১১
জেল-কর্তৃপক্ষের চিঠি পেয়েছি। বিশেষ বিবেচনায় তাঁরা মোবারক হোসেন সাহেবের শেষ ইচ্ছা পূর্ণ করেছেন। আমাকে আগামীকাল ভোর চারটায় যেতে বলা হয়েছে। ডিআইজি প্রিজন আমাকে একটি পাস দিয়েছেন। এটা দেখালেই জেলখানায় আমাকে ঢুকতে দেবে।
আমি কি যাব দেখতে?
অবশ্যই যাব। আমাকে যেতেই হবে। এই নিমন্ত্রণের ব্যবস্থা প্রকৃতি নিজের হাতে করেছে। একে অগ্রাহ্য করার পথ কোথায়?
.
কেন জানি মনে হচ্ছে আজ রাতে আমার গাঢ় ঘুম হবে। ঘুমুনো মাত্র ঐ স্বপ্নটা দেখব। দরজার ওপাশ থেকে কেউ আমাকে ফিসফিস করে ডাকবে : হিমু, এই হিমু।
ঐ স্বপ্ন আমার দেখতে ইচ্ছা করছে না। আমি আজ সারারাত জেগে থাকব, হাঁটব পথে পথে। ক’দিন ধরেই রাত দশটার দিকে লোডশেডিং হচ্ছে। কয়েক ঘণ্টার জন্যে এতবড় শহর ডুবে যাচ্ছে গাঢ় অন্ধকারে। আজও লোডশেডিং, কিন্তু আকাশ ভেঙে নেমেছে জোছনা। সমস্ত শহর যেন ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। জোছনা দেখতে দেখতে, আমার হঠাৎ মনে হলো—প্রকৃতির কাছে কিছু চাইতে নেই, কারণ প্রকৃতি মানুষের কোনো ইচ্ছাই অপূর্ণ রাখে না।