গ্রন্থভূক্ত কবিতা (কাব্যগ্রন্থ)
গান
অগ্রন্থিত কবিতা
গল্প
চলচ্চিত্র কাহিনী ও চিত্রনাট্য
সম্পাদকীয়, গদ্য ও বক্তৃতা
সাক্ষাৎকার
1 of 2

দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮)

পথ

সাথে এসো না, তখনি তো বলেছিলাম।
বলেছিলাম পথটা রুক্ষ। কোথাও নুড়ি পাথর,
কোথাও বা জল কাদা, পিচ্ছিল খাড়াই, এছাড়াও
বুনো কাঁটায় ছাওয়া বিস্তীর্ন প্ৰান্তর

কাঁটার আঘাত তোমাকে পেতেই হবে,
ছ’ড়ে যাবে পায়ের আঙুল, হেচটে রক্তাক্ত হবে নোখ।
তখন বলেছিলাম পথটা বন্ধুর।
ফুলের বাগান নয়, চারিদিকে সুনরোম তপ্ত বালি,
এ-রকমই পথ–এ-রকমই এ-পথের নিয়ম কানুন।

সেই তো এখন তোমার মুখের দিকে চেয়ে
তোমার বিমর্ষ ক্লান্ত মুখের দিকে তাকিয়ে
নিজেরি ভীষন কষ্ট হচ্ছে।

সেই তো এখন তোমার চোখের দিকে চেয়ে
তোমার হতাশ স্বপ্নহীন চোখের দিকে তাকিয়ে
নিজেরি ভীষন কষ্ট হচ্ছে।

সেই তো এখন তোমার পায়ের দিকে চেয়ে
তোমার রক্তাক্ত স্নান আঙুলের দিকে চেয়ে
নিজেকে ভীষন অনুতপ্ত মনে হচ্ছে।

তাহলে আসলে কেন
তরুন অশ্বের মতো জেদি ঘাড় নেড়ে উড়িয়ে কেশর?
তাহলে আসলে কেন স্বপ্নাহত জোস্নার হলুদ হরিয়াল!

তাহলে আসলে কেন রোদের সকালে,
নিষেধ মাড়িয়ে, পিছুডাক ছিঁড়ে ফেলে
শৈশবের হিরন্ময় হার?

বলেছিলাম, এ পথে কোথাও পাবে না জল তৃষ্ণায়—
দেখতে জলের মতো অথচ তা জল নয়
এরকম মরীচিকা কষ্টের পাহাড়
গিলে খাবে অহরহ।

বলেছিলাম, এ-পথে বিশ্বাস হলো শান্তি
আর স্থির লক্ষ্যে এগিয়ে যাবার নাম সুখ।
চলমান মুহুর্তের পরে বোসে মুহূর্ত নিমনি— পরের মুহুর্ত,
তার নাম ভালোবাসা।
— ভালোবাসা কার নাম?
স্মৃতি নয়, স্বপ্ন হলো গতি।
বলেছিলাম গতিই সুন্দর সবচে’—

তবু তুমি বার বার ফিরে তাকাচ্ছে স্মৃতির দিকে
বার বার ফিরে তাকাচ্ছে রক্তাক্ত আঙুলের দিকে
ছ’ড়ে যাওয়া পায়ের দিকে
বার বার তুমি ফিরে তাকাচ্ছে তোমার জংধরা
চেতনার দিকে।

০8.০২.৮৭ রাজাবাজার ঢাকা

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *