টান
একেবারে জঙ্গল। ধারে কাছে কোনও জনপ্রাণী নেই। সারা দিনই ঝিঁ ঝিঁ পোকার ঝিঁ ঝিঁ। দশ কিলোমিটার আগে একটা ছোটখাট গ্রাম পড়ে আছে। তার পরেই আঁকাবাঁকা পথ ক্রমশই অন্ধকার থেকে অন্ধকারে এসে ঢুকেছে। পচা পাতার গন্ধ। তিন পুরু পাতা তুললে মাটির দেখা মিলতে পারে। তারই মাঝে হঠাৎ একটা বনবাংলো। কয়েক বিঘে পরিষ্কার জায়গার ওপর দোতলা একটা বাংলো। কাঠের সিঁড়ি দুটো পাক মেরে দোতলার ঘেরা বারান্দায় গেছে। তিন দিকে তিনটে ঘর। মাঝখানে বসার ঘর। পুরোটাই কাঠের তৈরি। এমনি বেশ সুন্দর, কার্পেট টার্পেট পাতা। দূরে একসার ঘর। বনকর্মীদের থাকার ব্যবস্থা।
চারিদিকে বিশাল বিশাল গাছ। যেদিকেই যাও ঘুটঘুটে অরণ্য। পেছন দিকে একটা নদী। জমি ভাঙতে ভাঙতে, নীচু হতে হতে, বহু নীচে নেমে গিয়ে নদী ছুঁয়েছে। সেও জঙ্গলে ঢাকা। বাংলোটা উঁচুতে, তাই জল দেখা যাচ্ছে। নদীর ওপারেও আরও গভীর জঙ্গল। বনবিভাগের কর্মী বললেন, হাতি, বাঘ, হায়না, বনবেড়াল সব ওই দিক থেকেই আসবে। ভয়ের কিছু নেই। একটু উৎপাত করেই চলে যাবে। ভয় একটাই, সেটা হল সাপ আর কাঁকড়া-বিছে। প্রচুর জোঁক আছে। প্যান্ট, জামা, জুতো দেখে পরবেন। শোওয়ার আগে বিছানাটা ভালো করে দেখে নেবেন। আর রাতে আলো জ্বেলে, হাততালি দিতে দিতে বাথরুমে যাবেন। সূর্যাস্তের পর বাইরে বেরোবেন না। বিদ্যুতের ওপর নির্ভর না করাই ভালো। এই আছে এই নেই। আমরা লণ্ঠন দেব, আর আপনাদের কাছে টর্চ আছে। রাতের ডিনার আটটায়, তারপর আর আমাদের পাবেন না। সেই ভোর ছটায়। তখন চা।
বড়মামা বললেন, ‘এমারজেনসি হলে?’
‘আপনার আবার এমারজেনসি কী? আপনি তো ডাক্তার।’
‘সে ধরুন শরীরের কিছু হলে ব্যাগে সব আছে, এমন কি দাঁত তোলার সাঁড়াশিও আছে।’
‘আপনি কীসের ডাক্তার?’
‘সব কিছুর। এ টু জেড। অ্যানিমিয়া, অ্যালার্জি থেকে শুরু করে জলাতঙ্ক।’
‘তা হলে তো স্যার আমাকে একটু দয়া করতে হবে। পার দাঁত আপনি কত নেন?’
‘কিচ্ছু না, ওটা ফাউ।’
‘স্যার, একটু ক্লিয়ার করবেন?’
‘অবশ্যই। একটা সাবান কিনলে চিরুনি ফ্রি। সেই রকম হচ্ছে পেটের চিকিৎসা, কটাস করে একটা দাঁত তুলে দিলুম। ফ্রি, মানে ফাউ।’
‘ধরুন শুধু ফাউ।’
‘ফেউ আর ফাউ আলাদা করা যায় না। যাক অত কথার দরকার নেই, হাঁ করুন।’
বড়মামা আমাকে বললেন, ‘এই, টর্চ আর যন্তরটা বের করে আন।’
ভদ্রলোক বললেন, ‘আমার নয় আমার মিসেসের।’
‘তাহলে চলুন সেখানে। তার আগে বলুন, অন্য এমারজেনসির কী হবে, যেমন ফায়ার, এখানে সবই তো কাঠ।’
‘ফায়ারের ভয় নেই, একটাই ভয়, সাপ। স্নেক ভেনাম নেই কোথাও। তবে জেনে রাখুন, সর্পাঘাত আর বজ্রাঘাত ভাগ্যে থাকা চাই।’
বড়মামা জিগ্যেস করলেন, ‘এখানে ভূত আছে?’
‘অনেকেই বলে, তবে আমি কোনওদিন সামনাসামনি পড়িনি। তার অবশ্য একটা কারণ আছে, আমি রাম নাম করি।’
‘আমি রাম নামের ক্যাসেট এনেছি।’
‘তবে আবার কী? ভূত বাইরে যত পারে ঘুরুক, ঘরে না ঢুকলেই হল।’
‘আর একটা কথা জানার আছে, এখানে আরশোলার সংখ্যা কত?’
‘অনেক। প্রচুর আরশোলা। আরশোলা কোথায় নেই? চাঁদেও পাবেন। তাহলে স্যার চা, জলখাবার খেয়ে যাবেন?’
‘কোথায়?’
‘আমার মিসেসের দাঁত।’
বড়মামা পর পর তিন কাপ চা খেলেন। অন্য কিছু খেলেন না। খাবারের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘সন্দেহজনক।’ তারপর কেয়ারটেকার ভদ্রলোককে জিগ্যেস করলেন, ‘রাতের কী অবস্থা?’
‘মুরগি। মুরগি আর মুরগির ডিম ছাড়া এখানে কিছুই পাওয়া যায় না।’
‘কেন মাছ? কাছেই তো নদী!’
‘ও নদীতে কুমির ছাড়া কিছু নেই।’
‘কুমির কী খায়?’
‘কেন বাছুর! মানুষ আর পাবে কোথায়? ছুটকো ছাটকা যা পায় তা বাঘেই মেরে দেয়।’
‘বন্দুক নেই? বন্দুক?’
‘সে আছে গার্ডদের কাছে, মানুষ মারার জন্যে। বাঘ কে মারবে? বাঘ মারলে চাকরি যাবে, জেলে যেতে হবে। তার চেয়ে বাঘের পেটে যাওয়া ভালো।’
‘বাত থাকলে খুব আরামের।’
‘বুঝলুম না স্যার।’
‘বাঘ তো কড়মড় করে হাড় চিবোয়, বাতে খুব আরামের। এই রকমই আমার ধারণা। কে পরীক্ষা করে দেখবে? তেমন সাহসী বাতের রুগি কোথায়?’
আমরা হাঁটতে হাঁটতে কেয়ারটেকার সাহেবের বাংলোতে গেলুম। প্রায় মিনিট দশেক লাগল। নদীটা ঘুরে প্রায় গা ঘেঁষে বইছে। বড়মামা জিগ্যেস করলেন, ‘কুমিরের এত কাছে থাকেন?’
কেয়ারটেকার বললেন, ‘কাঁটা তারের বেড়া রয়েছে। তাছাড়া খাড়াই বেয়ে এতটা আসার ক্ষমতা হবে না। সকালে এলে দেখবেন, তীরে শুয়ে রোদ পোয়াচ্ছে।’
কেয়ারটেকার সাহেবের বাংলোটি ভারি সুন্দর। তাঁর স্ত্রী হলেন নেপালি। পরিষ্কার বাংলা বলেন। তিনটি কুকুর। তিনটেই অ্যালসেশিয়ান। তাগড়া তাগড়া। একটা আবার সাদা। হয়ে গেল। আমার বড়মামা কুকুর প্রেণী। ষোলোটা অ্যালসেশিয়ান। বাড়িতে আলাদা একটা মহল—কুকুর মহল। হেঁকে ডেকে বলেন, আই অ্যাম এ ডগ-লাভার।
নেপালী ভদ্রমহিলা খুব সুন্দরী। শালোয়ার-কামিজ পরে আছেন। তাঁর একটি মেয়ে আছে আমার বয়সী। নাম সুদর্শনা। মেয়েটি খুব মিশুকে। বড়মামা দাঁত দেখবেন কি, কুকুরদের সঙ্গে মেঝেতে বসে পড়েছেন। কুকুরগুলোও সেইরকম, মানুষ চেনে। বড় বড় জিভ বের করে বড়মামার গায়ে গা লাগিয়ে, দুটো দুটো পা সামনে ছড়িয়ে দিয়ে হ্যা হ্যা করছে। বড়মামার পরীক্ষা শুরু হল। সাদাটাকে ধরে বললেন, ‘দেখি, দাঁত দেখা। শো মি ইউর টিথ।’ কুকুর সঙ্গে সঙ্গে হাঁ করল। বড়মামা পেনসিল টর্চ ফেলে দাঁতের ভেতর বাইরে পরীক্ষা করলেন। তিনটেরই দাঁত পরীক্ষা করে সেই পরিচিত শব্দটি করলেন, ‘হুম’। তারপরে একটা হুঙ্কার ছাড়লেন, ‘সুদর্শনা।’
বাড়িটা যেন বড়মামার। মুহূর্তে সব আপনার লোক। বড় মামার অদ্ভুত এই আকর্ষণ। সবাই যেন কতকালের আত্মীয়। সুদর্শনা ছুটে এল। বড়মামা বললে, ‘একটা টুথব্রাশ নিয়ে এস।’
‘নতুন? নতুন পাব কোথায়?’
‘তাহলে একটা পুরনোই আন, আর আন এক মগ জল।’
আধঘণ্টা লাগল তিনটে কুকুরের দাঁত সাফ করতে। তারপর এক একটা কুকুরের থাবা হাতের তালুতে ফেলে, খাঁজে খাঁজে পরীক্ষা করা হল। বিরাট একটা নেলকাটার বেরলো ব্যাগ থেকে। কটাস কটাস করে নখ কাটা হল। আরামে কুকুরদের চোখ বুজে বুজে আসছে। মুখগুলো সব আদুরে আদুরে হয়ে উঠছে। কুকুরগুলোর চেহারা পালটে গেল।
কেয়ারটেকার সাহেবের স্ত্রীর নাম বিপাশা। বড়মামা এইবার তাঁর দাঁত নিয়ে পড়লেন। সব কটা দাঁত একটা মটের পেছন দিক দিয়ে একটা একটা ঠুকে ঠুকে দেখলেন। ঠং করে আওয়াজ করলেই আনন্দ। ‘বাঃ বাঃ, চমৎকার! বাঘের হাড় চিবোতে পারবে।’ এরই মধ্যে একটার থেকে আওয়াজ বেরল ঠ্যাক। বড়মামা বললেন, আঃ, জানসে মারা। ডালমে কুছ কালা। সুদর্শনা কাম হিয়ার। মায়ের চোয়াল দুটো কুমিরকে যে ভাবে হাঁ করিয়ে রাখে সেই ভাবে কিছুক্ষণ টেনে ধরে থাক।’
সেই দাঁত নিয়ে কিছুক্ষণ সাধনা চলল। এক সময় বললেন, ‘গোড়ায় সার দিয়ে রাখলুম, চলেগা কিছুদিন। পিছে মারো টান—উৎপাটন।’ বিপাশা দেবী খুব খুশি। অস্বস্তি অনেক কমেছে।
বড়মামা বললেন, ‘এটা মেরামত হল। অনেক কাজ বাকি রইল। ডেনটিস্টের কাছে যেতে হবে। এই দশটা ক্যাপসুল এখন খেতে হবে। রোজ একটা করে দশদিন।’
এরপর আমাদের জন্যে গরম গরম চিকেন পকোড়া এল। তারপরে এল সুগন্ধী দার্জিলিং চা। পকোড়া অতি উত্তম হয়েছে। বড়মামা তারিফ করে করে ছটা খেয়ে ফেললেন। এদিকে সুদর্শনার সঙ্গে আমার ভাব বেশ জমে উঠেছে। মেয়েটা খুব মিশুকে, ভদ্র। সামনের বছর উচ্চ মাধ্যমিক দেবে। পড়াশোনায় খুবই ভালো।
বাইরে একটা বেদিতে বসে আছি দুজনে। পেল্লায় একটা চাঁদ উঠেছে। এদিককার আকাশ শহরের আকাশের মতো ডার্টি নয়। ধোঁয়া নেই, ধুলো নেই। বড় বড় গাছ সদাসর্বদা আকাশে পাতার ঝাড়ু চালাচ্ছে। আমার এক হাত দূরে বসে আছে সুদর্শনা। তার শরীর থেকে সুন্দর একটা মিষ্টি গন্ধ বেরচ্ছে। জিগ্যেস না করে পারলাম না, ‘কী মেখেছ? সুন্দর গন্ধ।’
‘আমার একটা স্যুটকেস আছে। তার তলায় ইউক্যালিপটাস পাতা বিছিয়ে তার ওপর আমার পোশাক পাট পাট করে রাখি। সুন্দর গন্ধ হয়ে যায়। এখানকার জঙ্গলে অনেক গাছ আছে যার পাতায় সুন্দর সুন্দর গন্ধ।’
চাঁদের আলোয় চারপাশ ভেসে যাচ্ছে। সুদর্শনার সরু সরু আঙুলে একটা আংটি রয়েছে। পাথর বসানো। ভীষণ ঝিলিক মারছে। আবার কৌতূহল, ‘আংটিটা কী হীরের?’
সুদর্শনা বললে, ‘হীরে কিনা জানি না। একদিন ওই পাশ দিয়ে নদীতে গিসলুম। দেখি কী একটা চক চক করছে। তুলে এনে মাকে দেখলুম। মা একটা আংটি করে দিলে। পাথরটা খুব লাকি। আমার কাছে আরও একটা সাংঘাতিক জিনিস আছে, কুমিরের দাঁত।’
‘কুমিরের দাঁত! আমাকে দেখাবে?’
‘আমার ঘরে চল, দেখাব।’
লাল টকটকে সিল্কের ‘কার’। তাইতে ঝুলছে এতখানি লম্বা একটা দাঁত। গোড়াটা সোনার পাত দিয়ে মোড়া। ছোট্ট একটা সোনার আংটা।
সুদর্শনা ফিসফিস করে বলল, ‘ভালো করে দেখে নাও।’
সাদা দাঁত, নীল, সরু সরু আঁকাবাঁকা রেখা। ডগার দিকটা বাঁকা। এই দাঁত মানুষ খায়!
আবার আমরা বেদিতে এসে বসলুম। জিগ্যেস করলুম, ‘কুমিরের দাঁত পরলে কী হয়?’
‘যে কোনও মানুষকে বশ করা যায়। যাকে যা বলবে সে তাই করবে।’
‘আমাকে একটা দেবে?’
‘কাল সকালে ডাকুকে বলব, ওর কাছে থাকতে পারে।
সুদর্শনা আমার কাঁধে হাত রেখে বললে, ‘ভয় পেয়েছ মনে হচ্ছে। কুমির তো মরে গেছে, এটা তো তার একটা মাত্র দাঁত। এটা তোমাকে কামড়াবে না কি? ভীতু। আমার কাছে এক মাস থাকো, তোমাকে সাহসী করে দেব।’
সুদর্শনা আমার পিঠে হাত রেখে অনেকক্ষণ তবলা বাজাল। আমি সাপের ভয়ে পা তুলে আসন করে বসে আছি। সুদর্শনা বললে, ‘কখনো চিৎ হয়ে শুয়ে তারায় ভরা আকাশ দেখেছ? অনেক উঁচুতে, পাতাদের বেড়া ঘেরা নীল সমুদ্র। চাঁদ নিজের জলে নিজেই সাঁতার কাটছে। চিৎ হয়ে শোও, তোমাকে এক্ষুনি একটা জিনিস দেখাব।’
চিৎ হয়ে শুয়ে আছি। অজস্র পাতা আর পাতা দিয়ে তৈরি শামিয়ানা। চাঁদ ভাসছে। রুপোর তবক ফেলেছে পাতায় পাতায়। একেবারে মাথার ওপরের গাছে, সাদা সাদা কী সব নড়ছে। আর শব্দ হচ্ছে। দুটো কাঠ ঠোকার আওয়াজ। সুদর্শনা বললে,
‘কী দেখছ বলো?’
কিছুই যখন বলতে পারছি না, সুদর্শনা বললে, ‘গাছের মাথায় সাদা সাদা কিছু দেখেছ কি?’
‘দেখছি তো!’
‘সাতটা ঝুঁটিঅলা বক গাছের মাথায় বাচ্চা তৈরি করেছে। শুনতে পাচ্ছ। বাচ্চাদের ডাক? চব্বিশ ঘণ্টা ডেকেই চলেছে। মায়েরা থেকে থেকে ভীষণ রেগে গিয়ে কী রকম বকছে শুনছ?’
সুদর্শনাদের বাংলোতেই রাতের খাওয়া হল। অসাধারণ সব রান্না। পোলাওয়ের স্বাদ এখনো জিভে। নাকে জাফরানের গন্ধ। আমরা ফিরে এলুম আমাদের দোতলার ঘরে। দরজার তালাটা খুলতেই, জমে থাকা চাঁদের আলো আমাদের পায়ের ওপর দিয়ে গড়িয়ে বারান্দায় চলে গেল। পুবের খোলা জানালা দিয়ে ঢুকেছে। বড়মামা বললেন, ‘এখুনি শুবি নাকি?’
‘এই জায়গায় ঘুমিয়ে রাত কাটাতে আছে?’
‘ঠিক বলেছিস।’
আমরা পোশাক পালটে পশ্চিমের বারান্দায় দুটো বেতের তৈরি গার্ডেন-চেয়ারে বসলুম। বড়মামা আমার কানে ফিস ফিস করে বললেন, ‘ডান দিকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখ।’
বারান্দায় একেবারে শেষ মাথায় আর একটা গার্ডেন চেয়ারে পা ছড়িয়ে বসে আছে ধবধবে সাদা একটা মূর্তি। বড় বড় সাদা চুল, বড় বড় দাড়ি।
বড়মামার ফিস ফিস, ‘বাঘের আগে ভূত এল। রিয়েল ভূত। পা টিপে টিপে ঘরে আয়। ক্যাসেট চালা, ক্যাসেট।’
রাম নাম শুরু হল। ভীমসেন যোশী। কিছুক্ষণ চলার পর বড়মামা বললেন, ‘উঁকি মেরে দেখে আয় ভূত ভেগেছে কিনা।’
এ কী! ভূত তো আমাদের ঘরের দিকেই এগিয়ে আসছে। বিপজ্জনক ভাবে এগিয়ে আসছে। লম্বা ভূত। বড়মামা বললেন, ‘আপাদমস্তক চাদর চাপা দে। রাম নাম ফেল করেছে। ড্রাগ রেজিসট্যান্ট ডিজিজের মতো রামনাম রেজিসট্যান্ট ভূত। চটি পায়ে দিয়ে খেলিয়ে খেলিয়ে হাঁটা হচ্ছে। এটা যেন খেলার মাঠ।’
চাদর মুড়ি দিলেও দেখতে পাচ্ছি, ভূত একেবারে দরজার সামনে। চাঁদের আলো আছে বলে ইলেকট্রিক ‘অফ’। আগের লণ্ঠনটা জ্বালানো উচিত ছিল। ভূত জিগ্যেস করছে, ‘আসতে পারি? বড় ভালো চালিয়েছেন আমার ফেবারিট।’
বড়মামা তিন বার কাঁপা কাঁপা গলায় বললেন, ‘রাম রাম’।
ভূত বললে, ‘আশ্চর্য! কী করে আমার নাম জানলেন। রামরতন মুখার্জি।’
বড়মামা ঝট করে চাদর সরিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়লেন, ‘ব্যাটা রাম! তুই এখানে?’
‘পাখির টানে ভাই, পাখির টানে।’