স্মৃতিতে সর্বাঙ্গ জ্বলে
একশ পাঁচ ডিগ্রী ঘোর জ্বর।
টালমাটাল ঝড়
ঘুষি মারে হাড়ে মাসে ব্রক্ষ্মতালু রক্তকণিকায়
যেন তাকে ছিড়েখুড়ে অন্য কিছু বানাবে এখুনি।
হঠাৎ হরিণ হয়ে হয়তো সে ছুটে যাবে বহুদূর বাঘ-ডোরা বনে
তুমুল আগুন জ্বেলে পলাশ যেখানে যজ্ঞ করে।
নিজের বিবিধ টুকরো জুড়ে জাড়ে হয়তো বা হলুদ শালিক
অর্জুন গাছের সাদা থামে
যেতে যেতে ক্লান্ত হয়ে সূর্যাস্ত যেখানে রোজ নামে
সেইখানে ঘরবাড়ি ভাড়া নিয়ে কিছুদিন থাকবে স্বাধীন
অথবা সে নিজেরই লালার
চমৎকার রাংতা দিয়ে গড়ে নেবে সাত-কুঠরি ঘর।
জ্বর
এইভাবে নখে চিরে করেছে উর্বর তার ইচ্ছা-অনিচ্ছাকে।
কলসী কলসী জল ঢালি সান্ত্বনার, সুবিবেচনার
কপালের জলপটি শীতের ভোরের মতো সারাক্ষণ ভিজে হয়ে থাকে
তবু জ্বর ছাড়েনাকো তাকে।
এক অগ্নিকুন্ডে থেকে আরেক আগুনে ঝাঁপ দিয়ে
ছাই মাখে, ভস্ম মাখে, চোখে আঁকে না-ঘুম-কাজল।
জ্বরে সে পাগল।
শিশুরা পায়েস ঘেঁটে গোলগাল কিসমিস পেয়ে গেলে যে রকম হাসে
সেরকমই দিগ্বীজয়ী হাসি তার দুটি পাখি-ঠোঁটে।
সে নাকি মুঠোর মধ্যে পেয়ে গেছে বসন্তের সমস্ত কোকিল
গোপালপুরের সব রূপোলি ঝিনুক
পুরীর সমস্ত ঝাউবন।
সাঁওতাল পরগনা থেকে পেয়ে গেছে সব কটি নাচের মাদল।
আসলে এসব কিছু নয়
দুধের গাভীর মতো একটি নারীকে খুঁজে পেয়েছে সে কলকাতা থেকে
ছানা ওমাখন তাকে খেতে দেয় সেই রমনীটি
খেতে দেয় দু-বাটিকে ক্ষীর।
তারই গলকম্বলের স্বাদে গন্ধে এমন মাতাল
ভেবেছে পৃথিবী তার পকেটের তে-ভাঁজ রুমাল।
এই ভাবে জ্বর
নৌকো ভর্তি স্মৃতি সহ ভাসিয়ে দিয়েছে তাকে এই পৃথিবীর
ইট কাঠ বালি সুরকি পেরেকের ঢেউ-এর ওপর।