দি কেস অফ দ্য কেয়ারটেকার

দি কেস অফ দ্য কেয়ারটেকার

০১.

-ঠিক আছে। ডাক্তার হেডক তার রোগীকে আশ্বস্ত করল, আর আজকের দিনটা কেমন লাগছে?

মিস মার্পল তার দিকে তাকিয়ে হাসলেন।

-আমি মনে করি, সত্যি আমি খুব ভালো আছি, সে স্বীকার করল। কিন্তু আমি মনে করি আমি ভীষণ হতাশাগ্রস্ত, আমার কিছু করার নেই, শুধু ভাবি, এটা কত ভালো হত যদি আমি মারা যেতাম, সর্বোপরি, আমি একজন বৃদ্ধা মহিলা। কেউ আমাকে চায় না এবং কেউ আমার দেখাশোনা করে না।

চিরাচরিত তৎপরতার সঙ্গে ডাক্তার হেডক মাঝখানে থামিয়ে দিল তাঁকে। –হ্যাঁ, এই প্রতিক্রিয়াই দেখা যায় এই ধরনের ফু-এর পর। তোমার এখন প্রয়োজন কারও সাহায্য নেওয়া। যে তোমাকে তোমার থেকে টেনে বার করবে। এটা মনের ওষুধ।

মিস মার্পল দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলল এবং তারপর মাথা নাড়াল।

–আর কি বাকি আছে, ডাক্তার হেডক বলেই চলল, আমি সঙ্গে করে আমার ওষুধ নিয়ে এসেছি।

সে একটা লম্বা খাম রাখল বিছানার উপর।

–এটা তোমার জন্য একদম উপযুক্ত।

 একটি বিভ্রান্তিতে মিস মার্পল খুব আগ্রহান্বিত হলেন।

–এটা আমার সাহিত্যিক প্রচেষ্টা। ডাক্তার বলল লাল হয়ে। চেষ্টা কর এখান থেকে একটা রোবকের গল্প তৈরি করতে। লোকটি বলল, মহিলাটি বলল মেয়েটি ভাবল ইত্যাদি এই গল্পের ঘটনাগুলো সত্যি।

ডাক্তার হেডক ভেংচি কাটল, কারণ ব্যাখ্যাটা এখন তোমার উপর নির্ভর করছে। আমি দেখতে চাই তুমি কতটা চালাক, যতটা তুমি করে এসেছ সবসময়।

রেগে সে সেখান থেকে প্রস্থান করল।

মিস মার্পল হস্ত লিখিত লিপিগুলি তুললেন এবং পড়তে শুরু করলেন।

কন্যা কোথায়? মিস হারমন ভদ্রভাবে জিজ্ঞাসা করল।

গ্রামটি পুরো ছিল উত্তেজনাপূর্ণ যেহেতু তারা দেখতে চেয়েছিল ধনী এবং সুন্দরী যুবতী স্ত্রীকে যাকে হ্যারি ল্যাক্সটন বিদেশ থেকে এনেছিল। সেখানে একটা প্রশ্রয় দেওয়ার অনুভূতি দেখা গেল, যে হ্যারি একটা বদমায়েশ হয়েও কীভাবে ভাগ্যের জোরে যুবতী, সুন্দরী স্ত্রীকে পেয়েছিল। সবাই এর হ্যারির প্রতি প্রশ্রয় দেওয়ার মনোভাব ছিল। এমনকি জানালার মালিকরা যারা তার বেপরোয়া গুণ্ডামির আওয়াজে ভুগেছে, তাদের রাগটাও দমিত হয়ে গেল হ্যারির করুণ এবং অনুশোচনা পূর্বক মুখ দেখে। তার ঘরের জানালা ভাঙ্গা ছিল, সুশোভিত ফলের বাগান ছিল, অনধিকারী খরগোশগুলি ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে সে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। এবং সে একজন তামাক ব্যবসায়ী কন্যার দ্বারা আকৃষ্ট হয়েছিল। তারপর তাকে সেখান থেকে মুক্ত করা হয়েছিল। তারপর তাকে আফ্রিকায় পাঠানো হয়েছিল, এবং গ্রামটিতে প্রতিনিধিও করেছিল। বিভিন্ন বয়সের কুমারী মেয়ে, যারা প্রশ্রয় দেওয়ার ভান করে বলছিল, জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে সে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে!

এবং এখনই সত্যিই উড়নচণ্ডীটা ফিরে এসেছে এটা নয় যে সে মানসিক যন্ত্রণা পেয়ে ফিরে এসেছে। কিন্তু সে সাফল্যের সঙ্গে ফিরে এসেছে। হ্যারি ল্যাক্সটন ভালই করেছে, যেভাবে বলা হয়েছিল, সে সবার আগে নিজেকে টেনে নিয়ে এগিয়ে গেছে, কঠোর পরিশ্রম করেছে এবং তারপর অবশেষে সে সাক্ষাৎ পেয়েছে একটি মেয়ের। আর হ্যারির ভবিষ্যৎ গড়ার পেছনে সে হল মূল অধিকারিনী।

হ্যারি লন্ডনে থাকতে পারত বা একটা সুন্দর শিকারী দেশে একটা জায়গা কিনতে পারত। কিন্তু সে পছন্দ করত পৃথিবীর এই অংশে ফিরে আসার জন্য, যেটা তার কাছে একটা নিজস্ব ঘরের মত ছিল এবং সেখানে তার রোমান্টিকতার পথ ধরে একটা পরিত্যক্ত জায়গা কিনেছিল। সেখানে এবং যৌতুক হিসাবে প্রাপ্ত ঘরে সে তার শৈশব কাটিয়েছিল।

কিংসডেন ঘরটি পরিত্যক্ত রয়েছে বহু বছর হয়ে গেল। এটা ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পরিত্যক্ত ঘরে পরিণত হয়েছে। একজন বয়স্ক রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তার স্ত্রী ওই ঘরের একটি কোণে অতিথির মত জীবন যাপন করত। অতীতে এটা একটা বড় আড়ম্বর এবং জাঁকজমকপূর্ণ প্রাসাদ ছিল। সেখানে বাগানে বিভিন্ন উচ্চতার গাছ দেখা যেত। এবং গাছগুলোর পাড় বা আঁচলা যাদুকরের গুহার মত অন্ধকার পূর্ণ ছিল।

যৌতুক দেওয়া ঘরটা খুবই মনোরম, খুবই সুন্দর শান্ত পরিবেশ বিরাজ করছিল। এবং এই ঘরটাতে মেজর ল্যাক্সটন হ্যারির বাবা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে। বালক হিসাবে হ্যারি কিংসডেন প্রাসাদে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়িয়েছে এবং এই গৃহের প্রত্যেকটা খুঁটিনাটি বিষয় সম্বন্ধে অবগত আছে। এবং পুরানো ঘরটা সবসময় তাকে আকৃষ্ট করত।

মেজর ল্যাক্সটন কিছু বছর আগে মারা গেছে। সুতরাং এটা ভাবা যেতে পারে যে, হ্যারির কোনও দায়িত্ব ছিল না মেজর ল্যাক্সটনকে ফিরিয়ে আনার জন্য। তথাপি হ্যারি তার নতুন বউকে নিয়ে তার ছেলেবেলার ওই ঘরটিতে পা রাখতে দ্বিধা বোধ করেনি। ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরানো কিংসডেন ঘরটা টেনে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এক দল বাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং কনট্রাক্টরটা ছোঁ মেরে এই জায়গাটাকে নিয়ে নিয়েছে এবং অবিশ্বাস্যভাবে খুব কম সময়ে এবং বিস্ময়করভাবে সমস্ত প্রাচুর্য নিয়ে নতুন ঘরটাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। এই নতুন ঘরটা সাদা রঙের এবং উজ্জ্বল এবং চকচক করছে গাছের ভেতরকার মধ্যে দিয়ে।

তারপরে এল কিছু বাগানের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তাদের চলে যাওয়ার পর এল আসবাধপত্রের গাড়িগুলি।

ঘরটি পুরোপুরি তৈরি। পরিচারিকা সব এসে গেল। অবশেষে একটা অমিশ্রিত, একটা মূর্তি হ্যারি এবং মিসেস হ্যারিকে গড়ে দেওয়া হল সম্মুখ দরজায়।

গ্রামের লোকেরা সবাই ছুটে গেল ডাকতে। তখন মিসেস প্রাইস যে এই ঘরটির মালিক হিসাবে ছিল এবং যে নিজেকে সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য স্থানে প্রতিষ্ঠিত করে দিল, সে আমন্ত্রণ লিপি পাঠাল পার্টি করার জন্য। যাতে সে বিবাহিত কন্যাকে সাক্ষাৎ করতে পারে।

এটা নিঃসন্দেহে একটা বড় ঘটনা ছিল। অনেক মহিলার নতুন ফ্রক ছিল এই পার্টিতে আসার জন্য। সবাই খুবই উত্তেজিত ছিল। উদগ্রীব ছিল। এবং আবেগপ্রবণ ছিল, এই মোহিত মেয়েটিকে দেখার জন্য। তাই সবাই বলছিল যে এটা একটা পরীর গল্পের মত ছিল।

মিস হারমন শীতকাতুরে ছিল এবং একজন হৃদয়বান কুমারী ছিল। সে একটা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল, যেহেতু সে তার রাস্তাটা মেপে মেপে তৈরি করছিল জনাকীর্ণ ড্রয়িং ঘরের দরজার সম্মুখে।

ওহ আমার প্রিয়, সত্যিই মিষ্টি দেখতে। তার ব্যবহারও খুব সুন্দর, সে খুব যুবতীও। সত্যি, তুমি জান এটা সত্যি অন্যকে ঈর্ষান্বিত করে তুলবে। আর এইরকম সমস্ত সুযোগ সুবিধা আছে। ভালো দেখতে অনেক টাকা এবং অনেক সন্তান সন্ততি যারা যারা সত্যিই পৃথক এই মহিলার থেকে, এবং হ্যারি সত্যিই তার প্রতি ভীষণ অনুরক্ত ছিল।

আহ মিস হারমন বলল–এটা সত্যিই আগেকার দিন।

মিস ব্রেন্ট-এর সরু নাক আন্দোলিত হল, প্রশংসা শুনে। –আহ আমার প্রিয় সত্যিই কি তুমি আমার কথা ভাব।

–আমরা সবাই জানি, হ্যারি কী ধরনের লোক, হারমন বলল।

–আমরা জানি সে কি ছিল। কিন্তু আমি এখন প্রত্যাশা করি।

–আহ, মিস হারমন বলল, মানুষ মাত্রেই একই প্রবৃত্তির। একবার যদি হাসিখুশি প্রতারক হও তাহলে সারাজীবন হাসিখুশি প্রতারক হয়ে থাকবে। আমি তাদেরকে জানি।

–প্রিয়, প্রিয় করুন জিনিস, মিস ব্রেন্টকে অনেক সুখী লাগছিল। হ্যাঁ, আমি মনে করি সে তার সঙ্গে সবসময় সমস্যা নিয়ে আসে। কারুর তাকে সতর্ক করা উচিত। আমি অবাক হয়ে যাই যদি সে পুরনো গল্প সম্বন্ধে কিছু শোনে তাহলে?

–এটা খুবই দৃষ্টিকটু মিস ব্রেন্ট বলল।–যে তার কিছুই জানা উচিত নয়। ভীষণ অদ্ভুত। মূলত একটা ওষুধ দোকান ছিল ওই গ্রামে।

–আগের তামাক ব্যবসায়ীর কন্যায় বিয়ে হয়েছে মিঃ এবং এর সঙ্গে। সে ছিল একজন ওষুধ প্রস্তুতকারক।

এটা সত্যিই খুব ভালো ঘটনা। মিস ব্রেন্ট বলল। যদি মিসেস ল্যাক্সটন তার বুট নিয়ে ব্যবসা করত।

আমি হলফ করে বলতে পারি, মিস হারমন বলল, যে হ্যারি ল্যাক্সটন তার নিজের সম্বন্ধে প্রস্তাব দেবে।

এবং একবার একটা তাৎপর্যপূর্ণ চাউনি অতিক্রম করল তাদের দুজনের মধ্যে।

–কিন্তু আমি নিশ্চিত ভাবে ভাবি–মিস হারমন বলল, যে তার জানা উচিত।

.

০২.

-পশুগুলি! ক্ল্যারিস ভেন ক্রুদ্ধ হয়ে বলল তার কাকাকে, ডাক্তার হ্যাডড়কে, কিছু মানুষ পুরোপুরি পশু।

সে তার দিকে উৎকণ্ঠার সঙ্গে তাকাল।

সে ছিল একজন লম্বা, কালো মেয়ে। সুন্দরী উষ্ণ মনের এবং আবেগপ্রবণ মেয়ে। তার বড় বাদামী চোখগুলো ক্রোধে ভরে গিয়েছিল। এবং সে বলল, সমস্ত বিড়ালগুলি কিছু বলছে, কিছু নির্দেশ করছে।

–হ্যারি ল্যাক্সটন সম্বন্ধে?

–হ্যাঁ, তার একটা প্রণয় ঘটিত ব্যাপার ছিল, তামাক সেবনকারীর মেয়ের সঙ্গে।

–ওহ, তাই নাকি! ডাক্তার তার কাধ ঝাঁকাল, এই রকম অনেক যুবক লোকের এই রকম ধরনের প্রণয় ঘটিত ব্যাপার ছিল।

–অবশ্যই তাদের সম্পর্ক ছিল এবং এখন এটা পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে গেছে। সুতরাং এখন কেন এটা নিয়ে আলোচনা করছ? ক্রমশ আমাদের ভাবতে হবে তার পরের বছরগুলোর কথা। এটা ঠিক ক্ষত চিহ্নের মত মৃত শরীরগুলিতে। এটা আলোচনা করা মানে এটা দাঁড়ায়।

আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, আমার প্রিয়, এটা তোমার মত ব্যাপার মনে হয়, কিন্তু তুমি দেখ তাদের এখানে বলার মত অল্প কিছু রয়েছে, এবং আমি ভীত যে তারা অতীতের দাঙ্গা হাঙ্গামাগুলো নিয়ে ভাবছে। কিন্তু আমি জানতে চাই কেন তোমাকে এটা এত বিষাদগ্রস্ত করে তুলেছে?

 ক্ল্যারিস ভেন তার ঠোঁটে আঘাত করল। সে কৌতূহলের সাথে বলল–তাদেরকে ভীষণ খুশী লাগছে। আমি বোঝাতে চাইছি ল্যাক্সটনদের। তারা সবসময় যুবক এবং ভালোবাসায় পরিপূর্ণ এবং এটা কতটা আনন্দের ব্যাপার তাদের জন্য। আমি সবসময় ঘৃণা করি, যে কোনো ঘটনা কানভাঙানিদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, এবং আমি পশুসুলভ আচরণকেও ঘৃণা করি।

–হুম, আমি দেখছি।

 ক্ল্যারিস বলে চলল সে আমাকে এখুনি বলল। তাকে এখুনি খুব সুন্দরী, খুব খুশী, কৌতূহলী এবং উত্তেজিত লাগছিল। এবং হ্যাঁ, তাকে শিহরিতও দেখাচ্ছিল যেহেতু তার মনের বাসনা পূর্ণ হয়েছে। যখন সে দেখেছে যে কিংসডেনে ঘরটা পুরোপুরি নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। তার এই আচরণ একটা শিশুর মত এবং আমি ভাবি যে, তার জীবনে কোনো কিছু ভুল ঘটেনি। সে যখন যেটা খুঁজেছে সেটা পেয়েছে। তুমি তাকে দেখেছ। তাকে দেখে তোমার কী মনে হয়?

ডাক্তার কিছু উত্তর দিল না। অন্য লোকের কাছে লুইসি ল্যাক্সটন একজন ঈর্ষার বিষয়। একজন নষ্ট হয়ে যাওয়া ভাগ্য। তার কাছে সে (মহিলা) হল একজন সাময়িক বিরতি। একটা জনপ্রিয় গানের যেটা বহু বছর আগে মানুষ শুনেছে, গরীব ছেলে ধনী মেয়ে।

একটি ছোট্ট সুন্দর চেহারা, পশমের মতো চুল, যেগুলি কোঁচকানো সেগুলি ঝুলে পড়েছিল তার লম্বা মুখের এবং চোখের চারধারে।

লুইস একটুখানি ঝুঁকে গেল, লম্বা অভিনন্দন যেটা চলছিল সেটা তাকে ক্লান্ত করে তুলেছিল। সে এমনভাবে একপাশে লাফাচ্ছিল যে তাকে দেখে মনে হচ্ছিল সে এখুনি চলে যাবে। সম্ভবত, এমনকি এখনও হ্যারি সেটা বলতে পারত, সে হ্যারিকে পাশ ফিরে তাকাল। এত লম্বা এবং প্রশস্ত কাধ! তার আনন্দ পাওয়াটা একটা ভাঁওতা। সুতরাং পার্টিটা তার কাছে ভয়ঙ্কর এবং নীরস ছিল।

.

০৩.

 –ওফ! এটা একটা দীর্ঘশ্বাস পূর্ণ বিদায়।

 হ্যারি তার স্ত্রীর দিকে আনন্দিত হয়ে তাকাল। তারা তখন পার্টি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল।

সে বলল-ডার্লিং এটা সত্যিই একটা ভয়ঙ্কর পার্টি ছিল।

হ্যারি অট্টহাস্যে হাসতে লাগল–সত্যিই সুন্দর এবং ভয়ানক। কিছু মনে কর না, আমার মিষ্টি প্রিয়া, এটা করা উচিত, তুমি জান, সমস্ত বৃদ্ধাপুসিগুলো আমাকে চিনেছিল, যখন আমি এখানে একজন বালক হিসাবে থাকতাম। তারা কখনই ভয়ানকভাবে হতাশাগ্রস্ত হয়ে ওঠেনি, তোমাকে এত কাছে দেখতে পেয়ে।

লুইসি একটা ভেংচি কাটল। সে বলল–আমি কি তাদের অনেকজনকে দেখতে পাব?

–কি? ওহ না। তারা আসবে এবং অনুষ্ঠানের জন্য তোমাকে কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ করবে এবং তুমি সমস্ত কার্ডগুলোকে তাদের ফেরত দিয়ে দেবে। কিন্তু তারা এটা নিয়ে কেউ ভাববে না, তুমি গেলে কি না গেলে। তুমি তোমার নিজের বন্ধুদের সঙ্গে থাকতে পার অথবা তুমি সেটা করবে যেটা তোমার পছন্দ।

লুইসি একমিনিট কিংবা দু মিনিট পরে বলল–কেউ কি আমোদ প্রমোদ পায় এখানে নিচু তলায় বাস করে।

-ওহ, হ্যাঁ, সেটা হল কার্টলি তুমি জান। যদিও তুমি তাদেরকে বৃদ্ধ হিসাবে দেখতে পার। তারা সবাই কুকুর কিংবা ঘোড়ার প্রতি আগ্রহান্বিত। তোমাকে অবশ্যই ঘোড়ায় চড়ে যেতে হবে। তুমি এটা অবশ্যই উপভোগ করবে। ইগলিনটন আই ডি একটা ঘোড়া দিল, যেটাকে তোমার মত দেখতে। একটা সুন্দর পশু। পুরোপুরি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত, এবং তার মধ্যে কোন খুঁত নেই। কিন্তু অসম্ভব তো রয়েছে।

কিংসডেন প্রাসাদের দ্বারে গাড়িটা দাঁড় করানো হয়েছিল। গাড়িটা ঘোরানোর জন্য হ্যারি চাকাটাকে বলপূর্বক ভাবে টানল এবং শপথ করল যেহেতু একটা অদ্ভুত কদাকার চেহারা রাস্তার মাঝখানে দেখা গিয়েছিল এবং সে চেষ্টা করছিল কিভাবে তাকে এড়িয়ে যাওয়া যায়। এটা সেখানে দাঁড়িয়েছিল তারপর একটা নাড়া দিল এবং তাদের পিছনে চিৎকার করতে লাগল। হুইস তার বাহু তুলে ধরল। সে একজন ভয়ঙ্কর বৃদ্ধা মহিলা।

হ্যারির ভ্রু কুঁচকে গেল, এটা হল বৃদ্ধ–মারগাট্রায়েড। মারগাট্রয়েড এবং তার স্ত্রী এই পুরনো বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণকারী ছিল। তারা সেখানে প্রায় ৩০ বছর ধরে ছিল।

–সে তার মুষ্টি কেন তোমার দিকে নাড়াচ্ছে?

 হ্যারির মুখ লাল হয়ে গেল। সে যে বিরক্ত প্রকাশ করছে। যেহেতু বাড়িটা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে গেছে। সেজন্য তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার স্বামী দুবছর আগে মারা গেছে। সবাই বলছে যে সে এখন অদ্ভুত আচরণ করছে, তার স্বামী মারা যাওয়ার পর।

-তাই কি, তাই নয় কি–সে উপবাস করছে।

লুইসির ধারণা নিতান্তই অস্পষ্ট এবং নাটকে পরিপূর্ণ ছিল। ধনীরা তোমাকে বাধা দিয়েছে যাতে তুমি সত্যিটার সংস্পর্শে না আসতে পার।

হ্যারি খুব রেগে গেল। ভালো লুইস, কী ধারণা দিয়েছে। আমি তার ভাতা বন্ধ করে দিয়েছি। অবশ্যই তার জন্য একটা নতুন কুঁড়েঘর এবং সবকিছু বার কর।

লুইসি জিজ্ঞাসা করল হতবুদ্ধি হয়ে–কেন যে এটা মনে করো।

হ্যারি ভ্রু কোচকাতে লাগল।–ওহ, আমি এটা কিভাবে জানব? এটা পাগলামি। সে সত্যিই বাড়িটাকে ভালোবাসত।

–কিন্তু সেটা তো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে তাই নয় কি?

–অবশ্যই এটা হয়েছে, একদম ছোট ছোট টুকরোতে ভেঙে গেছে, ছাদ ফুটো হয়ে গেছে। কম বা বেশি এটা নিরাপত্তাহীন, যাই হোক, আমি মনে করি এটা তার কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সে এখানে দীর্ঘদিন ধরে আছে। ওহ, আমি জানি না, আমি মনে করি এরা বৃদ্ধ। এটা কারসাজি।

লুইসি অস্বস্তিকর ভাবে বলল–সে আমি মনে করি, সে আমাদের অভিশাপ দিয়েছে। ওহ, হ্যারি, আমি মনে করি যাতে এটা না হয়।

লুইস এটা মনে করল যে তার নতুন বাড়িটাতে কিছু খুঁত ছিল এবং বাড়িটা একটা ক্ষতিকর বৃদ্ধার দ্বারা দূষিত হয়েছিল। সে যখন গাড়ির বাইরে গেল, যখন সে ঘোড়ায় চড়ল, সে যখন কুকুরের সঙ্গে হাঁটছিল, সবসময়ই তার সামনে সেই চেহারা অপেক্ষা করছিল। তারপর কুঁকড়ে গিয়ে সে তার লৌহ ধূসর চুলে একটা টুপি পরল এবং কিছু ভূত প্রেত তাড়ানোর মন্ত্র উচ্চারণ করছিল।

লুইসি তখন বিশ্বাস করল যে হ্যারি ঠিক বলেছিল–বৃদ্ধা মহিলাটি সত্যিই পাগল ছিল। তথাপি এটা সবকিছু সহজ করে দেয়নি। মিসেস মারগাট্রায়েড কখনোই ওই বাড়িতে আসেনি। এমনকি সে কখনোই ভীতি প্রদর্শন করেনি। এমনকি হিংসাও ছড়িয়ে দেয়নি। তার উবু হয়ে বসা চেহারা সবসময়ই গেটের বাইরে ছিল। পুলিশের কাছে। আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি এবং যদিও কখনো মনে হয়নি হ্যারি ল্যাক্সটন বিমুখ হয়েছে এই কাজটার প্রতি, সে বলল–এটা তার জন্য দয়ার উদ্রেক করবে বৃদ্ধা পশুর জন্য যে লুইস এর থেকেও তাড়াতাড়ি ব্যাপারটা বুঝে নিতে পারল।

ভয় পেও না, ডার্লিং। সে কিছুক্ষণ বাদে তার মুখামিপূর্ণ ব্যাপারে ক্লান্ত হয়ে যাবে। সে সম্ভবত নতুন কাজ শুরু করার চেষ্টা করছে।

সে করছে না হ্যারি, সে আমাদের ঘৃণা করে আমি এটা অনুভব করতে পারছি। সে আমাদের যাতে ক্ষতি হয় সেই ইচ্ছা করছে।

–সে ডাইনি নয়, ডার্লিং। যদিও তাকে তাদের একজনের মতো দেখতে। সুতরাং এটা ভেবে মনমরা হয়ো না।

লুইসি শান্ত হয়ে গেল, তার প্রথম উত্তেজনা এটার জন্য তো শেষ হয়ে গেল। সে নিজেকে একাকী অনুভব করল এবং সে একদম শেষ প্রান্তে এসে উপস্থিত হয়েছে। সে সবসময় ইংল্যান্ডে থেকে অভ্যস্ত হয়ে গেছে এবং রিভিরেরাতেও তার কোনো ধারণা এবং জ্ঞানই নেই ইংরেজদের দেশের জীবনযাত্রা সম্বন্ধে। সে বাগান পরিচর্যা সম্বন্ধে কিছুই জানে না। সে শুধু জানে ফুল ফোঁটার মুহূর্তে কীভাবে গাছকে পরিচর্যা করতে হয়। সে কুকুরদের যত্ন নেয় না। সে যখন প্রতিবেশীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে, তখন সে পরিশ্রান্ত হয়ে যায়। সে ঘোড়ায় চড়ে ভ্রমণ করতে ভীষণ ভালোবাসে এবং যদি হ্যারি সঙ্গে থাকে। কিন্তু হ্যারি যখন প্রাসাদের কোনো কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে গাছপালা এবং বনজঙ্গল এবং সরু গলি রাস্তার মধ্যে ঘুরে বেড়ায় এবং তার ফলে সে সুন্দর ঘোড়ার চলন উপভোগ করে এবং এই ঘোড়াটাকেই হ্যারি লুইসির জন্য এনেছিল।

এমনকি প্রিন্স হল যেটা খুবই অনুভূতি প্রবণ কাজুবাদামের আবাসস্থল হিসাবে, সেটাও খুব নিরিবিলি ছিল এবং এটা মনে হত যে সে তার মহিসীকে অতীতের কোনো অপকারী বৃদ্ধা মহিলার সংস্পর্শে নিয়ে গেছেন।

একদিন লুইসি তার সাহস দুহাত ভরে নিল। মারগাট্রায়েড তখন হাঁটতে হাঁটতে বেরিয়ে যাচ্ছিল। সে মিসেস মারগাট্রায়েডকে অতিক্রম করে এসেছিল এবং এমন ভান করছিল যে সে তাকে দেখেনি। হঠাৎ সে পিছনে ফিরে তাকাল এবং সোজা মিসেস মারগাট্রায়েড-এর কাছে গেল। সে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল–এটা কি? কি ব্যাপার? তুমি কি চাও?

বৃদ্ধা মহিলাটি লুইসি-এর দিকে চোখ পিট পিট করে তাকাল। তার কালো মুখে চতুরতা বিরাজ করছিল। এমনকি এটা তার লৌহ ধূসর চুলেও প্রতিফলিত হয়েছিল। তার চোখে সন্দেহের প্রকাশ ছিল। লুইসি বিস্মিত হয়ে গেল এই ভেবে যে, সে কি উন্মত্ত হয়ে আছে।

সে ভীতিসূচক সুরে বলল–তুমি আমাকে জিজ্ঞাসা করছ আমি কি চাই? কি, বাস্তবিক পক্ষে যেটা আমার থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কে আমাকে কিংসডেন বাড়িটা থেকে বিতাড়িত করেছে? আমি সেখানে থাকতাম মেয়ে এবং মহিলাদের নিয়ে, প্রায় চল্লিশ বছর ধরে। এটা একটা অপরাধমূলক কাজ। আমাকে তাড়ানো এবং এটা খারাপ অন্ধকার ভাগ্য নিয়ে এসেছে। যেটা আমাকে তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।

লুইস বলল–তুমি একটা সুন্দর কুঁড়ে ঘর পেয়েছ এবং …।

সে থামল, বৃদ্ধা মহিলাটি তার বাহু তুলল। সে আর্তনাদ করতে লাগল–কী ভালো হয়েছে আমার জন্য? এটা আমার নিজের বাসস্থান যেটা আমি চাই এবং আমি আমার জন্য নিজস্ব আগুন চাই। যাতে আমি আগুনের পাশে সারাবছর বসতে পারি। তোমার এবং তার জন্য এটা আমি তখন পাচ্ছি না। আমি বলছি তোমরা কখনও সুখী হবে না তোমাদের নতুন বাড়িতে। সেখানে তোমাদের জন্য অন্ধকার এবং দুঃখ অপেক্ষা করে আছে। সেখানে তোমরা শুধু দুঃখ, মৃত্যু এবং আমার অভিশাপ পাবে এবং সেখানে তোমাদের সুন্দর মুখগুলো পচতে শুরু করবে।

লুইসি ফিরে তাকাল এবং তারপর হোঁচট খেয়ে ছুটতে ছুটতে ঘরে প্রবেশ করল। সে ভেবেছিল, আমরা এখান থেকে পালিয়ে যাব এবং এই বাড়িটা আমরা বেচে দেব। আমরা অবশ্যই চলে যাব।

ঠিক এই মুহূর্তে একটা সমাধান ব্যাপারটাকে আরও সহজ করে দিল কিন্তু হ্যারির নির্বুদ্ধিতার জন্য তাকে আবার ফিরে আসতে হল। যে চিৎকার করতে লাগল। এখান থেকে চলে যাও। বাড়িটা বিক্রি কর কারণ, মত্ত বৃদ্ধা মহিলার ভীতি প্রদর্শন! তুমি পাগল হয়ে যাবে এখানে থাকলে।

-না, আমি পাগল হব না। কিন্তু সে যে আমাকে ভয় দেখায়। আমি জানি কিছু ঘটবে।

হ্যারি ল্যাক্সটন ভয়ঙ্করভাবে বলল-মিসেস মারগাট্রায়েডকে আমার উপর ছেড়ে দাও, আমি তার ব্যবস্থা করব।

.

০৫.

একটা বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ সৃষ্টি হল ক্ল্যারিস ভেন এবং মিসেস ল্যাক্সটনের মধ্যে। দুজনেই বেশ প্রাপ্তবয়স্ক ছিল। কিন্তু দুজনের চরিত্র এবং রুচি আলাদা ছিল। ক্ল্যারিসের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণে লুইসি নিশ্চিত ভবিষ্যৎ খুঁজে পেয়েছিল। ক্ল্যারিস আত্মবিশ্বাসী ছিল এবং নিজের প্রতি গভীর আস্থা ছিল। লুইস একদিন তার কাছে মিসেস মারগাট্রায়েড এবং তার ভীতি উল্লেখ করল। কিন্তু ক্ল্যারিস-এর কাছে এটা বেশি বিরক্তিকর লাগল ভীতিকর থেকেও।

-এটা খুব বোকা বোকা ব্যাপার। সে বলল, এটা তোমার জন্য সত্যি বিরক্তিকর।

-তুমি জান, ক্ল্যারিস আমি…….আমি কখনো, কখনো ভীতি অনুভব করি, আমার হৃদয়ের মধ্যে সশ্রদ্ধ ভয় উঁকি দেয়।

-দুর্বোধ্য, তুমি এইরকম বোকা ব্যাপারটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হয়ো না। সে নিশ্চয়ই একসময় ক্লান্ত হয়ে যাবে।

সে এক কিংবা দুমিনিট ধরে নিস্তব্ধ থাকল। ক্ল্যারিস বলে উঠল–কি ব্যাপার?

লুইসি এক মিনিটের জন্য থেমে গেল। তারপরে সে সবেগে উত্তর দিল–আমি এই জায়গাটা ঘৃণা করি। আমি সবকিছুকে ঘৃণা করি। যেমন এই বন, এই ঘর, এবং রাত্রিবেলায় ভয় মিশ্রিত নিস্তব্ধতা এবং পেঁচার অদ্ভুত আওয়াজ। আমি লোকজনকেও ঘৃণা করি।

-লোকজন? কোন্ লোকজন?

–লোকজন যারা গ্রামে বাস করে, যারা সবসময় ঘোরা ফেরা করে। গল্পগুজব করে বৃদ্ধ চাকরবাকরেরা।

ক্ল্যারিস তীক্ষ্ণভাবে বলল–তারা কি বলছিল?

–আমি জানি না। কোনো কিছুই স্পষ্ট নয়। কিন্তু তাদের মনগুলো ভীষণ নোংরা। যখন তুমি তাদের সঙ্গে কথা বলবে তুমি বুঝতে পারবে যে তুমি কাউকে বিশ্বাস করবে না–কাউকেই না।

ক্ল্যারিস রূঢ়ভাবে বলল-তাদেরকে ভুলে যাও। তাদের কোনো কাজ নেই একমাত্র গল্পগুজব করা ছাড়া এবং যখনই তারা কোনো বিষয় নিয়ে কথা বলে, মনে হয় তারা কোনো আবিষ্কার করে।

লুইসি বলল–আমি অভিপ্রায় করি যে আমরা এখানে কখনোই আসব না। কিন্তু হ্যারি খুব শ্রদ্ধা করে এই বাড়িটাকে, তাই আমরা আসি। তার সুর নরম হয়ে গেল।

ক্ল্যারিস ভাবল কিভাবে যে তাকে শ্রদ্ধা করে, সে খুব সংক্ষিপ্তভাবে বলল–আমি এখুনি যাব।

-আমি তোমাকে গাড়িতে করে ফেরত পাঠিয়ে দেব। আবার তাড়াতাড়ি ফিরে এস।

ক্ল্যারিস মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করল। লুইসি খুব আরাম অনুভব করল তার নতুন বন্ধুর আগমনে। হ্যারি লুইসির খুশি দেখে খুব আনন্দিত হল এবং তখন থেকে সে জিদ ধরল যাতে ক্ল্যারিস তার বাড়িতে প্রায়শই আসে।

তারপর একদিন সে বলল–তোমার জন্য ভালো খবর আছে ডার্লিং।

-ওহ, কী খবর?

–আমি মারগাট্রায়েডকে একটা জায়গায় স্থির করে দিয়েছি। যে আমেরিকাতে তার ছেলেকে খুঁজে পেয়েছে। তুমি জান, ঠিক আছে। আমি তার যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি এবং তুমি তার সঙ্গে যোগদান কর। আমি তার ভ্রমণের সমস্ত টাকা দিয়ে দেব।

-ওহ, হ্যারি, সত্যিই এটা ভীষণ বিস্ময়কর।

আমি মনে করি আমাকে শেষ পর্যন্ত কিংসডেনেই থাকতে হবে। যাও এটাকে পছন্দ করে থেকে যাও। কারণ এটা হল বিশ্বের সব থেকে বিস্ময়কর জায়গা।

লুইসি মৃদু সাড়া দিল। সে তার কুংস্কারপূর্ণ ভীতি কিছুতেই মুছে ফেলতে পারছিল না।

.

০৬.

যদি সেন্ট মেরিমেডের মহিলারা এটা ভেবে আনন্দ পায় যে তারা তার স্বামীর অতীত ঘটনাকে নতুন বউ-এর কাছে বলে দেবে, কিন্তু এই আনন্দটাকে অবজ্ঞা করা হয়েছিল, হ্যারি ল্যাক্সটনের দ্রুত তৎপরতার জন্য।

মিস হারমন এবং ক্ল্যারিস ভেন মি. এজের দোকানে ছিল। একজন মোথবলগুলি কিনছিল এবং অন্যজন এক প্যাকেট সোহাগা কিনছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে হ্যারি ল্যাক্সটন এবং তার স্ত্রী প্রবেশ করল দোকানে।

দুজন মহিলাকে সম্বোধন করে, হ্যারি কাউন্টারের দিকে ঘুরল এবং একটা টুথব্রাশ চাইল। হঠাৎ সে বাধাপ্রাপ্ত হল এবং মনের আনন্দে চীৎকার করে উঠল–ঠিক, ঠিক, দেখো সেখানে কে আছে। বেলা, আমি ঘোষণা করব।

মিসেস এজ যে পিছনের পার্লার থেকে দ্রুততার সঙ্গে বেরোচ্ছিল, তার উদ্দেশ্য ছিল ভিড় ঠাসা জমায়েতে যোগদান করা। আনন্দের সঙ্গে ঝুঁকে তার দিকে তাকাল এবং তাকে তার সাদা দাঁত দেখাল।

সে হল একজন কালো সুন্দরী মেয়ে এবং নিঃসন্দেহে একজন সুন্দরী স্ত্রীলোকও বটে। কিন্তু তার মুখে বাজে দাগ পড়েছে। কিন্তু তার বাদামী চোখদুটো উষ্ণতায় পরিপূর্ণ। সঙ্গে সঙ্গে সে বলে উঠল–বেলা এটা কি, মিঃ হ্যারি এবং আমি এই বছরগুলোতে তোমাকে দেখে খুব আনন্দিত হলাম।

হ্যারি তার স্ত্রীর দিকে ফিরে তাকাল। সে বলল–বেলা হচ্ছে আমার প্রজ্জ্বলন।

মিসেস এজ বলল–এটাই সেটা যেটা তুমি বলছ।

লুইসি অট্টহাস্যে হাসতে লাগল। সে বলল–আমার স্বামী খুব খুশী। তার পুরনো বন্ধুদের পেয়ে।

মিসেস এজ বলল-আহ, আমরা তোমাকে ভুলিনি মিস্টার হ্যারি। এটা একটা কাল্পনিক গল্পের মত যে তুমি বিয়ে করে একটা নতুন বাড়ি তৈরি করেছ যেটা আগে পুরো ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরনো কিংসডেন বাড়ি ছিল।

হ্যারি বলল–তোমাকে সুস্থ এবং পুলকিত লাগছে। তখন মিসেস এজ বলতে শুরু করল এবং বলল লুইসির এখানে কোনো ভুল নেই, এবং তারপর জিজ্ঞাসা করল টুথব্রাশটা সম্বন্ধে।

ক্ল্যারিস মিসেস হারমন এর সুখটা দেখল যে হারমন হতবুদ্ধিতে আচ্ছন্ন হয়ে গেছে।

তারপর ক্ল্যারিস নিজেকে উঁচু স্থানে তুলে ধরল এবং বলল-ওহ, ভালো করেছে। হ্যারি, তুমি তাদের বন্দুকের খুঁটি পুঁতে দিয়েছ।

.

০৭.

ডাক্তার হেডক খুব সংক্ষিপ্তভাবে তার ভাইঝিকে জিজ্ঞাসা করল–কী ঘটে চলেছে বৃদ্ধা মিসেস মারগাট্রায়েডকে নিয়ে এবং কিংসডেনকে নিয়ে এবং সে নাকি তার মুষ্টি নাড়াচ্ছে এবং নতুন বাড়িটাকে অভিশাপ দিয়ে চলেছে।

এটা দুর্বোধ্য নয়। এটা বাস্তবিক পক্ষে সত্যি। এটা সত্যি দুঃখের যে লুইসির একটা ভালো পরিকল্পনা ছিল।

–তাকে বলল সে যাতে ভয় না পায়। যখন মারগাট্রায়েডরা এখানে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করত, তারা কখনই এই জায়গাটির বিড়বিড়ানি বন্ধ করিনি। তারা একমাত্র সেখানে থাকত কারণ মারগাট্রায়েড খুব বেশি উন্মত্ত হয়ে গেছল এবং কোনো কাজ পারছিল না।

-আমি তাকে বলব, ক্ল্যারিস সন্দেহপূর্ণভাবে বলল, আমি মনে করি না সে তোমাকে বিশ্বাস করবে। ওই বৃদ্ধা মহিলাটি খুব সুন্দরভাবে রাগের সঙ্গে আতনাদ করে।

–সর্বদা আমি বালক হিসাবে হ্যারির অন্ধভক্ত ছিলাম। আমি বুঝতে পারি না।

ক্ল্যারিস বলল–ওহ, ঠিক আছে। তারা তার থেকে শীঘ্রই মুক্তি পাবে। হ্যারি তার আমেরিকা যাওয়ার জন্য সমস্ত বন্দোবস্ত করে দিয়েছে।

তিনদিন পরে লুইসিকে তার ঘোড়া থেকে ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল এবং তারপর তাকে মেরে ফেলা হয়েছিল।

দুজন মানুষ যারা বেকারির গাড়ি চালাচ্ছিল, তারা এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিল। তারা দেখল লুইসি গেট দিয়ে বেরিয়ে ঘোড়ায় উঠল। তারা দেখল বৃদ্ধা মহিলাটি উঠে বসল এবং রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ল। তার হাত ছাড়িয়ে এবং চীৎকার করতে লাগল। ঘোড়াটি তার যাত্রা শুরু করল। এবং তারপর উন্মত্তের মতো ছুটতে লাগল এবং লুইসি ল্যাক্সটনকে ঘোড়া তার মাথার উপর নাড়াচাড়া করতে লাগল।

একজন লুইসির অচেতন দেহের পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং সেই লোকটা বুঝতে পারছিল না, এই অচেতন দেহ নিয়ে কি করা উচিত। সেই মুহূর্তে অন্যরা ঘরের দিকে ছুটে গেল সাহায্যের জন্য।

হ্যারি ল্যাক্সটন দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসল। তার মুখটা বিরক্তিতে ভরে উঠছিল। লুইসিকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হল। কিন্তু সে আর জ্ঞান ফিরে পেল না। সে মারা গেল ডাক্তার আসার আগে।

(ডাক্তার হেডক-এর হস্তলিপি সমাপ্ত)

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *