আফজাল খাঁর হত্যাকান্ডের পরে শিবাজী নানা দুর্গ এবং পরগণা অধিকার করিয়া ক্রমশঃ প্রবল হইয়া উঠিল। অবশেষে বিজাপুরের প্রবল বাহিনীর বিপুল প্রতাপে শিবাজী পুনরায় পর্যুদস্ত এবং নিতান্ত হীনবল হইয়া বিজাপুরের বশ্যতা স্বীকার করেন।
এই যুদ্ধে মোতামদ খান বিশেষ পরাক্রম এবং প্রতিভা প্রদর্শন করায় মালেকা আমেনাবানু তাঁহাকে পরিণয়-পাশে আবদ্ধ করেন।
এই সময়ে দাক্ষিণাত্যে মারাঠীদিগের পুনরভ্যুত্থানের আশা সমূলে নির্মূল হইয়া গিয়াছিল। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, এই সময়ে ভারতেই অদ্ভুতকর্মা তপস্বী সম্রাট মহাপরাক্রান্ত মহাযশঃ বাদশাহ আওরঙ্গজেব সমগ্র ভারতে একচ্ছত্র প্রভুত্বের লালসায় অকারণে গোলকুন্ডা এবং বিজাপুর রাজ্যদ্বয় আক্রমণ করেন। এই দুই রাজ্য পূর্ব হইতে দিল্লীশ্বরদিগের বন্ধুতা সূত্রে আবদ্ধ ছিল এবং শাহজাহানের সময় হইতে উভয় রাজ্য ‘সালামা নজরানা’ দিল্লীর দরবারে পেশ করিতেন। তথাপি আওরঙ্গজেব এই উভয় রাজ্য আক্রমণ করেন।
গোলকুন্ডা এবং বিজাপুর ক্ষুদ্র রাজ্য হইলেও সমৃদ্ধ এবং বলদৃপ্ত ছিল। জ্ঞানচর্চা, শিল্পচর্চা এবং বিজ্ঞানচর্চায় উভয় রাজ্যই বিশেষ খ্যাতি লাভ করিয়াছিল। উভয় রাজ্যের সোলতান, মন্ত্রী এবং সেনাপতিগণ নিতান্ত দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। আওরঙ্গজেবের মহীয়ান চরিত্রে এবং গরীয়সী বীর্যবত্তা ও দূরদর্শিতার শুভ্র-যশে এই উভয়রাজ্য আক্রমণ করাই হইতেছে অদূরদর্শিতা এবং স্বজাতিদ্রোহিতার দুরপনেয় কলঙ্ককালিমা। এই রাজ্যদ্বয় দখল করিবার জন্য তাঁহাকে প্রায় ত্রিশ বৎসরকাল ভীষণ লোকক্ষয়কর যুদ্ধ করিতে হইয়াছিল। মুসলমান বাদশাহ ও বহু দুর্গ দখল করিয়া স্বাধীন আত্মকলহের সুযোগে শিবাজী অবসর বুঝিয়া বহু পরগণা ও বহু দুর্গ দখল করিয়া স্বাধীন রাজ্য পত্তন করেন। মারাঠীগণ প্রবল পরাক্রান্ত হইয়া উঠে। অবশেষে আওরঙ্গজেবকে এই মারাঠী শক্তি দমনের জন্য বিশেষ বেগ পাইতে হয়। আওরঙ্গজেব বিজাপুর আক্রমণ না করিলে, শিবাজী আর কখনও মাথা তুলিবার সুবিধা পাইতেন না। বিজাপুরের রাজশক্তিই শিবাজীকে চিরকাল দমন রাখিতে সমর্থ হইত।
Khub chomotkar akta golpo. A khan thake mosulmander anik kichu shikhar achy
ইসমাইল হোসেন সিরাজীর নুরুদ্দিন উপন্যাসটি আপলোড করবেন প্লিজ!