।। তৃতীয়াকল্পবিধি বর্ণনম্।।
পতিব্রতা পরিপ্রাণা পতিশুশ্রণে রতা। এবং বিধাপি যা প্রোক্তা শুচিঃ সংশোভণা সতী।।১।। সোপবাসা তৃতীয়াং তু লবণং পরিবর্জয়েৎ সা গৃহাতি চ বৈ ভক্ত্যা ব্রতমামরণান্তিকম্।।২।। গৌরীদদাতি সন্তুষ্টা রূপং সৌভাগ্যমেব চ। লাবণ্যং ললিতং হৃদ্যং শ্লাঘ্যং পুংসাং মনোহরম্।।৩। পুংসো মনোরমা নারী ভর্তা নার্মা মনোরমম্। গৌরীব্রতেন ভবতি রাজবল্লবনবজণাৎ।।৪ ॥ ইদং ব্রতং প্রতি বিভো ধর্মরাজস্য শৃণ্বতঃ। উময়া চ পুরা প্রোক্তং যদবাক্যং তন্নিবোধ মে। ৫। ।।
তৃতীয়া কল্প বিধি বৰ্ণন।।
এই অধ্যায়ে তৃতীয়াকল্প বিধির আলোচনা হয়েছে।
মহর্ষি সুমন্তু বললেন–যে স্ত্রী একমাত্র পতিকেই সেবা আরাধনা করে থাকেন এবং নিজে পতি প্রাণা হন অর্থাৎ পতির প্রাণই নিজের প্রাণ বলে মনে করেন এবং পতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন, ঐ প্রকার স্ত্রী পবিত্ৰ, সংশোভনা হন এবং তাঁকেই ‘সতী’ বলা হয়ে থাকে।।১।।
এই প্রকার সতী স্ত্রী তৃতীয়া তিথিতে উপবাস করে লবণ ত্যাগ করে আমৃত্যু ভক্তিপূর্বক এই ব্রত পালন করবেন।।২।।
সেই স্ত্রী উপর ভগবতী গৌরী সন্তুষ্ট এবং প্রসন্ন হন ও তাকে দেবী রূপ, সৌভাগ্য, লাবণ্য ও পুরুষগণের কাছে ললিত, হৃদ্য প্রশংসিত ও মনোরম হওয়ার বর দেন। ৩।।
হে রাজন, এই ব্রতের দিন লবণ ত্যাগ করার জন্য পুরুষগণ মনোরম স্ত্রী এবং স্ত্রীগণ মনোরম পুরুষ লাভ করেন।।৪।।
হে বিভো, এই ব্রতের কথা প্রথম ধর্মরাজের কাছে ভগবতী উমা দেবী যে বর্ণনা দিয়েছিলেন। তা শ্রবণ করুন।।৫।।
ময়া ব্রতমিদং সৃষ্টং সৌভাগ্যকরণং নৃণাম্। মর্ত্যে তু নিয়তা নারী ব্রতমেতচ্চরিষ্যতি। সহভর্তা সামোদেত যথা ভর্তা হরোমম।।৬।। মাচ কন্যা ন ভর্তারং বিদতে শোভনাসতী। সা ত্বিদং ব্রতমুদ্দিশ্য ভবেদক্ষারভোজনা। মচ্চিত্তা মনমনাঃ কুর্যাম্মদ্ভক্তা মৎপরিগ্রহা।।৭।। গৌরীং সংস্থাপ্য সৌবণীং গন্ধালং কারভূষিতাম্। বস্ত্রালং কারসংবীতাং পুষ্পমন্ডল মন্ডিতাম্।।৮।। লবণং গুড়ং ঘৃতং তৈলং দেব্যৈ শক্ত্যা নিবেদয়েৎ। কদুখন্ডং জীরকং চ পত্রশাকং চ ভারত।।৯।। গুড়খৃষ্টাং স্তথাপুপান খন্ডবেষ্টানস্তথা নৃপ। ব্রাহ্মণে ব্রতসমান্নে প্রদদ্যাৎসু বহুশ্রুতে।।১০।।
উমাদেবী বললেন, মনুষ্যগণের সৌভাগ্যলাভের জন্য আমি এই ব্রতের সৃজন করেছি। মর্ত্যে মনুষ্যরূপে নিয়ত নারী এই ব্রত পালন করবেন এবং আমি যেমন আমার স্বামী ভগবান শংকরের সঙ্গে সন্তুষ্ট থাকি, তেমনি নারীগণও তাদের স্বামীদের সঙ্গে আনন্দিত থাকবেন।।৬।।
পরমশোভনাও সতী নারী গৌরী ব্রত না করে ক্ষার দ্রব্য গ্রহণ করেন তাহলে তিনি সমুচিত স্বামী প্রাপ্ত হন না। আমাতে স্থির চিত্ত হয়ে আমার পরম ভক্ত হয়ে এবং আমাকে স্বীকার করে সে আমার ব্রত করলে তবে যথার্থ ফললাভ করবে।।৭।।
সুবর্ণ নির্মিত গৌরীর সংস্থাপনা করে তাকে গন্ধ অলংকার দ্বারা বিভূষিত করে বস্ত্র এবং অলংকারে সংবীত করে পুষ্পের দ্বারা মন্ডিত করতে হবে।।৮।।
হে ভারত, লবণ, গুড়, ঘৃত, তৈল, কটুখন্ড। হীরা, পত্রশাক ইত্যাদি যথাশক্তি গৌরী দেবীকে নিবেদন করবেন।।৯।।
হে নৃপ, গুড় অথবা খাঁড়গুড় দ্বারা মন্ডিত পিষ্টক বহুশ্রুত করে ব্রাহ্মণকে দান করবেন।।১০ ।।
শুক্লপক্ষে সদা দেয়া যথা শক্ত্যা হিরন্ময়ী। ধনহীনে তু ভক্তা চ মধুবৃক্ষময়ী নৃপ।।১১।। অচ্যা নিত্যং সন্নিধানাত্তত্র গৌরীনসংশয়ঃ। অক্ষারলবণং রাত্রৌ ভুঙক্তে চৈব সুবাগ্যতা।।১২।। গৌরী সন্নিহিতা নিত্যং ভূমৌ প্রস্তর শায়িণী। এবং নিয়মযুক্তস্য দেব্যা যৎসমুদাহৃতম্।।১৩।। তচ্ছৃণুম্ব মহাবাহো কথ্যমাণং মহাফলম্। ভতারং তু লভেৎকন্যা যং বাঞ্জতি মনোনুগম্।।১৪।। সুচিরং সহ বৈ ভর্তা ক্রীড়িয়িত্বা ইহৈব সা। সম্ভতিং চ প্রতিষ্টাপ্য সহ তে নৈব গচ্ছতি।।১৫।।
শুক্লপক্ষে যথাশক্তি সর্বদা হিরণ্ময়ী দান করা উচিত। যদি ধনহীন হয় তবে, ভক্তির সঙ্গে মধুবৃক্ষময়ী দান করা উচিত।।১১।।
মধুবৃক্ষ (তালবৃক্ষ) সন্নিধানে নিঃসংশয়ে গৌরী পূজা করা উচিত। রাত্রে অক্ষার লবণ ভোজ্যদ্রব্য ভোজন যিনি করেন, দেবী গৌরী তাকে সুভাগ্য দেন এবং যিনি ভূমিতে প্রস্তরে শয়ন করেন গৌরী নিত্য তার সন্নিহিত হন। দেবী এই প্রকারে নিয়মে নিযুক্ত থাকার ফল বর্ণনা করেছেন। হে মহাবাহু তার আপনি আমার থেকে শ্রবণ করুন। এই প্রকারে অর্চনা উপবাসকারিণী বালা নিজ পছন্দমতো স্বামী প্রাপ্ত হন। এই সংসারে স্বামীর সঙ্গে চিরকাল আনন্দে কালাতিপাতপূর্বক নিজ সন্তানদের প্রতিষ্ঠাপিত করে অন্তে তাঁর সঙ্গে স্বর্গলোক প্রাপ্ত হন।।১২-১৫।।