ঠাকুরদাদার ছুটি

তোমার ছুটি নীল আকাশে , 
          তোমার ছুটি মাঠে , 
তোমার ছুটি থইহারা ওই 
          দিঘির ঘাটে ঘাটে । 
তোমার ছুটি তেঁতুলতলায় , 
          গোলাবাড়ির কোণে , 
তোমার ছুটি ঝোপেঝাপে 
          পারুলডাঙার বনে । 
তোমার ছুটির আশা কাঁপে 
          কাঁচা ধানের খেতে , 
তোমার ছুটির খুশি নাচে 
          নদীর তরঙ্গেতে । 
  
  
আমি তোমার চশমা - পরা 
          বুড়ো ঠাকুরদাদা , 
বিষয়-কাজের মাকড়সাটার 
          বিষম জালে বাঁধা । 
আমার ছুটি সেজে বেড়ায় 
          তোমার ছুটির সাজে , 
তোমার কণ্ঠে আমার ছুটির 
          মধুর বাঁশি বাজে । 
আমার ছুটি তোমার ই ওই 
          চপল চোখের নাচে , 
তোমার ছুটির মাঝখানেতেই 
          আমার ছুটি আছে । 
তোমার ছুটির খেয়া বেয়ে 
          শরৎ এল মাঝি । 
শিউলি-কানন সাজায় তোমার 
          শুভ্র ছুটির সাজি । 
শিশির-হাওয়া শিরশিরিয়ে 
          কখন রাতারাতি 
হিমালয়ের থেকে আসে 
           তোমার ছুটির সাথি । 
আশ্বিনের এই আলো এল 
          ফুল-ফোটানো ভোরে 
তোমার ছুটির রঙে রঙিন 
          চাদরখানি প ' রে । 
  
  
আমার ঘরে ছুটির বন্যা 
          তোমার লাফে-ঝাঁপে ; 
কাজকর্ম হিসাবকিতাব 
          থরথরিয়ে কাঁপে । 
গলা আমার জড়িয়ে ধর , 
          ঝাঁপিয়ে পড় কোলে , 
সেই তো আমার অসীম ছুটি 
          প্রাণের তুফান তোলে । 
তোমার ছুটি কে যে জোগায় 
          জানি নে তার রীত , 
আমার ছুটি জোগাও তুমি , 
          ওই খানে মোর জিত । 
Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *