জ্যান্টাইলদের প্রতি ইহুদি দৃষ্টিভঙ্গি

জ্যান্টাইলদের প্রতি ইহুদি দৃষ্টিভঙ্গি

ইহুদি বিতর্ক নিয়ে আমরা ততদিন পর্যন্ত কোনো সমাধানে পৌঁছতে পারব না, যতদিন না তারা নিজ উদ্যোগে এ বিতর্কের সমাধানে এগিয়ে আসে। জ্যান্টাইলদের পত্রিকা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ইহুদিদের অভিযোগ—

‘মেনে নিলাম আপনারা যা প্রকাশ করছেন তা সত্য এবং কিছুসংখ্যক ইহুদি সত্যিই অপরাধী। তাই বলে প্রতিবার নাম প্রকাশের সময় “ইহুদি” শব্দটি উল্লেখ করতে হবে কেন? আপনারা চাইলে A1 Wood, Morris Gest, Louis Marshall, Samuel Untermyer, Edward Lauterbach Felix Warburg নামগুলোকে অপরাধী বলে সাব্যস্ত করতে পারেন। যখন আপনার ইহুদি উচ্চারণ করেন, তখন কি পুরো সম্প্রদায়কে এক কাতারে নিয়ে আসা হচ্ছে না? এর দরুন পুরো সম্প্রদায় অভিযুক্ত হচ্ছে।’

এমন যদি হতো, শুধু জড়িত ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে এবং জাতিগত পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না, তবুও কিন্তু সমাজে আহামরি কোনো পরিবর্তন আসত না।

হাজারো বছর ধরে জ্যান্টাইলদের সাথে ইহুদিদের যে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্ব, তার কোনো অবসান হতো না। কিছুদিন পরপর ইউরোপজুড়ে যে অ্যান্টি-সেমেটিক আন্দোলন জেগে ওঠে, তা থেকে ইহুদিরা কখনো পরিত্রাণ পেত না। জ্যান্টাইল প্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষত Dearborn Independent ইহুদিদের সমালোচনা করে যে অসংখ্য আর্টিকেল প্রকাশ করেছে, তার উদ্দেশ্য—জ্যান্টাইলদের মনে ইহুদিবিদ্বেষী চেতনা জাগিয়ে তোলা নয়; এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য হলো—ইহুদি বিতর্ক সম্পর্কে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে সজাগ করে তোলা। মূলত পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে, নিরপেক্ষ ও সত্য তথ্য প্রকাশ করতে গেলেও তা ইহুদি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে জ্যান্টাইলদের মনে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেবে। এ পর্যন্ত পত্রিকা প্রতিষ্ঠানটি ইহুদিদের সম্পর্কে যে পরিমাণ তথ্য ছাপিয়েছে, তার একটিও যদি ভুল হতো, তবে এত দিনেও তারা কোনো মামলা করল না কেন?

এক্ষেত্রে ইহুদিরা নিরুপায়। জ্যান্টাইল পত্রিকাগুলো দ্বারা প্রকাশিত তথ্যসমূহ ভুল প্রমাণিত করার জন্য কোনো রকম তথ্য-প্রমাণ ইহুদিদের হাতে নেই। তারা চায়, প্রকাশিত আর্টিকেল ও কলামগুলো সমাজের মানুষ না পড়ুক। তারা অনেক প্রচেষ্টা চালিয়েছে আমাদের প্রতিষ্ঠানকে বাজারে হাস্যরসের পাত্র বানানো যায় কি না। তা ছাড়া নিজ জাতিগোষ্ঠীর জন্য জ্যান্টাইলের ছাপানো এ জাতীয় আর্টিকেল ও কলাম পড়া তো একেবারে নিষিদ্ধ, যা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ, ইহুদিরা চায় না—অ্যান্টি- সেমিটিক বিক্ষোভ তাদের সম্প্রদায়ের মধ্য জাগ্রত হোক। আমাদের অভিযোগসমূহ শোনার পর ইহুদি সংগঠনগুলো যে জবাব দিলো, তা শুনে সত্যি অবাক হবেন। এমন কয়েকটি জবাব সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ নিচে উপস্থান করা হলো—

১. ‘তোমরা যা বলছ—তার সবই সত্যি, তবুও তোমরা আমাদের অভিযুক্ত করতে পারো না।’ সাংবাদিকতা শিল্পে ইহুদিদের বেশ কিছু মূলনীতি রয়েছে, যার একটি হলো—ইহুদিরা কখনো গণ-আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারবে না। যদি তাদের নিয়ে কোনো বিতর্ক হয়, তবে তা কেবল ভালোর জন্যই হতে হবে। ইহুদিদের প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে—এমন কোনো বিতর্ক জনসম্মুখে আনা যাবে না। এর উদ্দেশ্য হলো—ইহুদিদের অপকর্মগুলো যেন জনসম্মুখে প্রকাশ না পায়। শুধু জ্যান্টাইলরাই নয়; ইহুদিদের কোনো মুখপাত্র পর্যন্ত এমন কোনো কাজ করতে পারবে না।

২. ‘আপনারা যা বলছেন, তার সবই সত্যি। কিন্তু আপনারা যে সমাধান চাইছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। আপনাদের জন্য ইহুদিরা কখনো পরিবর্তিত হবে না; বরং আমাদের জন্য আপনাদের পরিবর্তন হতে হবে।’

তারা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিয়েছে, ইহুদিরাই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি এবং তাদের প্রয়োজনে আমাদেরকেই পরিবর্তীত হতে হবে। তাহলে থিয়েটার ও চলচ্চিত্র শিল্পে ইহুদিরা যে নগ্ন সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে, তা কি আমাদের মেনে নিতে হবে? পুঁজিবাজার ও অর্থবাজারকে পৃথক করে যে ধ্বংসাত্মক সমাজব্যবস্থার জন্ম দিয়েছে, তা কি আমাদের মেনে নিতে হবে? সুদভিত্তিক অর্থব্যবস্থায় তারা যেভাবে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পদ দখল করে যাচ্ছে, তা কি আমাদের মেনে নিতে হবে? খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল মিশিয়ে ইহুদিরা প্রতিদিন বিষ পান করাচ্ছে, তা কি আমাদের মেনে নিতে হবে?

তারা নিজেদের যে Mosaic Law-এর অনুসারী দাবি করে থাকে—সত্যি বলতে মোজেস যদি এই যুগে বেচে থাকতেন, তবে তিনি কখনো ইহুদিদের এই বানানো আইনসমূহ গ্রহণ করতেন না।

৩. ‘আপনাদের দাখিল করা অভিযোগসমূহের সমাধান তখনই সম্ভব, যখন আমরা চাইব। কিন্তু আমাদের এমন কোনো প্রয়োজন পড়েনি যে, আপনাদের অভিযোগগুলো মাথা পেতে নিতে হবে।’

যারা নিজেদের প্রকৃত ইহুদি বলে দাবি করে, তাদের ওপর অভিসম্পাৎ বর্ষণের কথা হাজার বছর আগে ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলো জিহুদিয়া (Judah), প্যালেস্টাইনে ফিরে যাওয়ার অর্থ হলো—বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ধ্বংসের পথ পরিষ্কার করা। ইহুদিরা যে নিজেদের মোজেসের অনুসারী বলে দাবি করে, সেই মোজেস কখনো জিহুদিয়ার ওপর সন্তুষ্ট ছিলেন না। নিজেদের মাঝে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ইজরাইলবাসী একত্রিত হয়ে এই গোত্রটিকে হাজার বছর আগে বহিষ্কার করে। এমন নয় যে, তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে; বরং শাস্তিস্বরূপ ইজরাইল থেকে নির্বাসিত করা হয়েছে। তাহলে কীসের ভিত্তিতে আজকের জায়োনিস্টরা দাবি করে, তারা প্যালেস্টাইনের প্রকৃত মালিক?

যখন কেউ বাইবেল পড়বে, তার খুব সতর্কতার সাথে বাইবেল পড়া উচিত। ইহুদিরা দাবি করে তারা পয়গম্বর Abraham-এর অনুসারী। একটি বিষয় পরিষ্কার করে বলতে চাই, ওল্ড টেস্টামেন্টের নয়-দশমাংশ হলো ইজরাইলি গ্রন্থ, যা ইজরাইলবাসীর জন্য অবতীর্ণ হয়েছে। Abraham, Isaac, Jacob, Moses, Joshua, Gideon, Samuel, Esther ও Mordecai সবাই ছিলেন ইজরাইলবাসীর পয়গম্বর। তারা কেবল জুদাহদের জন্য পয়গম্বর হয়ে আসেনি। এমনকী যীশু যে অনুসারীদের খুঁজে পান, তাদের অবস্থান ছিল গ্যালিলি অঞ্চলে—যা ছিল জুদাহ থেকে অনেক দূরে। তাঁর অনুসারীদের মধ্যে কেবল একজনকে পাওয়া যায়, যিনি বেনজামিন প্রদেশ হতে যীশুর অনুসারী হতে গ্যালিলিতে আসেন। তার নাম হলো St. Paul। তিনি হলেন যীশুর একমাত্র ইহুদি অনুসারী।

আমেরিকান ইহুদিদের উচিত, নিজেদের চরিত্রে আত্মসমালোচনার অভ্যাস গড়ে তোলা। তারা যদি জীবনের অর্ধেকটা সময় কেবল নিজেদের সমালোচনায় ব্যয় করত, তবে কখনোই এতসব আক্রমণের মুখোমুখি হতে হতো না; বরং সাধারণ মানুষের উন্নয়নকল্পে তারা বিশেষ অবদান রাখতে পারত। যেখানে ইহুদিরা জ্যান্টাইলদের যেকোনো কাজের প্রতি উচ্চ সংবেদনশীল মনোভাব পোষণ করে, সেখানে নিজেদের সকল ভুলত্রুটিতে থাকে নীরব।

ইহুদিদের ওপর আসা যেকোনো অভিযোগ ও সমালোচনা মোকাবিলা করতে তারা বদ্ধপরিকর। কিন্তু অসংযত জীবন পরিহার করে ইহুদিরা যে সুন্দর সমাজব্যবস্থায় ফিরে আসবে—এমনটা তাদের মাঝে কখনো দেখা যায় না। এমন নয় যে, জ্যান্টাইলরা ইহুদিবিদ্বেষী হয়ে জন্মগ্রহণ করে; বরং তাদের নিয়মিত কার্যকলাপই জ্যান্টাইলদের ধীরে ধীরে ইহুদিবিদ্বেষী করে তোলে।

—Walter Lippmann, in The American Hebrew

জ্যান্টাইলদের দৈনন্দিন জীবনচক্রে ইহুদিদের দৌরাত্ম্য

একটা সময় ছিল, যখন অর্থের চেয়ে সৃজনশীলতায় মানুষ বেশি আনন্দ খুঁজে পেত। বেছে বেছে এমন জিনিসকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করত, যা করে আনন্দ পাওয়া যেত। অর্থের চেয়ে মানসিক প্রশান্তিই ছিল অধিক গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ তার মনস্ততত্ত্বকে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে পূর্ণরূপে ব্যবহার করত। নিজেকে স্রষ্টারূপে কল্পনা করতে পারাটা তাদের কাছে ছিল গর্বের বিষয়।

মনের সুখে গান গেয়ে সকাল-সন্ধ্যা মাঠে কাজ করে যেত কৃষাণের দল। রোগে-শোকে তাদের সাহায্য করতে মাঠে এগিয়ে আসত কৃষাণীর দল। তাদের মাঝে পারস্পরিক সম্মান, মায়া, ভালোবাসা ইত্যাদি কোনোটির কমতি ছিল না। মৌসুম শেষে তারা যতটুকু ফসল পেত, তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকত। তাদের মনে অতি লোভ বলতে কোনো বিষয় ছিল না। তা ছাড়া একের বিপদে অন্যজন এগিয়ে আসা ছিল সামাজিক রীতি।

গৃহপালিত প্রাণীগুলোর প্রতি ভালোবাসার কোনো কমতি ছিল না। নিজ সন্তানের মৃত্যুতে কৃষাণীর বুক চিরে যতটা আর্তনাদ শোনা যেত, ততটাই আর্তচিৎকার ভেসে উঠত দুই মাসের একটা বাছুর মারা গেলেও। পাড়া-প্রতিবেশীরা সবাই তাকে সহমর্মিতা জানাতে ছুটে আসত। এমনও দিন যেত, যখন ক্ষরা বা অতি বৃষ্টির দরুন মাঠের সব ফসল নষ্ট হয়ে যেত, তবুও তাদের গোয়াল ঘরে থাকা নিষ্পাপ প্রাণীগুলো কখনো অভুক্ত থাকেনি। সন্তানদের অভুক্ত না রাখতে বাবা-মায়েরা যেমন কম খেয়ে দিনাতিপাত করত, তেমনি নিষ্পাপ এই প্রাণীগুলোর জন্যও তারাও অর্ধভুক্ত থাকত।

অভাব-দরিদ্রতা কেবল পেট পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল; বুক পেরিয়ে মগজ পর্যন্ত উঠতে পারেনি। কারণ, এই চিন্তা বুক পেরিয়ে মাথায় উঠে গেলে—তা লোভ-লালসায় রূপ নিতে পারে, যা পৃথিবীর সকল ধন-সম্পদ দিয়েও মেটানো সম্ভব নয়। এই সুন্দর সমাজব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়ার একমাত্র উপায় হলো—মানুষের মগজে লোভ-লালসার বীজ ঢুকিয়ে দেওয়া। এটাই একমাত্র অস্ত্র, যা পৃথিবীর যেকোনো সুন্দর সমাজব্যবস্থাকে মুহূর্তে ধ্বংস করে দিতে পারে। আর ইহুদিদের সুদি ব্যাংকগুলো এই বিশেষ অস্ত্রের পেছনেই কাজ করেছে।

ডলারভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু হওয়ায় আমেরিকার প্রতিটি মানুষ এটিকে বিনিময়মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। নিরুপায় হয়ে কৃষকরা নিজেদের সকল সম্পদ (স্বর্ণ- রৌপ্য) তুলে দেয় ব্যাংকের হাতে। আর সঙ্গী করে নেয় বিভিন্ন অঙ্কের ঋণ। আগেই বলা হয়েছে, ফেড চালু হওয়ার পর বাছাই করে করে শুধু উৎপাদনশীল খাতগুলোর ওপরই অধিক সুদের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়।

এই সুদের বর্ধিত খরচ মেটাতে কৃষকরা উৎপাদিত পণ্যের বিক্রয় মূল্য বাড়িয়ে দিতে বাধ্য হয়। এই ধাক্কায় মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম মুহূর্মুহু করে বাড়তে শুরু করে। সীমিত আয়ের মানুষদের ছটফটিয়ে মরে যাওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়। এদিকে কৃষকেরই-বা কী করার আছে? তাদেরও তো বর্ধিতমূল্যে পণ্য বিক্রি করতে হবে; নতুবা সুদের অর্থ পরিশোধ করবে কীভাবে? সমাজে যারা অভিজাত এলাকায় বসবাস করে, তারা কি আদৌ গ্রামের এই কৃষকদের আর্তনাদ শুনতে পায়?

ইহুদিভিত্তিক পত্রিকা প্রতিষ্ঠানগুলোও নিজদের কাজে নেমে পড়ে। তাদের হাতে আছে কলম, যা পৃথিবীর যেকোনো মরণাস্ত্রের চেয়ে অধিক ধ্বংসাত্মক। তারা একের পর এক কলাম প্রকাশ করতে শুরু করে। যেখানে গ্রামের কৃষকদের অতি মুনাফালোভী, মজুতদার, অন্ন ডাকাত ইত্যাদি বলে প্রচার শুরু করে। সামাজিক বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এগিয়ে আসে আমেরিকান প্রশাসন।

সরকারিভাবে প্রতিটি পণ্যের বিক্রয়মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়, যেন শহরে বসবাসরত মধ্যবিত্তদের কোনো সমস্যা না হয়। কিন্তু সরকারি ভাবে যে বিক্রয়মূল্য বেঁধে দেওয়া হয়, তা দিয়ে কৃষকদের উৎপাদন খরচই উঠে না। তার ওপর প্রাকৃতিক দুর্যোগের দরুন ফসল নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তো রয়েছেই! রাগে-দুঃখে তারা নিজেদের শস্যখেত নিজেরাই পুড়িয়ে দেয়। দুধ-ডিমের অপ্রত্যাশিত কম বিক্রয়মূল্য দেখে কৃষকরা নিজের হাতেই সব নষ্ট করতে শুরু করে।

তবে পৃথিবীতে তো বেঁচে থাকতে হবে! শুরু হয় খাদ্যে ভেজাল মেশানোর যুগ। যে কৃষকরা একসময় নিজের রক্ত-ঘামে ভেজা হাতে ফসল ফলাত, সেই হাত দিয়েই তারা আজ খাদ্যে বিষ মেশাতে শুরু করে। নিজেদের এই অধঃপতন দেখে ভগ্ন হৃদয়ে সন্তানদের বলছে—’শহরে গিয়ে পড়ালেখা করে অন্য কোনো কাজ করো; কৃষক হওয়ার প্রয়োজন নেই।’ এভাবেই আমাদের সমাজ থেকে হারিয়ে যায় সৃজনশীলতার স্বর্ণালি অধ্যায়। সেই সন্তানরা পড়ালেখা করে আজ যেসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে, তার সবই প্রায় ইহুদিদের অঙ্গ সংগঠন!

শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে ইহুদিদের ষড়যন্ত্রের গল্প তো আগেই বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি শিক্ষাবোর্ডের ওপর কমিউনিস্টরা সিংহাসন গেড়ে বসেছে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে গড়ে তুলেছে ফেমিনিস্ট সোসাইটি। বলে রাখছি, এই তথাকথিত নারীবাদী ফেমিনিস্ট সোসাইটি একদিন প্রতিটি রাষ্ট্রেরই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। সমাজের যে নারীরা একসময় স্বামীর বুকে আশ্রয় খুঁজত, আজ সেই নারীরা ইহুদিদের প্ররোচনায় পড়ে অর্ধনগ্ন হয়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে। তাদের চোখে যীশু তো নারী অধিকার লুণ্ঠনকারী দোসর!

ধর্মীয় শিক্ষা বন্ধ করে দেওয়ার দরুন ফেমিনিজমের মতো নতুন নতুন অজস্র পরগাছা পুরো পৃথিবীজুড়ে গড়ে উঠবে। নতুন প্রজন্ম হয়তো আর জানতে পারবে না, যীশুর প্রকৃত পরিচয় কী এবং কেন তিনি এই পৃথিবীতে এসেছিলেন। তারা বুঝবে না, কেন বাইবেলে মেয়েদের শালীন ও পর্দানশীল হতে বলা হয়েছে। শিক্ষাঙ্গন থেকে বহু আগেই প্রার্থনা সংগীতের চর্চা উঠে গেছে। লাইব্রেরিগুলোতে ধর্মতত্ত্বের পরিবর্তে ইহুদি সাহিত্য জায়গা করে নিয়েছে। সেখানে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে মনগড়া সব গল্পের বই।

ইহুদিরা ধর্মের শিকড় কেটে দেওয়ার যত চেষ্টাই করুক না কেন, এই পৃথিবী থেকে তো সৃষ্টিকর্তার পরিচয় মুছে দেওয়া সম্ভব নয়। সামান্য চিন্তাশীল মানুষও যদি হৃদয়ের চোখ দিয়ে প্রকৃতির দিকে তাকাতে শুরু করে, তবে অবশ্যই মহান সৃষ্টিকর্তার সাড়া খুঁজে পাবে। তাই শিকড় কাটতে হলে প্রতিটি মানুষকে হৃদয় শূন্য করতে হবে। যেহেতু তা করা সম্ভব নয়, তাই এই আবেগকে নিয়ে ইহুদিরা ভিন্ন খেলায় মেতে উঠেছে। গির্জাগুলোতে আজ পাদরিদের চেয়ে রাবাইদের দৌরাত্ম্য যেন অধিক বেশি। তারা বলে—

‘আমরাই সৃষ্টি কর্তার মনোনীত সম্প্রায়। আমরা তোমাদের নিকট রক্ষাকর্তা পাঠিয়েছি। আমরা তোমাদের নিকট বাইবেল পাঠিয়েছি। সুতরাং ইজরাইল যাও এবং আশীর্বাদ নিয়ে এসো।

Karl Marx-এর ধ্বংসাত্মক সমাজতন্ত্রের নাম করে ইহুদিরা পুরো রাশিয়াজুড়ে কী তাণ্ডব চালিয়েছে, সে গল্প আশা করি আপনাদের মনে আছে। ‘ন্যায়ভিত্তিক’ সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার নাম করে তারা রাশিয়ার সমস্ত প্রাকৃতিক সম্পদ শোষণ করেছে। আগেই বলেছি, বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে এই পৃথিবী এমন এক সময় পার করেছে, যখন অর্থনীতির ওপর লেখা দশটি বইয়ের মধ্যে আটটিই লিখেছে ইহুদি লেখকরা। সেগুলো আজ পৃথিবীর বিখ্যাত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ানো হচ্ছে। নতুন প্রজন্মগুলো গড়ে উঠছে মানসিক প্রতিবন্ধীরূপে।

স্কুল-কলেজ ও গির্জাগুলো আজ যেন কমিউনিস্টদের দুর্গ হয়ে উঠেছে। আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্ত-ঘামে নির্মিত যে সমাজ, তা নিজেদের অজ্ঞতার জন্যই ধ্বংস হতে বসেছে। যে জাতির ইতিহাসে শিক্ষা নেই, সে জাতিকে মেরুদণ্ডহীন বলাই শ্রেয়। আমরা হলাম তেমনই এক মেরুদণ্ডহীন জাতি।

১৯১৭-১৮ সালের দিকে কোনো এক ম্যাগাজিন পত্রিকা একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করে, যাতে কিছু প্রশ্ন করা হয়। যেমন : আমাদের সমাজের কী হয়েছে? আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কী পড়ানো হচ্ছে? আমাদের তরুণ-তরুণীরা এত উগ্রতায় মত্ত হয়ে পড়ছে কেন?

এর উত্তর খুবই সহজ; শিক্ষা ব্যবস্থা। বলশেভিক আন্দোলনকারীরা ইতোমধ্যে পৃথিবীর অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু বামপন্থি দলের জন্ম দিয়েছে। প্রতিটি জায়গায় একদল প্রফেসর এবং তাদের অনুগত কিছু শিষ্য শিক্ষার্থীদের মাঝে লেনিন-ট্রটস্কিকে বিপর্যস্ত মানবতার আদর্শ নেতা হিসেবে উপস্থাপনে চেষ্টা করে যাচ্ছে; অনেকাংশে সফলও হয়েছে। অনেক সময় বিভিন্ন প্রফেসরকে তারা অর্থের বিনিময়ে কিনেও নেয়, যা রাষ্ট্রীয় প্রশাসন পর্যন্ত জানে না। পরে এই শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কমিউনিস্ট আন্দোলনের ঝান্ডা হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। খুব অল্পতে উঠতি বয়সি শিক্ষার্থীরা নিজেদের নেতা-কর্মী বলে ভাবতে শেখে। তারা কল্পনা করে, তাদের হাতেই দুনিয়া পালটে যাবে। কিন্তু তারা বুঝতে পারে না, এই ক্ষমতার দৌড় কতটুকু। তারা নিজেদের রুশ বিপ্লবের লাল পতাকাবাহী বলে কল্পনা করে। তাদের দ্বারা বিপ্লব চালিয়ে নিতে ইহুদিভিত্তিক ব্যাংকগুলো থেকে আসতে থাকে পানির মতো বিনিয়োগ।

রুশ বিপ্লবে ছাত্র রাজনীতি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সে কথা কেবল তারাই বলতে পারবে, যারা এই বিপ্লব নিজ চোখে দেখেছে। তাই বিপ্লবকালে খাদ্য সংকট যেন মহামারি রূপ ধারণ না করে, সে জন্য Maxim Gorky ছাত্র রাজনীতিবিদদের জন্য নিয়মিত খাদ্যের ব্যবস্থা করতেন। বলতে বাধা নেই, এই বামপন্থি দলগুলোর সহায়তা বলেই ইহুদিদের বিষাক্ত সংস্কৃতি আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত কলুষিত করে যাচ্ছে।

তর্ক-বিতর্ক কখনো সকল সমস্যার সমাধান হতে পারে না। আমরা যে মানসিক দাসত্বের বন্ধনে ইতোমধ্যেই আটকে পড়েছি, তা থেকে নিজেদের রক্ষা করার একটাই উপায়; শিক্ষার আলো জাগ্রত করা। অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের চাদরে যে ইউরোপ একসময় চাপা পড়েছিল, সেও আলোর সন্ধান পেয়েছে কেবল প্রকৃত শিক্ষার বদৌলতে।

মহান সৃষ্টিকর্তা এ পর্যন্ত আমাদের মাঝে অসংখ্য পয়গম্বর পাঠিয়েছেন, যাদের কল্যাণে এই অসভ্য মানবজাতি সভ্যতার সন্ধান পেয়েছে। যে মনীষীদের কল্যাণে আমরা আজকের আলোকিত সমাজব্যবস্থা পেয়েছি, তাদের গল্প সন্তানদের শোনাতে হবে। যদিও এই সমাজের চৌকাঠগুলোতে ঘুণ ধরেছে, তবুও আশা রাখি—উপযুক্ত পদক্ষেপ নিলে চৌকাঠগুলো ঘুণমুক্ত করা সম্ভব হবে। আমাদের সন্তানরা যদি জানত, তাদের শরীরের কাদের রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে, তাদের ইতিহাস কতটা গৌরবময়, তাহলে কখনো এই মানবরূপী ভণ্ড ইহুদিদের বানোয়াট সব মতবাদে নিজেদের উজার করে দিত না।

প্রকৃত খ্রিষ্টানরূপে এই পৃথিবীতে টিকে থাকতে চাইলে ইজরাইলের ইতিহাস নিয়েও অধ্যয়ন করতে হবে। আব্রাহাম, জ্যাকব, মোজেস, জোসেফ ও ইজরাইলের ১২টি গোত্রের প্রতিটির পরিচয় জানতে হবে। কেন তাদের ওপর অভিশাপ এলো এবং কেন তাদের জেরুজালেম থেকে বিতাড়িত করা হলো; সব জানতে হবে। এই শিক্ষার কোনো শেষ নেই; নতুবা ইহুদিরা ভালো মানুষরূপে প্রতিবার আমাদের ধোঁকা দিয়ে যাবে।

ইহুদি বিতর্ক নিয়ে জ্যান্টাইলদের প্রতি কিছু সতর্কবাণী

আমাদের একটি সমস্যায় প্রায়ই পড়তে হয়, যখন চিন্তা করি নন-ইহুদি সম্প্রদায়দের একত্রে কী বলে সম্বোধন করা উচিত?

জ্যান্টাইল শব্দটি এক্ষেত্রে প্রকৃত সমাধান হতে পারে না। যখন আমরা ইহুদিদের কোনো সদস্যকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করি, তখন সে ভালো করেই জানে, সে একজন ইহুদি। ইহুদিদের প্রতিটি সদস্য একে অপরকে শনাক্ত করতে সক্ষম। এ কারণে যদি ইহুদিদের কোনো এক সদস্যকে উদ্দেশ্য করে কেউ সমালোচনা করে, তবে তাকে রক্ষায় পুরো জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে। পৃথিবীর যেখানেই ইহুদিরা অবস্থান করুক না কেন, নিজ জ্ঞাতি-ভাইদের সকল প্রয়োজনীয় তথ্য তাদের নিকট মজুদ থাকে। দূরত্ব বাড়লেও ইহুদিদের বন্ধন কখনো দুর্বল হয় না।

এ জাতীয় বৈশিষ্ট্য জ্যান্টাইলদের মাঝে পাওয়া যাবে না। পুরো বিশ্বে ইহুদিদের লক্ষ্য- উদ্দেশ্য যেমন এক ও নির্দিষ্ট, জ্যান্টাইলদের বেলায় তেমনটা নয়। এ কারণে জ্যান্টাইলদের পক্ষে একতাবদ্ধ জাতিতে পরিণত হওয়া সম্ভব নয়। জ্যান্টাইলদের রয়েছে বহু ভাষা, ধর্ম, জাতীয়তা ও সংস্কৃতি। এ কারণে প্রকৃতিগতভাবেই জ্যান্টাইলরা বিভিন্ন দলে বিভক্ত, যা থেকে তাদের কোনো মুক্তি নেই।

তাদের এই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ইহুদিরা হাতিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন রকমের সুবিধা, যা ইতিহাসে অসংখ্যবার প্রমাণিত হয়েছে। তারপরও জ্যান্টাইলদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছে, যারা এই জাতিগোষ্ঠীটির নানান অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গেয়ে তাদের সকল উদ্দেশ্যের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও যাবে। এ কারণে বলতে হয়—

‘স্রষ্টা কিছু কিছু মানুষের অন্তরে সিলমোহর মেরে দিয়েছেন, যারা চোখ থাকতেও দেখে না এবং কান থাকতেও শুনতে পায় না।’

আন্তর্জাতিক বিশ্বে ইহুদিরা যে ক্ষমতার কাঠামো তৈরি করেছে, তা দেখে মনে হয়—তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে কখনোই সফল হওয়া যাবে না। খ্রিষ্টানদের অবস্থা আজ এমন, যেন ইহুদিদের পরিয়ে দেওয়া চশমা ব্যতীত বাইবেল পাঠ করা অসম্ভব। এ কারণে তারাও বিশ্বাস করে, ইহুদিরা স্রষ্টা মনোনীত সম্প্রদায় এবং একদিন তারাই বিশ্ব শাসন করবে। অন্ধের মতো বাইবেলের এমন সব ব্যাখ্যা মেনে নেওয়ার দরুন খ্রিষ্টানরা আজ ভয়ানক রকমের বিভ্রান্তিতে পড়েছে।

ইহুদিদের ‘শান্তি! শান্তি!’ নামক মিথ্যা বুলির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা ইতোমধ্যে অনেকটা সময় পার করেছি। সততা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার নামে তারা যা করছে, তা এককথায় ভণ্ডামি। গত কয়েক দশক ধরে Kehillah, American Jewish Committee, Anti-Defamation League-সহ বিভিন্ন সংগঠনের সাথে তাল মিলিয়ে জ্যান্টাইল সমাজ বহু লজ্জার জন্ম দিয়েছে।

বর্তমানে আমরা এমন এক যুগে বাস করছি, যেখানে বিশ্ব গণমাধ্যমের সিংহভাগ অংশ‍ই ইহুদিরা নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে চাইলেও ঘুমিয়ে থাকা জ্যান্টাইল জাতিকে জাগিয়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। যেখানে আমাদের সন্তানরা ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাব্যবস্থায় জীবনের এক-তৃতীয়াংশ সময় পার করছে, সেখানে পরিণত বয়সে বিশেষ এই জাতিগোষ্ঠীটির বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রমের ব্যাপারে তাদের মস্তিষ্কে আমূল পরিবর্তন আনা সহজ কোনো কাজ নয়।

বলে রাখা উচিত, যেকোনো বড়ো ধরনের বিপ্লবের শুরুটা কিন্তু অল্প কিছুসংখ্যক মানুষের হাত ধরেই হয়। আমরা যদি নিয়মিত ইহুদিদের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত থাকি এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যসমূহ (যা বিষাক্ত) বর্জনের তালিকায় নিয়ে আসি, তবেই তা জায়োনিস্টদের অন্তরে কাঁপুনি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। আরও ভালো হয়, যদি আমরা পুনরায় আমাদের হারিয়ে যাওয়া নৈতিকতাকে জাগিয়ে তুলতে পারি।

আধুনিক অর্থব্যবস্থা চালু হওয়ার পূর্বে আমাদের পূর্বপুরুষগণ যেভাবে ব্যবসায়-বাণিজ্য করত, আমাদের উচিত সে প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়া। ব্যবসায়ে অধিক মুনাফা উপার্জনের পরিবর্তে আমাদের উচিত, পণ্যের গুণগত মানের দিকে লক্ষ্য স্থির রাখা। তবে এটা ঠিক, ইহুদিরা কখনো হাল ছাড়বে না। তারা চারদিক দিয়ে আমাদের আক্রমণ করে যাবে এবং মনুষ্যত্বহীন জাতিতে পরিণত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

একটা যুগ ছিল যখন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ে মূল্য তালিকার পরিবর্তে পণ্যের গুণগত মানকে বেশি প্রধান্য দিত, সে সময়ে বাজার ছিল জ্যান্টাইলদের নিয়ন্ত্রণে। এরপর আসে ইহুদি বণিকদের যুগ, যাদের দৌড়াত্ম্যে বাজার হয়ে পড়ে একচেটিয়া।

নকল করার কাজে ইহুদিরা কতটা দক্ষ—তা ইতোমধ্যেই ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অসহায় ক্রেতারা না বুঝে, পণ্যের গুণগত মানের কথা না ভেবে, ঝাঁকে ঝাঁকে ইহুদি বিপণিগুলোতে হাজির হতে শুরু করে। অপরদিকে বিক্রি কমে যাওয়ার দরুন জ্যান্টাইল বণিকরা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে তারাও ব্যবসায়িক প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়। সাধারণ মানুষ যখন বুঝতে পারে, সস্তা মূল্যে তারা যা খাচ্ছে তা কেবলই বিষ, তখন তারা পুনরায় জ্যান্টাইলদের বিপণিগুলোতে ফিরে আসতে শুরু করে। কিন্তু ততদিনে চারদিক ভেজাল পণ্যের ব্যবসায়ীতে ভরে গেছে।

ইহুদিদের ধ্বংসাত্মক আক্রমণ হতে নিজেদের রক্ষা করার আরেকটি উপায় হলো—তথাকথিত উদারপন্থি ও মুক্তচিন্তাধার নীতির নামে যে মতবাদগুলো নিয়মিত সমাজে ঢুকে পড়ছে, তা গ্রহণ করার পূর্বে এর উৎস, উদ্দেশ্য ও ইতিহাস পূর্ণরূপে অধ্যয়ন করা। আমোদ- বিনোদনের খোরাক হিসেবে যেসব চলচ্চিত্র, নাটক-থিয়েটার ও কৌতুক-অভিনয়ের পেছনে আমরা নির্বোধের মতো সময় পার করছি, বুঝতে পারছি না—এর ভেতরে কী ভয়ংকর ষড়যন্ত্র কাজ করছে। সুকৌশলে উচ্ছৃঙ্খলতা ও সাম্প্রদায়িকতার বিষ আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সংবাদপত্রে যা নিয়মিত পাঠ করছি, তার কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা, তা বোঝা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ইহুদিদের অনুমতি ছাড়া আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ধর্মীয় বই পাঠ করানো যেন একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়; কীভাবে পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো পাঠ করে ব্যাখ্যা করতে হবে, সে কায়দা-কানুনও এখন ইহুদিদের কাছে শিখতে হচ্ছে! বুঝতে পারছি না, আমাদের সন্তানরা যে সকল গল্প, কবিতা ও উপন্যাসের বই নিয়মিত পাঠ করছে, তার ছলে না জানি কোন চেতনার বিষ মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ধীরে ধীরে আমাদের প্রকৃত নেতাদের পরিচয় একেবারে ভুলতে বসেছি। আমরা একদল মানুষের অনুসরণ করতে শুরু করেছি, যারা কিনা আমাদের ভাষায় ঠিকমতো কথাও বলতে পারে না। আজ না আছে এমন কেউ, যে আমাদের সঠিক পথের নির্দেশনা দেবে, আর না আছে এমন কেউ, যে ঈশ্বরের নিকট সঠিক পথের প্রার্থনা করবে। পুরো মাঠ আজ বিরান ভূমি। সেখানে সবাই নখ-দন্তহীন অসহায় বাঘের সমতুল্য। এমতাবস্থায় আমরা যদি হিংস্র কোনো প্রাণী দ্বারা আক্রমণের স্বীকার হই, তবে আমাদের রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসবে না।

আমাদের যে পুনরায় পূর্বের সমাজব্যবস্থায় ফিরে যেতে হবে, তা এখন আর বিবেকের দাবি নয়; বরং সময়ের দাবি। এর চেয়ে আরও অধঃপতনের দিকে চলে গেলে সমাজকে আর শুধরে নেওয়া সম্ভব হবে না। আমাদের স্কুল-কলেজগুলোকে এক্ষুনি ইহুদিদের শয়তানি প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে। আমাদের সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম এবং সিলেবাসের ওপর ইহুদিরা যে প্রভাব বিস্তার করেছে, তা এক্ষুনি সরিয়ে দিতে হবে। আমাদের আদালত ব্যবস্থাকে তাদের থাবা থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষরূপে গড়ে তুলতে হবে। ধর্মীয় উপাসনাগুলোতে পূর্বের পবিত্র সব রীতি পুনরায় চালু করতে হবে। মত প্রকাশের প্রকৃত স্বাধীনতা তথা প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে।

১৯২২ সালের জানুয়ারিতে Atlantic Monthly পত্রিকায় নিউইয়র্কের এক রাবাইয়ের মন্তব্য প্রকাশ করা হয়। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ইহুদিরা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত সম্প্রদায়। তারপরও এ জাতির সদস্য হতে পেরে তিনি ভীষণ গর্বিত। এ জাতির ওপর সহস্র বছর ধরে যে নিপীড়ন চলেছে, তার প্রধানতম কারণ হলো—জ্যান্টাইলদের অ্যান্টি-সেমিটিক মনোভাব। কিন্তু আগের অধ্যায়গুলোতে তুলে ধরা হয়েছে, কেন ইহুদিদের বিরুদ্ধে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এত সব নিপীড়ন চালিয়েছে।

এতসব কিছুর পরও ইহুদিদের জন্য সম্মান উপার্জনের একটি পথ খোলা আছে। আর তা হলো—সত্য স্বীকার করা। ইহুদিদের প্রকৃত ইতিহাস; কেন সাধারণ মানুষ তাদের এত বেশি ঘৃণা করে এবং কেন তাদের এত নিপীড়ন সহ্য করতে হয়েছে, এসবের প্রকৃত ইতিহাস কেবল ইহুদিদের কাছ থেকেই জানা সম্ভব। আমরা তাদের ব্যাপারে যা বলি এবং যেসব তথ্য প্রকাশ করি, তার অধিকাংশই মূলত ব্যক্তিগত অনুসন্ধান এবং ঐতিহাসিক দলিলের ওপর ভিত্তি করে। আমরা ইহুদিদের সম্পর্কে জানতে যেখানে বিভিন্ন দলিলের অনুসন্ধান করি, সেখানে তারা সকল ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। সুতরাং ইহুদিদের ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য কেবল তাদের মুখ থেকেই জানা সম্ভব। কিন্তু ইতিহাস বলে, ইহুদিরা সবচেয়ে বেশি ভয় পায় সত্যকে। তাদের ক্ষমতার ভিত্তি কেবল মিথ্যা ও ধোঁকাবাজি।

বাইবেলে ইহুদিদের সম্পর্কে হাজার বছর পূর্বে যে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, তা এখন বাস্তবায়ন হতে চলেছে। নব্য ইজরাইল প্রতিষ্ঠার পথে তারা অনেকদূর এগিয়ে গেছে। তবে এই নব্য ইজরাইল বিশ্ব মানবতার জন্য কতটা হুমকিস্বরূপ—তা দিনে দিনে আরও পরিষ্কার হয়ে উঠবে।

আলোচনার শেষাংশে বলতে চাই, যে হাজার হাজার পাঠক ও সমালোচক Dearborn Independent-এর নিকট তাদের মতামত পাঠিয়েছেন, তাদের একটি বিষয় বেশ ভালো লেগেছে, তারা কেউ-ই প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম নিয়ে অপ্রীতিকর মন্তব্য করেনি। শুরুর দিকে বেশ কিছু রাবাই প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম নিয়ে বহু উসকানিমূলক মন্তব্য ছড়ালেও ধীরে ধীরে নীরব হয়ে গেছে। অর্থাৎ তারা নতুন কোনো ফন্দি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

যে আলোচনার দ্বার বহুকাল মানবসমাজে রুদ্ধ অবস্থায় পড়েছিল, তা উন্মুক্ত করতে Dearborn Independent-এর যে প্রচেষ্টা, তা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাধারণ মানুষ আরও বেশি মুক্ত আলোচনামুখী হয়ে উঠবে—এটাই প্রতিষ্ঠানটির প্রত্যাশা। এই আলোচনায় যুক্ত হতে হবে আন্তর্জাতিক পত্রিকা সংস্থাগুলোকে; নতুবা সাধারণ মানুষকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে না। মনে রাখতে হবে, সত্য যতই তিক্ত হোক না কেন, এটাই একমাত্র ওষুধ—যা পুরো মানবজাতিকে অশুভ শয়তানের বিরুদ্ধে এক করতে পারে।

***

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *