তোমার ছুটি নীল আকাশে , তোমার ছুটি মাঠে , তোমার ছুটি থইহারা ওই দিঘির ঘাটে ঘাটে । তোমার ছুটি তেঁতুলতলায় , গোলাবাড়ির কোণে , তোমার ছুটি ঝোপেঝাপে পারুলডাঙার বনে । তোমার ছুটির আশা কাঁপে কাঁচা ধানের খেতে , তোমার ছুটির খুশি নাচে নদীর তরঙ্গেতে । আমি তোমার চশমা - পরা বুড়ো ঠাকুরদাদা , বিষয়-কাজের মাকড়সাটার বিষম জালে বাঁধা । আমার ছুটি সেজে বেড়ায় তোমার ছুটির সাজে , তোমার কণ্ঠে আমার ছুটির মধুর বাঁশি বাজে । আমার ছুটি তোমার ই ওই চপল চোখের নাচে , তোমার ছুটির মাঝখানেতেই আমার ছুটি আছে । তোমার ছুটির খেয়া বেয়ে শরৎ এল মাঝি । শিউলি-কানন সাজায় তোমার শুভ্র ছুটির সাজি । শিশির-হাওয়া শিরশিরিয়ে কখন রাতারাতি হিমালয়ের থেকে আসে তোমার ছুটির সাথি । আশ্বিনের এই আলো এল ফুল-ফোটানো ভোরে তোমার ছুটির রঙে রঙিন চাদরখানি প ' রে । আমার ঘরে ছুটির বন্যা তোমার লাফে-ঝাঁপে ; কাজকর্ম হিসাবকিতাব থরথরিয়ে কাঁপে । গলা আমার জড়িয়ে ধর , ঝাঁপিয়ে পড় কোলে , সেই তো আমার অসীম ছুটি প্রাণের তুফান তোলে । তোমার ছুটি কে যে জোগায় জানি নে তার রীত , আমার ছুটি জোগাও তুমি , ওই খানে মোর জিত ।