামনে একটা গম্বুজের মাথায় ঘড়ি৷
আরে, এ তো সেই বাড়িটা!
পাশাপাশি দুটো গম্বুজই রয়েছে, ঘড়ি দুটোও চলছে৷ দূরে সেই বাড়িটা!
আমি গেটের কাছে এসে দাঁড়ালাম৷ সেখানে প্রহরী নেই, কেউ নেই৷ একটু ঠেলা দিতেই গেটটা খুলে গেল৷
ভেতরে ঢুকবো কি না ভাবছি, এমন সময় একটা হ্যারিকেন নিয়ে এগিয়ে এলো একটা লোক৷ ধুতি আর পাঞ্জাবী পরা৷
লোকটি কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, কী ব্যাপার?
আমি বললুম, আমাদের বাস খারাপ হয়ে গেছে৷ তাই একটু ঘোরাঘুরি করছি৷
লোকটি বললেন ও তাই আওয়াজ শুনলাম বটে৷ সেই আওয়াজ শুনে আমার ঘুম ভেঙে গেল!
আমার মনে হল, এই লোকটিকেই কি আমি পনেরো বছর আগে দেখেছিলুম? হতেও পারে৷ ভদ্রলোকের বয়েস এখন পঞ্চাশের কাছাকাছি৷
ভদ্রলোক বললেন, এই শীতের রাতে আপনাদের বাস খারাপ হয়ে গেল, আপনাদের তো খুবই অসুবিধে হচ্ছে৷
আমি বললুম, যা মনে হচ্ছে, সারারাতেও ঠিক হবে কিনা ঠিক নেই৷
ভদ্রলোক বললেন, আপনারা ভেতরে এসে বিশ্রাম নিন না৷ আমাদের অতিথিশালা আছে, সেখানে অনায়াসেই চল্লিশ-পঞ্চাশজন লোক থাকতে পারে৷
আমি বললুম, তাই নাকি?
উনি বললেন, বাসের অন্য যাত্রীদের ডাকুন!
আমি ফিরে গিয়ে বাসের যাত্রীদের ডাকাডাকি করে ওই কথাটা বললুম৷ কেউ কোনো সাড়া দিল না৷ কেউ বাস থেকে নামল না৷ ড্রাইভার আর কন্ডাক্টর কেমন যেন অদ্ভুতভাবে তাকাল আমার দিকে৷
তখন আমি একাই ফিরে গেলুম৷ ভদ্রলোক হ্যারিকেন নিয়ে তখনো দাঁড়িয়ে আছেন৷
আমি বললুম, কেউ আসতে চাইল না৷
ভদ্রলোক হাসলেন৷ তারপর বললেন, আমাদের এতবড় অতিথিশালা পড়ে আছে, আজকাল কেউ আসে না৷ আপনি একাই আসুন, তাহলে!
আমি বললুম, একা যাব! যদি হঠাৎ বাসটা ছেড়ে যায়?
উনি বললেন, আপনাকে না নিয়ে যাবে, তা কি হয়! আসুন, ভেতরে এসে এক কাপ চা খেয়ে যান৷
ভদ্রলোক এমন আন্তরিক ভাবে ডাকলেন যে আমি আর না বলতে পারলুম না৷ গেট পেরিয়ে ভেতরে ঢুকলুম৷
তারপর বললুম, জানেন, আমি ছোটবেলায় অনেক বছর আগে আপনাদের এই বাড়িটা দেখতে এসেছিলুম৷
উনি বললেন, তাই নাকি? তখন জমজমাট ব্যাপার ছিল, এখন আর কিছুই নেই৷ এ বাড়িতে লোকই নেই তেমন৷ বলতে গেলে আমি একাই টিঁকে আছি৷
আমি বললুম, আপনাদের একটা অস্ত্র ঘর আছে শুনেছিলাম৷ সেটা সেবার দেখা হয়নি৷ সেই অস্ত্রগুলো এখনো আছে?
উনি বললেন, হ্যাঁ, কোনোক্রমে রেখে দিয়েছি আমি৷ আপনি দেখবেন?
হ্যাঁ৷
আসুন তা হলে৷
ভদ্রলোক আমায় নিয়ে উঠে এলেন দোতলায়৷ একটা ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে দরজায় ঠেলা দিলেন৷ কোনো তালা ছিল না দরজায়, আপনি খুলে গেল৷
হ্যারিকেনের আলোয় দেখলুম ভেতরে সাজানো রয়েছে অনেক তলোয়ার, বন্দুক, ছুরি, রিভলবার, ঢাল বর্ম৷
উনি বললেন, ওই যে বড় বাঁকা তলোয়ারটা দেখছেন, ওইটা শিবাজির তলোয়ার৷ আমার ঠাকুর্দা ওটা কিনে এনেছিলেন লন্ডন থেকে৷
আমি চমকে উঠে বললুম, তাই নাকি? তা হলে তো একটা অমূল্য জিনিস৷
ঘরের মধ্যে ঢুকে তলোয়ারটা ভালো করে দেখতে গেছি, এমন সময় বাইরের গম্বুজের ঘড়িতে পরপর পাঁচবার ঘণ্টা বাজল৷ সঙ্গে সঙ্গে শোনা গেল খুব জোরে বাসের হর্ন৷
আমি বললুম, এই রে বাস ছেড়ে যাচ্ছে৷
তখুনি দৌড় মারার জন্য তৈরি হয়ে বললুম, আজ ভালো করে দেখা হল না, আর একদিন আসব, অ্যাঁ?
ভদ্রলোক ফ্যাকাশে ভাবে হেসে বললেন, আসবেন৷
আমি প্রাণপণে দৌড়ে রাস্তায় এসে দেখলুম, বাসটা চলতে শুরু করেছে৷ উঠে পড়লুম একলাফে৷ কন্ডাক্টর আমায় কিছুই বলল না৷
একসময় পৌঁছে গেলুম কলকাতায়৷
এর দু’দিন বাদে কফি হাউসে বন্ধুদের বললুম, জানিস, গঙ্গানগরের কাছে একটা জমিদার বাড়িতে দারুণ দামি জিনিস আছে৷ শিবাজির তলোয়ার, লর্ড ক্লাইভের পিস্তল—দেখতে যাবি?
বন্ধুদের মধ্যে একজন খবরের কাগজে কাজ করে৷
সে হো-হো করে হেসে উঠে বলল, তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে? গঙ্গানগরের কাছে জমিদার সিংহদের বাড়িটার কথা বলছিস তো? সে বাড়ি তো গভর্নমেন্ট নিয়ে ভেঙে ফেলেছে গত মাসে৷ সেখানে অনেকগুলো ফ্ল্যাট বাড়ি হবে৷
আমি রেগে উঠে বললুম, তোরা খবরের কাগজের লোকেরা যা শুনিস তাই বিশ্বাস করিস৷ মিলিয়ে দেখিস না! আমি নিজের চোখে পরশুদিন দেখে এলুম৷
তারপর এমন তর্কাতর্কি শুরু হয়ে গেল যে অন্য বন্ধুরা থামাতেই পারে না৷ শেষ পর্যন্ত আর এক বন্ধুর কাছ থেকে একটা গাড়ি জোগাড় করে আমরা তক্ষুনি বেরিয়ে পড়লুম গঙ্গানগরের দিকে৷
সেই ঘড়িওয়ালা গম্বুজ দুটোর পাশে বসে আমার বুক ঢিপ ঢিপ করতে লাগল৷ গম্বুজ দুটো আর লোহার গেটটা ঠিকই আছে৷ কিন্তু দুর্গের মতো বাড়িটা নেই৷ সেখানটা একদম ফাঁকা!
সাংবাদিক বন্ধুটি বলল, দেখলি, বাড়িটা ভেঙে ফেলা হয়েছে কিনা?
আমি ক্ষীণভাবে বলতে চাইলুম, পরশুদিনও ছিল, বোধহয় তারপর ভেঙেছে—৷
বন্ধুটি বলল, ধ্যাৎ! অতবড় বাড়ি ভাঙতেই তো তিন-চার মাস লাগে!
আমার সারা গা কাঁপতে লাগল, দর দর করে ঘাম বেরিয়ে এল৷
সেদিন ভোর পাঁচটার সময় তাহলে আমি কি দেখলাম?
—