তুমি নেই বলে
তুমি নেই বলে ক’টি বিষাক্ত সাপ উঠে এসেছে উঠোনে, ফিরে যাচ্ছে না
জলায় বা জংলায়।
কাপড়ের ভাঁজে, টাকা পয়সার ড্রয়ারে, বালিশের নিচে,
গ্লাসে-বাটিতে, ফুলদানিতে,
চৌবাচ্চায়, জলকলের মুখে
ইঁদুর আর তেলাপোকার
বিশাল সংসার এখন,
তোমার সবকটি কবিতার
বইএ এখন উঁই।
তুমি নেই বলে মাধবীলতাও আর ফোঁটে না
দেয়াল ঘেঁসে যে রজনীগন্ধার
গাছ ছিল, কামিনীর,
ওরা মরে গেছে, হাসনুহানাও
গোলাপ বাগানে গোলাপের বদলে শুধু কাঁটা
আর পোকা খাওয়া পাতা।
বুড়ো জাম গাছের গায়ে বিচ্ছুদের বাসা, পেয়ারা গাছটি
হঠাৎ একদিন
ঝড় নেই বাতাস নেই গুঁড়িসুদ্ধ উপড়ে পড়ল।
মিষ্টি আমের গাছে একটি আমও আর ধরে না, নারকেল গাছে
না একখানা নারকেল।
সুপুরি গাছেদের নাচের ইশকুল বন্ধ এখন।
তুমি নেই বলে সবজির বাগান পঙ্গপাল এসে খেয়ে গেছে
সবুজ মাঠটি ভরে গেছে খড়ে, আগাছায়।
তুমি নেই বলে মানুষগুলো এখন ঠান্ডা মাথায় খুন করতে পারে যে কাউকে।
তুমি নেই
তোমার না থাকা জুড়ে দাপট এখন অদ্ভুত অসুস্থতার,
আমার শ্বাসরোধ
করে আনে দুষিত বাতাস…
আমিও তোমার
মত যে কোনও সময় নেই হয়ে যেতে চাই।
(তোমার
না থাকার দৈত্য ঝাঁপিয়ে পড়ছে ঘাড়ে,
তোমার না থাকার শকুন ছিঁড়ে খাচ্ছে আমার সর্বাঙ্গ,
তোমার না থাকার উন্মত্ত আগুন পুড়িয়ে ছাই করছে
তোমার না থাকার সর্বগ্রাসী জল আমাকে ডুবিয়ে নিচ্ছে…)