টাপোরি

আমি যে-কিনা পালটিমারা তিতিরের ছররা খাওয়া আকাশ
জলে ডোবা ফানুসপেট মোষের শিং থেকে জন্মেছিলুম
অলসচোখ দুপুরে পুঁতি-ঝলমলে নিম-গাছটার তলায়
থাবা-তুলতুলে আদর খাচ্ছিলুম ভুরু-ফুরফুরে শ্যামাঙ্গী গৌরীর
হাতখোঁপায় গোঁজা বৃষ্টির কাছে নতশির স্বর্ণচাঁপার কোলে

আমি যে-কিনা গ্রিলবসানো সকালমেঠো দিগন্তে দাঙড়িয়ে
মাড়ানো ঘাসের পদচিহ্ণ-আঁকা শোকাচ্ছন্ন রোদের সোঁদাভূমিতে
শেষ গড়াগড়ির বিছানায় কাঠকীটের রাতঘ্যাঙোর শুনেছি
ভাবছিলুম উদ্দেশ্য প্রণোদিত হলেই খারাপ হতে যাবে কেন রে
পদ অলঙ্কৃত গতরের ঘামে কি খাটুনির লবণকলা নেই

আমি যে কিনা ডাহুককে জিজ্ঞেস করেছি প্রজাপতির ডানায় কী স্বাদ পাস
কানপটিতে খুরধ্বনি সেঁটে চিপকো খেলার তেজবরে কনের আদলে
জাহাজ-এড়ানো লাইটহাউসের আলোয় এক করাতদেঁতো হাঙর
যামিনী রায়ের আঁকা স্তনের কেরানির সঙ্গে মহাকরণের খাঁচালিফটে
হেঁকেছিলুম আরোহী-ফেলা পুংঘোড়ার লাগামছেঁড়া হ্রেষা

আমি যে কিনা উচ্চিংড়ের স্বরলিপিতে গাওয়া ফুসফাসুরে গান
বেড়াজালের হাজার যোনি মেলে ধরে রেখেছি ইলশে ঝাঁকের বর্ণালী
স্বদেশি আন্দোলনের লাশঝোলা স্মৃতির গাবগাছের পাশের ঝোপে
শুকপোকায় কুরেখাওয়া লেবুপাতার পারফিউমড কিনার বরাবর
পাথরকুচি কারখানা-মালিকের ঘাড়কামানো পাহাড় থেকে উড়ছি

কলকাতা, ১ মার্চ ১৯৯০

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *