ঠাণ্ডা গোশত ॥ সাদত হাসান মান্টো / জাফর আলম
ঠাণ্ডা গোশত – সাদত হাসান মান্টো।
ঈশ্বরসিং হোটেলের কামরায় প্রবেশ করতেই, কুলবন্ত কাউর পালং থেকে উঠে দরজার খিল বন্ধ করে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকে খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে দেখতে লাগল। রাত তখন ১২টা। সারা শহরে নীরবতা
কিছুক্ষণ দেখে কুলবন্ত কাউর খাটের উপর ধপাস করে বসে পড়ে। ঈশ্বরসিং বিশ্রী এক চিন্তার ধকল থেকে মুক্তির চেষ্টা করছিল; কৃপাণ হাতে দাঁড়িয়ে ছিল এক কোণে। কিছু সময় কেটে গেল, কুলবন্তের উপবেশনের আসন মনঃপুত হওয়ায় সে দু পা পালং-এর নিচের দিকে ঝুলিয়ে নাড়তে থাকে। তবুও ঈশ্বরসিং-এর মুখে কোনো রা নেই।
কুলবন্ত কাউর মোটাসোটা গড়নের মহিলা। উজ্জ্বল দুটি চোখ। উপরের ঠোঁটে হালকা গোঁফের রেখা। একটু পরখ করলেই বোঝা যায় বড়ই রাশভারি মহিলা। ঈশ্বরসিং মাথা নিচু করে এককোণে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে। মাথার পাগড়ি খসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। হাতের মুষ্ঠিতে ধরে রাখা কৃপাণ ক্রমশ ঝুলে পড়ছে, অথচ তার দেহের গড়ন ও উচ্চতা দেখে মনে হয়, সে একজন সুঠাম দেহের অধিকারী যুবক। কিছুক্ষণ এমনি নীরবতায় অতিক্রান্ত হয়। কুলবন্তের উজ্জ্বল নয়নযুগল নেচে ওঠে। নীরবতা ভঙ্গ করে কুলবন্ত তাকে ডাকে, ঈশ্বর সিয়া।’ ঈশ্বরসিং চোখ তুলে তাকায়। কিন্তু কুলবন্তের তির্যক দৃষ্টির দিকে চেয়ে থাকা তার পক্ষে দুরূহ। তাই অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
কুলবন্ত চিৎকার করে উঠল, ‘ঈশ্বর সিয়!’ স্বরটা সামলে নিয়ে খাট থেকে উঠে তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, তুমি এতদিন কোথায় ছিলে?’ ঈশ্বরসিং শুষ্কঠোঁটে জিহ্বা ঘষে নিয়ে উত্তর দেয়, আমি জানি না।’ কুলবন্ত রেগে ওঠে, এটা কি কোনো জবাব হল?
ঈশ্বরসিং কৃপাণ একপাশে ছুঁড়ে ফেলে দেয় এবং খাটে সটান শুয়ে পড়ে। তাকে দেখে মনে হয় সে অনেক দিন যাবত রোগে ভুগছে। কুলবন্ত খাটের দিকে তাকাল, সেখানে ঈশ্বরসিং শুয়ে ছিল। কুলবন্তের মনে সহানুভূতি ও আবেগের সঞ্চার হল। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মায়াভরা কণ্ঠে জিজ্ঞাসা করে তোমার কী হয়েছে বল তো।’
ঈশ্বরসিং ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। এরপর কুলবন্তের দিকে তাকিয়ে খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে দেখে আর ডাকে, কুলবন্ত। তার কণ্ঠ বিষাদভরা।
কুলবন্তের চোখে প্রেমের আবেগ ফুটে ওঠে, জী, বল’, বলে সে সাড়া দেয়।
ঈশ্বরসিং পাগড়ি খুলে ফেলে। আশ্রয়কাতর দৃষ্টি মেলে তার দিকে তাকায়। মাংসল পেটে জোরে চড় মেরে, মাথায় ঝাঁকুনি দিয়ে বিড়বিড় করে বলে, ‘মাথা বিগড়ে গেছে। মাথায় ঝাঁকুনির ফলে তার চুলের খোঁপা খুলে যায়। কুলবন্ত হাতের আঙুলে স্বামীর চুল আঁচড়াতে থাকে। এমনিভাবে স্বামীর চুলে আঙুল চালিয়ে প্রীতিভরা কণ্ঠে প্রশ্ন করে, ঈশ্বরসিং, এতদিন কোথায় ছিলে?’ কবিরে’, ঈশ্বরসিং কুলবন্ত কাউরকে ভীরু দৃষ্টিতে দেখতে থাকে এবং দু’হাতে তার দু বাহু জাপটে ধরে বলে, ‘গুরুর দিব্যি, তুমি অত্যন্ত বাজে মেয়ে!
কুলবন্ত কাউর এক পলকে ঝাঁকি দিয়ে হাত সরিয়ে নিয়ে জিজ্ঞেস করে, আমার দিব্যি, বল, কোথায় ছিলে, শহরে গিয়েছিলে?’ ঈশ্বর চুলের খোঁপা তৈরি করতে গিয়ে উত্তর দেয়, কোথাও না।
কুলবন্ত রেগে বলে, তুমি নিশ্চয় শহরে গিয়েছ, বহু টাকা লুট করেছ। এখন আমার কাছে লুকোবার চেষ্টা করছ।’
বাপের জন্ম নই যদি তোমার সঙ্গে মিথ্যে বলি।’ কুলবন্ত চুপসে যায়। কিন্তু আবার হঠাৎ রেগে ওঠে, আমার বোধগম্য হচ্ছে না, সে রাতে তোমার কী হয়েছিল। বেশ ভালোই ছিলে। শহর থেকে লুণ্ঠিত সব অলঙ্কারপত্র আমার পরনে। হঠাৎ কি জানি তুমি উঠে দাঁড়ালে আর জামাকাপড় পড়ে কোথায় বেরিয়ে পড়লে।
ঈশ্বরসিং-এর চেহারা ফ্যাকাশে আকার ধারণ করে। কুলবন্ত তার এই পরিবর্তন দেখে বলে, ‘দেখলে, তোমার চেহারার রঙ কেমন পাল্টে গেল। ঈশ্বর সিয়া, দিব্যি করে বলছি, নিশ্চয় কোনো রহস্য আছে।’
‘তোমার মাথার দিব্যি দিয়ে বলছি, সত্যিই কিছু হয়নি। ঈশ্বরসিং-এর কণ্ঠ প্রাণহীন। কুলবন্তের সন্দেহ আরও সুদৃঢ় হয়, ঠোঁট কামড়িয়ে জোরের সঙ্গে বলে, ঈশ্বর সিয়া, কী ব্যাপার বল তো, আটদিন আগে তুমি যেমন ছিলে এখন তো তেমন নেই।’
ঈশ্বরসিং উঠে বসে। যেন কেউ তাকে হামলা করেছে। কুলবন্তকে পাশে বসিয়ে বলে, কুলবন্ত আমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
কুলবন্তের অভিযোগ শেষ হয় না, বলে, তুমি সেদিন রাতে বাইরে কেন গিয়েছিলে? জাহান্নামে! বলছনা কেন?’
‘কিছু হলে তো বলব।’
‘আমাকে নিজ হাতে পুড়িয়ে মার যদি মিথ্যে বল।
ঈশ্বরসিং দুই হাতে তার গলা জড়িয়ে ধরে এবং মুখখানি কানের কাছে নিয়ে গিয়ে চুপি-চুপি কী যেন বলে। গোঁফের কেশরাজি কুলবন্তের নাকে প্রবেশ করলে তার হাঁচি পায়। দুজনেই হেসে ওঠে।
ঈশ্বরসিং কুলবন্তকে স্নেহভরা দৃষ্টিতে দেখতে থাকে; এখন অতীতের কথা ভুলে যাও।’
কুলবন্ত কাউরের উপরের ঠোঁটে শিশিরের মতো বিন্দু বিন্দু ঘাম দেখা দেয়। এক বিচিত্র ভঙ্গিতে চোখের পুতলি ঘুরিয়ে বলে, চল সন্ধি করি।’
ঈশ্বরসিং তার সুডৌল বাহু ধরে জোরে চাপ দেয়। কুলবন্ত কাউর চটপট করে একদিকে সরে পড়ে, ‘সরে যাও ঈশ্বর সিয়া। ব্যথা পাই।’ ঈশ্বরসিং আবার কুলবন্ত কাউরকে পাকড়াও করে পাশে বসায় এবং মিষ্টি আলাপে তার হৃদয় কোমল করার চেষ্টা করে। কুলবন্ত এই ততশামোদে গলে মোম হয়ে যায়।
কুলবন্তের উপরের ঠোঁট মৃদু কাঁপছিল। ঈশ্বরসিং-এর মনে হিংস্রতা জেগে ওঠে। সজোরে তার বাহু ধরে কচলান দিয়ে বলে, কুলবন্ত গুরুজির দিব্যি করে বলছি, তুমি বড় ভালো।’
কুলবন্ত তার বাহুতে চাপ দেয়ার ফলে সৃষ্ট লাল দাগ দেখে বলল, তুমি বড় নিষ্ঠুর ঈশ্বর সিয়া।
ঈশ্বরসিং ঘন কালো গোঁফের আড়ালে মুচকি হাসে, তুমি কোনো অংশে কম নও।’ কুলবন্ত কাউর জ্বলন্ত আগুনে দেয়া কড়াইয়ের মতো জ্বলে ওঠে। অন্যদিকে ঈশ্বরসিং যেন কিসের ভাবনায় মগ্ন। সে কুলবন্তের উপস্থিতি পর্যন্ত ভুলে যায়। কুলবন্ত নিচু গলায় বলে ঈশ্বর সিয়া, তুমি কোন জগতে বিচরণ করছ?’
এ-কথা শুনে ঈশ্বরসিং-এর ধ্যান ভাঙে, যেন হাত থেকে সব তাসগুলো ছিটকে পড়েছে। ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে দেখতে থাকে এদিক-ওদিক। তার মাথায় চুলের গোড়ায় ঘামের প্রলেপ দেখা দেয়। কুলবন্ত কাউর তাকে দৃষ্টি আকর্ষণের বহু চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তারপর খাট থেকে নিচে নেমে রেগে নাসা ফুলিয়ে বলে, ঈশ্বর সিয়া, কোন হারামজাদির কাছে। তুমি এতদিন ছিলে, কে আমার বুক থেকে তোমাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল?
ঈশ্বরসিং পালঙ্কে শুয়ে হাই তোলে। কুলবন্ত কাউর রাগে গরগর করতে থাকে, আমি জিজ্ঞাসা করছি সে কে? কে?’
ঈশ্বরসিং প্রাণহীন কণ্ঠে উত্তর দেয় ‘কেউ না, কুলবত্ত কেউ না।’ কুলবন্ত কোমরে হাত রেখে দৃঢ়তার সঙ্গে বলে, ‘ঈশ্বর সিয়া, আমি আজ সত্য-মিথ্যা যাচাই করবই। গুরুজির দিব্যি করে বল, তোমার কল্পনারাজ্যে কি কোনো নারীর ছবি নেই?
ঈশ্বরসিং কিছু বলার চেষ্টা করে। কিন্তু কুলবন্ত তার সুযোগ না-দিয়েই গর্জন করে ওঠে, কসম খাওয়ার আগে ভেবে দেখ, আমিও সরদার নেহালসিং-এর মেয়ে। মিথ্যা বললে কেটে টুকরো-টুকরো করে ফেলব। নাও, এবার গুরুজির কসম খাও…বলো তোমার চিন্তা-ভাবনা কোনো নারী নিয়ে কিনা?’
ঈশ্বরসিং বেদনার সঙ্গে সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে হ্যাঁ’ বলে। কুলবন্ত মুহূর্তের জন্য পাগল হয়ে যায়। লাফিয়ে গিয়ে ঘরের কোণায় রাখা কৃপাণ তুলে নেয় হাতে। কলার খোসার মতো কৃপাণের কভার ছুঁড়ে ফেলে ঈশ্বরের ঘাড়ের ওপর প্রচণ্ড আঘাত হানে।
তড়িৎ ফিনকি দিয়ে রক্তের ফোয়ারা ছোটে।
এতেও কুলবন্তের সাধ মেটে না। ঈশ্বরের চুলের জটা ধরে টানতে-টানতে অশ্লীল ভাষায় সেই অদৃশ্য নারীকে তিরস্কার করতে থাকে। ঈশ্বরসিং কিছুক্ষণ পর দুর্বল কণ্ঠে আবেদন জানায়, কুলবন্ত ওসব ভুলে যাও।’ তার কণ্ঠে বেদনার অতলান্ত ছায়া। কুলবন্ত কাউর পেছনে সরে দাঁড়ায়। ঈশ্বরসিং-এর গলায় কৃপাণের আঘাতে সৃষ্ট ক্ষত থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত গড়িয়ে তার গোঁফের ওপর এসে পড়েছে। রক্তাক্ত ঈশ্বরসিং কৃতজ্ঞতা ও অভিযোগের মিশ্ৰদৃষ্টিতে কুলবন্তের দিকে চোখ তুলে তাকায়; কুলবন্ত, তুমি এত তাড়াতাড়ি এমন কাজ করলে! যাক যা হওয়ার হয়ে গেছে। কুলবন্ত আবার রেগে ওঠে, কিন্তু সে তোমার কোন আত্মীয়া বল?’ এবার রক্ত ঈশ্বরসিং-এর মুখে এসে পড়ে। রক্তের স্বাদ জিহ্বায় অনুভব করে। তার সারা দেহ শিউরে ওঠে। আর আমি … আমি এই কৃপাণ দিয়ে … ছয় জনকে খুন করেছি।’ মনে-মনে উচ্চারণ করে ঈশ্বরসিং।
কুলবন্তের মাথায় শুধু দ্বিতীয় মহিলার ছবি, আমি জিজ্ঞেস করছি কে সেই হারামজাদি?’ ঈশ্বরসিং-এর চোখ ঢুলুঢুলু করছিল। তার মুখ হালকা উজ্জ্বল দেখায়, সে কুলবন্তকে বলে, সেই নিপাপকে তিরস্কার কর না।’ কুলবন্ত চিৎকার করে ওঠে, আমি জানতে চাই, সে কে?
ঈশ্বরসিং-এর গলার স্বর জড়িয়ে আসে, ‘বলছি’। এরপর ঘাড়ে হাত বুলিয়ে তাজা রক্ত দেখে তার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। মানুষও এক বিচিত্র জীব।
কুলবন্ত তখনও তার উত্তরের প্রতীক্ষায় ছিল; ‘ঈশ্বর সিয়া, তুমি কাজের কথা বল। ঈশ্বরসিং রক্তাক্ত গোঁফের ফাঁকে আবার মুচকি হাসে, কাজের কথাই বলছি। আমার গলা ধরে আসছে–এখন ধীরে-ধীরে সব কথাই বলব।’ কথা বলার সময় তার মাথায় চুলের গোড়ায় শীতল ঘামের প্রলেপ দেখা দেয়।
‘কুলবন্ত, আমার প্রিয় … আমি তোমাকে বোঝাতে পারব না, আমার কী হয়েছে? মানুষ এক বিচিত্র জীব। শহরে লুটতরাজের সময় আমিও সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করি। গহনাপত্র ও টাকা যা লুট করে এনেছি, সব তোমার হাতে দিয়েছি। কিন্তু একটা কথা তোমাকে বলিনি।’ ঈশ্বরসিং কাটা ঘায়ের ব্যথায় ঝাঁকিয়ে ওঠে। কুলবন্ত কাউরের সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই–বরং রূঢ়কণ্ঠে আবার প্রশ্ন করে, ‘কোন কথা?’
গোঁফে জমে যাওয়া রক্ত ফুঁ দিয়ে অপসারণ করে ঈশ্বরসিং বলে, ‘যে-বাড়িতে…আমি লুঠতরাজের মানসে প্রবেশ করেছিলাম…সেখানে সাতজন লোক ছিল। ছয়জনকে আমি খুন করি এই কৃপাণ দিয়ে; যেটা দিয়ে তুমি আমাকে … বাদ দাও সে সব কথা … শোনো … একটি সুন্দরী মেয়ে … তাকে তুলে আমি সঙ্গে নিয়ে আসি।’
কুলবন্ত কাউর নীরবে শুনতে থাকে। ঈশ্বরসিং আরেকবার ফুঁ দিয়ে গোঁফে জমাট রক্ত দূর করে বলে, কী বলব, দারুণ সুন্দরী মেয়েটি …তাকেও হত্যা করতাম। কিন্তু হায় …আমি তার রূপে মজে যাই।’ কুলবন্ত শুনে বলে, হু। এবং আমি তাকে তুলে নিয়ে চলতে থাকি রাস্তায় …কী জানি বলছিলাম? হ্যাঁ, রাস্তায় …নদীর তীরে একটি বৃক্ষের ছায়ায় তাকে কাঁধ থেকে নামিয়ে রাখি।’ এ কথা বলতে বলতে ঈশ্বরসিং-এর। গলা শুকিয়ে আসে।
কুলবন্ত ঢোক গিলে গলা ভিজিয়ে নিয়ে বলে, তারপর কী হল?
ঈশ্বরসিং অতিকষ্টে ধীরকণ্ঠে বলে, কিন্তু…তার স্বর তলিয়ে যায়; কুলবন্ত কাউর ধমক দিয়ে বলে, তারপর কী হল?
ঈশ্বরসিং তার বুজে আসা চোখ মেলে কুলবন্তের দিকে তাকায়; তার দেহের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রাগে থরথর করে কাঁপছে। আসলে সে…মরে গিয়েছিল, সেটা ছিল তার মৃত লাশ…যেন ঠাণ্ডা গোশত…! কুলবন্ত আমাকে তোমার হাত ধরতে…দাও।’
কুলবন্ত কাউর নিজের হাত ঈশ্বরসিং-এর হাতে রাখে, তখন তার হাত বরফের চেয়ে অধিক ঠাণ্ডা, যেন ঠাণ্ডা গোশত।