পৰ্ব : ৫
দিনলিপি
১৭।১০।৭৫
সমস্ত মানব সংসারে যতক্ষণ দুঃখ আছে, অভাব আছে, অপমান আছে, ততক্ষণ কোনো একটিমাত্র মানুষ নিষ্কৃতি পেতে পারে না। একটিমাত্র প্রদীপ অন্ধকারে একটুমাত্র ছিদ্র করলে তাতে রাত্রির ক্ষয় হয় না। সমস্ত অন্ধকারের অপসারণে রাত্রির অবসান।
মানুষের ধর্ম
সব্বে সত্তা সুখিতা হোন্তু, অবেরা হোন্তু,
অব্যাপজ্ঝা হোন্তু, সুখী অত্তানং পরিহরন্তু।
সব্বে সত্তা দুক্খাপমুঞ্চন্তু। সব্বে সত্তা মা
যথালব্ধ— সম্পত্তিতো বিগছেন্তু
সকল জীব সুখিত হোক, নিঃশত্রু হোক, অবধ্য হোক, সুখী হয়ে কালহরণ করুক। সকল জীব দুঃখ হতে প্রমুক্ত হোক, সকল জীব যথালব্ধ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হোক!!― মা. ধ.
.
1.10.75
নিষ্ঠাদ্ররিষ্ঠ
“আমাদের শ্লেষ্মাপ্রধান ধাত, আমাদের বাতিকটা আদবেই নাই। আমরা ভারি ভদ্র, ভারি বুদ্ধিমান, কোনো বিষয়ে পাগলামি নাই। আমরা পাস করিব, রোজগার করিব, ও তামাক খাইব। আমরা এগোইব না, অনুসরণ করিব, কাজ করিব না, পরামর্শ দিব; দাঙ্গা-হাঙ্গামাতে নাই, কিন্তু মকদ্দমা মামলা ও দলাদলিতে আছি। অর্থাৎ হাঙ্গামের অপেক্ষা হুজ্জতটা আমাদের কাছে যুক্তিসিদ্ধ বোধ হয়। লড়াইয়ের অপেক্ষা পলায়নেই পিতৃ্যুশ রক্ষা হয় এইরূপ আমাদের বিশ্বাস। এইরূপ আত্যন্তিক স্নিগ্ধভাব ও মজ্জাগত শ্লেষ্মার প্রভাবে নিদ্রাটা আমাদের কাছে পরম রমণীয় বলিয়া বোধ হয়, স্বপ্নটাকেই সত্যের আসনে বসাইয়া আমরা তৃপ্তিলাভ করি।”
(রবিন্দ্রনাথ, স্বদেশ ও সমাজ— চিঠিপত্র পৃ. ৬৬১— ১২শ খণ্ড, রবীন্দ্র রচনাবলী)
“আমরা তো নকল মানুষ। অনেকটা মানুষের মতো। ঠিক মানুষের মত খাওয়া দাওয়া করি, চলিয়া ফিরিয়া বেড়াই, হাই তুলি ও ঘুমোই— দেখিলে কে বলিবে যে মানুষ নই।”
— (ঐ পৃ ৬৬০)
“যে দেশের আবহাওয়ায় বেশি মশা জন্মায় সেখানে বড়ো জাতি জন্মিতে পারে না।”
—(ঐ পৃ ৬৬৭)
2.11.75
মাংস— ড্ কি, মাছ— ৫ কি, ডিম— টাকায় ৪টে, মাখন— ১০ কি, তেল— ড্ কি, চিনি— ৫ কি, কয়লা— এক টাকায় ৫ কি, আটা—১ কি, চাল— ২ কি, দুধ— ১ কি, মসলা ২৫০ গ্রাম = ১
4.11.75
আমাদের এক মহৎ সংকল্প সাধন করতে হবে, একথা ঘোষণা করার সময় সমাগত হয়েছে বলে অন্তরে অনুভব করছি। শুধু তাই নয় আমাদের এক বৃহৎ অনুষ্ঠানও সম্পন্ন করতে হবে বলে প্রেরণাও বোধ করছি।
মনুষ্যত্বের উদ্বোধন দ্বারা মানুষে মানুষে মিলন ঘটানো— এই হচ্ছে ভারতের পথ। বিরোধের উপর আধিপত্য বিস্তার করে নয়, বিরোধকে বুঝতে চেষ্টা করার মধ্য দিয়েই মানুষে-মানুষে মিলনের পথ প্রশস্ত হয়ে উঠবে।
ভক্ত দাদুর কণ্ঠে একদিন এ আহ্বান শোনা গিয়েছিল!
ভাই রে ঐসা পংথ হমার
দ্বৈপখরাহিত পংথ গহি পুরা অবরণ এক অধারা
ভাইরে, আমার পথ এই রকম, সে দুই পক্ষরহিত বর্ণহীন, সে এক
তিনি বলেছেন—
জাকোঁ মারণ জাইয়ে সোঈ ফিরি মারৈ
জাকোঁ তারণ জাইয়ে সোঈ ফিরি তারে।
যাকে আমরা মারি সেই আমাদের ফিরে মারে, যাকে ত্রাণ করি সেই ফিরে ত্রাণ করে।
এই দ্বন্দ্বের মাঝখানে ঐক্যবাণী, এ ভারতেরই বাণী।
বিরোধকে স্বীকার করে মিলনের যে পথ ভক্ত কবীর একেই বলেছেন ভারতের পথ। কবীর নিজেকে বলেছেন ভারতপথিক।
বলাই বাহুল্য, এটি সহজ পথ নয়। কঠিন সাধনার পথ। ত্যাগের দ্বারা গ্রহণের পথ।
এ পথ রামমোহন-রবীন্দ্রনাথেরও পথ। বিরোধ কণ্টকিত বিশ্বে আজ যে সহাবস্থান যে দাতাতের জন্য আকাংক্ষা জাগ্রত হচ্ছে তাকে পূর্ণ করতে হলে যে পথে চলতে হবে আমাদের মহাজনেরা সে পথের সন্ধান দিয়ে গিয়েছেন।
বিশ্ববাসীকে সে পথের কথা শোনাতে হবে। শোনাব— এ সংকল্প আমাদের নিতে হবে। এ হচ্ছে আমাদের মহৎ সংকল্প।
.
6/11/75
“তাই আজ আমাদের অবহিত হয়ে বিচার করতে হবে যে, যে সত্যে ভারতবর্ষ আপনাকে আপনি নিশ্চিতভাবে লাভ করতে পারে সে সত্যটি কী। সে সত্য প্রধানত বণিবৃত্তি নয়, স্বরাজ্য নয়, স্বাদেশিকতা নয়। সে সত্য বিশ্বজাগতিকতা। সেই সত্য ভারতবর্ষের তপোবনে সাধিত হয়েছে, উপনিষদে উচ্চারিত হয়েছে, গীতায় ব্যাখ্যাত হয়েছে, বুদ্ধদেব সেই সত্যকে পৃথিবীতে সর্বমানবের নিত্যব্যবহারে সফল করে তোলার জন্য তপস্যা করেছেন এবং কালক্রমে নানাবিধ দুর্গতি ও বিকৃতির মধ্যেও কবীর নানক প্রভৃতি ভারতবর্ষের পরবর্তী মহাপুরুষগণ সেই সত্যকেই প্রকাশ করে গেছেন। ভারতবর্ষের সত্য হচ্ছে জ্ঞানে অদ্বৈততত্ত্ব, ভাবে বিশ্বমৈত্রী, এবং কর্মে যোগ সাধনা।” (তপোবন, শিক্ষা, রর/১১শ খণ্ড, পৃ ৬০৫।)
“যোগ সাধনা কোনো উৎকট শারীরিক মানসিক ব্যায়ামচর্চা নয়। যোগসাধনা মানে সমস্ত জীবনকে এমনভাবে চালনা করা যাতে স্বাতন্ত্র্যের দ্বারা বিক্রমশালী হয়ে ওঠাই আমাদের লক্ষ্য না হয়, মিলনের দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে ওঠাকেই আমরা চরম পরিণাম বলে মানি; ঐশ্বর্যকে সঞ্চিত করে তোলা নয়, আত্মাকে সত্যে উপলব্ধি করাই আমরা সফলতা বলে স্বীকার করি।” (ঐ, প্ ৬০৪)
“এ কথা দৃঢ়রূপে মনে রাখতে হবে, এক জাতির সঙ্গে অন্য জাতির অনুকরণ-অনুসরণের সম্বন্ধ নয়, আদান-প্রদানের সম্বন্ধ।… ভারতবর্ষ যদি খাঁটি ভারতবর্ষ হয়ে না ওঠে তবে পরের বাজারে মজুরিগিরি করা ছাড়া পৃথিবীতে আর তার কোনো প্রয়োজনই থাকবে না। তাহলে তার আপনার প্রতি সম্মানবোধ চলে যাবে এবং আপনাতে আপনার আনন্দও থাকবে না।”— (ঐ, পৃ ৬০৫)
.
25.11.75
“যে সমস্ত বিদ্যাদ্বারা কর্ম্ম সংসাধন হইয়া থাকে, তাহাই ফলবতী; যাহাতে কোন কর্ম্মানুষ্ঠানের বিধি নাই, সে বিদ্যা নিতান্ত নিষ্ফল।” কৃষ্ণ, উদ্যোগপর্ব্ব, সঞ্জয়যান পর্ব্বাধ্যায়, মহাভারত, বঙ্কিম রচনাবলী (২য় খণ্ড সংসদ সংস্করণ, কৃষ্ণচরিত্র, পৃ ৫৩২)
“অতএব যেমন পিপাসার্ত ব্যক্তির জলপান করিবা মাত্র পিপাসার শান্তি হয়, তদ্রূপ ইহকালে যে সকল কর্ম্মের ফল প্রত্যক্ষ হইয়া থাকে, তাহারই অনুষ্ঠান করা কর্ত্তব্য।” কৃষ্ণ— সঞ্জয়ের প্রতি উক্তি, উদ্যোগপর্ব, মহাভারত। Ref. (ঐ)
কর্ম্মবাদ কৃষ্ণের পূর্ব্বেও প্রচলিত ছিল, কিন্তু সে প্রচলিত মতানুসারে বৈদিক ক্রিয়াকাণ্ডই কৰ্ম্ম। মনুষ্যজীবনের সমস্ত অনুষ্ঠেয় কৰ্ম্ম, যাহাকে পাশ্চাত্যেরা Duty বলেন— সে অর্থে সে প্রচলিত ধর্ম্মে “কৰ্ম্ম” শব্দ ব্যবহৃত হইত না। গীতাতেই আমরা দেখি, কর্ম্ম শব্দের পূর্ব প্রচলিত অর্থ পরিবর্তিত হইয়া, যাহা কৰ্ত্তব্য, যাহা অনুষ্ঠেয়, যাহা Duty সাধারণতঃ তাহাই কর্ম্ম নাম প্ৰাপ্ত হইয়াছে।— বঙ্কিমচন্দ্র, কৃষ্ণচরিত্র, সংসদ রচনাবলী ২য় খণ্ড, পৃ ৫৩৩
অনুষ্ঠেয় কর্ম্মের যথাবিহিত নির্ব্বাহের অর্থাৎ ডিউটির সম্পাদনের নামান্তর স্বধৰ্ম্মপালন। (ঐ)
.
10.12.75
আজ আনন্দবাজার পত্রিকার বার্তা সম্পাদককে উদ্দেশ করে একটা চিঠি লিখলাম। এই প্রথম। চিঠিটার নকল এখানে করিয়ে রাখলাম :
প্রিয় মহাশয়
আজ থেকে ছয়মাস আগে আমাদের পেশার স্বাস্থ্যহানির এক অশুভ সূচনা দেখে বিচলিত বোধ করি। ঐক্যবদ্ধভাবে রোগের মূল উৎপাটনের প্রয়াস যে জরুরী, সে সম্পর্কে আমাদের চেতনার অভাব আমাকে শঙ্কিত করে তোলে। তাই মস্তক মুণ্ডন করে আসন্ন ঝড়ের সংকেত লাইট হাউসের মাথায় ঝুলিয়ে দিয়েছিলাম। তখন কেউ করেছিলেন বিদ্রূপ, বাকীরা উপেক্ষা। কী হারাতে চলেছি তা জেনেও ছলনার আবরণ টেনে চোখ ঢেকে জীবনটা কাটিয়ে দেওয়া যাবে ভেবেছিলেন। আশঙ্কা করেছিলাম, এর পরে নিজ নিজ বিবেককে প্রবোধ দেবার জন্য হয়ত কুকুরের বকলস গলায় দিয়ে দিন- মজুরির টেবিলে বসতে হবে। বয়ঃকনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ প্রগলভ আবদার জানিয়েছিলেন, “কবে পরছেন কুকুরের বকলস?” ভালো, আজ তো সেই দিন সমাগত! প্রশ্নটা ঘুরিয়ে আপনাদের বিবেকের কাছে রাখতে পারি কী?
এটা ব্যক্তিগতভাবে কারও প্রতি কটাক্ষ নয়। একটা সাধারণ জিজ্ঞাসা সাংবাদিক কুলের কাছে।
আপনার মাধ্যমে আমার সহকর্মীদের সামনেই একটা প্রস্তাব উত্থাপন করছি। আপনারা কি একদিন স্বাধীন মতের অন্ত্যেষ্টিক্রয়া সম্পাদন করতে পারেন না, নিমতলা অথবা কেওড়াতলায় মহা শ্মশানে? ভবিষ্যৎ বংশধরেরা এসে কোনও একদিন সেখানে হয়ত একটা স্মৃতিবেদী নির্মাণ করতে পারত। ভেবে দেখবেন। ভাগ্যহীন।
.
10.12
চিঠি Anne-এর কাছে:
Presidency Jail,
10 cell
11.12.75
Dear Anne,
after a long silence I am breaking it with a heavy heart and with a tragic news. Here it is. Our most beloved and closest friend Mr. Freeman is dead. Only the other day I came to know it from an obituary in a local paper. This is also doubly tragic for me that due to my present circumstances I could not attend his funeral. I am sure, with your keen sensitiveness you will try to understand me properly, however clumsy I may appear in my present state of mind. I also know this bad news will come as a great shock to you, as you, like me, are a great admirer of him. He was to us a common friend, philosopher and guide. What pained me most, not his demise alone, but also the way he was pushed to his tragic end. I must say it is the most inglorious death one can ever imagine. His last days were full of such sordid events that I want to avoid the details of it lest it lives a bad taste in your mouth. Rather I would request you to join me to shed a few drops of our purest tears in the memory of our dearest, the most esteemed friend late Mr. Freeman. You can easily imagine how upset I am. My long and constant association with him formed a habit of being with him, as if we are one. With him I am somebody, without him I’ll transform into a holow wooden self. I know for certain that you share the same feeling as mine.
Eleven years back, sitting by your fireplace I expressed anxiety over my friends health. Do you remember? Prima facie it was alright then. But dispelled my apprehension with an optimistic note on his healthy future. No, it is not your fault. It is because you have ceased to live in our climate long ago, and your childhood acquaintance with the climate here was long ago faded into you memory, without you knowing it. So you thought he would survive.
To tell you frankly, even I was taken away with the apparent healthy look of poor Mr. Freeman and we took him for granted. We have neglected him and completly withdrew our vigil. Our utter neglect and self complacency, you may say, did cost him his precious life. Now that the Most Precious is no more, is out of our reach and we are left behind to suffer, to mourn for him and to do the last rites. So this is all about Him, and about me I have very little to add in this note. Not that I have nothing to say, on the contrary I can write many volumes on those events through which I have passed in recent years and ultimately one of which landed me here in to my present residence. But neither this is time nor I have the mood to discuss the matter in details.
Just to quench your curiosity a little I may add only this: since Oct. 6, 1975 I am living here as a state-guest. I am put in a nice little cosy little cell, eight paces by eight in size, fitted with a nice strongly built 7 or 8 feet bar, call it a door if you wish and a nice little appologia of a window in the rear which is at least 15′ high.
I can get enough sun in the day and can get enough electric light in the night, (which I cannot put out for a moment) to locate a nice little chamber pot in times of nice little or big needs, and I can assure you that I am allowed enough freedom to ease myself in it at any time and in any manner and as many time as I like to.
Now, if you want to know more about me ma’am, please contact my unbending wife, Shila, whose courage should have been the example for many.
Now will you do me a favour? Not one exactly, but a few. No. 1. Will you please pass on my new address to my friend Mr. Don Rowlands of Thomson Foundation? And request him to write to me. You may tell him, also that I, as a humble pen-pusher, have played the role of that proverbial “boy who stood on the burning deck.” And our deck gave away very soon. I fought to the last to uphold our professional tradition. But, alas, it was a lone and quixotic fight. But fight it is and will only stop with my last breath.
Request No. 2. Please write to me, but talk shop, then your letter will reach me.
Request No. 3 Send book, if you can, mostly novels and short stories. May be you can organise a “Feed G. K. Campaign.” It is a tall order, no doubt, but really I am hungry and badly in need of fresh books.
How is my [your?] mother (she is still going young I hope), Mr. Thomas? How are you? Merry Christmas to you all and wishing a happy New year too. Love.
Your ever
Gour
.
11.12
“I do not think the God of Humanity was crucified only once. Tyrants and oppressor have crucified humanity again and again. Every outrage on humanity is a fresh nail driven through his sacred flesh.
—C. R. Das’ speech
July 25, 1917
“This Report (The Rowlat Committee report on arest on suspicion and detention without trial) is unjust, subversive of all the principles of liberty and justice and destructive of the elementary rights of the individual.”
Mahatma Gandhi
“Declare to the world that you realise your God-given right to be free wrights exist but they have got to be realised.”
C.R. Das, Nagpur Congress, 1920
.
জন সংঘর্ষ সত্যাগ্রহীরা আদালত থেকে ধ্বনি দিতে দিতে তাদের ফাইলে (১৯নং) ফিরছেন— “জরুরি অবস্থা তুলে নাও”, “বন্দে মাতরম্”, “সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দাও”, “ব ন্দে মা ত র ম্”। হঠাৎ মনে হল এই “বন্দে মাতরম্” ধ্বনিটা একটা বড় রকম ছলনা। এও মনে হল, আমার ধ্বনিতে সর্বদাই মানুষের বন্দনাগীতি থাকবে। দেশমাতৃকা— এই প্রতিমাটিও কম রক্তপিপাসু নন। এবং দেশমাতৃকার রূপটিও বড় অস্বচ্ছ। মানুষের চেহারা তার তুলনায় স্পষ্টতর। তাই আমার ধ্বনি হবে “বন্দে মাতরম্” নয়, “বন্দে মানবম্”। হে মানব তোমারই হউক জয়।
দেশবন্ধুর the God of Humanity.
রবীন্দ্রনাথের নিখিল মানবসত্তা
জয় তারই হোক।
চণ্ডীদাসের “সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।” এই সত্য আমাদের চিত্তেও উদ্ভাষিত হোক, সদা ভাস্বর হয়ে উঠুক।
17.12.
feel the handcuff on my wrists and the weight of iron-chains on my body. It is the agony of bondge. The whole of India is a vast prison.”
—C. R. Das 1921
“To be taken and kept in custody for an indefinite period of time,
without being told what evidence there is and without being brought to justice according to the law of the land, is a denial of Primary right of humanity. This is ‘Lawless Law’; laws such as these were enacted in England in the days of the Stuart tyrany.”
—C. R. Das, 1924
“আজ জীবনের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমি স্থির বুঝেছি পল্লীসমাজই ভারতের জীবন, পল্লী সংগঠনেই ভারতের মুক্তি।”—দেশবন্ধু, ১৯২৪
25.12.75
On sex education (From Cancer Ward by Alexander Solzhenitsyn (Penguine edition: pp 454):
Dr. Oreshchenkov: We seem to think children ought to pick it all up for themselves like animals. And that’s exactly how they do-like animals. We seem to think it is unnecessary to warn children against perversion, because we work from the assumption that in a healthy society they should all be normal. So they have to learn from one another, and what they learn is vague and distorted. In all other fields we regard it as essential that our children be guided. Its only in this field that guidance is considered “shameful”. That is why you sometimes meet grown women who have never experienced the full range of emotion, for the simple reason that the man didn’t know how to treat her on their first night.
.
26.12.
From Cancer Ward- Penguine edition, pp 467:
“What are the idols of the theatre?”
“The idols of the theatre are the authoritative opinions of theirs which a man likes to accept as a guide when interpreting something he hasn’t experienced himself.”
“Oh, but this happens very often.”
“But sometimes he actually has experienced it, only it’s more convenient not to belive what he’s seen…. (pp 468)
“Another idol of the theatre is our overwillingness to agree with the arguments of science. One can sum this up as the voluntary acceptance of other peoples errors.”…
“The idol of the market-place are the errors which result from the communications and association of men with each other. They are the errors a man commits because it has become customery to use certain phrases and formulas which do violence to reason. For example, “Enemy of the people!” “Not one of us!” “Traitor!” Call a man one of these and everyone will renounce him.” (pp 468)
And over all idols there is the sky of fear, the sky of fear overhung with grey clouds. You know how some evenings thick low clouds gather, black and grey clouds, even though no storm is approaching. Darkness and gloom descend before their proper time. The whole world makes you feel ill at ease, and all you want to do is to go and hide under the roof in a house made of bricks, skulk close to the fire with your family. I lived twentyfive years under a sky like that. I saved myself because I bowed low and kept silent for twentyfive years or may be it was twenty-eight, count them up yourself. First I kept silent for my wife’s sake, then for my childrens’ sake, then for sake of my own sinful body. But my wife died. And my body is a bag full of dung-they’re going to drill a hole for it on one side. And my children have grown up so callous it’s beyond comprehension. And when my daughter suddenly started writing to me in the past two years she’s sent three letters so far, I don’t mean here, I mean to my home- it turned out it was because her Party organisation demanded that she normalize her relationship with her father, do you understand? But they made no such request to my son…’ (pp 469)
From Cancer Ward (pp 473)
“You can’t build socialism on an abundance of material goods, because people sometimes behave like buffaloes, they stamped and trampled the goods into ground. Nor can you have socialism that’s always banging on about hatred. After a man has burned with hatred year in, year out, he can’t simply announce one fine day, “That’s enough! As from today I am finished with hatred, from now on I am only going to love.” No, if he’s used to hatred he will go on hating. He will find someone closer to him whom he can hate.”
২৯.১২
সূর্যের এই ধ্যানটি বড় ভালই লাগল। তাই ছেলেমেয়েদের জন্য এখানে টুকে রাখলাম।
ভাস্বদ্রত্নাঢ্যমৌলী স্ফুরদধররুচা রঞ্জিতশ্চারুবেশো,
ভাস্বান্ কো দিব্যতেজাঃ করকমলযুতঃ স্বর্ণবর্ণঃ প্রভাভিঃ—
বিশ্বাকাশবকাশ গ্রহপতিশিখরে ভাতি যশ্চোদয়াদ্রৌ,
সর্বানন্দপ্রদাতা হরিহরনমিতঃ পাতু মাং বিশ্বচক্ষুঃ।
৩০.১২—সকাল ১০
আজ আমার মনে এখন থেকেই আনন্দের ঢেউ খেলতে শুরু করেছে।
“ডুবতে কি সবাই পারে,
রূপসাগরে তরঙ্গেতে যায় যে ভেসে।”
“সহজ পথে উছট্ লাগে, ওরে মন কানা;
(ও) তুই আপনি সাহজ না হইলে সহজের পথ পাবি না।”
সন্ধ্যা ৬টা
“আরও আশ্চর্য কথা আছে এরপর, শোন,— মানুষ তাঁর সৃষ্টি, তাঁর রাজ্যে বাস করে, তাঁর অন্ন খায়, তাঁরই সৃষ্ট সকল সুখ-সুবিধাই ভোগ করে বটে কিন্তু আদুরে ছেলেকে বাপ বা মা যেমন অনেকটা বেশী অধিকার দেন, তেমনি ভগবানের শেষ এবং চমৎকার সৃষ্টি এই মানুষকে আদুরে ছেলের মতই অনেক বেশী অধিকার তিনি দিয়ে ফেলেছেন,— বুদ্ধি, মন, জাগ্ৰত আশা দিয়েছেন। অনন্ত সম্ভাবনা দিয়েছেন। কেবল সেটা কালের মধ্যে দিয়ে ফোটাবার নিয়ম করেছেন বলেই রক্ষা, নাহলে তাঁর এ সৃষ্টি থাকত না। মানুষ অনুকূল অবস্থা পেলেই তাঁর নিয়মের বিরুদ্ধে যায়।”
[ভৈরবী মাহেশ্বরী মায়ীর উক্তি। তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ, প্রমোদকুমার চট্টোপাধ্যায়। চতুর্থ সং। পৃ. ২৭৪]
.
“যারা (পুরুষ ও নারী) দুজনে দুজনের কাছে পূর্ণ রকমের উলঙ্গ হতে পারে তাদের মধ্যে কার কতটা অধিকার এ প্রশ্ন উঠতে পারে কি”— ভৈরবী মাহেশ্বরী মায়ী (তন্ত্রাভিলাষীর সাধুসঙ্গ, পৃ. ২৭৩)
ভৈরবী মাহেশ্বরী! পোড়াকপাল তোমাদের চাওয়ার, তোমরা চাইছ কোন্ অধিকারে? তোমরা চাইলেই বা দিচ্ছে কে? শক্তিমান যারা হয় তারা চায় না, গড়ে; মনোমত গড়ে নিয়ে নিজের উদ্দেশ্য সার্থক করে।― (ঐ, পৃ. ২৭৬)
ভৈরবী মা: যে নর-নারীর প্রথম মিলন স্থায়ী নয় সেখানে বুঝতে হবে তাদের দুজনেরই জীবনে অপর নর-নারীর সম্বন্ধ ঘটবে যাতে তাদের জীবনের উদ্দেশ্য সফল হবে। (ঐ, পৃ. ২৭৭)
ভৈরবী মা: অবিশ্বাসের চক্ষে যারা মেয়েদের দেখে, জেনে রেখো, তাদের স্ত্রীরাই বেশী অবিশ্বাসিনী হয়।— (ঐ, পৃ. ২৭৯)
ভৈ. মা: নারী-মন একজনকে গভীরভাবে ভাল না বাসলে সংসর্গ-স্পৃহা তার মনে স্থান পায় না।— (ঐ, পৃ. ২৭৯)
ভৈ. মা: পুরুষের ছোঁয়াচ না লাগলে, শুধু সামান্যভাবে লাগা নয়, খুব বেশী রকমে না লাগলে নারীর উত্তেজনা তো দূরের কথা উদ্দীপনাও হয় না, হতে পারে না।― (ঐ, পৃ. ২৭৯)
ভৈ. মা: যাকে নারী অবলম্বন করে, তার সুখের জন্যই সে তার দেহ দেয়। এই ভাবটাই নারীর মধ্যে প্রবল, একজনের সুখের জন্য, ভোগের জন্য নারী তার সব দিয়েই সুখী। (ঐ, পৃ. ২৮০)
ভৈ. মাঃ এই বিবাহ ব্যাপারে তোমাদের হিন্দু সমাজের হীনতা মনুষ্যত্বের সীমা বহুকাল থেকেই ছাড়িয়ে উঠেছে। জগতের চক্ষে কতটা হীন ছন্নমতিগ্রস্ত জীব তারা। যে সমাজে বিবাহের পবিত্র মিলনের ব্যাপারের সঙ্গে অর্থের সম্বন্ধ— সে কি একটা সভ্য সমাজ? যে দুরাচাররা এর প্রশ্রয় দিচ্ছে তারা চোর ডাকাতের চেয়ে বেশী দণ্ডনীয় নয় কি? সত্য বল দেখি? আমাদের বাঙ্গলাদেশের নারীর সঙ্গে অন্যান্য দেশের নারীর তুলনা কর, দেখতে পাবে— কাপড় চোপড়, আচার ব্যবহার এই সব বাইরের যে প্রভেদ তাছাড়া স্বাস্থ্যবান শরীর এদেশে কত কম। এই যে এদেশে পথে ঘাটে মেয়ে দেখা যায়, তাদের রূপের কথা ছেড়ে দিচ্ছি, শুধু শরীরের স্বাস্থ্যের দিক থেকে কতটা দুর্বল, এটা কি এদেশের মরদের চক্ষে পড়ে না। বড় জাতের দেখাদেখি ছোট জাতেরাও এখানে শিশু ও বালিকা বিবাহ করে নিজেদের জাতের সমাজের সর্বনাশ করছে। মনে কর, ত্রিশ পঁয়ত্রিশ বৎসরের একটা চাষার একটা সাত আট বছরের বৌ। এ জাতের ছন্নমতির কথা ভাবতে পার— ত্রিজগতের কোথাও এমন ধারা আছে? ছি ছি— বল, তোমায় বলতে হবে, তোমাদের হিন্দু-সমাজের গৌরব করার কি আছে?— (ঐ, পৃ. ২৮১)
ভৈ. মা: অন্যান্য স্বাধীন-সমাজে মানুষ আত্মধর্মী হয়ে থাকে, আর তোমরা হিন্দু-সমাজের মানুষেরা পচা সংস্কারে পূর্ণ জাতিধর্ম্ম আঁকড়ে আজও হাবুডুবু খাচ্ছ আর বলচ আমাদের পরকালে স্বর্গ হবে। যাদের ইহকালে স্বৰ্গ নেই, পরকালে তাদের স্বর্গ কোথায়?— জাত বড়, না আত্মা বড়? বল না কোন্টায় বিবেক-চৈতন্য সাড়া দেয়?— (ঐ, পৃ. ২৮৬)
ভৈ. মা: স্ত্রী-পুরুষের মধ্যে যদি সত্যকার ভালবাসা হয়, প্রকৃতি সেখানে জাতধৰ্ম্ম এসব দেখবেন না। তিনি শুভটাই দেখবেন। শুভ বা কল্যাণ যদি তার মধ্যে থাকে ত তিনি দম্পতিকে সে মিলনে সাহায্য করবেন। ভালবাসাটি সত্য হওয়া চাই।— (ঐ, পৃ ২৮৯)
ভৈ. মা: সেই গোঁড়া সনাতনী ভাজ্জির দল আর তাদের যজমান যত কেরাণীকুল, আর দেশের ভোগী বিলাসী গরীবের অর্থশোষক জমিদারকুল, দাসত্ব ছাড়া যারা অন্য উপায়ে উন্নতির কল্পনাও করতে পারে না, তারা থাকতে কিছুই হবে না। যেখানে গুরু-পুরুত এসে আশীর্বাদ করে— তোমার একটি চাকরী হোক— তারা থাকতে কি করে সমাজ শক্তিশালী হবে বল দেখি?— (ঐ, পৃ. ২৯১)
31.12.75
আজ interview ছিল। তুলু, খুকু, আপ্পা এসেছিল আর ধুলু। আর এসেছে দুখানা চিঠি— অম্লান এবং সন্দীপন। আপ্পা কাল স্কুলে যাবে। পাশ করেছে। আরতির বাত, আইয়ুবের পীড়াবৃদ্ধি। বাচ্চুর ব্যবহারও অবাক করেছে। এর মধ্যে কোন্ কারণটির জন্য জানিনে, মনটা কিঞ্চিৎ অশান্ত হয়ে উঠেছে। কোনও কিছুতেই মন দিতে পারছিনে।
রবীন্দ্র রচনাবলীটা (১০ খণ্ড) টেনে নিলাম। য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারীতে চোখ আটকে গেল।
“এমন যদি হত— নিকটে কোথাও উন্নতি-নামক একটা পাকা বন্দর আছে সেইখানে কোনোমতে পৌঁছলেই তার পরে দধি এবং পিষ্টক, দীয়তাং এবং ভূজ্যতাং, তাহলেও বরং একবার সময় বুঝে আকাশের ভাবগতিক দেখে অত্যন্ত চতুরতা সহকারে পার হবার চেষ্টা করা যেত। কিন্তু যখন জানি উন্নতিপথে যাত্রার আর শেষ নেই, কোথাও নৌকা বেঁধে নিদ্রা দেবার স্থান নেই, ঊর্ধ্বে কেবল ধ্রুবতারা দীপ্তি পাচ্ছে এবং সম্মুখে কেবল তটহীন সমুদ্র, বায়ু অনেক সময়েই প্রতিকূল এবং তরঙ্গ সর্বদাই প্রবল, তখন কি বসে বসে কেবল ফুলস্ক্যাপ কাগজের নৌকা নির্মাণ করতে প্রবৃত্তি হয়?”
—(য়ুরোপ-যাত্রীর ডায়ারী, র র ১০, পৃ. ৩৪৯)
“অক্ষমতার প্রধান বিপদ এই যে, সে বৃহৎ কাজ করতে পারে না বলে বৃহৎ ভানকে শ্রেয়ষ্কর জ্ঞান করে। জানে না যে, মনুষ্যত্বলাভের পক্ষে বড়ো মিথ্যার চেয়ে ছোটো সত্য ঢের বেশী মূল্যবান।”— (ঐ, পৃ. ৩৫০)
·
“তাছাড়া এটা স্মরণ রাখা কর্তব্য পৃথিবীতে যেখানে এসে তুমি থামবে সেইখান হতেই তোমার ধ্বংস আরম্ভ হবে। কারণ, তুমিই কেবল একলা থামবে। আর কেউ থামবে না। জগৎপ্রবাহের সঙ্গে সমগতিতে যদি না চলতে পারো তো প্রবাহের সমস্ত সচল বেগ তোমার উপর এসে আঘাত করবে— একেবারে বিদীর্ণ বিপর্যস্ত হবে কিম্বা অল্পে অল্পে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কালস্রোতের তলদেশে অন্তর্হিত হয়ে যাবে। হয় অবিশ্রাম চলো এবং জীবনচর্চা করো, নয় বিশ্রাম করো এবং বিলুপ্ত হও— পৃথিবীর এই রকম নিয়ম।”
(ঐ, পৃ. ৩৫৩)
“পূর্বকালে ব্রাহ্মণেরা শুদ্ধমাত্র জ্ঞান ও ধর্ম্মের অধিকার গ্রহণ করাতে স্বভাবতঃই শূদ্রের প্রতি সমাজের বিবিধ ক্ষুদ্র কাজের ভার ছিল, সুতরাং তাঁদের উপর থেকে আচার বিচার মন্ত্র তন্ত্রের সহস্র বন্ধনপাশ প্রত্যাহরণ করে নিয়ে তাঁদের গতিবিধি অনেকটা অব্যাহত রাখা হয়েছিল। এখন ভারতব্যাপী একটা প্রকাণ্ড লূতা-তন্তু-জালের মধ্যে ব্রাহ্মণ শূদ্র সকলেই হস্তপদবদ্ধ হয়ে মৃতবৎ নিশ্চল পড়ে আছেন। না তারা পৃথিবীর কাজ করছেন, না পারমার্থিক যোগসাধন করছেন। পূর্বে যে-সকল কাজ ছিল তাও বন্ধ হয়ে গেছে, সম্প্রতি যে কাজ আবশ্যক হয়ে পড়েছে তাকেও পদে পদে বাধা দেওয়া হচ্ছে।”—(ঐ, পৃ. ৩৫৬)
“এখন যদি প্রতিষ্ঠা চাও তো চিত্তের উদার প্রসারতা, সর্বাঙ্গীণ নিরাময় সুস্থভাব, শরীর ও বুদ্ধির বলিষ্ঠতা, জ্ঞানের চিন্তার, এবং বিশ্রামহীন তৎপরতা চাই।”—(ঐ)
১৩.১.৭৬
গৌরী,
তুমি আর আরতি আমার দুই ডানা,
একটা ডানা যদি সাড়াই না দেয়
তবে বুলবুল বেচারি উড়বে কী করে?
১৫.১.৭৬
গৌরীর চিঠি পাবার পর।
আমাদের সখার যে দিকটি এখন দেখছ
মেঘের ছায়া হয়ত ঈষৎ বিবর্ণ করে থাকবে,
আমি তার রৌদ্রোজ্জ্বল দিকটি দেখব বলেই প্রতীক্ষা করছি,
তুমিও আমার আশার শরিক হও না।
১৬.১.৭৬
“Those who can be termed “we” really constitute a very small group of people who allow themselves to say what they think: “we” in this context doesnot represent a political party striving for power-it is an ethical opposition to the existing authorities, striving for reforms and not for revolutionary changes. For such a group, the moral power doesnot depend on numbers. Arrests cannot weaken this power. But I think that, in the whole country, the presence of such a group has a tremendous liberating effect, and offers a certain release from constrains and lies.” (Andrei D Sakharov, BBC Television interview, The Listner, Dec 11, 1925)
“Life is very hard for the majority, and many of the hopes present during the first years of Soviet rule haven’t been realised. There is a general feeling of oppression and disillusion.”-(Ibid)
“Life is cruel, somewhat dreary, there is a lot of drunkenness and senseless cruel crime and much injustice. You often don’t know what to do, how to help, and almost never can help in any way. It is the wretched sadness that accompanies life. May be in other countries it is the same, but we see that this exists in our country, and, of course, it is intolerable.”— (Ibid)
২১.১.৭৬
“মাছ ধরতে গাছে ওঠা”— চৈনিক প্রবাদ
5.2.76
Abstract— নির্বস্তুক (রবীন্দ্রনাথ
মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হলে মানবসন্তান মানুষই হয় না, অথচ তখন তার জন্তু হতে বাধা নেই। এর কারণ বহু যুগের বহু কোটি লোকের দেহ মন মিলিয়ে মানুষের সত্তা। সেই বৃহৎ সত্তার সঙ্গে যে পরিমাণে সামঞ্জস্য ঘটে ব্যক্তিগত মানুষ সেই পরিমাণে যথার্থ মানুষ হয়ে ওঠে। সেই সত্তাকে নাম দেওয়া যেতে পারে মহামানুষ। (রবীন্দ্রনাথ, বাংলা ভাষা পরিচয়, র র, ১৪ খণ্ড, পৃ. ৪৪১)
৯.৮.৭৬
The most important part of our freedom, inner freedom, is always subject to our will. If we surrender it to corruption, we do not deserve to be called human.-Solzhenitsyn, From Under The Rubbles. Fortuna Books, pp 25)
It require from each individual a normal step within his power— no more than that. And no one who voluntarily runs with the hounds of falsehood, or props it up, will ever be able to justify himself living, or to posterity, or to his friends, or to his children. – (Ibid)
২৩.৮.৭৬
One of the fundamental characteristics of human society is the existence of individual relation between people. (Igor Shafaravitch, Socialism in our past and future. From under the rubbles. pp. 58)
৩০.৮.৭৬
আজ জেলের এক কয়েদীর কাছ থেকে একটা ভালো কথা পেলাম- নশ্ বন্দী, অর্থ sterilisaiton, কথাটা “নির্বীজকরণ” অনেক সহজ, ভালো এবং প্রয়োগপ্রদ। ভোলা— আমার শিক্ষক— জানালো নশ্ কথাটার মানে নাড়ি। কথাটা উরদু কিনা গৌরীর কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।
৯.৯.৭৬
আত্মা কী? কদিন ধরেই প্রশ্নটা মনকে নাড়া দিচ্ছিল। আজ প্রবল বর্ষণ শেষের ধোয়া-মোছা আকাশের দিকে চেয়ে থাকতে থাকতে একটা উত্তর পাওয়া গেল। সেটি এই— আত্মা হচ্ছে ক্রমাগত অনুশীলনরত মানব মস্তিষ্কেরই উন্নততর একটা অবস্থা যেখানে জ্ঞান ও প্রেম সুন্দর আন্দাজে মিলিত হয়ে নিষ্কাম কর্মের অফুরন্ত উৎসে পরিণত হয়েছে।
এরই যে শক্তি তাকেই বলা হয় আত্মিক শক্তি। বিশ্ব মানবকে আত্মীয় সম্বন্ধে যোগমুক্ত করার জন্যই আত্মিক শক্তির উদবোধন প্রয়োজন। বিশ্বের সঙ্গে ব্যক্তির যোগ— জ্ঞানে, প্রেমে এবং কর্মে, এই ধারণাটাই উনিশশতকী ভারতীয় সাধনার ফল। মানুষের সার্থকতা মিলনে। মার্জিত মস্তিষ্কের অধিকারী মানুষের চির অভিযাত্রার অভিপ্রায় এই। বিশশতকী মানুষের ক্ষমতা-উন্মাদনা কি পশ্চিমের কি পূবের সব মানুষকেই লক্ষ্যভ্রষ্ট করছে। মিলনের কেন্দ্র থেকে তাকে ক্রমশ দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিশ্ব প্রকৃতিকেও সে শুধুমাত্র তার ভোগ প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার জন্য কলুষিত করে তুলেছে। এ পথ বাঁচার পথ নয়। পতনের, ধ্বংসের, পচার পথ। আত্মিক শক্তির উদবোধন ঘটিয়েই এই পচন রোধ করা যায়। জপ তপ তন্ত্রে মন্ত্রে নয়, মানুষ সম্পর্কে নব চেতনার উন্মেষ ঘটিয়েই তা করতে হবে। মানুষ মূলত যুক্তিবাদী— মার্জিত মস্তিষ্কের কার্যফল— এবং তাই সে নীতিবাদী ও বটে। এই ethics তাকে স্বার্থের উপরে উঠতে সহায্য করেছে। বহুজনের হিতের মধ্যেই সার্থকতা খুঁজে পেয়েছে। যুক্তিবাদ মানুষকে প্রেমিক করেছে।
১০.৯.৭৬
আজ সারাদিন ঝড়ো হাওয়ার মাতামাতি এবং মাঝে মাঝে প্রবল বর্ষণ। তার মধ্যে এই কথাগুলো মনে হল।
জ্ঞানের দুটো চরিত্র। বিশ্লেষণী এবং সংশ্লেষণী। এই দুই-এর মিলিত রূপেই প্রকৃত জ্ঞান।
বিশ্লেষণী জ্ঞানের দ্বারা মানুষ জড়প্রকৃতির দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়েছে। কর্মের অফুরন্ত উৎস-মুখ খুলে দিয়েছে। দূরকে বাহ্যিকভাবে নিকট করেছে। সুখভোগের অপরিমেয় উপকরণ করায়ত্ত করেছে। এই কর্মে তার অহং-এর তৃপ্তি। এই ভোগে তার সুখ। এটা তার দিগ্বিজয়ীর ভূমিকা।
সংশ্লেষণী জ্ঞান ব্যক্তিমানুষের ব্যক্তিসত্তাকে স্ফুরিত করে তাকে এই উপলব্ধি দিয়েছে যে নিখিল মানবসত্তার সঙ্গে মিলিত হওয়াই যুগ যুগ ধাবিত যাত্রী-মানুষের অভিযাত্রার চির অভিপ্রায়। এক অহৈতুকী প্রেমের দুর্বার আকর্ষণই তাকে বিশ্বের সঙ্গে যোগের পথে, বিশ্বমানবতার সঙ্গে মিলনের পথে ঠেলে নিয়ে চলেছে। এই মিলনেই তার পূর্ণতা তার আনন্দ। এটা তার প্রেমিকের ভূমিকা। দুঃখের বিষয়, বিজ্ঞান লালিত পশ্চিমী হিউম্যানিজ্ম্-এ, মানুষের দিগ্বিজয়ী রূপটির অহংকার আজ যত প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে, তার মিলনাকাংক্ষী প্রেমিক স্বরূপটি ততটা প্রকাশ পেতে সমর্থ হয়নি। ভারতের নব-যুগের সাধকগণ— রামমোহন থেকে রবীন্দ্রনাথ এই সত্যের দিকেই বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। সংশ্লেষণী জ্ঞানের দ্বারা এই ফাঁকটি পূরণ করতে না পারলে কেবলমাত্র বিশ্লেষণী, জ্ঞাননির্ভর বিশ শতকী মানবসভ্যতা মানুষকে যান্ত্রিকতার, রাষ্ট্রের, দলতন্ত্রের ক্রীতদাসে পরিণত করে তুলবে। মানুষ ক্রমেই সত্তাচ্যূত (alienated) হয়ে পড়বে। আত্মিক শক্তিকে দুর্বল করে ফেলে ব্যক্তিত্ববিহীন মানুষ ক্রমশ নিজেকে যান্ত্রিক শক্তির প্রবলতার স্রোতে অসহায়ভাবে ভাসিয়ে দেবে। মানুষ ব্যক্তিত্ব হারিয়ে হয়ে উঠবে unperson. আত্মিক শক্তির অভাবে মানুষের ব্যক্তিসত্তার স্ফুরণ ঘটবে না, ব্যক্তিত্ব বিলীন হবে যূথপিণ্ডতায়। নিখিল মানবসত্তার সঙ্গে ব্যক্তিসত্তার যোগে যে মিলনের পূর্ণ আনন্দ, এবং তারই মধ্যে মানুষের সার্থক হয়ে ওঠার যে অভিপ্রায়টি ব্যক্ত ছিল, তা থেকে চ্যূত হয়ে যন্ত্র-শক্তি-নির্ভর অন্তঃসারশূন্য মানুষ গোষ্ঠিস্বার্থের দ্বন্দ্বে লিপ্ত হয়ে পড়বে। এবং আত্মহননের পথটি উন্মুক্ত করে দেবে।
অতঃকিম্?
আরেকটি প্রশ্ন:
নিখিল মানবতা (universal humanity) এবং জনতা উভয়ই কি মানুষের সামুহিক রূপ নয়?
রবীন্দ্রনাথের আত্মপরিচয় গ্রন্থে লিখিত মন্তব্য
রবীন্দ্রনাথের ‘আত্মপরিচয়’ বইটি পড়ছিলেন তখন। হৃদরোগে আক্রান্ত হবার কারণে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে গৌরকিশোরকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এসএসকেএম হাসপাতালে। বিছানায় শুয়ে শুয়ে লিখেছিলেন মন্তব্যগুলি—
[অনেকগুলো স্নাপশট। দেয়া হল না এখানে।]
প্রসঙ্গকথা
[পর্বের ক্রমানুসারে]
[পর্ব: ১, পৃ. ৩]
দেশ পত্রিকার ৩৯ বর্ষ ৪১ সংখ্যা (১২ আগস্ট ১৯৭২) থেকে ৪২ বর্ষ ৩৭ সংখ্যা (২৪ জুন ১৯৭৫) পর্যন্ত নিয়মিত ‘রূপদর্শীর সোচ্চারচিন্তা’ প্রকাশিত হয়েছে। মোট সংখ্যা— ১১৫। জরুরি অবস্থার সময় প্রেস সেন্সরশিপের কারণে ৫ জুলাই ১৯৭৫ সংখ্যার লেখাটির প্রকাশ নিষিদ্ধ হয়। ফলে শেষপর্যন্ত লেখাটিকে বাদ দিয়েই সংখ্যাটি প্রকাশিত হয়। ওই সংখ্যার দেশ পত্রিকার সূচিপত্রে লেখাটির উল্লেখ থেকে গেছে। এই বিশেষ লেখাটি পরবর্তীকালে ‘ইন্দিরা দেশ গণতন্ত্র’ নামে কলকাতা পত্রিকার বর্ষা সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। তারই সঙ্গে প্রকাশিত হয় পুত্রকে লেখা একটি চিঠি— ‘পিতার পত্র’। মূলত এই দুটি লেখা প্রকাশিত হবার কারণে গৌরকিশোরকে MISA আইনে গ্রেপ্তার করা হয়।
[পর্ব: ১, পৃ. ১২, ১৭]
জেলে বন্দি থাকাকালীন আরও দুটি লেখা নিরাপত্তার কঠোর বেষ্টনী পার করে বাইরে আসে এবং লিফলেট হিসেবে নানা জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। লেখা দুটি— ‘প্রধানমন্ত্রীকে, খোলা চিঠি (ফ্যাসীবাদ-বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে গুটিকয়েক কথা)’ এবং ‘দাসত্ব নয়, দাসত্ব নয়, স্বাধীনতা’।
[পর্ব: ১, পৃ. 23]
কারাবন্দি অবস্থায় অন্নদাশঙ্কর রায়কে একটি গুরুত্বপূর্ণ পত্র লেখেন।
উপরে উল্লিখিত লেখাগুলিকে প্রয়োজন বোধে সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করা হল।
[পর্ব: ২, পৃ. ২৭-৩৬]
সমর সেন, সত্যজিৎ রায়, আবু সয়ীদ আইয়ুব, শঙ্খ ঘোষ ও অরুন্ধতী দেবীকে লেখা পত্র কবিতাগুলি গৌরকিশোর নিজের বাড়ির ঠিকানায় পাঠান। পরে তাঁদের কাছে পাঠানো হয়। সমর সেন ও সত্যজিৎ রায়কে ডাক মারফত এবং আবু সয়ীদ আইয়ুব, শঙ্খ ঘোষ ও অরুন্ধতী দেবীকে বাড়িতে পৌঁছানো হয়। আবু সয়ীদ আইয়ুবকে লেখা কবিতাগুলি তাঁরই জন্মদিনের উপহার ও শঙ্খ ঘোষকে লেখা কবিতাটি ছোটমেয়ের জন্মদিনের উপহার হিসেবে পাঠানো।
[পর্ব: ২, পৃ. ২৯]
সমর সেন
কবি, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, প্রাবন্ধিক, ফ্রন্টিয়ার পত্রিকার সম্পাদক।
[পর্ব: ২, পৃ. ৩০]
আইয়ুব
আবু সয়ীদ আইয়ুব। দার্শনিক, চিন্তক, প্রাবন্ধিক।
[পর্ব: ২, পৃ. ৩২]
অরুন্ধতী — বন্ধু, অরুন্ধতী দেবী, চিত্রতারকা
হারমোনিয়াম — চলচ্চিত্র
বাবলু-মা — অরুন্ধতী দেবীর কন্যা, অনুরাধা ঘোষ
রাণাবাবু — ঐ পুত্র, অনিন্দ্য সিংহ
তপন –তপন সিংহ, বন্ধু, চলচ্চিত্র পরিচালক, অরুন্ধতী দেবীর স্বামী
[পর্ব: ২, পৃ. ৩৫]
এই কি নিয়তি
পারিবারিক পত্রে কবিতাটি সম্পর্কে একাধিক উল্লেখ আছে।
[পর্ব: ৩, পৃ. ৩৭-৫৯]
কারাগারে বন্দি থাকাকালীন সময়ে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যে কবিতাগুলি লিখেছিলেন সেগুলি পরবর্তীকালে যথাক্রমে ‘ভাবনাচিন্তা’, ‘চতুরঙ্গ’ প্রভৃতি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
[পর্ব: ৩, পৃ. ৩৯]
স্যামসন, প্রিয়তম বন্ধুর উদ্দেশ্যে— ‘ভাবনাচিন্তা’ (শারদ সংখ্যা) ১৯৭৬
[পর্ব: ৩, পৃ. ৩৯]
কালাদা — অগ্রজপ্রতিম বন্ধু, অশোককুমার সেনগুপ্ত, জামশেদপুর আরআইটি-র ইংরেজির অধ্যাপক।
[পর্ব: ৩, পৃ. ৫৩]
কোনও এক জিরাফের সন্ধ্যাসঙ্গীত— এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিখিত। আবু সয়ীদ আইয়ুব অনূদিত ‘গালিবের গজল থেকে’ বইটি এই সময়ের নিত্যসঙ্গী।
[পর্ব: ৩, পৃ. ৫৮]
পাঁচ ফোড়ন — পরবর্তীকালে ‘চতুরঙ্গ’ পত্রিকায় প্রকাশিত।
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬১-১০৪]
পারিবারিক চিঠি
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬৩]
খুকু — বড়মেয়ে, সাহানা
দাদু — গৌরকিশোরের বাবা, গিরিজাভূষণ
‘ঐ যে মেয়েটা সন্ধে হলেই ঘুমোয়’— ছোটমেয়ে, সোহিনী
‘হজমি দাদু’— প্রতিবেশী, নৃপেন্দ্রনারায়ণ রায়
মীলা, উমাদি, নিমাইদা— প্রতিবেশী, নিমাইচন্দ্র দে শীল, স্ত্রী উমা, কন্যা ঊর্মিমালা।
সুকোমলবাবু— প্রতিবেশী, সুকোমল বসু, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মী
রাখালকাকা— প্রতিবেশী, রাখাল দত্ত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক।
দেব-মাসীমা— প্রতিবেশী, ইলা দেব
ধুলুকাকা— বন্ধু, ভবানীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, ইটাচুনা কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬৪]
আপু— ছেলে, ভাস্কর
শঙ্কর— পরিচারক
দিদি— সাহানা
অমিত কাকা— অমিতাভ চৌধুরী, সাংবাদিক, আনন্দবাজার পত্রিকা।
আরতি পিসি— বন্ধু, আরতি সেন, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা।
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬৪]
তুলু— স্ত্রী, শীলা
সুজিত— ছোটশালা, সুজিতকুমার ঘোষ
বাদল — দ্বিজেন্দ্রনাথ বসু, আনন্দ পাবলিশার্স-এর কর্মী
শ্যামাপ্রসাদ— শ্যামাপ্রসাদ কুণ্ডু, সম্পাদক— ভাবনাচিন্তা, বর্ধমান
গৌরী— বন্ধু, গৌরী আইয়ুব, শ্রীশিক্ষায়তন কলেজের অধ্যাপিকা
আইয়ুব— অগ্রজপ্রতিম বন্ধু, আবু সয়ীদ আইয়ুব, দার্শনিক-চিন্তক-লেখক
পূরবী-বিষ্ণু— অনুজপ্রতিম স্নেহভাজন, পূরবী ও ড. বিষ্ণু মুখার্জী, জামশেদপুর
সুপ্রিয়— অনুজপ্রতিম, সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, ইউএসআইএস-এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর
রিক্তা, পথিকৃৎ, তুম্পা—ঐ, স্ত্রী-পুত্র-কন্যা
হারু, কুল্পী, ঝুমরু— বন্ধু, দেবদাস পাঠক, স্ত্রী—মৃদুলা, পুত্র—সুপর্ণ
সন্দীপন, রিক্তা, তৃণা— লেখক, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, স্ত্রী—রীনা (ভ্ৰমক্ৰম রিক্তা), কন্যা—তৃণা
গৌরীদা — অগ্রজপ্রতিম, লেখক-প্রকাশক গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য
বউদি, খোকন, বুড়ো— ঐ, স্ত্রী—সুরূপা, পুত্র—জ্যোতিশঙ্কর, সৌমিত্রশঙ্কর
নরেনদা — নরেন্দ্রনাথ মিত্র, লেখক
শোভনা—মেজোবোন, শোভনা গুপ্ত
নিরঞ্জন—নিরঞ্জন হালদার, সাংবাদিক, আনন্দবাজার পত্রিকা
সাগরদা—সাগরময় ঘোষ, সম্পাদক, দেশ পত্রিকা
সলিল— ঐ, ছোটভাই, সলিল ঘোষ
মামামণি–ড. অতুলানন্দ দাশগুপ্ত
সুধীনদা –পরিচয় উদ্ধার সম্ভব হয়নি।
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬৫]
মা — সাধনা ঘোষ
শোভনা-শিবু— মেজোবোন, ভাগনে—সত্যব্ৰত
মীরা-রাজা— সেজোবোন, ভাগনে—কৌশিক
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬৬]
আপ্পা— পুত্র, ভাস্কর
শম্ভু — সেজোশালা, রণজিৎ ঘোষ
বাবুয়ার বউ— বাবুয়া— যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি, গৌরকিশোরের সহচর— তার স্ত্রী
প্রতাপদা— প্রতাপকুমার রায়
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬৭]
খুকু— সাহানা
টুনটুনি— সোহিনী
* নিবেদিতা স্কুলের সে বছরে প্রকাশিত পত্রিকায় মেয়েদের লেখা প্রসঙ্গে মন্তব্য।
রিক্তা/রেখা— পূর্বোক্ত
স্নেহভাজন পাগল— জ্যোতির্ময় দত্ত
তুম্পা— রিক্তা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যা
বিরাট শিশুটি— সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬৮]
আপু— ভাস্কর
[পর্ব: ৪, পৃ. ৬৯]
প্রিয়তমাসু — স্ত্রী, শীলা
‘আমার ছোঁড়া তীর…’— ১.১২.৭৫ তারিখে লেখা প্রেসিডেন্সি জেলের ঠিকানা সম্বলিত লেখা— ‘প্রধানমন্ত্রীকে, খোলা চিঠি’
[পর্ব: ৪, পৃ. ৭১]
তুলু— স্ত্রী
তোমার মা— সুধীরবালা ঘোষ
বাদল– পূর্বোক্ত
নিশি— ভগ্নিপতি, নিশীথ দে, সাংবাদিক, আনন্দবাজার পত্রিকা
ব্ৰজ মণ্ডল— প্ৰকাশক, বিশ্ববাণী
ভবানী— বন্ধু, ভবানীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
গৌরীপ্রসাদ বসু— গৌরকিশোরের শিক্ষক, নবদ্বীপ বকুলতলা হাইস্কুল মৈত্রেয়ী দেবীর উপন্যাস— ‘ন হন্যতে’
নূপুর— ছোটমেয়ে
আপ্পা— পূর্বোক্ত
শংকু, শুভ্ৰ— ভাইপো, কৌশিক সেনগুপ্ত, শুভ্র মজুমদার
অরুন্ধতী— বন্ধু, অরুন্ধতী দেবী, চিত্রাভিনেত্রী
[পর্ব: ৪, পৃ. ৭২]
ভণ্ডুলে— ভাগনে, কৌস্তুভ গুপ্ত
রাঙ্গাদিদিমা— গৌরকিশোরের মা-এর মামিমা
তিনামাসিমা— গৌরকিশোরের গ্রাম সম্পর্কিত মাসি
[পর্ব: ৪, পৃ. ৭৩]
ফণী— ডাক্তার, ড. ফণীভূষণ বোস, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল
গোবিন্দচন্দ্ৰ— বন্ধু, গোবিন্দচন্দ্র পাল, আইনজীবী, গৌরকিশোরের হয়ে হাইকোর্টে মামলা লড়েছিলেন।
গাগরুদা — অগ্রজপ্রতিম, শান্তি সেন, র্যাডিকাল হিউম্যানিস্ট কলকাতা শাখার সভাপতি। নিষিদ্ধ ‘কলকাতা পত্রিকা—রাজনৈতিক সংখ্যা’ তাঁরই অর্থানুকূল্যে প্রকাশিত হয়েছিল। পরে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
তারকুণ্ডে— ভি এস তারকুণ্ডে, ব্যারিস্টার সুপ্রিম কোর্ট, অল ইন্ডিয়া র্যাডিকাল হিউম্যানিস্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি।
গৌরী — পূর্বোক্ত
ড. বোস— অগ্রজপ্রতিম বন্ধু, ড. অমিয় বোস, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
[পর্ব: ৪, পৃ. ৭৪]
টুনটুন— পূর্বোক্ত
কালাদা— পূর্বোক্ত
হারু– পূর্বোক্ত
ধুলু– পূর্বোক্ত
খান্দু— বন্ধু, সুনীলকান্তি সেনগুপ্ত, ত্রিবেণী টিস্যুজ-এর কর্মী
[পর্ব: ৪, পৃ. ৭৫]
“কলকাতা থেকে বলছি”— কবিতাটা বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছোয়নি
বড়মেয়ের পরীক্ষা— মাধ্যমিক পরীক্ষা, ১৯৭৬
[পর্ব: ৪, পৃ. ৭৭]
ডাক্তারবাবু— ড. এ বি মুখার্জী, এসএসকেএম হাসপাতালে হৃদরোগ বিভাগের তদানীন্তন প্রধান, মিসা বন্দি অসুস্থ গৌরকিশোরের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক
আইয়ুবের লেখা— আবু সয়ীদ আইয়ুব-এর জন্মদিন উপলক্ষে লেখা কবিতা
মণীন্দ্রবাবু— এসএসকেএম হাসপাতালের কর্মী
ঝুনুদি — প্রতিমা সেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মী
শালকি — শালাজ, শর্মিষ্ঠা ঘোষ
মন্টুদা— ড. সমর সেন
আরতি— পূর্বোক্ত
রুচিরা— রুচিরা শ্যাম
মামামণি— পূর্বোক্ত
[পর্ব: ৪, পৃ. ৭৮]
নৃপেনদা— প্রতিবেশী, পূর্বোক্ত
[পর্ব: ৪, পৃ. ৮০]
আপ্পু-নূপুর— পূর্বোক্ত
[পর্ব: ৪, পৃ. ৮৩]
চিঠির কিয়দংশ প্রথম থেকেই নিশ্চিহ্ন
নমিতাদি— এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরত সেবিকা
ব্যানার্জীদি— ঐ
বোসমশাই— এসএসকেএম হাসপাতালের কর্মী
নারায়ণবাবু— ঐ
[পর্ব: ৪, পৃ. ৮৪]
বনচারি বাগান— নবদ্বীপে, যেখানে গৌরকিশোরের কৈশোর কেটেছে
রাধু— বড়বোন, রাধারাণী মিত্র
শোভনা— পূর্বোক্ত
মীরা- পূর্বোক্ত
লক্ষ্মী— ন’বোন, অৰ্চনা দে
বাণী— ছোটবোন, ঊশ্রী দে
[পর্ব: ৪, পৃ. ৮৭]
সাহানার মাধ্যমিক পরীক্ষার আসন্ন ফল প্রকাশের উদ্বেগ স্মরণে রেখে
[পর্ব: ৪, পৃ. ৮৯]
যে-কোনও কারণেই হোক স্ত্রী শীলার চিঠির পেছনের খালি জায়গায় চিঠিটা লেখা হয়েছিল। স্ত্রী-কেই লেখা।
শালকির খবর— শালাজের পুত্র জন্মাবার সংবাদ
বউমণি— বড় শালাজ, মঞ্জু ঘোষ, নিঃসন্তান
[পর্ব: ৪, পৃ. ৮৯-৯৫]
‘পতি বিলাপ’ কবিতাটি লেখা হয়েছিল একটি ‘বিশেষ টেবিল ইন্টারভিউ’- এর পরে। সাক্ষাৎকারের উদ্দেশ্য ছিল পরবর্তী মামলা সংক্রান্ত কথাবার্তা— মূলত আইনজীবী বন্ধু গোবিন্দচন্দ্র পাল-এর সঙ্গে। স্ত্রী শীলা সঙ্গে ছিলেন। কথার সময়ে টেবিলের অন্যধারে বসেছিলেন স্পেশাল ব্রাঞ্চের অফিসাররা— কবিতায় ‘এস্. বি ননদী’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
[পর্ব: ৪, পৃ. ৯৬]
স্ত্রীর লেখা চিঠির পেছনে সাদা অংশে লেখা তারিখবিহীন চিঠি।
‘হোক না স্কটিশে ভর্তি’— বড়মেয়ে সাহানা মাধ্যমিক পাশ করে স্কটিশচার্চ কলেজে ভর্তি হয়। স্ত্রীর উদ্বেগের উত্তরে একথা লেখা।
ভাবনা-চিন্তা— শ্যামাপ্রসাদ কুণ্ডুর সম্পাদনায় বর্ধমান থেকে প্রকাশিত পত্রিকা।
‘নিয়তির পুনর্বিন্যাস’— শঙ্খ ঘোষকে লেখা পত্র-কবিতা ‘এই কি নিয়তি’।
‘জমি তৈরি’— প্রেসিডেন্সি জেলে ফুলগাছের জন্য চারা
R. H. – র্যাডিকাল হিউম্যানিস্ট পত্রিকা, দিল্লি থেকে প্রকাশিত।
[পর্ব: ৪, পৃ. ৯৬]
বিশু — বড়শালা, অজিতকুমার ঘোষ
জামগ্রাম–শ্বশুরবাড়ি
কল্যাণ– ড. কল্যাণ চ্যাটার্জী
ডঃ মুখারজি— ড. সুভাষ মুখার্জী
[পর্ব: ৪, পৃ. ৯৮]
কবিতাটি তোমার জন্মদিনের উপহার— পূর্বোক্ত
শঙ্খ কাকা— শঙ্খ ঘোষ
সুশীলদা— অগ্রজপ্রতিম বন্ধু, সুশীল ভদ্র, র্যাডিকাল হিউম্যানিস্ট
শীতাংশু— অনুজপ্রতিম শীতাংশু চট্টোপাধ্যায়
দীপংকর — দীপংকর চট্টোপাধ্যায় [সলজিনেতসিন-এর ‘গুলাগ দ্বীপপুঞ্জ’ অনুবাদের প্রসঙ্গে]
কাকা— নিশীথ দে
বুবনু— পথিকৃৎ, পূর্বোক্ত
[পর্ব: ৪, পৃ. ৯৯]
বাদল— পূর্বোক্ত
প্রতিষ্ঠান— আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড
‘বিলাতফেরৎ মোক্তার’— মুখ্যমন্ত্রী, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়
‘আমিও দুবার টিপেছি’— ১.১২.১৯৭৫, ‘প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি’ এবং প্রজাতন্ত্রী দিবস ১৯৭৬, ‘দাসত্ব নয় স্বাধীনতা’— প্রেসিডেন্সি জেলের ঠিকানায় প্রকাশিত হয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।
‘আমার ভ্রাতা পুরুলিয়ায়…’ সাংবাদিক বরুণ সেনগুপ্তকে পুরুলিয়ার জেলে পাঠানো প্রসঙ্গে।
খসড়া লেখার নমুনা: জেলের খাতা থেকে
[ডায়েরীর পাতার স্নাপশট। এখানে দেয়া হলো না।]